ওয়েব নিয়ন্ত্রণে কে হবে জয়ী?
বিশ বছর আগে ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর সুইজারল্যান্ডে প্রথম ওয়েব সার্ভার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব তথা www চালু করা হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব চালু হওয়ার বিশ বছর পর এটি এখন বিশ্বের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আমরা সবাই জানি, ওয়েব ২.০ ইন্টারেকটিভ ওয়েব যার মাধ্যমে আমরা শুধু তথ্যই পড়তে পারি না বরং এতে তথ্য কনট্রিবিউটও করতে পারি। বর্তমানে ওয়েব ২.০-কে আরও ব্যাপক-বিস্তৃত ও কর্মোপযোগী করতে ওয়েব ৩.০-এর কথা ভাবা হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২৫০ মিলিয়নের বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। গড়ে প্রতি মিনিটে বিশ্বে ১০০ ওয়েবসাইট ডেভেলপ হচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের যাত্রা শুরু হয় টিম বার্নার্স লি-এর হাত ধরে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব প্রথমে কাজ করত শুধু ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ (CERN)-এর কমপিউটার সিস্টেম Next-এ। রার্নার্স লি ১৯৮৯ সালে তৈরি করেন সার্ভার মডেল, ব্রাউজার এবং হাইপারটেক্স লিঙ্ক। তিনি অফার করেন ইন্টারনেটে এফটিপি সার্ভার টেকনোলজি প্রয়োগের। পরে অন্যান্য কমপিউটার বিজ্ঞানী উৎসাহিত হন সব ধরনের কমপিউটার সিস্টেমের জন্য ব্রাউজার রচনায়। এ সময় তিনটি বিষয় ছিল ধ্রুবক; যেমন-এইচটিটিপি প্রটোকল, ইউআরএল কনসেপ্ট এবং ওয়েবপেজ তৈরি করার জন্য ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে এইচটিএমএলের ব্যবহার। গত বিশ বছরে ওয়ার্ল্ড ওয়াইভ ওয়েব টেকনোলজির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে ঠিকই, তবে এই টেকনোলজির বেসিক এখনও একই আছে। যেমন টিম বার্নার্সের ডেভেলপ করা প্রথম ওয়েব সার্ভার ছিল Next। এখন বিশাল আকারের লাখ লাখ ওয়েব সার্ভার রয়েছে, যা ডাটা সেন্টারের সাথে ইন্টারকানেকটেড। টিম বার্নার্স লি তার প্রথম ওয়েব ব্রাউজারের নাম রাখেন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, যা ছিল ভিজ্যুয়ালি টেক্সটভিত্তিক, তবে সর্বশেষ প্রযুক্তির ওয়েব ব্রাউজার সম্পূর্ণ এইচডি ভিডিও এবং থ্রিডি গেম এনাবল। ১৯৯৬ সালে টিভি ব্রডকাস্টার ফক্সের সিম্পসন (Simpson) হোমপেজকে ফিউচার স্পালাস এনিমেটরের সাথে এনিমেটেড করে। বর্তমানে এর উত্তরসূরি ফ্ল্যাশ ১০-এর ওয়েবপেজে থ্রিডি ইফেক্ট দিতে সক্ষম।
টিম বার্নার্স লি- প্রথম ওয়েবপেজ ডেভেলপ করার পর ব্রাউজিংয়ের মূল এক্সপেরিয়েন্স হলো এইচটিএমএলভিত্তিক পেজনির্ভর, যা এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহার হলেও প্রয়োজনের তাগিদে তা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এই পরিবর্তনের ধারায় ইতোমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে যা ওয়েবকেন্দ্রিক; যেমন-ব্যান্ডউইডথ অনেক বেড়ে গেছে, বেড়েছে সমৃদ্ধশালী মিডিয়ার চাহিদা, ক্লাউড কমপিউটিং, ওয়্যারলেস কানেকটিভিটির সুবিধা এবং মোবাইল ডিভাইসের ব্যাপক ব্যবহার। এসব বিষয় পরবর্তী প্রজন্মের ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন তৈরির ভিত্তিস্বরূপ। ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে বিশ্বব্যাপী এদের বিস্তৃতি ঘটিয়ে বাজার দখলের জন্য ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে এক তীব্র প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া পরস্পরের প্রতিপক্ষ হলো মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যাপল ইত্যাদি।
মাইক্রোসফট, অ্যাপল এবং গুগল কমপিউটিং বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে আছে অনেক বছর ধরে। কমপিউটিং বিশ্বে এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে স্বতন্ত্র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং ক্ষেত্র। এই তিন প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয়েছে তাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কারণে। সৃজনশীল সফটওয়্যার কোম্পানি হিসেবে খ্যাত অ্যাডোবি অ্যাপস শুধু ডেস্কটপ পিসি বা ল্যাপটপে অ্যাক্সেসযোগ্য তাই নয়, বরং স্মার্টফোন, ট্যাবলেট পিসি, টিভিসহ অন্যান্য ইন্টারনেট কানেকটেড সব ডিভাইসের আচরণও অ্যাক্সেসযোগ্য।
কমপিউটিং বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারকারী তিন প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট, অ্যাপল এবং গুগলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা যুদ্ধের মঞ্চ তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যেই। যদি আপনি ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে জানতে হবে এই যুদ্ধের ক্ষেত্র সম্পর্কে, বুঝতে হবে বিরোধী পক্ষের শক্তি সম্পর্কে, এক্ষেত্রে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য আপনার শক্তি, দক্ষতা এবং টুল কেমন হবে তা যেমন জানতে হবে, তেমনি বুঝতেও হবে। এ লক্ষ্যে নিচে উল্লিখিত প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষেত্র তুলে ধরা হলো-
অ্যাডোবি এবং ফ্ল্যাশ
এখানে ওয়েবের বিশাল বাজার দখলের জন্য অন্যতম প্রধান এক প্রতিপ্রন্দ্বী অ্যাডোবি অফার করে সব দিকে পরিবেষ্টনকারী ভিশন বা লক্ষ্য যা ‘the next chapter of the web’ হিসেবে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে, ওয়েবের পরবর্তী যুগ হবে অ্যাডোবির নিয়ন্ত্রণে বা অ্যাডোবিকেন্দ্রিক। ফ্ল্যাশ টেকনোলজি এইচটিএমএল পেজে সম্পৃক্ত করেছে ব্যান্ডউইডথ ইফিসিয়েন্ট গ্রাফিক্স। অ্যাডোবির মতে, বর্তমানে ৭৫ শতাংশের বেশি ওয়েবে ভিডিও সরবরাহ করা হয় ফ্ল্যাশের মাধ্যমে এবং ৯৯ শতাংশ ইন্টারনেট সংযুক্ত ডেস্কটপ কমপিউটারে ফ্ল্যাশ কনটেন্ট দেখা যায়।
এটি অঘোষিত যে, ফ্ল্যাশ এখন প্রায় সর্বজনীন ওয়েব রানটাইমে পরিণত হতে যাচ্ছে। পাঁচ বছর আগে অ্যাডোবি ম্যাক্রোমিডিয়াকে কিনে নেয় এবং তার উন্নয়ন করে নাম দেয় ফ্ল্যাশ। ফ্ল্যাশ তৈরি করার পর তার কনটেন্ট সীমিত ছিল শুধু ফ্ল্যাশ প্রফেশনালের মধ্যে; কিন্তু এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে হোস্ট অ্যাপ্লিকেশন থেকে সরাসরি ইন্টারেকটিভ ফ্ল্যাশ কনটেন্ট ডেভেলপ করা যায়, এর সাথে এখন সম্পৃক্ত রয়েছে জনপ্রিয় দুটি প্রফেশনাল পাবলিশিং প্রোগ্রাম; যেমন-কোয়ার্ক এক্সপ্রেস এবং ইনডিজাইন। এছাড়াও রয়েছে নতুন আবির্ভূত হওয়া Flash/Flexভিত্তিক ডেভেলপার। যারা ডেভেলপ করে ওয়েবের জন্য ওয়ার্ড প্রসেসর যা বর্তমানে অ্যাডোবি অ্যাক্রোব্যাট ডটকম রেঞ্জের অনলাইন সার্ভিস হিসেবে বিবেচিত।
ব্লগস : অ্যাপল বনাম অ্যাডোবি
অ্যাপলের সিইও স্টিভ জবস নীতিগতভাবে অ্যাপল ডিভাইসে ফ্ল্যাশের উপস্থিতির বিরোধিতা করেন। অ্যাডোবির দর্শন প্লে-অ্যানিহয়্যার মতবাদকে দারুণভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে অ্যাডোবিবর রাইট-অনসে। ইন্ডাস্ট্রির পর্যবেক্ষকেরা দাবি করেন, অ্যাপলের আপোসহীন এ মনোভাব মোবাইলে প্রযুক্তি থেকে ফ্ল্যাশের সরে আসার জন্য অপরিহার্য নয়। তুলনামূলকভাবে অ্যাডোবির অবস্থান আপাতদৃষ্টিতে এখন বেশ সুদৃঢ়, যা প্রদান করে বেশিরভাগ ডিভাইসের সমর্থিত প্লাটফরম। আর এসব ডিভাইসকে সমর্থন করে ফ্ল্যাশ।
মাইক্রোসফট এবং সিলভারলাইট
ওয়েবভিত্তিক কমপিউটিং প্লাটফরম থেকে সরে এসে ক্রশ প্লাটফরম কমপিউটিংয়ে স্থানান্তর করার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হতে হয় মাইক্রোসফটকে। এক সময় মনে করা হতো, মাইক্রোসফট ম্যাক্রোমিডিয়াকে কিনে নেবে ফ্ল্যাশকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত মাইক্রোসফট বেছে নেয় এক ভিন্ন পথ এবং সৃষ্টি করে নিজের প্লেয়ার প্লাটফরম। এক্ষেত্রে মাইক্রোসফটের সমাধানের ভিত্তি হলো আধুনিক Flex স্টাইল, যা প্রোগ্রামিং এবং প্রেজেন্টেশনের মধ্যে বিভাজিত। এর মূলে রয়েছে এক্সএএমএল (XAML) তথা এক্সটেনসিবল অ্যাপ্লিকেশন মার্ক-আপ-ল্যাঙ্গুয়েজ, যা WPF (উইন্ডোজ প্রেজেন্টেশন ফাউন্ডেশন)-এ ইনস্টল থাকা যেকোনো ডিজাইনসমৃদ্ধ ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টকে এনাবল করে। যেমন-মাইক্রোসফট সম্পূর্ণ WPF-এর বৈশিষ্ট্যের হাল্কা সাবসেট তৈরি করে, যা সিলভারলাইট হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ক্রশ-প্লাটফরম, ক্রশ-ব্রাউজার, সিলভারলাইট প্লেয়ার। সি.সার্প বা ভিজ্যুয়াল বেসিক ব্যবহার করে ডেভেলপারেরা এটিকে টার্গেট করতে পারেন।
ক্রশ-প্লাটফরম ডিজাইন করা হয়েছে সর্বোচ্চ পারফরমেন্সের জন্য। এর কন্ট্রোলসমূহ ডিজাইন করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে এগুলো সহজে এবং দ্রুতগতিতে এডিট এবং স্টাইল করা যায়। ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট টুল তৈরি করা হয়েছে, যাতে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ সম্পন্ন করা যায়। সিলভারলাইটের একমাত্র শক্তি যদিও ওয়েব নয়।
অ্যাপল এবং আইওএস
ডেস্কটপের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করার পর মাইক্রোসফট ভেবেছিল সফলভাবে এরা সব প্রতিদ্বন্দ্বীর নাগালের বাইরে চলে গেছে। মাইক্রোসফটের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপল শুধু তাদের পেছনে ছিল না বরং বলা যায় পেছনে সবার শীর্ষে ছিল।
অ্যাপল ২০০১ সালে আইপড বাজারে ছাড়ার পর থেকে তা খুব তাড়াতাড়ি বাজার মাত করে এবং কোম্পানিকে সক্রিয় করে টাচস্ক্রিন ওএস এবং আইটিউন ডেভেলপ করার ক্ষেত্রে। এ দুটি ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবস্টোর। আইপডে ব্যাপক সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অ্যাপল ২০০৭ সালে ডেভেলপ করে আইফোন। এ ধারাবাহিক সফলতায় ২০১০ সালে অ্যাপল বাজারে নিয়ে আসে আইপ্যাড। তবে সমালোচকেরা একে আইফোনের ওভারসাইজ হিসেবে অভিহিত করে বাতিল করেন। তারপরও বিস্ময়করভাবে এর চাহিদা এত বেশি পরিলক্ষিত হয় যে, আইপ্যাড চালু করার এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখের বেশি বিক্রি হয় যা অ্যাপলকে ব্যাপকভাবে সফল করে তোলে। স্মার্টফোনকে সঠিকভাবে তুলে ধরার পর অ্যাপলের সামনে এক সুযোগ এসেছে যথাযথভাবে নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করা এবং ট্যাবলেট ফরম ফ্যাক্টরকে জয় করার। অনেকের মতে, এটিই হবে অ্যাপলের জন্য সেরা পথ ওয়েবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার।
গতানুগতিক ব্রাউজিং ধারা অ্যাপলের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ, তবে এ ধারা এরা এখন পাল্টাতে চাচ্ছে। ২০০৮ সালে অ্যাপল সূচনা করে এসডিকে (SDK-সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট) ম্যাক ভিত্তিককে এনাবল করার জন্য। অবজেক্টিভ সি ডেভেলপারদেরকে তৈরি করতে হচ্ছে ডেডিকেটেড অ্যাপ্লিকেশন, যা সক্ষম হবে সবচেয়ে উপযোগী IOS এনভায়রনমেন্ট এবং ইন্টারনেটভিত্তিক কানেকটিভিটি দিতে। বর্তমানে ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যেগুলো সাধারণ গেম থেকে শুরু করে মেডিক্যাল টুল পর্যন্ত সবকিছুই পরিবেষ্টন করে আছে।
গুগল এবং অ্যান্ড্রয়িড
২০০৭ সালের শেষের দিকে এক গুজব শোনা গিয়েছিল যে, গুগল জিফোন (GPhone)-নিয়ে কাজ করছে। এটি একটি স্মার্টফোন ডিজাইন, যার রয়েছে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম। এটি সম্ভবত অ্যাপলের আইফোন এবং নোকিয়ার নতুন স্মার্টফোন সিরিজের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। স্মাটফোন বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে মোবাইল ফোন সেগমেন্ট এবং ট্যাবলেট পিসি মার্কেটে। এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনে অ্যান্ড্রয়িড প্লাটফরমের অবস্থান বেশ সুদৃঢ়। ২০০৫ সালে অ্যান্ড্রয়িড নামের এক কোম্পানি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করত যা পরবর্তী সময়ে গুগলের আত্তিকরণ হয়।
গুগল অ্যান্ড্রয়িড অপারেটিং সিস্টেমের আত্মপ্রকাশ ঘটে ডেভেলপারদের জন্য এক ওপেনসোর্স প্লাটফরম হিসেবে এবং এসময় আরও আত্মপ্রকাশ করে ওপেন হ্যান্ডসেট অ্যালায়েন্স, যা গঠিত হয় মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্ত্ততকারক, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার, মোবাইল ক্যারিয়ার এবং চিপ প্রস্ত্ততকারকসহ ৩৪ সদস্যের সমন্বয়ে।
অ্যান্ড্রয়িডের সাথে ওপেন হ্যান্ডসেট অ্যালায়েন্সের জোট মূলত সফটওয়্যার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক জোট। এই ব্যবসায়িক জোটে রয়েছে মোট ৮০টি প্রতিষ্ঠান, যাদের লক্ষ্য এক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়িডকে পাইওনিয়ার করা এবং মোবাইল ডিভাইসের জন্য ওপেন স্ট্যান্ডার্ড করা। এর অর্থ হচ্ছে ওপেনসোর্স প্লাটফরম হিসেবে অ্যান্ড্রয়িডকে যাতে মাল্টিপল মোবাইল ফোন প্রস্ত্ততকারক তাদের হ্যান্ডসেট ও হার্ডওয়্যার উপযোগী করে মডিফাই ও টোয়েক করতে পারে তার ব্যবস্থা করা। এর ফলে মোবাইল ফোন মার্কেটে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়িডের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। অ্যান্ড্রয়িড প্লাটফরমের কম্প্যাটিবিলিট হলো বিভিন্ন চিপসেটে বিভিন্ন হার্ডওয়্যার রান করানোর ব্যবস্থাকে নমনীয়ভাবে আরোপ করা।
অ্যান্ড্রয়িড বিশ্বের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে; যেমন-স্যোসাল নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে ওয়েবব্রাউজিং অ্যাপ্লিকেশন ডাইনলোড করা, ই-মেইল বিনিময় পর্যন্ত সব কিছুই।
কে হবে বিজয়ী
পরবর্তী প্রজন্মের ওয়েব কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সেই যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া প্রধান প্রধান প্রতিপক্ষ নিয়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে ডিজাইনার/ডেভেলপারদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কোন প্লাটফরম বাজার দখল করবে আর কোন প্লাটফরম বাজার হারাবে, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা। বাজার দখলের এ যুদ্ধে যে-ই জয়ী হোক না কেনো এতে ক্রেতাসাধারণ তথা ভোক্তারা যে মানসম্মত পণ্য ও সেবা পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং বাজার দখলের এ যুদ্ধকে আমরা সবাই স্বাগত জানাই।
০ টি মন্তব্য