সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের লেস্টার শহরের ১০ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের নেটমাধ্যমে অভ্যস্ততার মাত্রা জানতে একটি গবেষণা চালিয়েছে এনএইচএস। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থী সারা দিনে অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। তার মধ্যে রাতে ঘুমানোর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢোকে ৬৬ শতাংশ এবং মাঝরাত পর্যন্ত নেটমাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ শতাংশ।
বিশ্বজুড়েই শিশুদের মধ্যে বাড়ছে নেটমাধ্যমের প্রতি অতিমাত্রায় ঝোঁক; কিন্তু এই প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে শিশুদের শরীর-মনে কী পরিমাণ সুদূরপ্রসারি প্রভাব ফেলছে, তা উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
এখানেই শেষ নয়, সমীক্ষায় জানা গেছে আরও কিছু তথ্য। লেস্টারের ১০ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় প্রায় ৯০ শতাংশ ভিডিও অ্যাপ টিকটিক ব্যবহার করে। এছাড়া ৮৪ শতাংশ স্ন্যাপচ্যাট, ৪৪ শতাংশ ইউটিউব এবং ৫৭ শতাংশ ব্যবহার করে ইনস্টাগ্রাম।
আরও জানা গেছে, লেস্টারের শতকরা ৮৯ ভাগ শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিজস্ব স্মার্টফোন আছে।
নেটমাধ্যমে শিশুদের অতিমাত্রায় আসক্তি তাদের কী পরিমাণ ক্ষতি করছে সে সম্পর্কে ইংল্যান্ডের ডি মন্টফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও এই গবেষণার পরিচালক ড. জন শ’ বলেন, ১০-১২ বছর বয়সিদের যেখানে ৯-১২ ঘণ্টা ঘুমানোর কথা, রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কারণে ৭-৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম হচ্ছে না। এর ফলে শরীর, মন, এবং মস্তিষ্ক— সবখানেই প্রভাব পড়ছে।
মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া নীল রশ্মিতে ক্ষতি হচ্ছে চোখেরও। ফলে কম বয়সেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে পড়ছে শিশুদের।
ড. জন শ’ বলেন, ‘টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামের রঙিন দুনিয়ায় ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে শিশুরা। যে বয়েসে খেলাধুলা করার কথা, সেই বয়সে নিজেদের এমন বয়সে মোবাইলে নিজেদের জগৎ গড়ে নেওয়াটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ—দুই-ই এতে ব্যাহত হচ্ছে।’
‘পর্যাপ্ত ঘুম সামগ্রিক সুস্থতার অন্যতম ভিত্তি। সব বয়সের মানুষের সুস্থ থাকার চাবিকাঠি লুকিয়ে থাকে ঘুমে। বয়ঃসন্ধির সময়ে এমনিতে শারীরিক নানা পরিবর্তন আসে। সেই সময় এই অনিয়ম করা হলে ভবিষ্যতে তা যে কোনো বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে,’ ডেইলি মেইলকে বলেন ড. জন শ’।
০ টি মন্তব্য