একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মালিক যদি আপনি হন, তাহলে বুঝতে পারবেন দ্রুত ওয়েবসাইট লোড হওয়া এবং ভিজিটর বেশিক্ষণ সময় ওয়েবসাইটে অবস্থান করা, কনভার্সন রেট ভালো করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনার ব্যবসার জন্যে। আর এই সকল পেজ লোড স্পিড ভালো করার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। ওয়েবসাইটের পেজ লোড নিতে ৩ সেকেন্ডের বেশি সময় নিলে ৪০ ভাগ ইউজার ওয়েবসাইট ছেড়ে চলে যায়। এজন্যে কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক বা সিডিএন ব্যবহার করতে হবে, যাতে কাস্টমারের লোকেশন অনুযায়ী নিকটবর্তী সার্ভার লোকেশন থেকে কনটেন্ট ডেলিভারি করতে পারেন। এতে ওয়েবসাইট লোড সময় দ্রুত হবে। প্রিসিডেন্স রিসার্চ’র মতে, কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক’র মার্কেট সাইজ ২০২৪ সালে ২৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে, যেটা ২০৩২ সাল নাগাদ ১০৫.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার হবে। ২০২২ সালে শুধুমাত্র উত্তর আমেরিকাতে কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক বা সিডিএন’র মার্কেট’র আকার ৩১ ভাগ ছিল।
কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক বা সিডিএন কি
কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক বা সিডিএন হচ্ছে জিওগ্রাফিক্যাল ডিস্ট্রিভিউটেড এবং ইন্টারকানেক্টেড অনেকগুলো সার্ভারের একটি গ্রুপ। যেটা ক্যাচে ইন্টারনেট কনটেন্ট সরবরাহ করে নিকটবর্তী নেটওয়ার্ক লোকেশন থেকে ব্যবহারকারীর কাছে দ্রুতগতিতে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স’তে। সিডিএন’র প্রধান কাজ হচ্ছে ব্যবহারকারী এবং ওয়েব সার্ভারের মধ্যে ফিজিক্যাল দূরত্ব স্বল্প করা, এতে লোডিং সময় দ্রুত, সার্ভার আপটাইম বৃদ্ধি পায়, ব্যান্ডউইথ ইউএইজ স্বল্প, নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নত, এবং ওয়েবসাইট পারফর্মেন্স ভালো হয়। এতে করে সিডিএন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বিশ্বব্যাপী ভালো করে অপারেট করা যাবে। যখন আপনি সিডিএন সার্ভিস ব্যবহার করবেন, তখন আপনার ওয়েবসাইটের বিদ্যমান কনটেন্ট বিশ্বের একাধিক সার্ভারে বিদ্যমান থাকবে, এবং কনটেন্ট এন্ড ইউজারের কাছে পৌঁছানোর কাজ সহজতর করবে জিওগ্রাফিক্যাল এলাকাভিত্তিক, অর্থাৎ, আপনার এলাকার নিকটবর্তী লোকেশন এর ওপর ভিত্তি করে আপনাকে কনটেন্ট ডেলেভারি করবে। কনটেন্ট বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে, একই সার্ভার প্রবেশ করার থেকে একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের জন্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ট্র্যাফিক অনুযায়ী বিভিন্ন লোকেশনের সার্ভার থেকে ভিজিটরকে কনটেন্ট ডেলিভারি দেয়া হয়।
সিডিএন প্রযুক্তির প্রজন্ম
কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক বা সিডিএন প্রযুক্তি ৯০ দশকের শেষভাগে আবির্ভূত হয়, ইন্টারনেটজুড়ে যা দ্রুত কনটেন্ট ডেলেভারি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে। এখন পর্যন্ত ১৫-৩০ ভাগ গ্লোবাল ইন্টারনেট ট্রাফিক’র জন্যে এটি দায়িত্বশীল। ১৯৯৮ সালে ‘আকামাই টেকনোলজি’ প্রথম সিডিএন তৈরি করে এবং দ্রুত গতির ওয়েব এক্সপেরিয়েন্স গ্রাহককে প্রদানের মাধ্যমে নতুন যুগের সূচনা আরম্ভ করে। সময়ের সাথে সিডিএন প্রযুক্তি উন্নত হয়, আর ব্রডব্যান্ড কনটেন্ট এবং অডিও, ভিডিও স্ট্রিমিং প্রবৃদ্ধি, ইন্টারনেটজুড়ে ডেটা সিডিএনের মাধ্যমে ডেভেলপ হয়। চারটি স্তরে সিডিএন প্রজন্মকে ক্যাটাগরি প্রদান করা যায়। প্রিফরমেশন প্রিরিয়ড’তে মূলত সিডিএন সৃষ্টির পূর্বের সময়কে তুলে ধরা যায়। যেখানে প্রযুক্তি এবং অবকাঠামো অবস্থা ডেভেলপ হয়েছে। এই সময়ে সার্ভার ফার্মগুলোর উদয় ঘটে, ক্যাচিং, ওয়েব সার্ভার, এবং ক্যাচিং প্রক্সি ডেপ্লয়মেন্ট এবং ওয়েব সার্ভারের উন্নয়ন ঘটে। এভাবে সিডিএন বা কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক’র অগ্রযাত্রা শুরু হয়। প্রথম প্রজন্মের সিডিএন সার্ভিস’তে ইন্টিলিজেন্ট নেটওয়ার্ক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং ডেটা সেন্টার ফর রেপ্লিকেশন’র নেটওয়ার্কিং প্রিন্সিপল’র ওপর গুরুত্ব প্রদান করে। প্রাথমিকভাবে ডায়নামিক ও স্ট্যাটিক কনটেন্ট ডেলেভারিতে মনোযোগ দিলেও পরবর্তীতে এডজ কম্পিউটিং পদ্ধতি, অ্যাপ এবং ইনফো’তে সার্ভার ব্যাপী এটি বিকশিত হয়। দ্বিতীয় প্রজন্মের সিডিএন মূলত ভিডিও এবং অডিও স্ট্রিমিং অথবা ভিডিও অন ডিমান্ড সার্ভিস যেমনঃ ব্যবহারকারীদের জন্যে নেটফ্লিক্স, এবং নিউজ সার্ভিসে গুরুত্ব দেয়। এটি পুরোপুরিভাবে মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্যে ওয়েবসাইট কনটেন্ট প্রদান এবং পিটুপি এবং ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির ব্যবহারে নির্দেশিত। তৃতীয় প্রজন্মের সিডিএন এখন পর্যন্ত ক্রমাগতভাবে উন্নত হচ্ছে, সেলফ কনফিগারেশন সিস্টেম নতুন প্রযুক্তি খুব শীঘ্রই আসছে, কমিউনিটিরর জন্যে এই মডেল দ্রুত অগ্রসর হবে, আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেন্ট ডেলেভারি এবং এন্ড ইউজারদের জন্যে কোয়ালিটি এক্সপেরিয়েন্স’র সুবিধা প্রদান এর প্রাথমিক লক্ষ্য। সিডিএন প্রাথমিকভাবে অনেক ব্যান্ডউইথ প্রেসার নিয়ে আবির্ভূত হলেও ভিডিও স্ট্রিমিং ও অনেক সিডিএন সার্ভিস সুবিধা নিয়ে, এখন মূল্য ও কানেক্টিভিটি, ব্যাপক মার্কেটিং প্রযুক্তি ও ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস বিস্তৃত পরিসরে সমাদৃত ও ব্যবসাতে অন্যতম ভূমিকা রাখছে, বিশেষ করে সফটওয়্যার অ্যাজ অ্যা সার্ভিস, ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যাজ অ্যা সার্ভিস, প্ল্যাটফর্ম অ্যাজ এ সার্ভিস এবং বিজনেস প্রসেস অ্যাজ এ সার্ভিস প্রধান ভূমিকা রাখছে।
বিভিন্ন ধরণের সিডিএন বা কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক
ওয়েবসাইট মালিকদের জন্যে সিডিএন ক্রমাগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সাইটের পারফর্মেন্স এবং নিরাপত্তা জনিত কারণে। বিভিন্ন ধরণের সিডিএন রয়েছে, যেমনঃ
ট্রেডিশনাল সিডিএন
বিশ্বব্যাপী সার্ভার ব্যবহার করে ট্র্যাডিশনাল সিডিএন, ব্যবহারকারীকে কনটেন্ট সরবরাহ করতে। যখন কেউ একজন আপনার ওয়েবসাইট থেকে কনটেন্ট রিকুয়েস্ট পাঠায়, তখন নিকটবর্তী সার্ভারে সেই রিকুয়েস্ট প্রেরণ করা হয়। এই ধরণের সিডিএন ওয়েবসাইটের জন্যে ভালো কাজ করে বিশ্বব্যাপী ভিজিটরদের জন্যে দ্রুত কনটেন্ট ডেলিভারি করায়। এই সিডিএনে সুবিধা হলো, লোড টাইম দ্রুত, গ্লোবাল কভারেজ, এবং রিলিএবেলিটি বৃদ্ধি করে। কিন্তু ব্যয়বহুল ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্যে এবং সার্ভার লোকেশনের জন্যে কিছু অপারগতা রয়েছে, যা কিছু জায়গায় কনটেন্ট ডেলিভারি হতে দেয়না।
পিটুপি সিডিএন
পিয়ার টু পিয়ার সিডিএন কনটেন্ট বণ্টন করে পিয়ার বা নোড’র একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সার্ভারের বদলে এটি ব্যবহারকারীকে অন্য ডিভাইস থেকে ফাইল ডাউনলোড করতে সাহায্য করে। পিটুপি সিডিএন বিশেষ করে বড় ফাইল, ভিডিও অথবা অডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইটের জন্যে আদর্শ। এগুলো নিরাপত্তাজনিত সমস্যা অথবা ধীর গতির ফাইল সরবরাহজনিত ইস্যুতে পরতে পারে, যদি যথেষ্ট ব্যবহারকারী না থাকে কনটেন্ট শেয়ার করাতে।
ক্লাউড সিডিএন
ক্লাউড কাঠামো ব্যবহার করে কনটেন্ট ডেলিভারি করে ক্লাউড সিডিএন, ওয়েবসাইটের ফ্লেক্সিবিলিটি, এবং স্কেলেবিলিটির জন্যে সুবিধাজনক। সাইট মালিকরা তাদের ব্যান্ডউইথ এবং স্টোরেজ প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিক করে নিতে পারেন। ক্লাউড সিডিএন দ্রুত কনটেন্ট ডেলিভারি সুবিধা দেয় বিশ্ব্যাপী, এবং কিছুটা ব্যয়বহুল যাদের অল্প ট্রাফিক এবং ব্যবসা অত বড় নয়।
হাইব্রিড ক্লাউড
ট্রেডিশনাল এবং ক্লাউড সিডিএন’র সমন্বিত এক রুপ হাইব্রিড সিডিএন, যা অধিক সময় উপযোগী সলিউশন গ্রাহককে প্রদান করে। এই ধরণের সিডিএন ক্লাউড ও ট্রেডিশনাল সার্ভার ব্যবহার করে কনটেন্ট সরবরাহ করে, যা ফ্লেক্সিবিলিটি এবং দ্রুত সময়ে কনটেন্ট ডেলেভারি করে। স্কেলেবিলিটি এবং সাশ্রয়ীর কথা চিন্তা করে এ ধরণের সিডিএন ওয়েবসাইটের জন্যে উপযোগী। সেটআপ করতে এজন্যে অনেক টেকনিক্যাল দক্ষতার প্রয়োজন পরে।
কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক অবকাঠামো
সিডিএন কাঠামো হচ্ছে পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স, তারা এডজ সার্ভার নামেও পরিচিত। সিডিএন পপস’র জন্যে ডেটাসেন্টার দায়িত্বশীল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা ব্যবহারকারীর জিওগ্রাফিক এলাকার ওপর ভিত্তি করে। প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবহারকারীর কাছে কনটেন্ট নিয়ে আসা। পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স ব্যবহার করে রাউন্ড ট্রিপ কনটেন্ট পরিষেবা সময় স্বল্প করে, এবং ভিজিটরদের জন্যে ওয়েবসাইট লোড সময় দ্রুত করে। প্রত্যেক পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স একাধিক সার্ভার ধারণ করে এবং রাউটার ক্যাচিং পারফর্ম, অপটিমাইজেশন এবং কানেকশন তৈরি করে। অনেক সিডিএন সিকুয়েরিটি সলিউশন প্রদান করে, এবং এইক্ষেত্রে, ডিডিওএস স্ক্রাবাই সার্ভার পপস’তে উপস্থিত থাকে। প্রথমে কনটেন্ট প্রোভাইডারটি হচ্ছে সাইটটি বা অ্যাপটি যেটা কনটেন্ট সরবরাহ করে যেমনঃ ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি। কনটেন্ট প্রোভাইডারকে সিডিএনকে অনুমতি দিতে হবে এর কনটেন্ট ডেলিভারি করতে, যা সিডিএন ড্যাশবোর্ড দ্বারা হবে, এবং ডিএনএস’তে পরিবর্তন হবে। রিপোর্টিং, যেখানে কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক পারফর্মেন্স অ্যানালিটিক্স এবং বিভিন্ন ডেটা সরবরাহ করে। সোর্স, কনটেন্ট’র কপি পাঠানো হয় কনটেন্ট প্রোভাইডার কর্তৃক। এই কপি সিডিএন কর্তৃক সংরক্ষিত হয়, এবং ব্যবহারকারীর কাছে প্রেরিত হয়। প্রকৃত কনটেন্ট ব্যবহারকারীর কাছে প্রেরণ করা হয়। রিকুয়েস্ট, ব্যবহারকারীর ব্রাউজার কনটেন্ট প্রোভাইডারের কাছে রিকুয়েস্ট পাঠায় কনটেন্ট দেখতে। সিডিএন এখানে মধ্যবর্তী হিসেবে কাজ করে এবং রিকুয়েস্ট মাঝখানে থামিয়ে ক্যাচি কনটেন্টে সাড়া দেয়। ডেলিভার, সিডিএন রিকুয়েস্ট পড়ে এবং রিকুয়েস্টেড কনটেন্ট ডেলিভারি করে। আর এন্ড ইউজার কনটেন্ট প্রোভাইডারের কাছে কনটেন্ট রিকুয়েস্ট করে।
কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক’র প্রাথমিক লক্ষ্য কনটেন্ট ডেলিভারি বিলম্বতা স্বল্প করা। পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স’র লোকেশন সিডিএন কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সিডিএন স্কেটার এবং কনসোলিডেটেড সিডিএন এই দুই টপোলজি অনুসরণ করে। স্কেটার সিডিএন টপোলজি’তে মধ্যম এবং নিম্ন ধারণ ক্ষমতার পয়েন্ট ওফ প্রেজেন্স ঘনভাবে নির্ধারিত এলাকাতে ছড়িয়ে থাকে। এই টপোলজির পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে সর্বোত্তম পর্যায়ে যত কাছে সিডিএনগুলো থাকে। এই কারণে পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স কাছে থাকে, মাঝে মাঝে কয়েক মাইল নিকটে থাকে, শুরুর দিকের সিডিএন ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। অপরদিকে, কনসোলিডেটেড সিডিএন’তে ক্ষুদ্র সংখ্যক উচ্চ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স কৌশলগতভাবে সেটআপ করা হয় ডেটা সেন্টার ও শহরগুলোতে। এই ধরণের টপোলোজি বৃহৎ পরিসরে ব্যবহারকারীদের জন্যে সেবা দেয়ার জন্যে ব্যবহার করা হয়। কনসোলিডেটেড সিডিএন কনটেন্ট ডেলিভারি করার একটি আধুনিক ধারণা, যা সমৃদ্ধ ইন্টারনেট কানেক্টটিভিটির মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয় কাঠামো খুব গুরুত্বপূর্ণ কনসোলিডেটেড টপোলজি কাঠামো, যা সিডিএন প্রোভাইডারদের কনফিগারেশন সন্নিবেশন ও মেইনটেইন দ্রুত ও দক্ষতার সাথে করতে সহায়তা করে। উচ্চ ক্ষমতার পয়েন্ট অফ প্রেজেন্টস অধিক টেকসই হয় ডিডিওএস আক্রমণের সময়। কনসোলিডেটেড টপোলজি অল্প কানেক্টিভিটি এলাকার জন্যে যথেষ্ট নয়, সন্নিবেশ যথেষ্ট জটিল এবং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ সহজ নয়।
সিডিএন কি ধরণের কনটেন্ট ডেলিভারি করে
একটি কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক দুই ধরণের কনটেন্ট যেমনঃ স্ট্যাটিক এবং ডায়নামিক কনটেন্ট সরবরাহ করে।
স্ট্যাটিক কনটেন্ট
ওয়েবসাইট ডেটা হচ্ছে স্ট্যাটিক কনটেন্ট, যা ব্যবহারকারী থেকে ব্যবহারকারীর জন্যে পরিবর্তন হয়না। ওয়েবসাইট হেডার ইমেজ, লোগো, এবং ফন্ট স্ট্যাইল সকল ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে একইরকম থাকে, এবং কোন প্রকার পরিবর্তন হয়না। স্ট্যাটিক ডেটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন অথবা, তৈরির দরকার পরেনা, এটি সিডিএনে সংরক্ষিত থাকে।
ডায়নামিক কনটেন্ট
সোশ্যাল মিডিয়া নিউজ ফিড, পরিবেশ রিপোর্ট, লগইন স্ট্যাটাস, এবং চ্যাট মেসেজ ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীর ওপর পরিবর্তিত হয়। এই ডেটা ব্যবহারকারীর লোকেশন, লগইন সময়, অথবা ইউজার অগ্রাধিকার, এবং সকল ব্যবহারকারীর জন্যে ডেটা বা তথ্য ওপর ভিত্তি করে তৈরির দরকার পরে।
সিডিএন কিভাবে কাজ করে
বেশিরভাগ সিডিএন অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে অপারেট হয়, যা সফটওয়্যার এজ এ সার্ভিস। কিছু ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক মালিক তাদের নিজস্ব সিডিএন বা কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক কাঠামো তৈরি শুরু করেছে এবং তার মূল কারণ তাদের নিজস্ব অনলাইন ভিত্তিক কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক কাঠামো উন্নত রাখা, বেশি রেভিনিউ তৈরি করে।
প্রযুক্তি
ওয়েবসাইট সার্ভার এবং এন্ড ইউজারের মধ্যে দূরত্ব স্বল্প করতে সিডিএন ওয়েবসাইটের ক্যাচে স্ট্যাটিক কনটেন্ট বিভিন্ন জিওগ্রাফিক্যাল লোকেশনে ডেটা সেন্টারে সংরক্ষিত রাখে, যাকে পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স বলে। প্রত্যেক পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স নোডস এবং সার্ভারে তৈরি, তার মধ্যে কিছু হাজার নোডস ও হাজার সার্ভারে অতিক্রম করে কনটেন্ট পরিষেবা দিতে এন্ড ইউজারকে দিতে জিওগ্রাফিক্যাল লোকেশন অনুযায়ী, এবং এগুলো কার্যক্রমের গতি ত্বরান্বিত করে।
যখন একজন ব্যবহারকারী আপনার ওয়েবসাইটে চেকআউটের জন্যে রিকুয়েস্ট করে, তখন রিকুয়েস্ট ডিএনএস সার্ভারে যায়। এরপরে একটি সিডিএনে রিডিরেক্ট হয় সেই রিকুয়েস্ট নিকটবর্তী পয়েন্ট অফ প্রেজেন্টস’তে। নোড, যা কিনা এডজ সার্ভার, সেটা ব্যবহারকারী স্ট্যাটিক কনটেন্ট হিসেবে প্রেরণ করে, বিলম্বতা স্বল্প করে এবং এর ফলশ্রুতিতে ভালো অভিজ্ঞতা হয়।
কনটেন্ট নেটওয়ার্কিং টেকনিক
সিডিএন বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট নেটওয়ার্কিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কনটেন্ট ডেলিভারি অপটিমাইজ করতে এবং সেই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়েব ক্যাচিং, সার্ভার লোড ব্যালেন্সিং, রিকুয়েস্ট রাউটিং, এবং কনটেন্ট সার্ভিস।
সার্ভার লোড ব্যালেন্সিং
সার্ভার লোড ব্যালেন্সিং এক বা তার অধিক পদ্ধতি ব্যবহার করে, যার মধ্যে ৪-৭ টি লেয়ার বা স্তর অর্থাৎ, কনটেন্ট সুইচ বা ওয়েব সুইচ, যা একটি একক আইপি এড্রেসের কাজ করে, ওয়েব ক্যাচে অথবা সার্ভার ট্রাফিক শেয়ার করতে। সুইচ সরাসরি বিভিন্ন সার্ভারে যায়, যা স্কেলেবিলিটি এবং বেলেন্সিং লোড ঠিক করে। যদি সার্ভার ঠিক মতন কাজ না করে, তাহলে সার্ভার চেক করার প্রয়োজন পরে।
রিকুয়েস্ট রাউটিং
রিকুয়েস্ট রাউটিং এন্ড ইউজার রিকুয়েস্ট নোড অথবা এডজ সার্ভারে প্রেরণ করে, যা সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা থাকে। এটি অনেকগুলো এলগোরিদমের কাজ করে, যার মধ্যে ডিএনএস বা ডোমেইন নেম সিস্টেম নির্ভর রিকুয়েস্ট রাউটিং, এইচটিএম রিরাইটিং, গ্লোবাল সার্ভার লোড ব্যালেন্সিং, ডায়নামিক মেটাফাইল জেনারেশন, এবং অ্যানিকাস্টিং। প্রক্সিমিটি নির্ধারিত হয় পদ্ধতির ব্যবহারের ওপর, যেমনঃ রিএকটিভ প্রবিং, প্রোএকটিভ প্রবিং এবং কানেকশন মনিটরিং।
কনটেন্ট সার্ভিস প্রোটোকল
এন্ড ইউজারদের জন্যে একটি সিডিএনে অনেকগুলো কনটেন্ট সার্ভিস প্রোটোকল ডিজাইন করা রয়েছে। ৯০ দশকের শেষের দিকে, ইন্টারনেট কনটেন্ট অ্যাডাপটেশন প্রোটকল ডিজাইন করা হয়েছিল অ্যাপ্লিকেশন সার্ভারে স্ট্যান্ডার্ড কানেকশন সরবরাহ দেয়ার জন্যে। ওপেন প্লাগএবল এডজ সার্ভিস প্রোটোকল বিভিন্ন সলিউশন অফার করে, যা অপিইএস সার্ভিস অ্যাপ্লিকেশন বুঝায়, যেটা অপিইএস প্রসেসরে সংরক্ষিত অথবা দূরবর্তীতে কার্যকর হয় কলআউট সার্ভারতে। ওয়েবসাইটের কনটেন্ট তৈরির কারণে ক্যাচিং সিস্টেম সমস্যা সমাধান করতে এডজ সাইড তৈরি হয়েছে।
সিডিএন ব্যবহারের সুবিধা
সিডিএন ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স, স্কেলেবিলিটি এবং সিকুয়েরিটি ভালো করার মতন বেশকিছু সুবিধা প্রদান করে, সেগুলো উল্লেখ করা হলোঃ
ওয়েবসাইট লোডিং সময়
ওয়েবসাইটের লোড সময় ব্যবসার সফলতার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘসময় লোড নিলে ওয়েবসাইট বাউনশ রেট বেশি হয় এবং ব্যবহারকারীরা অধৈর্য হয়ে পরে। ১ সেকেন্ডে বিলম্বের কারণে ১১ ভাগ পেজ ভিউ কমে যায়, ১৬ ভাগ কাস্টমারের গ্রহণযোগ্যতা চলে যায় এবং ৭ ভাগ কনভার্সন কম হয়। একটি সিডিএন বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীর নিকটবর্তী অবস্থানের সার্ভার থেকে কনটেন্ট গ্রহণ করে দ্রুত সময়ে ওয়েবসাইট লোড হতে সাহায্য করে ব্যবহারকারী কাছে। একটি দ্রুত ওয়েবসাইট মানে হচ্ছে ভালো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, ভিজিটরদের ওয়েবসাইটের প্রতি আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে।
নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে
২০২০ সালে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস ডিডিওএস অ্যাটাক’র স্বীকার হয়, এতে নেটফ্লিক্স, টুইটার, এবং রেড্ডিটে সমস্যা হয়। সিডিএন এর পক্ষে ওয়েবসাইটকে নিরাপদ রাখা সম্ভব। সিডিএন অতিরিক্ত লেয়ারের নিরাপতা নিশ্চিত করে ওয়েবসাইটকে সেফগার্ড দেয় বিভিন্ন থ্রেড থেকে মোকাবেলা করতে। অনেক সিডিএন বিল্টইনভাবে ডিডিওএস অ্যাটাক’র বিপক্ষে সুরক্ষা প্রদান করে ওয়েবসাইটের। একই সময়ে এসএসএল/টিএলএস এনক্রিপশন ডেটা প্রেরণ নিরাপদ করে ওয়েবসাইট এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে, এতে প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়।
বিলম্বতা দূর করে
সিডিএন কাঠামো নেটওয়ার্কের বিলম্বতা স্বল্প করাতে ডিজাইন করা, যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন নেটওয়ার্কজুড়ে লম্বা দূরুত্ব কাজ না করে নিকটবর্তী থেকে কনটেন্ট ডেলেভারি করে। একটি ভালো সিডিএন ডেলিভারি প্রোভাইডার সহজে উচ্চমানসম্পন্ন কনটেন্ট স্বল্প বিলম্ব সময়ে কনটেন্ট সরবরাহ করে।
ক্যাচিং
সিডিএন প্রোভাইডার হাউজ ক্যাচড কনটেন্ট হয় পপস অথবা তৃতীয় পার্টি ডেটা সেন্টারে। যখন একজন ইউজার ওয়েবসাইট থেকে কনটেন্ট রিকুয়েস্ট করে, সেটা একটি সিডিএনে ক্যাচড হয়। এটি রিকুয়েস্ট রিডিরেক্ট করে নিকটবর্তী সার্ভার থেকে ইউজারের কাছে এবং ক্যাচড কনটেন্ট ডেলিভার করে নেটওয়ার্ক এডজ’র লোকেশন থেকে। এই প্রক্রিয়া সকলের কাছে দৃশ্যমান হয়।
ব্যান্ডউইথ মূল্য স্বল্প করে
সিডিএন ওয়েবসাইট মালিকদের জন্যে ব্যান্ডউইথ খরচ স্বল্প করে। এডজ সার্ভার থেকে কনটেন্ট ক্যাচিং এবং ডেলিভারি করে সিডিএন তাৎপর্যপূর্ণভাবে অফলোড করে ট্রাফিক সার্ভার থেকে। এই অপটিমাইজেশন ব্যান্ডউইথ ব্যবহার স্বল্প করে করে এবং যার ফলশ্রুতিতে অর্থ সাশ্রয়, বিশেষ করে উচ্চ ট্রাফিক ভলিউম বা ডেটা কনটেন্ট’র ওয়েবসাইটের জন্যে যা গুরুত্বপূর্ণ।
পারফর্মেন্স উন্নতকরণ
অনেক প্রতিষ্ঠান সিডিএন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট কনটেন্ট ক্যাচি করতে পারফর্মেন্স ভালো করতে। সিডিএন সার্ভিসের ডিমান্ড প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যেমন ওয়েবসাইট অনেক স্ট্রিমিং ভিডিও, ই-কমার্স এবং ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশন অফার করছে। কিছু সিডিএনের পয়েন্ট অফ প্রেজেন্টস প্রত্যেক দেশে রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো বেশকিছু সিডিএন প্রোভাইডার ব্যবহার করে কাস্টমারের চাহিদা নিশ্চিত করতে তাদের লোকেশন অনুযায়ী।
অন্যান্য বিশেষ পরিষেবা
ওয়েব এবং অ্যাপ্লিকেশন পারফর্মেন্স ও এক্সিলেরেশন সার্ভিস স্ট্রিমিং ভিডিও এবং ব্রডকাস্ট মিডিয়া অপটিমাইজেশন এবং ভিডিও এর জন্যে ডিজিটাল রাইটস ম্যানেজমেন্ট পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত। সিডিএন প্রোভাইডার অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস ব্যবসার জন্যে উন্মুক্ত থাকে মানুষের দরকার পূরণে।
সিডিএন ব্যবহারে অসুবিধা
সিডিএন ব্যবহারে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি উল্লেখ করা হলো
ব্যয়বহুল ব্যান্ডউইথ
সময় সাশ্রয় করে একদিকে, কিন্তু অপরদিকে সিডিএন সার্ভিস বেশ ব্যয়বহুল। ফ্রি সিডিএন ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু বৃহৎ ওয়েবসাইটের জন্যে তা যথেষ্ট নয়। এমনকি উচ্চমানের সিডিএনের মূল্য প্রতি জিবি ব্যান্ডউইথ ০.১০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু, যা নিয়মিত হোস্টিং পরিষেবাগুলো থেকে বেশ দামি।
নিরাপত্তামূলক তথ্য
অতি নিরাপত্তাজনিত তথ্য ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ প্রাইভেসির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়। যেহেতু যাই রাখবেন তা সার্ভারে বিশ্বব্যাপী পুনরাবৃত্তি হবে তাই নিরাপত্তা একটা ব্যাপার অবশ্যাই থাকবে।
ইন্টিগ্রেশন
জনপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্ল্যাটফর্মগুলো যেমনঃ ওয়ার্ডপ্রেস, ড্রূপাল, ম্যাজেন্টো ইত্যাদি সিডিএন এর সাথে একীভূতভাবে কাজ করে কিন্তু কাস্টম অ্যাপ্লিকেশনে ক্ষেত্রে সিডিএন অনেক কোড এবং অনেক কনফিগারেশন সন্নিবেশ করে।
সিডিএন অবস্থান
সিডিএন অবকাঠামো ব্যবহারকারীর লোকেশন অনুযায়ী নির্ধারণ বেশ কঠিন। সঠিক কাঠামোগত সুবিধা এলাকা অনুযায়ী না থাকলে ভালো পারফর্মেন্স পাওয়া যায়না, এবং কনটেন্ট ভালো মতন ডেলিভারি নেয়া যায়না। কিছু প্রতিষ্ঠান একাধিক সিডিএন ব্যবহার করে তাদের কাজের সুবিধা অনুযায়ী। লোকাল রেস্ট্রিকশনের ব্যাপার থাকে কিছু ক্ষেত্রে কনটেন্ট ডেলিভারিতে, এতে ওয়েবসাইটের কনটেন্ট কিছু ব্যবহারকারীর কাছে পৌছায়না।
বিশ্বের কয়েকটি সেরা সিডিএন কোম্পানি
যদি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট কিংবা ওয়েবপেজ লোড সময় দ্রুত করতে চান তাহলে ভালো কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক কোম্পানি বাছাই করতে পারেন। এইরকম কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করা হলো।
আকামাই
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত সিডিএন কোম্পানি আকামাই এন্টারপ্রাইজ কনটেন্ট ডিস্ট্রিভিউশন সাপোর্ট করে একাধিক ক্লাউডের মাধ্যমে। গ্লোবাল মিডিয়া ডেলিভারি, ওয়েব পারফর্মেন্স অপটিমাইজেশন, সিকুয়েরি, এবং ইন্ডস্ট্রি নির্ভর সলিউশন নেটওয়ার্ক অপারেটরদের জন্যে ক্লাউড পরিষেবা প্রদান করে। ১৩০ এর অধিক দেশে ১৭০০ এর বেশি লোকাল নেটওয়ার্কজুড়ে বিশ্বব্যাপী মিডিয়া ডেলিভারি এবং স্টোরেজের জন্যে কাজ করে আকামাই সিডিএন নেটওয়ার্ক। ওয়েবসাইট সুরক্ষাতে ডেডিকেটেড সিকুরিটি সলিউশন, এপিআই সুনির্দিষ্ট ওয়েবপেজ এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন অফার করে। এটি ক্লাউড সিকুয়েড়িটি প্রদান করে ডিডিওএস আক্রমণ থেকে সুরক্ষা করে।
অ্যামাজন ক্লাউডফ্রন্ট
অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস’র একটি পরিষেবা ক্লাউডফ্রন্ট, যা ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করে। অ্যামাজন এসথ্রি, অ্যামাজন ইসি২ এবং ইলাস্টিক লোড ব্যালেন্সিং সিস্টেম, গ্লোবাল কাঠামো, উচ্চমানের কনটেন্ট ব্যবহার করে। ২২৫ টির অধিক পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স বিশ্বব্যাপী রয়েছে, ১০০ জিবিই মেট্রো ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক। এডাব্লিউএস শিল্ড এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফায়ারওয়াল একীভূত অবস্থায় থাকে। ক্লাউড ওয়াচ এর মাধ্যমে রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
আজ্যুয়ের সিডিএন
মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠান কনটেন্ট ডেলিভারি কাঠামো প্রদান করে আজ্যুয়ের ক্লাউড কাঠামো সুবিধা প্রদান করে। প্রাথমিকভাবে এটি ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট এবং মিডিয়ার ব্যবহারের কাজে যেমনঃ অনলাইন স্ট্রিমিং, গেমিং ইত্যাদির প্রয়োজনে ব্যবহার হয়। আজ্যুয়ের ডায়নামিক কনটেন্ট গতিময়তা আনে। ওয়েব অ্যাপস, মিডিয়া, সার্ভিসেস, স্টোরেজ, এবং ক্লাঊড সার্ভিসেস সাথে একীভূতভাবে কাজ করে। এটি বিশ্বব্যাপী কাস্টমার এনগেজমেন্ট’র কাজ করে। আপনার অপারেশন জোনের ওপর ভিত্তি করে সিডিএন এর মূল্য নির্ধারিত ও ফিচার ঠিক হয়, এবং কনটেন্ট ভলিউম ও কনটেন্ট ফ্লো মাইক্রোসফট নিয়ম অনুযায়ী হয়।
ক্লাউডফ্লেয়ার
২০০৯ সালে ক্লাউডফ্লেয়ার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে নিরাপদ ও দ্রুত গ্লোবাল ডায়নামিক কনটেন্ট ডেলিভারির নেটওয়ার্ক কাঠামোর হিসেবে। ১০০ এর অধিক দেশে ২০০ শহরে ডেটাসেন্টার অবস্থিত। স্মার্ট রাউটিং ফিচারের জন্যে কনটেন্ট রিকুয়েস্ট কনটেন্ট ডেলিভারিতে ভালো ভূমিকা রাখছে ক্লাউডফ্লেয়ার। অ্যাপ্লিকেশন, নেটওয়ার্ক, এবং ইউজার লেভেল, থ্রেড ইন্টিলিজেন্স, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফায়ারওয়াল এবং সিকুয়েরড এক্সেস সার্ভিস এডজ সুবিধা রয়েছে। ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে ওয়েবসাইট ক্যাচে ইনসাইট উল্লেখ করে, ডেটা ফিল্টার করতে পারবেন যেমনঃ হোস্টনেমস, ক্যাচে ইউআরএল ইতাদি। এটি ক্লাউড কাঠামোতে কনটেন্ট সিকুয়েরিটির জন্যে ডেডিকেটেড ক্লাউড ফায়ারওয়াল। ফ্রি, প্রো, বিজনেস এবং এন্টারপ্রাইজ বিভিন্ন পর্যায়ের প্ল্যানের ক্লাউডফ্লেয়ার ব্যবহার করতে পারেন, এবং প্রতি মাসে ২০ মার্কিন ডলার ব্যবহারে তাদের প্ল্যান শুরু হয়।
গুগল ক্লাউড সিডিএন
গুগলের মাধ্যমে কনটেন্ট অ্যাসেট স্টোরেজ এবং ডেলিভারি সহযোগিতা করার প্রত্যয় নিয়ে ২০১৫ সালে গুগলে ক্লাউড সিডিএন কার্যক্রম শুরু করে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে গুগলের ইকোসিস্টেমটি ভালো মতন কাজ করে। ১০০ টির বেশি লোকেশনে পয়েন্ট অফ প্রেজেন্টসে এবং অন্যান্য নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক অপারেশন গুগল পরিচালনা করে। কিইউআইসি দ্বারা এটি স্বল্প বিলম্বতা নিয়ন্ত্রণ করে, বিল্টইন এইচটিটিপএস দ্বারা সিকুয়েরিটি নিয়ন্ত্রণ কুকি সাইনড, ইউআরএল এবং রিকুয়েস্ট প্রতি ইউজার ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ করে। গুগল ক্লাউড, হাইব্রিড এবং মাল্টি ক্লাউড আর্কিটেকচার সাপোর্ট করে যা অন প্রিমিজ কনটেন্ট অন্তর্ভুক্ত এবং একীভূত। গুগল ক্লাউড মনিটরিং এবং ক্লাউড লগিং সার্ভিসেস’র মাধ্যমে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণ করা যাবে, লগ সাপোর্ট সহযোগে। ওয়েব অ্যাপস সন্নিবেশন গুগল কাঠামো ব্যবহার করে, সিডিএন প্রোভাইডারগুলোর সাথে একীভূতভাবে কাজ করে।
সিডিএন ওয়েবসাইটের জন্যে বেশ জরুরি, যা বিশ্বজুড়ে দ্রুত ব্যবহারকারীর কাছে কনটেন্ট সরবরাহে ভূমিকা রাখে। ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স ও ভালো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স দিতে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অপটিমাইজ সুবিধা প্রদানে আপনাকে সঠিক সিডিএন বা কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক বাছাই করতে হবে।
০ টি মন্তব্য