https://powerinai.com/

প্রযুক্তি

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ও কমপিউটার জগৎ

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ও কমপিউটার জগৎ বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ও কমপিউটার জগৎ
 

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ও কমপিউটার জগৎ


কমপিউটার জগৎ। এদেশের তথ্যপ্রযুক্তি আন্দোলনের অগ্রপথিক এক সত্তার নাম। এই পত্রিকাটি নিছক একটি পত্রিকা প্রকাশনের লক্ষ্য সামনে রেখেই এর সূচনা ঘটেনি, একথা এর পাঠকমাত্রই জানেন। শুরু থেকেই আমরা এ পত্রিকাটিকে ব্যবহার করছি এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আন্দোলনের অন্যতম এক হাতিয়ার হিসেবে। ফলে এ দেশকে তথ্যপ্রযুক্তিসম্বৃদ্ধ করার প্রয়োজনে যে দাবিটি যখনই জনসমক্ষে ও একই সাথে এদেশের নীতি-নির্ধারকদের কাছে তোলার প্রয়োজন বোধ করেছি, তখনই তা তুলে ধরতে কোনো ধরনের কুণ্ঠাবোধ করিনি। ফলে ‘জনগণের হাতে কমপিউটার চাই’ শীর্ষক প্রচ্ছদ শিরোনাম নিয়ে আমরা কমপিউটার জগৎ-এর প্রকাশনা শুরু করি ১৯৯১ সালের মে সংখ্যাটি। এই দাবিটি অনেকাংশে পরিপূর্ণ হয়েছে, তেমনটি আমরা বলছি না। তবে কমপিউটার নামের যন্ত্রটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ও একই সাথে নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে কাজ করার ভীতি কাটিয়ে তুলে একে জনগণের নিত্যসাথী একটি পণ্যে পরিণত করতে সক্ষম আমরা হয়েছি, সে দাবি নিশ্চয় আমরা করতে পারি। এজন্য আমরা আমাদেরকে প্রচলিত সাংবাদিকতার অর্গল ভেঙে প্রতিমাসে একটি করে কমপিউটার জগৎ প্রকাশ করার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে অত্যন্ত সচেতনভাবে। সে সচেতনতা সূত্রে আমরা যেমন বরাবর প্রযুক্তির নানা ইতিবাচক দিকগুলো দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরেছি, তেমনি যথার্থ সময়ে প্রয়োজনীয় দাবিটি উপস্থাপন করেছি। সেই সূত্রেই আমরা গণমাধ্যমে ২০০৩ সালের অক্টোবর সংখ্যা ‘বাংলাদেশে নিজস্ব স্যাটেলাইট চাই’ শীর্ষক প্রচ্ছদ কাহিনী প্রকাশ করে এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি জাতির সামনে তুলে ধরি। এই স্যাটেলাইটের যুগে বঙ্গবন্ধু-১ নামের স্যাটেলাইট বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অনন্য বাস্তবতা। এই বাস্তবতা কমপিউটার জগৎ-এর জন্য বয়ে এনেছে এক অনন্য গোলকধাঁধা। কারণ, আমরাই এদেশে সর্বপ্রথম তুলে ধরতে পেরেছিলাম বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট দাবিটি। আমরাই উল্লিখিত প্রচ্ছদ কাহিনীর মাধ্যমে উপগ্রহের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুসন্ধান করে এ যৌ


আমরাই উল্লিখিত প্রচ্ছদ কাহিনীর মাধ্যমে উপগ্রহের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুসন্ধান করে এ যৌক্তিকতার বিষয়টি দেশবাসীকে জানাই। সেদিন কমপিউটার জগৎ-এর নিজস্ব অনুসন্ধান সূত্রে জানতে পারি, শুধু আইএসপি ও প্রাইভেট চ্যানেলের সম্প্রচারে প্রতিমাসে বৈধ-অবৈধ উপায়ে দেশ থেকে চলে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্যবস্থা গড়ে তুলে আমরা আয় করতে পারি এই কোটি টাকা এবং দেশকে বাঁচাতে পারি বাড়তি অপচয় থেকে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজনেও আমাদের প্রয়োজন হচ্ছে নিজস্ব স্যাটেলাইট। তখন আমরা প্রশ্ন তুলি বাংলাদেশে আদৌ কোনো সাটেলাইটের প্রয়োজন আছে কি না এবং থাকলে বা এর গুরুত্ব কতটুকু? স্যাটেলাইট স্থাপন না লিজ নেয়া, কোনটি বাংলাদেশের জন্য যুক্তিসঙ্গত হবে? এমন সব প্রশ্ন নিয়ে আমরা আলাপ করি বেশ কিছু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে। এসব আলাপ থেকে বেরিয়ে আসে বাংলাদেশে নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রয়োজনের বিষয়টি।


এখন আমরা জানতে পারি বাংলাদেশে তখন পর্যন্ত বৈধ আইএসপির সংখ্যা ছিল ৭০টি। এর মধ্যে প্রথম সারির দশটি আইএসপি ব্যবহার করে গড়ে ৩ এমবিপিএস (মেগাবিট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে তখন চাহিদা ছিল সর্বনিম্ন ৯০ এমবিপিস এবং সর্বোচ্চ ১৫০ এমবিপিএস। আর সে সময়ে এক মেগাবিট একমুখি ডাটা কিনতে খরচ পড়ে মাসিক ৪ হাজার ইউএস ডলার। একটু মাথা খাটালেই বোঝা যায়, প্রতিমাসে আমাদের দেশ থেকে এ খাতে বাইরে চলে যাচ্ছে ৩,৬৯,০০ থেকে ৬,০০,০০ ডলার। প্রতিবছর আমাদের দেশে ইন্টারনেটের চাহিদা যে হারে বাড়ছে সে অনুযায়ী আগামী কয়েক বছরে বিপুল অর্থ খরচ করতে হবে এ খাতে। আজকের দিনে ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহারের পরিস্থিতি থেকে বিষয়টি সহজেই অনুমেয়।


অপরদিকে, তখন আমরা অনুসন্ধানে জানতে পারি বাংলাদেশের যদি পাকস্যাট-১এর মতো একটি স্যাটেলাইট লিজ নেয়, তার মধ্যে আইএসপি খাতে হিসাবে করলে স্যাটেলাইটের মোট দাম পরিশোধ করতে সময় লাগবে প্রায় ৩ বছর। অবাক হওয়ার বিষয় বাকি দুই বছর আমাদের কোনো চার্জ দিতে হবে না। এর ফলে ইন্টারনেটের খরচ কমে যাবে অনেকটা।


তখন আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বিটিভিসহ তিনটি প্রাইভেট চ্যানেল ছিল। যে কোনো টিভি চ্যানেলের জন্য ৩ এমবিপিএস অপরিহার্য ও ৬ এমবিপিএসে ভিডিও ক্যাসেট কোয়ালিটি আউটপুট পাওয়া যায়। ফলে চারটি চ্যানেলের জন্য খরচ হয় ২৪ এমবিপিএস। প্রতি এমবিপিএস কিনতে ২৫০০- ৩০০০ ডলারে। ফলে এর জন্য মোট খরচ ৭২,০০ ডলার। ভবিষ্যতে ১০টি চ্যানেল তখন সম্প্রচারে যাওয়ার জন্য লাইন ধরে ছিল। অতএব আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইটের প্রয়োজনটা সহজেই অনুমেয়। যা হোক শেষ পর্যন্ত আমরা পেলাম নিজস্ব স্যাটেলাইট। এখন প্রয়োজন এর সঠিক ব্যবহার।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।