বাংলাদেশের জন্য সেরা কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ২০২২
পৃথিবীতে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট রয়েছে অসংখ্য, কিন্তু এর মধ্যে সকল ওয়েবসাইট বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য উপযোগী নয়। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে দক্ষতা থাকা স্বত্বেও আমাদের ফ্রিল্যান্সারগণ যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারেন না। এই পোস্টে জানবেন বাংলাদেশের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটসমূহ সম্পর্কে।
ফাইভার
আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন, তবে ইতিমধ্যে অবশ্যই ফাইভার এর সাথে পরিচিত হয়ে থাকবেন। ফাইভারে মূলত একজন ফ্রিল্যান্সার তার কাজের পোর্টফোলিও ও তথ্য পোস্ট করেন, যাকে গিগ বলা হয়।
এই গিগ ক্লায়েন্টরা যদি পছন্দ করেন, তাহলে উক্ত ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করবেন। এরপর কাজ শেষে পারিশ্রমিক ফাইভার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে, যা একাধিক মাধ্যমে টাকা আকারে তোলা যাবে। বাংলাদেশের অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করেন, তাই কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে বা কোনো সমস্যা হলে বিভিন্ন হেল্প গ্রুপ বা ইউটিউব থেকে সমাধান পেয়ে যাবেন।
আপওয়ার্ক
আপওয়ার্ক আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম। আপওয়ার্কে কাজ পাওয়ার নিয়ম ফাইভার এর বিপরীত বলা চলে। আপওয়ার্কে কোনো ক্লায়েন্ট তার যে কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সার প্রয়োজন তা জানিয়ে পোস্ট করবেন। এরপর ফ্রিল্যান্সারগণ আপওয়ার্ক এর ক্রেডিট ব্যবহার করে কাজের জন্য বিড করতে পারেন। ক্রেডিট ভিত্তিক বিডিং সিস্টেম থাকার কারণে অনেকে আপওয়ার্ক এর পরিবর্তে ফাইভার অধিক পছন্দ করেন।
ফ্রিল্যান্সার
Freelancer.com ওয়েবসাইটটিকে নতুন করে পরিচয় দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্ল্যাটফর্মে যেকোনো ধরনের ফ্রিল্যান্সার কাজের খোঁজ করতে পারেন। এই ওয়েবসাইটটিও আপওয়ার্ক এর মত কাজ করে, অর্থাৎ বিডিং ভিত্তিক প্রক্রিয়াতে এই ওয়েবসাইট কাজ করে৷ আপনার প্রোফাইলের উপর ভিত্তি করে অন্যের পোস্ট করা কাজে বিড করতে পারবেন। বিড করার পর ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারকে যাচাই করে কাজ প্রদান করবেন। আপওয়ার্ক এর মত এই ওয়েবসাইটেও মেম্বারশিপ প্ল্যান রয়েছে। অর্থাৎ আপওয়ার্ক ও ফ্রিল্যান্সার.কম প্রায় একই নিয়ম কাজ করে।
পিপল পার আওয়ার
২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, পিপল পার আওয়ার হতে পারে যেকোনো ধরনের ফ্রিল্যান্সারের জন্য কাজের যোগানদার। এই প্ল্যাটফর্মটিকে ফাইভার ও আপওয়ার্ক এর সংমিশ্রণ ভাবতে পারেন। ফাইভার এর মত গিগস্বরুপ “অফার” পোস্ট করতে পারেন ফ্রিল্যান্সার, আবার ক্লায়েন্ট তার কাজ পোস্ট করলে ফ্রিল্যন্সারগণ আপওয়ার্ক এর মত বিড করতে পারবেন “প্রোপোজাল” অপশন এর মাধ্যমে। অর্থাৎ কাজ পাওয়ার সকল প্রকার সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন এই প্ল্যাটফর্মটিতে।
কাজখুঁজি
বাংলাটেক এর নিয়মিত পাঠক হলে হয়ত বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কাজখুঁজি এর নাম শুনে থাকবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর দেশব্যাপী জনপ্রিয়তার অংশ হিসেবে সম্প্রতি দেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই সাইট এর যাত্রা শুরু হয়।
অন্য দশটি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম এর মত হলেও কাজখুঁজি ওয়েবসাইটে কাজ করার কিছু অসাধারণ সুবিধা রয়েছে। প্রথমত দেশি ওয়েবসাইট হওয়ায় বায়ারগণ বাংলাদেশী, যার ফলে তাদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে ইংরেজি জানতে হচ্ছেনা যা আপওয়ার্ক বা ফাইভার এর মত ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।
আবার পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে সকল ধরনের সুবিধা পাবেন একজন ফ্রিল্যান্সার। পেপাল, পেওনিয়ার, ইত্যাদি বিদেশি সেবার অ্যাকসেস না থাকায় অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন না। কাজখুঁজি ডট কমে সে সমস্যা থাকছেনা। কাজের টাকা তুলতে পারবেন বিকাশ, নগদ, রকেট, ইত্যাদি দেশী মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে।
কাজখুঁজি ওয়েবসাইটটি অনেকটা ফাইভার এর মত কাজ করে। একজন ফ্রিল্যান্সার তার কাজের গিগ পোস্ট করবেন ও বায়ারগণ তাদের সুবিধামত গিগ বেছে নিবেন। আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর যাত্রা শুরু করতে পারেন দেশী প্ল্যাটফর্ম কাজখুঁজি ডট কম এর হাত ধরে।
গুরু ডট কম
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া গুর ডট কম প্রথমদিকের ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে একটি যা এখনো একটিভ রয়েছে। মূলত কাস্টমারগণ এখানে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে থাকেন। এই ওয়েবসাইটের একটি ইউনিক ফিচার হলো একাধিক ফ্রিল্যান্সার একই প্রজেক্টে কাজ করার জন্য হায়ার করতে পারেন কাস্টমার। একাধিক পেমেন্ট মেথড এর কল্যাণে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বেশ ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে গুরু ডট কম (guru.com)।
বাংলাদেশি হিসেবে আপনার পছন্দের ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কোনটি? আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে।
০ টি মন্তব্য