https://comcitybd.com/brand/Havit

হার্ডওয়্যার

মনিটরের প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

মনিটরের প্রাসঙ্গিক কিছু কথা মনিটরের প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
 

মনিটরের প্রাসঙ্গিক কিছু কথা


মনিটরের প্রাসঙ্গিক কিছু কথা মর্তুজা আশীষ আহমেদ মনিটর হচ্ছে আপনার পিসির আউটপুট ডিভাইস৷ অকে মনিটর আছে যেগুলো আউটপুট ডিভাইসের পাশাপাশি ইনপুট ডিভাইসও৷ যেমন টাচ স্ক্রিন মনিটর৷ বর্তমানে সাধারণত দুই ধরনের মনিটর পাওয়া যায়৷ একটি হচ্ছে ক্যাথোড রে টিউব (CRT) মনিটর, যা এনালগ মনিটর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে৷ অন্যটি হচ্ছে লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD) মনিটর, যা ডিজিটাল মনিটর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে৷ অবশ্য এখনকার সব সিআরটি মনিটরকে মনিটর নির্মাতারা ডিজিটাল অপারেশন মনিটর বলে৷ তার কারণ হচ্ছে, মনিটরের অনস্ক্রিন ডিসপ্লে ও এর বাটনগুলো ডিজিটাল৷


সিআরটি মনিটরগুলোর মূল অংশ হচ্ছে এর পিকচার টিউব৷ এই পিকচার টিউবের পেছনের দিকে থাকে নেগেটিভ চার্জে আয়নিত ক্যাথোড, যাকে ইলেকট্রন গান বলা হয়৷ মনিটর যখন চলে তখন এই ইলেকট্রন গান থেকে অসংখ্য ইলেকট্রন মনিটরের সামনের পজিটিভ চার্জড স্ক্রিনে নিক্ষিপ্ত হয়৷ স্ক্রিন হচ্ছে ফসফর দিয়ে তৈরি লাল, সবুজ ও নীল বিন্দুর সমন্বয়ে অসংখ্য পিক্সেলের সমাহার৷ সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারছেন, মনিটরে কোনো চিত্র ফুটে উঠে তিনটি মৌলিক রং লাল, নীল ও সবুজ দিয়ে তৈরি অসংখ্য বিন্দুর সমন্বয়ে৷ তিনটি ইলেকট্রন গান সেই অনুযায়ী ইলেকট্রন সরবরাহ করে থাকে৷ এখন মনিটরে যত বেশি পিক্সেল থাকবে ছবি তত উজ্জ্বল এবং স্পষ্ট হবে এবং রেজ্যুলেশনও তত বেশি হবে৷ আর পিক্সেল কম থাকলে ছবিও অনুজ্জ্বল হবে৷


পিক্সেলের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানকেই মনিটরের ডট পিচ বলা হয়৷ তাই ডট পিচ যত কম হবে মনিটরের ছবিগুলো তত উজ্জ্বল হবে৷ সিআরটি মনিটরের স্ক্রিনে কতটুকু এবং কোথায় কোথায় ইলেকট্রন নিক্ষিপ্ত হবে, তার জন্য মনিটরের স্ক্রিনের ওপরে বাম থেকে ডানে পর্যায়ক্রমে স্ক্যান করা হয়৷ এই স্ক্যান করার হারকেই মনিটরের রিফ্রেশ রেট বলা হয়৷ সাধারণত মনিটরের রেজ্যুলেশন যত বাড়ানো হয় এর রিফ্রেশ রেটও তত কমতে থাকে৷ সিআরটি মনিটরের আরেকটি বিষয় সবাইকে মাথায় রাখতে হয় তা হলো এর পিকচার টিউব কী ধরনের৷ গতানুগতিক কার্ভড মনিটর বা ফ্ল্যাট স্ক্রীন মনিটর৷ কার্ভড স্ক্রীন মনিটরগুলো হচ্ছে- এদের সামনের স্ক্রীন কিছুটা সামনের দিকে বাঁকানো থাকবে৷ আর ফ্ল্যাট স্ক্রীন মনিটর হচ্ছে- সামনের স্ক্রীন পুরোপুরি ফ্ল্যাট৷ ফ্ল্যাট স্ক্রীন মনিটর আবার দুই ধরনের৷ একটি হচ্ছে রিয়েল ফ্ল্যাট৷ এধরনের মনিটরগুলো পুরোপুরি ফ্ল্যাট৷ অন্য ধরনের ফ্ল্যাট মনিটরগুলোর সামনের স্ক্রীন ফ্ল্যাট হলেও ভেতরে কিছুটা বাঁকানো আকারের থাকে৷ মনিটর কেনার আগে তার ম্যানুয়ালে দেখে নিন যে তার টেক্সট এবং গ্রাফিক্স রেটিং কেমন৷ আধুনিক সিআরটি মনিটরগুলোতে পিউরিটি ও মোইর দুটি অপশন থাকে। এই অপশনগুলো ব্যবহার করা হয় মনিটরের টেক্সট ও গ্রাফিক্স পারফরমেন্স এডজাস্ট করার জন্য এবং আপনার স্ক্রীনের কালার পারফেকশন এডজাস্ট করার জন্য৷ সিআরটি মনিটর কেনার সময় মনিটরের ওএসডিতে দেখে নিন এই অপশনগুলো আছে কিনা৷ এলসিডি মনিটর পুরোপুরি ডিজিটাল মনিটর৷ এখানে কোনো রকম পিকচার টিউব বা এধরনের কোনো কিছু থাকে না৷ এধরনের মনিটরে থাকে দুটি স্বচ্ছ ইকেট্রোড, যার মাঝখানে থাকে লিকুইড ক্রিস্টাল মলিকিউল৷ ইলেকট্রিক পোলারিটির মাধ্যমে ছবি স্ক্রীনে দৃশ্যমান হয়৷ পুরো প্রক্রিয়াই ডিজিটাল বলে এলসিডি মনিটরের বিদ্যুতের সিস্টেম লস খুব কম৷ তাই এজন্য এলসিডি মনিটর বিদ্যুত্ সাশ্রয়ী৷


বর্তমানে দুই ধরনের এলসিডি মনিটর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে৷ একটি হচ্ছে গতানুগতিক ভিজিএ ডিসপ্লে টাইপ স্ক্রীন এলসিডি মনিটর এবং অন্যটি হচ্ছে ওয়াইড স্ক্রীন টাইপ স্ক্রীন এলসিডি মনিটর৷ ভিজিএ ডিসপ্লে টাইপ স্ক্রীনবিশিষ্ট এলসিডি মনিটরগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলোর রেজ্যুলেশন সিআরটি মনিটরগুলোর আদলে তৈরি করা হয়েছে৷ এগুলোর স্ক্রীন সাইজ রেজ্যুলেশন ৬৪০*৪৮০ অনুপাতে তৈরি হয়েছে৷ আর ওয়াইড স্ক্রীন টাইপ এলসিডি মনিটরগুলোতে ১৬:৯ অনুপাতে স্ক্রীন তৈরি করা হয়েছে৷ সেই অনুপাতে এধরনের মনিটরের রেজ্যুলেশন বাড়বে বা কমবে৷ অবশ্য ওয়াইড স্ক্রীন টাইপ এলসিডি মনিটরে আপনি ভিজিএ ডিসপ্লে টাইপ রেজ্যুলেশন সেট করতে পারবেন৷ সেটি নির্ভর করবে আপনার ভিডিও কার্ডের সক্ষমতার ওপর৷ সিআরটি মনিটর এবং এলসিডি মনিটরের কানেক্টরের ভিন্নতা আছে৷ সিআরটি মনিটর বর্তমানে ভিজিএ কানেক্টরের মাধ্যমে সিপিইউর সা েসংযুক্ত হয়৷ অনেক ক্ষেত্রে এলসিডি মনিটরে কালেক্টর হিসেবে ভিজিএ কালেক্টরও দেয়া থাকে৷


এলসিডি মনিটরের সাথে সাধারণত ডিজিটাল ভিজ্যুয়াল ইন্টারফেস বা ডিভিআই কানেক্টর সরবরাহ করা হয়৷ তাই ভিডিও কার্ডের ইন্টারফেসের প্রতি লক্ষ্য রেখেই মনিটরের খোঁজ করাটাই উচিত৷ অবশ্য আজকাল অনেক ভিডিও কার্ডে টিভি আউটপুট এবং এইচডিটিভি আউটপুট নামে দুটি কাক্টের দেয়া থাকে৷ এই কানেক্টরগুলো দিয়ে আপনি সিআরটি বা এলসিডি টিভিতে মনিটর হিসেবে কানেকশন দিতে পারবেন৷


বর্তমান যুগ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব যুগ৷ তাই মনিটর কেনার আগে ভালভাবে দেখে নিন সেটি পরিবেশবান্ধব কিনা৷ অনেক ধরনের স্ট্যান্ডার্ড আছে, যা আপনার মনিটর কোনো ক্ষতির কারণ হবে কিনা, তা নির্ধারণ করে দেবে৷ এরকম একটি স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে টিসিও৷ আগে দেখে নিতে পারেন তা টিসিও ০৩ অনুামোদিত মনিটর কিনা৷ সেই সাথে দেখে নেবেন যে মনিটরটি আরওএইচএস অনুমোদিত মনিটর কিনা৷


সিআরটি মনিটর এবং এলসিডি মনিটর এই দুই ধরনের মনিটরেরই কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা আছে৷ যেমন- সিআরটি মনিটরের ক্ষেত্রে যেকোনো এঙ্গেল থেকে আপনি সমানভাবে ছবি দেখতে পাবেন৷ কিন্তু এলসিডি মনিটরের ক্ষেত্রে এমন হবে না৷ শুধু সরাসরি শূন্য ডিগ্রি এঙ্গেল থেকেই আপনি পুরোপুরি ছবি দেখতে পারবেন৷ তাছাড়াও এলসিডি মনিটরের কন্ট্রাক্ট রেশিও সিআরটি মনিটরের চেয়ে কম৷ এলসিডি মনিটরের রেসপন্সটাইম সিআরটি মনিটরের চেয়ে বেশি৷ টেক্সট-এর জন্য এলসিডি মনিটর এখনো সিআরটি মনিটরের চেয়ে পিছিয়ে আছে৷ তবে এলসিডি প্রযুক্তি যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে করে ভবিষ্যতে এসব পার্থক্য এড়িয়ে এলসিডি মনিটরই মনিটরের জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করবে বলেই সবার বিশ্বাস৷


রেজ্যুলেশন স্ট্যান্ডার্ড


পিসি মনিটর নির্মাতারা সাধারণত কিছু স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখে৷ যেমন-একটি ১৪" মনিটর তৈরি করা হয় যাতে করে ৮০০X৬০০ রেজ্যুলেশন সঠিকভাবে দিতে পারে৷ ১৫" মনিটর তৈরি করা হয় ১০২৪X৭৬৮ রেজ্যুলেশনের জন্য, ১৯"মনিটর তৈরি করা হয় ১২৮০X১০২৪ রেজ্যুলেশনের জন্য এবং ২১" মনিটর তৈরি করা হয় ১৬০০X১২৮০ রেজ্যুলেশনের জন্য৷


কিছু বাড়তি সতর্কতা


আপনাকে যদি অনেক সময় ধরে মনিটরে চোখ রেখে কাজ করতে হয় তাহলে মনিটরের ব্রাইটনেস যতটুকু সম্ভব কমিয়ে রাখুন৷ বাজারে বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন ফিল্টার পাওয়া যায়৷ এগুলোর মধ্যে কিছু ফিল্টার এন্টি-রেডিয়েশন, এন্টি-গ্লান্স, আল্ট্রাভায়োলেট প্রিভেনশন সাপোর্ট করে এমন ফিল্টার প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন৷ সেক্ষেত্রে ফিল্টারটি আর্থিং করে নেবেন৷ আপনার মনিটরটি সরাসরি আর্থিং করা আছে কিনা সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হয়ে নিন৷ মনিটরের স্ক্রিনে সরাসরি হাত দেবেন না বা ভেজা কিছু দিয়ে স্ক্রিন পরিষ্কার করবেন না৷ এতে করে আপনার মনিটরের স্ক্রিনের এন্টি-রেডিয়েশন লেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ আর কমপিউটার শাট ডাউন করার পর সাথে সাথেই মনিটর ঢেকে রাখবেন না৷ মনিটর ঠাণ্ডা হলে তবেই ধুলোবালি থেকে বাঁচাতে মনিটর ঢেকে রাখুন৷








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।