সার্চ করুন সাবধানে
Google-এ কিছু খুঁজতে গেলেও ডিভাইস গ্রাস করে নিতে পারে নিটোকোড এই ভাইরাস
সাইবার নিরাপত্তা যতই আঁটোসাঁটো করার চেষ্টা করা হচ্ছে, হ্যাকাররা কোনও না কোনও রাস্তা যেন ঠিক খুঁজে নিচ্ছে অপকর্মে। সাইবার দুনিয়ায় নিরাপত্তা যেন বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। আবারও বড় ধাক্কা অনলাইন নিরাপত্তায়। এক ক্রিপ্টো মাইনিং ম্যালওয়্যার সবার অজান্তে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার কমপিউটারে। অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হল, এই ভাইরাসটি আসলে ছিল গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপের রূপে। চেক পয়েন্ট রিসার্চ (সিপিআর) এর এক সমীক্ষা অনুসারে, নিটোকোড নামের এই ম্যালওয়্যার তুরস্কের একটি সংস্থা গুগল ট্রান্সলেটের একটি ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনের মতো করে তৈরি করেছে।
যেহেতু Google এখনও তাদের অনুবাদ পরিষেবার জন্য কোনও আলাদা অ্যাপ তৈরি করেনি, সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে তুরস্কের এই সংস্থা। আর অনুবাদ করার জন্য অনেক ব্যবহারকারী না বুঝেই অ্যাপের আড়ালে এই ম্যালওয়্যার ডাউনলোড করেছেন নিজেদের কমপিউটারে।
অ্যাপটি একবার ডাউনলোড হয়ে গেলে, সংক্রামিত ডিভাইসে ক্রিপ্টো মাইনিং এর এক বড় অপারেশন তৈরি করে নেয়। প্রথমে ভাইরাসটি সিডিউল টাস্ক মেকানিজমের মাধ্যমে কম্পিউটারে নিজেকে ইনস্টল করে নেয়। তারপর এই ভয়ঙ্কর ম্যালওয়্যার Monero ক্রিপ্টোকারেন্সি খোঁজার খনির বানিয়ে ফেলে সংক্রমিত ডিভাইসে। সংক্রমিত কম্পিউটারে প্রবেশের অনুমতি পেয়ে গেলেই নিয়ন্ত্রণের পুরো অনুমতি নিজে থেকেই নিয়ে নেয়। কম্পিউটার ব্যবহারকারী কিন্তু তার কম্পিউটারের এই অবাঞ্ছিত অতিথি বা তার ব্যবহার সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে না। পরে পুরো সিস্টেমকেই ধ্বংস করে দেয় ম্যালওয়্যারটা ।
গুগল ট্রান্সলেটের বদলে মিলছে ভাইরাস -
CPR রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে ম্যালওয়্যারটি কার্যকর হওয়ার পরে, C&C সার্ভারের সঙ্গে একটা সংযোগ স্থাপন করে এবং XMRig ক্রিপ্টো মাইনার কনফিগার করার পরে ক্রিপ্টো খনন শুরু করে দেয়। অবাক হলেও বাস্তব যে সফটওয়্যারটি গুগলে পাওয়াও যায় সহজে। “Google Translate Desktop download” সার্চ করলেই এই সফটওয়্যার রূপী ম্যালওয়্যার সামনে আসে। স্পষ্টতই সফটওয়্যারে ট্রোজান ভাইরাস দেওয়া আছে ।
১১টি দেশের কম্পিউটারে হয়েছে হামলা –
মনে করা হচ্ছে যে এই ভয়ঙ্কর নিটোকোড ম্যালওয়্যারটি অন্তত ১১টি দেশের কম্পিউটারে বাসা বেঁধে রয়েছে। ম্যালওয়্যারটির হামলা শুরু হয় ২০১৯ সাল থেকে। তখন থেকেই এই জঘন্য কাজে নেমেছে নিটোকোড ম্যালওয়্যার। ট্যুইটারের মাধ্যমে CPR ক্রিপ্টো মাইনিং প্রচারাভিযানের বিষয়ে সতর্ক করতে নিয়মিত ট্যুইট করতে থাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে সাইবার হামলা –
প্রতিদিনই কোনও না কোনও ভাইরাস আক্রমণের খবর আসতে থাকে টেক দুনিয়ায়। গুগল প্লে স্টোর থেকে ভাইরাসযুক্ত অ্যাপগুলি সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া অনেক দিন থেকেই চালু আছে। Zscaler Threatlabz-এর মতে, এই বছরের শুরুতে জোকার ম্যালওয়্যার গুগল প্লে স্টোরের ৫০টা অ্যাপকে সংক্রমিত করেছিল। গুগলকে প্লে স্টোর থেকে সেই সব অ্যাপ সরিয়ে ফেলতে হয়েছিল। Zscaler টিমের মতে, জোকার, ফেসস্টেলার এবং কুপার ম্যালওয়্যার অ্যাপের মাধ্যমে জনগণের ডিভাইসে ছড়িয়ে পড়েছিল।
০ টি মন্তব্য