https://powerinai.com/

ট্রিপস এন্ড ট্রিকস

ছবিতে দিন প্রফেশনাল লুক

ছবিতে দিন প্রফেশনাল লুক ছবিতে দিন প্রফেশনাল লুক
 

ছবিতে দিন প্রফেশনাল লুক


ফটোগ্রাফির এখন অনেক কারুকাজই কমপিউটারে করা সম্ভব হচ্ছে৷ একটি ডিজিটাল ক্যামেরা থাকলে আপনিও হতে পারেন সুনিপুণ ফটোগ্রাফার৷ যারা ফটোগ্রাফি চর্চা করে থাকেন, তারা ডেপথ অব ফিল্ড-এর কারুকাজ করে একটি ছবিকে অনেক অর্থবহ করে তুলতে পারেন৷ কিন্তু এর জন্য দরকার হয় এসএলআর ক্যামেরা, যা দিয়ে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফাররা ছবি তুলে থাকেন৷ এই ক্যামেরা দামী এবং যার ব্যবহার কষ্টসাধ্য৷ কিন্তু এই কাজগুলো সাধারণ ক্যামেরায় তোলা ছবিটিতে করা সম্ভব৷ অ্যাডোবি ফটোশপে ছবিটিকে এডিট করে সহজেই একে এক্সক্লুসিভ লুক দিতে পারেন৷


গত পর্বের লেখার পর অনেকেই প্যানিং শট সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন৷ তার উত্তরে বলছি, বিভিন্ন রেসিং কার-এর ছবি যখন দেখেন তার মাঝে এমন কিছু ছবি থাকে যেগুলোতে গাড়িটাকে স্থির দেখা যায় এবং আশপাশের প্রকৃতি বা বস্তু চলমান বস্তুর মতো ঘোলাটে আসে৷ অর্থাৎ চলমান বস্তুকে স্থির রেখে অন্য সব বস্তুকে চলমানের মতো করা হয়ে থাকে৷ এসব ছবিকেই প্যানিং শট বলা হয়৷ যাদের ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার তথা আইএস লেন্সসহ ক্যামেরা আছে, তারা এই ছবিটিকে প্রাকৃতিকভাবেই তুলতে পারেন৷ কিন্তু পয়েন্ট অ্যান্ড শট ক্যামেরায় ছবিটি এভাবে আসবে না৷ হয় পুরো দৃশ্যটাই একেবারে স্থির আসবে অথবা চলমান গাড়িটি ঘোলা আসবে এবং অন্যান্য বস্তু স্থির আসবে৷ যে ছবিতে গাড়ি এবং অন্যান্য বস্তু স্থির এসেছে ইচ্ছে করলে সেগুলো পিসিতে অ্যাডোবি ফটোশপের মাধ্যমে প্যানিং শটের রূপ দিতে পারেন নিচে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে৷


অনেক মোশন ছবি দেখে যে ভুলটা সবার আগে চোখে পড়ে তা হলো, ভুল বস্তুকে ফোকাস করা অথবা ব্যাপকভাবে মোশনকে উপস্থাপন করা৷ একটি ছবিকে জীবন দেয়ার জন্য যেরকম মোশনের দরকার আছে, তেমনি অতিরিক্ত মোশন একটি ছবির ভাবার্থকে নষ্ট করে দিতে পারে৷ এখানে এই দুটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ যারা একেবারে নতুন তারা বিভিন্নভাবে এ কাজটি করতে পারেন৷ পুরো ছবিটিকে মোশন ব্লার করলে, তা দেখতে কখনোই ভালো হবে না৷ কারণ, ছবির বিষয়বস্তু কিছুই বুঝা সম্ভব হবে না৷ আসলে একটি ছবিকে গতিময়তা দিতে হলে প্রথমেই ঠিক করে নিতে হবে আপনার ফোকাস কোথায় হবে- গাড়িটিকে (ফোরগ্রাউন্ড) নাকি প্রকৃতিকে (ব্যাকগ্রাউন্ড)৷ আপনি যদি গাড়িটিকে ফোকাসে রাখেন তবে চিত্র-১-এর মতো ব্যাকগ্রাউন্ড চলমান আসবে (যদি গাড়ির স্টিয়ারিং ঘুরতে থাকে তবে ব্যাকগ্রাউন্ডও রেডিয়াস অনুযায়ী চলমান হবে, যা পরে আলোচনা করা হবে)৷ যদি ব্যাকগ্রাউন্ড ফোকাস করেন, তাহলে চিত্র-২-এর মতো গাড়িটিকে চলমান পাওয়া যাবে৷


এটি করার জন্য ছবিটিকে অ্যাডোবি ফটোশপে ওপেন করুন৷ ছবির কন্ট্রাস্ট বাড়িয়ে নিন৷ ফলে ছবির গ্লসিনেস বাড়বে৷ এবার গাড়িটিকে Polygonal lasso টুল দিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে Crop out করে নিন৷ খেয়াল করে থাকবেন, সত্যিকারের চলমান বস্তুটির কিনারাগুলো কিছুটা সেমি-ট্রান্সপারেন্ট অবস্থায় আসে৷ এটি সম্পূর্ণরূপে করতে আমাদের কিনারাগুলোতে ক্লোন স্ট্যাম্প ব্যবহার দরকার হবে৷ মনে রাখবেন, গাড়ির গতি যেদিকে সেদিকে গাড়ির কিছু অংশ ফেইড আউট হবে এবং পেছনের দিকে ব্যাকগ্রাউন্ড গাড়ির ওপর ফেইড আউট হবে৷ এটি করতে ক্লোন স্ট্যাম্পটির অপসিটি ৭৫%-এ কমিয়ে আনতে হবে৷ এটি সাবধানে করতে হবে৷ কারণ, গাড়িটি আস্তে চলছে তা বুঝাতে হবে৷ তাই এটি ২০-২৫ পিক্সেল করাটাই নিরাপদ৷ খেয়াল রাখবেন, গাড়িটি যেদিকে চলমান সেদিকেই যেন ব্লারটা করা হয়৷ এবার যে লেয়ারে গাড়িটি রয়েছে সেটি সিলেক্ট করুন৷ এবার Filter -> Blur -> Motion করুন৷ এর Raduus 6 পিক্সেল করুন৷ এর বেশি করলে খারাপ দেখাতে পারে৷ Distance 80 Pixel রাখতে পারেন৷ এখন দেখুন, মনে হচ্ছে যেনো গাড়িটি ছুটে বেরিয়ে যেতে চাইছে? এটিকে অনেক জীবন্ত মনে হচ্ছে এখন৷


এখন যদি গাড়িটিকে ফোকাসে রেখে ব্যাকগ্রাউন্ড চলমান করতে চান, তবে আপনাকে ঠিক আগের মতো Polygonal lasso Tool ব্যবহার করে গাড়ি সিলেক্ট করতে হবে৷ অনেক সময় সিলেকশনটি ঠিক মতো করা সম্ভব হয়ে উঠেনা৷ দেখা যায় কোন অংশে কোনা বের হয়ে গেছে, কোন অংশ সিলেকশনের ভেতরে চলে এসেছে যার আসার কথা নয়৷ এটিকে মসৃণ করতে feathering করে নিতে পারেন৷ এটি করতে Slect -> teathering -এ ক্লিক করুন৷ Feather সিলেকশনটিকে মসৃণ করে দিবে৷


এবার Selection -কে Inverse করতে হবে অর্থাৎ গাড়ি ছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড সিলেক্ট করতে হলে select -> Inverse - এ ক্লিক করুন৷ দেখবেন গাড়ি ছাড়া বাকিটুকু সিলেক্ট হয়েছে৷ এবার আগের মতো Motion Blur Select করুন৷ এবার Radius 8 থেকে 10 - এর মধ্যে রাখতে পারেন৷ আর Distance বাড়িয়ে 120 বা 130 করে দেখতে পারেন যা চিত্র ৩-এর মতো দেখাবে৷ প্রকৃতপক্ষে Distanceটি আপনার ছবি অনুযায়ী নির্ধারণ করে নিন৷ আপনার গাড়িটি কত বেশি গতীময় তা এই Distance -এর উপর নির্ভর করবে৷ এবং Radius হলো গতীময়তার দিক নির্দেশনা দেবে, কোন দিক থেকে গাড়ীটি কোন Angle -এ আসছে তা বোঝা যাবে৷ দেখুন তো এবার ছবিটি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের তোলা কোনো প্যানিং শট মনে হচ্ছে কি না? এখন ছবিটির ফিনিশিং দেবার পালা৷


ছবির যে যে অংশ Lasso Tool দিয়ে সিলেক্ট করতে গিয়ে অমসৃণ রয়ে গেছে, সেসব জায়গায় ইচ্ছে করলে Dodge tool ব্যবহার করে মসৃণ করে দেয়া সম্ভব হবে৷ এবার ছবিটিকে একটু কালার ব্যালেন্স দিয়ে সঠিক এক্সপোজারে নিয়ে আসুন৷ এটি নিজের মনমতো করে করুন৷ ব্যাস তৈরি হয়ে গেল আপনার পিসিতে কারুকাজ করা প্রফেশনাল মানের ছবি৷


নিচে আরেকটি ব্লার ইফেক্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ আর তা হলো Radial Blur ৷ এটি Radius অনুযায়ী ছবিটি ব্লার করে দেয়৷ চিত্র-৪-এর দিকে লক্ষ করুন৷ পূর্ববর্তী পৃষ্ঠার স্থির ছবিটিতে পাশের ছবির মতো আরো প্রাণবন্ত, আরো গতিময়তা এনে দেয়া সম্ভব Radial Blur effect -এর মাধ্যমে৷ আগেই বলা হয়েছে, গাড়ির স্টিয়ারিং যদি ঘুরানো অবস্থায় থাকে তাহলে Tadial Blur effcet -এর প্রয়োজন পড়বে৷ ছবিটির দিকে খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্পাইরাল হয়ে এসেছে যার কারণে মনে হচ্ছে মোটরসাইকেল আরোহী মোটরসাইকেল নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটে আসছে আপনারই দিকে৷ এই কাজটি অ্যাডোবি ফটোশপে করতে হলে ছবিটির মাঝখান থেকে প্রথমে মোটরসাইকেলটি আরোহীসহ সিলেক্ট করুন৷ এটি Polygoral lasso tool দিয়ে আগের মতো করে সিলেক্ট করে নিন৷ এবার ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সিলেক্ট করুন৷ অর্থাৎ Inverse Selection -এ যান৷ ব্যাকগ্রাউন্ড সঠিকভাবে সিলেক্টেড হলে এবার Filter -> Blur -> Radial Blur -এ ক্লিক করলে চিত্র-৫-এর মতো একটি বক্স আসবে৷ যে জায়গায় সেন্টার রাখতে চান, তার মাঝখানের গ্রাফটি ড্র্যাগ করে ঠিক করে নিন৷ এবং ব্লার মেথডের Radio Button -এ Zoom সিলেক্ট করে নিন৷ এবং Quality -র ঘরে Good রাখতে পারেন৷ এবার ছবিতে যতটুকু Radial চান, সে অনুযায়ী Amount বারকে এদিক-ওদিক করে অর্থাৎ Amount কমিয়ে-বাড়িয়ে যেটাকে সর্বোত্তম মনে হয়, সেই পরিমাণ রাখুন৷ এই ছবির জন্য ৩৭ ধরা হয়েছে৷ ইচ্ছে করলে আরো বেশি নিয়ে কাজ করে দেখতে পারেন৷ এই পরিবর্তনের সাথে সাথে ছবিতে Preview দেখতে পাবেন কতটুকু আরো প্রয়োজন৷ Radial Blur -এর কাজ শেষ করে আবার ছবির Edge গুলো Dodge tool দিয়ে মসৃণ করে নিন৷ তাহলে এটিকে আর বিন্দুমাত্র কৃত্রিম মনে হবে না৷ একটি সুনিপুণ ছবি উপস্থাপন করে সহজেই কাছের মানুষকে চমকে দিতে পারেন আপনার সাধারণ ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা অসাধারণ প্রফেশনাল মানের ছবি তৈরি করার মাধ্যমে৷


আগামী সংখ্যায় একটি পোর্ট্রেট ছবিকে কী করে পাথরের মূর্তির রূপ দিতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে৷ নিজের একটি পাথরের স্ট্যাচু তৈরি করা বাস্তবে কঠিন মনে হলেও আপনার ব্যক্তিগত কমপিউটারে ঘরে বসেই তা বানাতে পারেন খুব সহজেই৷ আজকাল গ্রাফিক্সের কারুকাজের বদৌলতে অনেক অবাস্তব কাজ কমপিউটারের মাধ্যমে জীবন্তভাবে উপস্থাপন করা যায় সহজেই৷ আবার কখনো জীবন্ত মানুষের ছবিকে পাথরের মূর্তি বানিয়ে দেয়া যায় নিমিষেই৷ এরকম আরো কিছু মজার রোমাঞ্চকর গ্রাফিক্সের কারুকাজ শিখতে চাইলে চোখ রাখুন প্রতিমাসে কমপিউটার জগৎ-এর গ্রাফিক্সের পাতায়৷


লক্ষণীয় :


যারা গ্রাফিক্স নিয়ে কোনো সমস্যায় আছেন অর্থাৎ যারা গ্রাফিক্যালি কোনো কাজ করতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না, তারা নিচের মেইলে অথবা কমপিউটার জগৎ-এর ঠিকানায় চিঠি পাঠাতে পারেন৷ আপনার সমস্যার পূর্ণ সমাধান দেয়ার চেষ্টা করা হবে৷








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।