বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ২০০৬ থেকে স্বাধীন ফোরাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং প্রথম জাতীয় আইজিএফ উদ্যোগ হিসাবে আবির্ভূত হয় যা জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সাথে কাজ করছে। জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স বিষয়ক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম একটি মাল্টি-স্টেকহোল্ডার প্ল্যাটফর্ম যা ইন্টারনেটের উন্নয়নে জন্য সরকারের সাথে অধিপরামর্শ ছাড়াও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বার্ষিক সভাগুলোতে কিভাবে বিভিন্ন তথ্য বিনিময় করা যায় এবং ভালো অনুশীলনগুলো নিয়ে কিভাবে সবাইকে জানানো যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এর যৌথ উদ্যোগে ১৮তম ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ২০২৩ আয়োজন করা হয় ইউএনআইজিএফ, দি এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইন্টারনেট সোসাইটি ফাউন্ডেশন ও গুগল এর সহযোগিতায়। ৮টি অধিবেশনে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার থেকে প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণকারী এই ফোরামে অংশ করেন।
গত ২৩ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁও বিটিআরসি ভবনে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার-এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব জনাব কে এম আবদুস সালাম।
তিনদিনব্যাপী সেমিনারে মোট ৮টি সেশনে প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিটিআরসির কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করবেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে বাংলাদেশ বর্তমানে যে অবস্থানে এসেছে তা সারা বিশ্বের জন্য রোল মডেল।
দেশের তরুণ প্রজন্ম আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মেরুদন্ড। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ টুজি নেটওয়ার্কের যুগে প্রবেশের পর গত ২৬ বছরে দেশের প্রায় শতভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্ক কাভারেজের আওতায় এসেছে। বিটিআরসি কর্তৃক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের জন্য ‘এক দেশ এক রেট’ সেবা চালু হওয়ার কারণে শহর ও গ্রামের মধ্যে ইন্টারনেটের দামের বৈষম্য হ্রাস পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল ভোগ করতে হলে প্রতিটি নাগরিককে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাতে গবেষণা ও উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণের পাশাপাশি সকলের জন্য স্মার্ট ডিভাইসের সহজলভ্যতাও নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারায় ইন্টারনেট অপরিহার্য হয়ে উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়নে বিটিআরসি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সম্মানীত অতিথি হিসেবে জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব জনাব কে.এম আবদুস সালাম বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশের যে যাত্রা শুরু হয়, তার সুফল দেশের সকল মানুষের নিকট পৌঁছে গেছে। গত ১০ বছরে ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে রূপকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আ হ ম বজলুর রহমান এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌঃ মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌঃ শেখ রিয়াজ আহমেদ ও অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের এর মহাসচিব জনাব মোহাম্মদ আবদুল হক অনু, মতামতভিত্তিক নিউজ পোর্টাল ভিউস বাংলাদেশ এর সম্পাদক জনাব রাশেদ মেহেদী, এশিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর’স বাংলাদেশ এর মহাসচিব লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার।
উক্ত সেশনে বক্তব্য প্রদান করেন বিটিআরসি’র লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, বিটিআরসি’র সিস্টেমস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগে. জেনা. মো. খলিল-উর-রহমান, দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক জনাব মাঈনুল আলম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব খায়ের মাহমুদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শাহ আলম চৌধুরী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. জুলকারিন জাহাঙ্গীর, আর্টিকেল-১৯ দক্ষিণ এশিয়া এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রুমকী ফারহানা ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশের সকল মানুষকে কানেক্টিভিটির আওতায় নিয়ে আসতে এবং ডিজিটাল রূপান্তর এর সুফল জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে দেশের অধিকাংশ উপজেলাকে উচ্চগতির ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আলোচনায় নেটওয়ার্ক কাভারেজ, নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট, স্মার্ট ডিভাইস এবং ডাটামূল্যের সহজলভ্যতা, ডিজিটাল অবকাঠামো বিনির্মাণের ওপর গুরুত্বরোপ করেন বক্তারা।
টেকসই ইন্টারনেট সুবিধা, ইন্টারনেটের অর্থবহ ব্যবহার এবং এ খাতে গবেষণা অত্যন্ত জরুরি বলেও মতামত প্রদান করেন তারা। “ইন্টারনেট স্মার্ট বাংলাদেশে মানবাধিকারে পরিণত হচ্ছে শীর্ষক একটি অধিবেশন, জনাব খায়ের মাহমুদ; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ড. জনাব মাহমুদ তার মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন যে ইন্টারনেট ব্যবহার করা আজকাল মানবাধিকার এবং অনেক দেশে মানবাধিকারে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের এই অধিকার সীমিত করা উচিত নয়। অনেক দেশ এটিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং নতুন আইন অন্তর্ভুক্ত করেছে।
অধিবেশনে দুইজন প্যানেল বক্তা বক্তব্য রাখেন। মিসেস রুমকি ফারহানা, সিনিয়র গ্রোগ্রাম অফিসার, আর্টিকেল ১৯ সাউথ এশিয়া এবং ড. জুলকারিন জাহাঙ্গীর, ডিরেক্টর, এটুআই ও সহকারী অধ্যাপক, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। মিসেস রুমকি উল্লেখ করেন যে আমাদের সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমর্থন, প্রতিবাদ এবং সুরক্ষার জন্য তথ্য প্রয়োজন। ইন্টারনেট ছাড়া এখন তা সম্ভব নয়। সবার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার করা জরুরি।
ডঃ জুলকারীন তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, আমরা যখন ইন্টারনেটের অধিকার বলি, তখন এর মানে কী? এটা কি শুধুমাত্র সবা পেতে বা তথ্য/ডেটা অ্যাক্সেস করার জন্য? নাকি মানুষকে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের আওতায় আনবেন? আমাদের একটি যৌক্তিক ন্যায্যতা থাকা উচিত, যা গোষ্ঠী থেকে গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় থকে সম্প্রদায়কে আলাদা করতে পারে।
সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক জনাব মাঈনুল আলম। জনাব আলম তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, ইন্টারনেট ছাড়া আমরা তথ্য তৈরি করার মতো অবস্থায় নেই। সমস্ত সংবাদ মাধ্যম, প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। কখনও কখনও ভুল তথ্য এবং ভুল তথ্য আমাদের বিভ্রান্ত করে। তাই সাইবার নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।
ভুল তথ্য থেকে সুরক্ষা ও প্রতিরোধে মিডিয়ার ভূমিকা রয়েছে। বিধি-বিধান প্রণয়নের দায়িত্ব সরকারের। তবে সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব সকল স্টেকহোল্ডারের। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কমিশনার জনাব আবু সৈয়দ দিলজার হুসাইন বলেন, মূল প্রেজেন্টেশনটি ছিল অত্যন্ত সুস্পষ্ট, গবেষণাধর্মী এবং তথ্যবহুল। তিনি বলেন, বর্তমান চাহিদা ও বিশ্বের পরিবর্তন অনুযায়ী আমাদের আইন পরিবর্তন করতে হবে। ডিজিটাল আইন ২০০১ সালে প্রণীত হয়েছে এবং সম্প্রতি পরিবর্তিত হয়েছে।
বাংলাদেশে অনেক ব্রিটিশ আইন বর্তমান চাহিদা ও চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের প্রয়োজন। এর সকল ব্যবহারকারীর জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। বাংলাদেশে স্মার্টফোন তৈরির জন্য ১৫টি ফোন কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান করেছে যাতে এখানকার মানুষের জন্য ফোন সাশ্রয়ী।
এখন দেশে স্মার্টফোনের চাহিদার ৯০ শতাংশ পূরণ করেছে এসব কোম্পানি। মিঃ হোসেন ভুল তথ্য, ভ্রান্ত ধারণা এবং সামাজিক নিষেধাজ্ঞা কখনও কখনও তরুণদের বিভ্রান্ত করে বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা যুবক ও শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট সহ সকলের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের নির্দেশিকা তৈরি করেছি। আমরা সাইবার নিরাপত্তা প্রবিধানও তৈরি করেছি। এটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভুল তথ্য কমিয়ে দেবে।
তিনি আশা করেন ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে বিআইজিএফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার। জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব কে এম আবদুস সালাম সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) মহাসচিব জনাব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং ভিউজ বাংলাদেশ এর সম্পাদক জনাব রাশেদ মেহেদী; অতিথি বক্তা ছিলেন ড. কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, এশিয়া ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জুলফিকার (অব.), সেক্রেটারি জেনারেল, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)। উদ্বোধনী অধিবেশনের মডারেটর ছিলেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি’র) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান।
ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান জরুরি দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়লেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার খুবেই সীমিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মহাসড়কে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে নারীদের অংশগ্রহণ, সমৃদ্ধ প্রযুক্তি গত জ্ঞান, নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিআরটিসি) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ) এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম ২০২৩ এর তৃতীয় বাষির্কীর আলোচনায় সেমিনারের বক্তরা এসব কথা বলেন।
ইন্টারনেটের কার্যকর ব্যবহার ও ইন্টারনেট ব্যবহারে জ্ঞান বাড়াতে প্রান্তিক নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানান পিআইড’র ডেপুটি ইনফরমেশন অফিসার নাসরিন জাহান লিপি। তিনি বলেন, তথ্য মানে শক্তি। নারীরা যদি ফেসবুক ইউটিউব ব্যবহার করতে পারে তবে ইন্টারনেটের পজেটিভ ব্যবহার কেন নয়?
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক টেলিযোগাযোগ এন্ড আইসিটি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অপরাজিতা হক, এমপি বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এসব কার্যকর যথেষ্ট নয়। বিদেশি ডেটাস্টোর এর ওপর নির্ভরতা কমাতে দেশীয়ভাবে তথ্যের সংরক্ষণে সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ক’দিন পরে যন্ত্রনির্ভর এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণ করবে সবকিছু এর জন্য আমাদের প্রতি নিতে হবে। ইন্টারনেট জগতের বিশাল প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের ক্ষেত্রে নানান চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলি মাথায় রেখেই এখন থেকেই আমাদের প্রতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিশাল প্রযুক্তিজগতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমাদের নানা বাধা রয়েছে। এর জন্য শক্তিশালী সাইবার সুরক্ষা গুছ থাকতে হবে তবে সাইবার ব্যবহারে মানুষদের উদ্দীপ্ত করে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বো”চ ব্যবহারে ইতিবাচক অর্জন সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিটিআরসি'র সিস্টেম এন্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিল উর রহমান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে ডিজিটাল সাক্ষরতা খুবই জরুরি। দেশে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি আছে কিš‘ ব্যবহার জ্ঞান না জানায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে না।
তথ্য প্রযুক্তির সাথে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়িনোর তাগিদ দিয়ে সেমিনারে লিখিত বক্তব্যে নূর ই নুসরাত বলেন, তথ্য প্রযুক্তির নির্ভর কর্মসংস্থা ও নতুন নতুন তথ্য ধারণা দেওয়া গেলে সমৃদ্ধ প্রযুক্তিগত জ্ঞান নির্ভর নারী সমাজ তৈরীতে সহায়ক হবে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে অনলাইনে সেমিনারে যুক্ত হন কমিউনিকেশন এন্ড অনলাইন কমিউনিটি এপিনিকের ম্যানেজার সিয়েরা পেরি। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে আরো দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ফেলোশিপের মাধ্যমে দক্ষ হবার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধারায় ওই সব ফেলোশিপ পাবার সুযোগ রয়েছে।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের চেয়ারপার্সন শামীমা আক্তার। বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের ভাইস-চেয়ারপার্সন মিসেস জান্নাতুল বাকেয়া কেকা অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নারীরা প্রমাণ করেছেন তারা সমস্ত দায়িত্ব নিতে পারেন এবং সমস্ত উন্নয়ন উদ্যোগে অবদান রাখতে পারেন। তাশমী চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম সভা পরিচালনা করেন।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নূর-ই-নুসরাত জেরিন তার মূল বক্তব্য উপস্থাপনে উল্লেখ করেন যে নারীরা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে নেই। নারীরা এখন সব পেশায় নিয়োজিত। ইন্টারনেট শাসনে নারীদের অংশগ্রহণ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের একটি বড় উদাহরণ। গ্রামীণ নারীদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে এবং এর ব্যবহার শিখতে হবে।
জনাব সাইফ রহমান, চিফ অপারেশন অফিসার, জেননেক্সট টেকনোলজিস লিমিটেড, উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ডিজিটাল এবং ইন্টারনেট খাতে অসাধারণ অগ্রগতি করেছে। অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করে। তিনি বলেন, সরকার কারিকুলাম তৈরি করছে, গবেষণা অনুদান দেবে এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। বাংলাদেশ মেঘনা ক্লাউড নামে নিজস্ব ক্লাউড তৈরি করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শারমিন ইসরাইল তানিয়া, যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম গত ৩ বছরের এর অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। জাকিয়া আক্তার, ম্যানেজার এবং টিম লিড কাস্টমার সাপোর্ট, টেকনোলজি, ব্র্যাকনেট বলেন, আমরা সব ধরনের মানুষকে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকি। আমরা কর্পোরেট সেক্টরে কোন সমস্যায় পড়ছি না, তবে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে মনোযোগী না হওয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হই।
বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের তৃণমূল নারীদের ক্ষমতায়ন করতে হবে এবং তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। নারীরা সুযোগ পেলে সব কিছু করতে পারে। আমাদের উচিত তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করা। সভার সভাপতি শামীমা আক্তার, চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম সকল অতিথি ও বক্তাদের তাদের মূল্যবান বক্তব্য ও পরামর্শের জন্য এবং সেশনে উপস্থিত থাকার জন্য সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
গ্রামীণ বাংলাদেশে ইন্টারনেটের অর্থপূর্ণ সংযোগ বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এর কমিশনার ইঞ্জি. শেখ রিয়াজ আহমেদ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং মডারেটর হিসেবে সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব মোঃ মিজানুর রহমান।
জনাব খান মোহাম্মদ কায়সার, ডিজিএম, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এবং জনাব আজহার এইচ চৌধুরী, চিফ অপারেটিং অফিসার, এডিএন টেলিকম লিমিটেড প্যানেল স্পিকার হিসেবে সেশনে বক্তৃতা করেন।
জনাব আজহার এইচ. চৌধুরী বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ইন্টারনেট খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। ৪জি চালু করার পর আমরা অনেক এগিয়েছি। আমাদের গ্রামীণ যোগাযোগের উন্নতি ও সম্প্রসারণ করতে হবে। এখন ৪জির সুবিধা সব এলাকায় সমানভাবে প্রয়োজন।
খান মোহাম্মদ কায়সার, ডিজিএম, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) বলেন, ইন্টারনেটের খরচ শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় বেশি। বিটিআরসির নেতৃত্বে একটি কমিশন এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
বিশেষ অতিথি ব্রিগেডিয়ার মো. জেনারেল মোঃ এহসানুল কবির, মহাপরিচালক, প্রকৌশল ও অপারেশন বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বলেন ৪জি বাংলাদেশের ভৌগোলিক এলাকার ৯৬% কভার করেছে। ৩জি আর বের হবে না। এক দেশ এক রেট এর উদ্যোগ আরও পর্যালোচনা করা হবে।
প্রধান অতিথি ইঞ্জি. বিটিআরসি এর কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে বিটিআরসি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বা ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ৩০০ প্যাকেজ আমরা কমিয়ে ৪০ প্যাকেজ করেছি। এখন পরিষেবা ব্যবহার করা সহজ।
তিনি বলেন, আমরা ৪জি থেকে ৫জি-তে চলে যাচ্ছি। এখন আমাদের দেশে স্মার্টফোন তৈরি হচ্ছে যা ৬০% এর বেশি চাহিদা পূরণ করে। এখন গ্রামীণ এলাকা থেকে যে কেউ পাসপোর্ট, ভর্তি ইত্যাদির মতো অনেক প্রয়োজনীয় পরিষেবার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে৷ ইন্টারনেটের উন্নত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের জবাবদিহিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা সভাপতিত্বে মূল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোঃ মিনহাজ উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি বলেন, আমরা এখন দু’টি জগতে বাস করছি একটি বাস্তব জগত এবং আরেকটি ভার্চুয়াল জগত। বাংলাদেশে ১২.৬১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক এবং ১১.৪০ কোটি মোবাইল ফোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ৬ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। তিনি সত্য সংবাদের চেয়ে ছয় গুণ দ্রুত মিথ্যা সংবাদ ছড়ায় বলে উল্লেখ করেন। আমাদের জানতে হবে কীভাবে ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব এএইচএম বজলুর রহমান গভর্নেন্স অব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর তার বক্তব্য উপস্থাপনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে শাসন ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সমস্ত বিশ্ব নেতাদের সমর্থন ছাড়া সামাজিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা কৌশল থাকতে হবে। তিনি পরামর্শ দেন যে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে নিরাপদ করতে বিটিআরসি উদ্যোগ নিতে পারে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান, এনডিসি, মহাপরিচালক, সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ, বিটিআরসি, তিনি বলেন সবার জন্য ইন্টারনেট এবং একটি স্থিতিশীল পরিষেবা দেওয়ারার চেষ্টা করছি আমরা।
প্রধান অতিথি ড. মুসফিক মান্নান চৌধুরী, এফআইডিএম, এফসিআইএম, কমিশনার, বিটিআরসি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি ব্যবহার করতে জানতে হবে। কয়েক বছর ধওে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর গবেষণা হচ্ছে । তিনি বলেন, বিপণনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার খুবই জনপ্রিয় এটি এক ধরনের মিডিয়া। ব্যবসার জন্য এর বিপণন। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের স্বাধীনতা দেয় এবং বিভিন্ন উপায়ে আমাদের প্রভাবিত করে। আমাদের শিখতে হবে কিভাবে আমাদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে হয়।
অর্থবহ এবং টেকসই ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা বিএনএনআরসি এবং বিআইজিএফ রিসার্ছ ফেলো হীরেন পন্ডিত এর সঞ্চালনায় এই সেশনে মূল বক্তা হিসেবে আলোচনা করেন জনাব মোঃ জোবায়ের আল-মাহমুদ হোসেন, সভাপতি, বাংলাদেশ সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ফোরাম (বিডিএসএএফ) ইন্টারনেন কানেক্টিভিঠির বিভিন্ন বিষয় গুলে ধরেন। জনাব মোহাম্মদ আবদুল হক আনু, মহাসচিব, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ)।
জনাব মোবারক হুসাইন, প্রধান নির্বাহী প্লেক্সাস ক্লাউড, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ড এবং আমাদের ইন্টারনেটের ঝুঁকির বিষয়ে আলোচনা করেন এবং শক্তিশালী বিকল্প সার্ভারের বিশেষ করে এক জায়গায় সবকিছু ন্থাপন না করার মাধ্যমে কিভাবে অর্থবহ ও টেকসই ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু রাখা যায় এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক, আইআইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সবার চেষ্টা করতে হবে এই ইন্টারনেট ব্যবহারকে টেকসই করার কাজে। সবাই মিলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । আমাদেও প্রত্যেকের জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, পিএসসি, মহাপরিচালক, স্পেকট্রাম বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদেও সমস্যাগুলো দূও করতে হবে। আমাদের মোবাইল অপারেটরসহ সবাইকে নিয়ে একটি অর্থবহ ও টেকসই ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে।
জনাব এএইচএম বজলুর রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) সেশনটি সঞ্চালনা করেন এবং এই বিষয়ে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন। জনাব মোহাম্মদ আবদুল হক আনু, মহাসচিব, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ) তিন দিনের আয়োজন সম্পর্কে আলোচনা করেন।
সম্মানিত অতিথি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন আনিয়া গেঙ্গো, এনআরআই ফোকাল পয়েন্ট এবং সহযোগী প্রোগ্রাম বিশেষজ্ঞ, ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের (আইজিএফ) জাতিসংঘ সচিবালয়। তিনি জাপান কিয়োটো আইজিএফ এবং আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য ইউএনআইজএফ ২০২৪ ও সামিট অব দি ফিউচার নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ আইজিএফ কমিউনিটিগুলোর ভ‚য়সী প্রশংসা করেন।
ভারতের দিল্লী থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন জনাব সমীরণ গুপ্ত, সরকার ও আইজিও এনগেজমেন্ট এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দক্ষিণ এশিয়ার জন্য স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট, ইন্টারনেট কর্পোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইকান) তিনি জানান বিআইজএফ সাথে আইকান কাজ করছে। ভবিষ্যতে আরো নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ কিংডম সৌদি আরবের দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন, জনাব হেলাল হাকিমিঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান, এনডিসি, পিএসসি, টিই, মহাপরিচালক, সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বিআইজএফ এর সাথে ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স নিয়ে কাজ চলছে ভবিষ্যতে আরো কিভাবে ইন্টারনেটকে কার্যকর ও টেকসইভাবে ভাবে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া যায় এবং স্মার্ট বাংলাদেশের য অগ্রযাত্রাকে বেগবান করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
কোভিড আমাদেও অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছে। আমরা পুরোনো পৃথিবীতে ফিওে যেতে পারবোনা। জেনারেশন গ্যাপ ও ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে সার্টিফিকেট বিতরণের মাধ্যমে তিনদিনের ১৮তম বিঅইজিএফ-এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
০ টি মন্তব্য