অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি
আমাদের নিয়মিত বিভাগ ভাইরাসের পঞ্চম পর্বে সাম্প্রতিক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কমপিউটার ভাইরাস সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি কিভাবে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ভাইরাস ডিটেকশন এবং ক্লিনিং প্রায়োরিটি সেট করা যায়, তা দেখানো হয়েছে৷ ক্লিনিং প্রায়োরিটি বলতে সিস্টেমের ভাইরাস বা এ জাতীয় সমস্যা শনাক্ত করতে পারলে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার তা কিভাবে হ্যান্ডেল করে, তা বুঝায়৷ সাধারণত যেকোনো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার, সিস্টেমে ইনস্টল করে নিয়মিত আপডেট করলে ভাইরাস এবং এ জাতীয় সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়৷ কিন্তু আমাদের কাছে অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, নিয়মিত আপডেট করার পরও ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায় না৷ এক্ষেত্রে সমস্যা হয় সাধারণত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের প্রায়োরিটি সেট করা না থাকলে৷ তাই ক্লিনিং প্রায়োরিটি সেট করা বেশ গুরুত্বপুর্ণ৷ তাছাড়া ভাইরাস চেকিং শিডিউল করা না থাকলে বা ডিফল্ট শিডিউল করা সময় সিস্টেম চালু না থাকলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে৷ মনে রাখবেন অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের প্রায়োরিটি সেট করা না থাকলে এবং নিয়মিত ভাইরাস চেকিং এবং ক্লিনিং না করলে যতই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপডেট করুন না কেন, ভাইরাস থেকে সিস্টেম পুরোপুরি সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয়৷ ভাইরাস ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে দেখানো হয়েছিল নড৩২ এবং অ্যাভাস্ট কিভাবে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে তা সিস্টেমে চালাতে হয়৷ সেই সাথে এর তৃতীয় পর্বে আমরা জেনেছিলাম অ্যাভাইরা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের কথা৷ আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে এই দুটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি এবং ভাইরাস চেকিং শিডিউল কিভাবে সেট করতে হয়, তা দেখানো হয়েছে এ পর্বে৷
সাধারণত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে ভাইরাস স্ক্যান করার সময় কোনো ভাইরাস শনাক্ত হলে সফটওয়্যার ইউজারকে জিজ্ঞাসা করে যে ভাইরাসটি কি করা হবে৷ সাধারণত শনাক্ত করা ভাইরাস নিয়ে চারটি কাজ করা যেতে পারে৷ এগুলো হচ্ছে িক্ণন, কোয়ারান্টাইন, ডিলিট এবং এক্সক্লুড৷ ক্লিন করাই হচ্ছে ভাইরাস মুক্ত করার সবচেয়ে ভালো উপায়৷ ক্লিনকে অনেকে অ্যান্টিভাইরাস রিপেয়ার বলে থাকেন৷ রিপেয়ার বা ক্লিন একই অর্থে ব্যবহার করা হয়৷ কিন্তু অনেক সময়ই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ভাইরাস বা এ জাতীয় সমস্যাগুলোকে িক্ণন করতে পারে না৷ কারণ প্রতিনিয়ত ভাইরাস তৈরি হচ্ছে৷ অ্যান্টিভাইরাস কর্তৃপক্ষ নিত্যনতুন ভাইরাসের আক্রমণের ধরন জানার পরেই তার আপডেট বা ক্লিনিং টুল রিলিজ করে থাকে৷ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ভাইরাস ক্লিন করতে না পারলে ভাইরাসটিকে অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে সাবমিট করতে হয়, যাতে তারা এর ক্লিনিং টুল আলাদাভাবে বা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের আপডেটের মাধ্যমে বের করতে পারে৷ ক্লিন করতে না পারলে আক্রান্ত ফাইলটির কোয়ারান্টাইন করাই ভালো৷ কোয়ারান্টাইন করার অর্থ হলো ফাইলটিকে যতদিন রিপেয়ার করা না যায়, ততদিন পর্যন্ত আলাদা করে রাখা যাতে অন্যান্য ফাইলকে আক্রান্ত করতে না পারে৷ কিছু কিছু ভাইরাস আছে যেগুলোকে কোয়ারান্টাইনও করা যায় না৷ সেই ভাইরাসগুলোকে বা আক্রান্ত ফাইলগুলোকে সিস্টেমেকে সুরক্ষার জন্য ডিলিট করাই ভালো৷ প্রথমেই দেখা যাক কিভাবে অ্যাভাইরা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি সেট করা যায়৷ এই সফটওয়্যার ওপেন করে এ৮ চেপে অ্যাভাইরা অ্যান্টিভাইরাসের কনফিগারেশন মেনুতে যেতে হবে৷ এবার এক্সপার্ট মোড সিলেক্ট করে scanner>scan>action for concerning files অপশনে যেতে হবে৷ অটোমেটিক মোড সিলেক্ট করে copy file to quarantine before action এ টিক মার্ক দিতে হবে৷
এবারে চিত্রের মতো প্রাইমারি অ্যাকশনে রিপেয়ার এবং সেকেন্ডারি অ্যাকশনে ডিলিট সিলেক্ট করুন৷ এবার ওকে করে বের হয়ে আসুন৷ আপনার অ্যাভাইরা অ্যান্টিভাইরাসের ক্লিনিং প্রায়োরিটি সেট করা শেষ৷ এবার দেখা যাক কিভাবে রেগুলার স্ক্যানিং শিডিউল সেট করতে হয়৷ সাধারণত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সপ্তাহে একবার নিজে নিজেই পুরো সিস্টেম স্ক্যান করে৷ এই স্ক্যান করার সময়টি আপনার সুবিধামতো সেট করে দিতে পারেন৷ স্ক্যান করার জন্য যে সময়টি বেছে নেবেন সেই সময় অবশ্যই সিস্টেম চালু রাখতে হবে৷ নয়তো পরে কোনো সুবিধাজনক সময়ে ম্যানুয়ালি স্ক্যান করে নেবেন৷ অ্যাভাইরা অ্যান্টিভাইরাসের শিডিউলার অপশন থেকে complete system scan অপশনের activated লিঙ্কে টিক মার্ক দিন৷
নিয়মিত এই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার স্ক্যান করে সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখবে৷ আপনি ইচ্ছে করলে সুবিধামত শিডিউলার তৈরি করে নিতে পারেন৷
এবারে দেখবো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি কিভাবে সেট করে৷
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের কন্ট্রোল সেন্টার থেকে থেফট প্রোটেকশন মডিউলের নড৩২ সিলেক্ট করুন৷
এবারে Actions ট্যাবে ক্লিক করুন৷ If an alert is generated অপশনে clean সিলেক্ট করুন৷ আর If cleaning cannot be performed অপশনে delete সিলেক্ট করুন৷ সেই সাথে Copy to Quarantine বক্সে টিক মার্ক দিন৷ নড৩২ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি সেট করা শেষ৷ এবার শিডিউলিং সেট করার জন্য নড৩২ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের কন্ট্রোল সেন্টার থেকে schedular/planner সিলেক্ট করুন৷
তাহলে শিডিউলড টাস্ক ওপেন হবে৷ এবার অ্যাড বাটন ক্লিক করলে নতুন শিডিউলিং টাস্ক তৈরি করার একটি মেনু আসবে৷ NOD32 on demand scanner-scanning সিলেক্ট করে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন৷ পরের মেনু আসলে weekly রেডিও বাটন সিলেক্ট করে আপনার ইচ্ছেমতো শিডিউলের একটি নাম দিন৷ এবারে নেক্সট বাটন সিলেক্ট করুন৷ পরের মেনু আসলে সুবিধামতো একটি সময় নির্বাচন করুন, যে সময়টাতে প্রতি সপ্তাহে সিস্টেম চালু রাখতে পারবেন৷ সময়ের সাথে দিনও সিলেক্ট করে দিন৷ এবারে নেক্সট বাটন সিলেক্ট করুন৷ পরের মেনু আসলে ফিনিশ বাটনে ক্লিক করে শিডিউল কমপ্লিট করুন৷ ইচ্ছে করলে প্রতিদিন ভাইরাস স্ক্যান করার শিডিউলও তৈরি করে নিতে পারেন৷ আমরা সর্বশেষ যে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ক্লিনিং প্রায়োরিটি এবং শিডিউলিং নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হলো অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস৷ এই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের হোম এডিশন পুরোপুরি ফ্রি৷ এর ক্লিনিং প্রায়োরিটি এবং শিডিউলিং অটোমেটিক সেট করা থাকে৷ তাই এটি ইনস্টল করা থাকলে ক্লিনিং প্রায়োরিটি এবং শিডিউলিং নিয়ে ভাবনার কিছু নেই৷ শুধু প্রয়োজন নিয়মিত আপডেট করার৷
০ টি মন্তব্য