কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। পৃথিবীতে পানি, খাদ্য, বাসস্থানের মতোই বর্তমানে সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার। এই সময়ে এমন কাজ খুঁজে পাওয়া মুশকিল যেখানে প্রযুক্তির কোনো ব্যবহার নেই। মানুষের ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য থেকে শুরু করে পেশাগত জীবন সবকিছুর সাথেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে প্রযুক্তি।
সারা বিশ্বে প্রতিদিন নানা ধরনের প্রযুক্তির আবিষ্কার হয়ে থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তার ব্যবহার সাধারণ মানুষের কাছে এসে পৌঁছায় না। তাই প্রযুক্তির হাজার হাজার দিক থাকলেও মানুষের কাছে সবথেকে বেশি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে অন্যতম হলো ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। আর আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জানতে পারবেন কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী
সহজ ভাষায় বলতে গেলে আইসিটি হলো ইনফরমেশন টেকনোলজির একটি প্রসারিত শাখা। আমরা ডিজিটাল যন্ত্রপাতি, যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট পরিষেবার সাথে টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে একত্রিত করে কোনো তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে যোগাযোগ বিস্তার করে থাকি। এসব একত্রীকরণের প্রক্রিয়াকেই বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। এই ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা। আসলে, যখন থেকে মানবসভ্যতা যন্ত্রনির্ভর হয়েছে, তখন থেকেই মানুষ জীবনের প্রতিটি কাজের সাথে যন্ত্রের ব্যবহারকে সম্পূর্ণভাবে জড়িয়ে ফেলেছে জীবনের সর্বাঙ্গীণ উন্নতিসাধনের জন্য।
ইন্টারনেট পরিষেবার আমূল উন্নতি এবং কমপিউটার প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে মানুষ জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণরূপে মেশিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর এই মেশিনের সাথেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গিয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। যাই হোক, কমপিউটার-পূর্ববতী যুগে কর্মক্ষেত্রগুলোতে কাজ হতো খাতা-কলমে। আর এর অনেকগুলো অসুবিধা ছিল
- প্রথমত, প্রচুর মানুষের প্রয়োজন পড়ত এবং অনেক সময়ই একটি কাজ সম্পন্ন করতে অনেক সময় লেগে যেত।
- দ্বিতীয়ত, কাজগুলো যে সবসময় নির্ভুল হতো, তাও নয়। এর ফলে অতিরিক্ত সময়, পরিশ্রম এবং অর্থ ব্যয় করতে হতো।
- তৃতীয়ত, খাতা-কলমে কাজ হওয়ায় রেকর্ড রাখাও অনেক সময় দুষ্কর হয়ে যেত। যার ফলে একই কাজ বারবার করে করতে হতো।
- চতুর্থত, তখন ই-মেইল বা টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ক্ষীণ ছিল এবং এতে কাজ অতি ধীর গতিতে এগোত।
কর্মক্ষেত্রের এই জটিলতাগুলো দূর করাটাই ছিল এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই দ্রুত জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার তাগিদে তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি সাধন ঘটে। আর তাতে কর্মক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেতে থাকে কাজের প্রবাহ।
ভার্চুয়াল কার্যালয় শুরু
প্রায় ৯০ দশকের শেষ থেকে বিশ্বজুড়ে যে ইন্টারনেট বিপ্লব ঘটে, তার থেকে একটি ধারণার জন্ম হয়, তা হলো অফিস বা কোনো প্রতিষ্ঠানে না গিয়েই বাড়ি থেকেই বা পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকেই অফিস করা। আর এভাবেই ভার্চুয়াল অফিসের ধারণার সৃষ্টি হয়।
এই ধারণার ওপর প্রথম কাজ শুরু হয় ১৯৯৪ সালে। এই ধারণাই ২০২০ সাল থেকে পুরোপুরি বাস্তবে রূপ নিয়েছে করোনা মহামারীর কারণে। তাই আজকে যদি ইনফরমেশন এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজির এই ব্যাপক প্রসার না ঘটত, তবে হয়তো ভার্চুয়াল অফিসের এই ধারণাটি কোনো দিনই বাস্তবায়িত হতো না।
এই প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ নিজেদের চাহিদামতো সেলফোন, কমপিউটার, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এবং নানান মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ডিজিটাল মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান, পুনরুদ্ধার এবং জমা রাখতে পারে। সুতরাং, তথ্য জমা রাখতে হলে আপনাকে মোবাইল বা কোনো প্রকার কমিউনিকেশন যন্ত্রের ওপর নির্ভর করতে হয়। অর্থাৎ এই প্রযুক্তির মূল লক্ষ্যই হলো একটি সাধারণ ক্যাবল সিস্টেমের মাধ্যমে টেলিফোন, দৃশ্য-শ্রাব্য এবং কমপিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ বিস্তার করা। এই সংযোগ বিস্তারের অন্যতম উদ্দেশ্যই হলো টেলিযোগাযোগের পথকে আরও মসৃণ করে তোলা।
আসলে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান কাজই হলো একই সম্প্রসারণ মাধ্যম ব্যবহারকারী প্রযুক্তিগুলোকে একত্রিত করে টেলিকম পরিকাঠামোগুলোকে মজবুত করা। যাতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারবিহীন, ইন্টারনেটনির্ভর এবং টেলিকমনির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিষ্কার, ভরসাযোগ্য এবং দ্রুততর হয়। আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে
প্রযুক্তির একত্রীকরণের ক্ষেত্রে টেলিফোন, কমপিউটার এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল নেটওয়ার্কের যে মেলবন্ধন হয়, তাতে একটি মাত্র তারের ব্যবহার করা হয়। এর ফলে আমরা যেসব নেটওয়ার্ক প্রদানকারীদের দ্বারস্থ হই, তারা সবাই একটি অপটিক্যাল ক্যাবলের সাহায্যে ইন্টারনেট, টেলিফোন এবং টিভিতে ক্যাবল চ্যানেলের সংযোগ দিয়ে থাকেন।
এই ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার যে পদ্ধতিতে ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে, সেই পদ্ধিতিটি হলো আইসিটি বা ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির আদর্শ উদাহরণ।
কী কী যন্ত্রের ব্যবহার দেখা যায় তথ্যপ্রযুক্তিতে
ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে আপনি যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসে অজান্তেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন। মানে স্মার্টফোন থেকে শুরু করে আপনার ল্যাপটপ, ডিজিটাল ক্যামেরা সবকিছুই এই প্রযুক্তির অন্তর্গত।
ধরুন, আপনি আপনার ক্যামেরাতে একটি সুন্দর পাহাড়ি দৃশ্যের ছবি তুলে আপনার মোবাইল ফোনে সেই ছবিটিকে ট্রান্সফার করলেন ক্যামেরার নিজস্ব ওয়াই-ফাই থেকে।
তারপর ইন্টারনেট পরিষেবার মাধ্যমে আপনি আপনার ফেইসবুক প্রোফাইলে ছবিটি আপলোড করলেন একটি সুন্দর ক্যাপশনের সাথে। এই ইলেকট্রনিক যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবি বা তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করলেন ইন্টারনেটের সাহায্যে। তাই খুব সহজেই বলা যায়, এখানে আপনি নানা ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করে যে কাজটি করলেন, তা পুরোটাই সম্ভব হয়েছে এই তথ্যপ্রযুক্তির ফলেই।
এছাড়া এই টেকনোলজিতে প্রয়োজন হয় ডাটা, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, প্রসেসিং, নেটওয়ার্কিং এবং দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞের।
কীভাবে আইসিটি কর্মক্ষেত্রের সাথে যুক্ত
যেই প্রযুক্তি দিয়ে খুব সহজে যখন আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে নিজেদের তথ্য জানাতে ব্যবহার করছি, সেই প্রযুক্তি আমরা কেন কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারব না?
নিশ্চয়ই ব্যবহার করতে পারব। আসলে সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেট এবং কমপিউটার পরিষেবার উন্নতির ফলে কর্মক্ষেত্রগুলোতেই এর প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছে। মূলত এই প্রযুক্তির কাজ হলো সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের কাজের জায়গাতে সুবিধা প্রদান করা।
খুব সহজ উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, একজন সাধারণ চাকরিজীবী নিজের ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে খুব সহজেই ইন্টারনেট মাধ্যম দ্বারা ই-মেইল পাঠাতে সক্ষম।
এই ২০২১ সালে আপনি আপনার বাড়িতে বসে ল্যাপটপ থেকে জুম মিটিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনার বসের সাথে জরুরি কনফারেন্স কল অ্যাটেন্ড করছেন, এটাও কিন্তু ওই আইসিটিরই অবদান।
কিংবা আপনার মিটিংয়ের প্রেজেন্টেশন আপনার মেইলের মাধ্যমে মিনিটের মধ্যে আপনার কর্তৃপক্ষকে পাঠাতে পারছেন এই যোগাযোগ প্রযুক্তির একত্রীকরণের ফলেই। এরকম কর্মক্ষেত্রের ছোটখাটো সব ব্যাপারেই জড়িয়ে আছে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি।
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কেন গুরুত্বপূর্ণ
বেশ কিছু কারণের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্য ও কর্মক্ষেত্রে ইনফরমেশন এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজির চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে
১. এই প্রযুক্তি প্রত্যেক মানুষ, বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্য বা অর্গানাইজেশনগুলোকে ডিজিটাল মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেতে বা নিতে সাহায্য করে। আপনি আপনার যেকোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করে ডিজিটালভাবে ইনফরমেশন পেয়ে যেতে পারবেন। এমনকি খুব সহজেই সেই তথ্য সংগ্রহ, পুনরুদ্ধার কিংবা আদান-প্রদান করতে পারবেন।
২. বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, একই প্রযুক্তি মুখোমুখি কথোপকথনের চাহিদাকে দিন দিন কমিয়ে দেবে। এর ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতির ওপর এক ইতিবাচক ফলাফল দেখা দিতে পারে।
তাদের মতামত অনুযায়ী তথ্য ও যোগাযোগ টেকনোলজি বিভিন্ন শিল্পজগৎকে সমবদ্ধ করতে সহায়তা করে। এর ফলে এই প্রযুক্তি যেকোনো বাণিজ্যেই তার ক্রেতাদের চাহিদা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে। তাতে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নির্মাণে, ডিজাইনিংয়ে, সেলস এবং মার্কেটিং পরিকল্পনা সেই অনুযায়ী সাজাতে পারেন।
৩. বিভিন্ন ধরনের সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এবং যোগাযোগ মাধ্যম একত্রে থাকায় কোম্পানিগুলো এবং সাধারণ মানুষ সোজাসুজিভাবে চাকরির আবেদন এবং দরখাস্ত করতে পারছেন।
ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করে চাকরি খোঁজা এবং চাকরিতে নিয়োগ করা অনেক সহজ এবং কম ব্যয়সাপেক্ষ। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে একসাথে একাধিক চাকরির পোস্টের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে পারেন কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই।
৪. শুধুমাত্র তথ্যই নয়, এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে রয়েছে দেশের সার্বিক বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন। এই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে আছে নানা আর্থিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত দিকগুলো। যেমন অনলাইন ব্যাংকিং ও অনলাইন ব্যবসা ইত্যাদি। এই টেকনোলজি, আর্থিক পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তুলেছে। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বড় বড় কর্পোরেশন কম খরচে অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে কেবলমাত্র কমিউনিকেশন প্রযুক্তির উন্নতির ফলে। আর এ কারণেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন দ্রুত হারে ঘটছে।
৫. আর্থিক দিক থেকে উন্নতির পাশাপাশি শহরায়ণের ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তির যথেষ্ট অবদান আছে। এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে নগরায়ণ যে অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তাই অর্থনীতির ভাষাতে এই নগরায়ণে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতেও এই আইসিটি একান্তই প্রয়োজনীয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বে নীতিনির্ধারকেরা সাধারণ মানুষের দ্বারা তৈরি ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সহজে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন। এর ফলে সাধারণ মানুষের মতামত প্রত্যক্ষভাবে দেশের উন্নয়নে সাহায্য করবে।
৬. এই তথ্য এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ই-বিজনেস বা অনলাইন ব্যবসাতেও আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই প্রযুক্তি ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করে ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে। এছাড়া নতুন নতুন অনেক কারণের জন্য বেড়ে চলছে এই টেকনোলজির প্রয়োগ।
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারগুলো কী কী
- প্রথমত, টেলিযোগাযোগ, কমপিউটার নেটওয়ার্ক এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যম একত্রিত হয়ে এই প্রযুক্তি হওয়ায় কমিউনিকেশনের জন্য কোম্পানিগুলোকে যে পরিমাণ টাকা আগে ব্যয় করতে হতো, সেটা বহুলাংশে কমে গেছে। এতে করে কোম্পনির প্রফিট মার্জিন অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- দ্বিতীয়ত, প্রতি বছর প্রায় লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে এই পেশায় নিজেদের নিযুক্ত করছে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, কর্মসংস্থানে এই প্রযুক্তি যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
- তৃতীয়ত, এই ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি ব্যবহার করে কর্মক্ষেত্রগুলো তাদের কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করছে। এই প্রযুক্তি তাদের কাজের গুণগত মান বাড়াতে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতেও সহায়তা করছে।
- চতুর্থত, ব্যাংকিং সেক্টর থেকে শুরু করে মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানি, বীমা কোম্পানি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই আইসিটির ব্যাপক ব্যবহার কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এই প্রযুক্তিতে নানা রকম সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজিং, ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়েবসাইট মেইনটেন্যান্স এবং আরও নানা কাজে পারদর্শী লোকের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আইসিটি বর্তমানে জীবিকা নির্বাহের একটি ভালো রাস্তা।
- পঞ্চমত, এই তথ্য ও যোগাযোগ পদ্ধতির নতুনতর সংযোজন হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবিষ্কার ও গবেষণা।
নিত্যদিন এই প্রযুক্তির ব্যবহার যোগাযোগ মাধ্যমকে করে তুলছে অনেক বেশি সহজ, স্বাভাবিক ও দ্রুত। এছাড়া এই টেকনোলজি ব্যবহার করে পরিবহন ক্ষেত্রেও আনা হচ্ছে বিশাল পরিবর্তন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে বর্তমানে এই টেকনোলজি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
এই প্রযুক্তি আবিষ্কারের মূল উদ্দেশ্যই ছিল কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ মাধ্যমের খরচ কমিয়ে আনা। আর সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমকে একসাথে একটি চ্যানেলে নিয়ে আসতে গেলে এই প্রযুক্তির প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী।
বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য হলো সব ধরনের নতুন এবং পুরনো কমিউনিকেশনের মাধ্যমগুলোকে এই আইসিটির নিচে নিয়ে এসে একটি বৃহত্তর নেটওয়ার্কিং সিস্টেমে রূপদান করা। তাদের আশা রয়েছে, একদিন এই আইসিটি-ই হয়ে উঠবে আগামী প্রজন্মের নতুন ধারার যোগাযোগ মাধ্যমের পথপ্রদর্শক।








৩ টি মন্তব্য
[email protected]
২০২৩-১১-০৮ ১৭:২১:৩৪Balo
[email protected]
২০২৩-১১-০৮ ১৭:২১:৩৪Balo
Tofazzal Hossain
২০২৫-০২-০৯ ২০:০৯:০১Dr