যেভাবে অ্যান্ড্রয়িড থেকে আইফোনে সুইচ করবেন
আইফোন ব্যবহারে অন্য ফোন থেকে পুরোপুরি ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। অভিজাত এই ফোনের প্রায় সব কিছুই আলাদা। এমনকি অপারেটিং সিস্টেম পর্যন্ত। তাই যখন একজন ব্যবহারকারী প্রথমবারের মতো অ্যান্ড্রয়িড থেকে আইফোন ব্যবহার শুরু করেন, তখন তিনি বেশ মুশকিলেই পড়ে যান। কেননা নতুন সব কিছুই মানিয়ে নিতে কিছু সময়ের প্রয়োজন পড়ে। সময় নিয়ে না হয় মানিয়ে নেয়া গেল। কিন্তু যখন ফোন পরিবর্তন করা হয় আইফোন অ্যান্ড্রয়িড থেকে সব দিক থেকে ভিন্ন হওয়ার কারণে সবচেয়ে মূল্যবান ডাটা হারানোর ক্ষতি স্বীকার করে নিতে হয়। তবে কিছু উপায় অবলম্বন করে আইফোন ব্যবহার শুরুর অভিজ্ঞতাকে ভালো করার পাশাপাশি মূল্যবান ডাটাকে স্থানান্তর করে নেয়া যায়।
শুরুতে যা জানতে হবে
ফোন পরিবর্তনের কারণে ব্যবহারকারীকে অনেক হার্ডওয়্যার এক্সেসরিজ ফেলে দিতে হবে। আইফোন সেভেন বা সেভেন পস্নাসে অ্যাডাপ্টার থেকে শুরু করে অডিও জ্যাক সবই আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আইফোনের হালকা চার্জিং পোর্ট কোনো অ্যান্ড্রয়িড ফোনের সাথেই মেলে না। তাই পুরনো চার্জার, কেস ও মাইক্রো এসডি কার্ডকে বিদায় জানাতেই হবে। তবে অন্যান্য কিছু এক্সেসরিজ যেমন- ডকস, স্পিকার এবং ওয়্যারেবল টেক প্রোডাক্ট ফেলে দিতে হবে না। ব্যবহারকারীকে দরকারি অনেক অ্যাপ নতুন করে কিনে ডাউনলোড করতে হবে। তবে গুগলের কোর অ্যাপগুলোর আইওএস ভার্সনও পাওয়া যায়। এই মাইগ্রেশন প্রক্রিয়াতে গুগল সুইট এবং গুগল ড্রাইভ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আইফোন ব্যবহারকারী হয়ে যাওয়ার পরও এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্য এই প্রক্রিয়াতে অ্যাপলের সাহায্যও আশা করা যায়। অ্যাপলের ওয়েবসাইট অনুযায়ী অ্যাপল স্টোরের কর্মীরা ব্যবহারকারীদেরকে অ্যান্ড্রয়িড থেকে আইফোনে রূপান্তরে সাহায্য করেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের দেশে এই সুবিধা নেয়ার জন্য কোনো অ্যাপল স্টোর নেই।
আইওএস অ্যাপ
গুগল প্লেস্টোর থেকে আইওএসের অফিশিয়াল অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এই অ্যাপটি কন্টাক্টস, ম্যাসেজ হিস্ট্রি, ফটো এবং ভিডিও, ওয়েব বুক মার্কস, মেইল অ্যাকাউন্ট, ক্যালেন্ডার সব কিছু এক নিমিষেই স্থানান্তর করে দেবে। একটি নতুন বা রিসেট করা আইফোন থাকলে আপনি এই ফ্রি অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এই প্রক্রিয়ার জন্য ফোন দুটোর সাথে সাথে ওয়াইফাই সংযোগের প্রয়োজন হবে। আইফোনটি ব্র্যান্ড নিউ হলে ভালো না হলে ফ্যাক্টরি রিসেট দিয়ে নিতে হবে। ভালো ফলাফলের জন্য অ্যাপল আইডি সেটআপ করে নিন, যা পরে দরকার হতে পারে।
- ০১. মুভটুআইওএস অ্যাপটি ডাউনলোড করতে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। অ্যাপটি একটি কোড দেয়ার জন্য বলবে, যা আইফোন থেকে পাওয়া যাবে।
- ০২. আইফোনটি চালু করুন, ফোন থেকে একটি হ্যালো মেসেজ আসবে। মেসেজটি অ্যাপ অ্যান্ড ডাটাতে এলে মুভডাটাফ্রম অ্যান্ড্রয়িড বাটন সিলেক্ট করতে হবে।
- ০৩. এ পর্যায়ে মুভটুআইওএস ডাউনলোড করতে হবে।
- ০৪. আইফোন কোড জেনারেট করলে সেটা অ্যান্ড্রয়িড ফোনে দিতে হবে।
- ০৫. কোড প্রবেশের সাথে সাথে আইফোন একটি প্রাইভেট ওয়াইফাই কানেকশন তৈরি করবে ফোন দুটির মধ্যে এবং একই সাথে স্থানান্তর শুরু হয়ে যাবে।
০৬. এ পর্যায়ে জানতে চাওয়া হবে কোন কনটেন্টগুলো স্থানান্তর করতে চান এবং সে অনুযায়ী নির্বাচন করুন।
০৭. স্থানান্তর শুরু হয়ে যাবে, এর জন্য কয়েক মিনিট সময় লাগবে, তবে এ সময় কনটেন্টের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বাড়তে বা কমতে পারে। স্থানান্তর শেষ হয়ে গেলে আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে আইফোন সেটআপ করা হবে।
অনেকেই আগের ফোনে ব্যবহার করা অ্যাপগুলো আইফোনে ফিরে পেতে চাইবেন। সে ক্ষেত্রে সে অ্যাপগুলোর আইওএস ভার্সন ডাউনলোড করে নিতে পারেন। তবে সব অ্যাপের আইওএস ভার্সন পাওয়া যাবে, তা কিন্তু নয়। কিছু অ্যাপ কিনে ব্যবহার করতে পারেন।
মুভটুআইওএস অ্যাপটি নতুন আইফোনটিকে কনফিগার করার বিষয়ে সাহায্য করবে না। যেমন- আপনি আই ক্লাউডের পরিবর্তে গুগল ড্রাইভের স্টোরেজ সেবাই নিতে চাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে আইফোনের কিছু ডিফ্লটপ্রিসেট আপনার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে। মুভটুআইওএস ব্যবহার করা সহজ হলেও এটি অ্যাপলের ইকো সিস্টেম কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আপনাকে কোনো ধারণা দেবে না। সাংগঠনিক এবং দক্ষতার দিকগুলো বিবেচনায় নিলে আইফোন সম্পর্কে এবং এর সেটআপ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা আবশ্যক।
কী কী দরকার হবে
ধরে নেয়া হচ্ছে, আপনার কাছে দুটো ফোন, ওয়াইফাই সংযোগ এবং একটি কমপিউটার আছে। অ্যাপলের আইডি না থাকলে খুলে নিতে হবে। সেটআপ প্রসেসের সময় আইফোনে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে।
ই-মেইল অ্যাকাউন্ট, ফোন নাম্বার এবং ক্যালেন্ডার
যদি আপনার নাম্বারগুলো এবং ক্যালেন্ডার একটি ই-মেইলের সাথে সংযুক্ত থাকে, তবে এসব তথ্য সরিয়ে আনা খুব সহজ হবে। আপনি ই-মেইল এবং এর সাথে সংযুক্ত থাকা কন্টাক্টগুলো আইফোনে যোগ করে দিতে পারেন। কিছু অ্যান্ড্রয়িড ফোনে গুগল কন্টাক্টে স্টোর করার পরিবর্তে লোকাল ডিভাইসের সিম কার্ডে রাখা হয় এবং সে ক্ষেত্রে আপনি যদি সিম নতুন ডিভাইসে স্থানান্তরের কারখানা ভেবে থাকেন, তবে আপনাকে সিমকার্ডের কনটেন্ট গুগল কন্টাকসে ইমপোর্ট করতে হবে।
০ টি মন্তব্য