https://gocon.live/

প্রযুক্তি

প্রযুক্তি জগতের বিস্ময় কোয়ান্টাম কমপিউটিং

প্রযুক্তি জগতের বিস্ময় কোয়ান্টাম কমপিউটিং প্রযুক্তি জগতের বিস্ময় কোয়ান্টাম কমপিউটিং
 

প্রযুক্তি জগতের বিস্ময় কোয়ান্টাম কমপিউটিং


আইবিএম কোয়ান্টাম কমপিউটিং হার্ডওয়্যার নিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর নিজেদের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ প্রকাশ করে। ১০০০ কিউবিটসের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন কোয়ান্টাম প্রসেসর ২০২৩ সালের মধ্যে নির্মাণের চেষ্টায় রয়েছে। এ ছাড়া একই সাথে ১০ থেকে ৫০ লজিক্যাল কিউবিটস তৈরি করছে। আগামী ২০২১ সালে তাদের পরিকল্পনায় ১২৭ কিউবিট প্রসেসর উন্মোচন করার কথা আছে।


কোয়ান্টাম কমপিউটিং কী কোয়ান্টাম কমপিউটিং গণনার একটি দিক যা কোয়ান্টাম থিউরির মূল বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে কমপিউটার প্রযুক্তি উন্নয়ন করে, যার প্রকৃতি অ্যাটোমিক এবং সাবঅ্যাটোমিক লেভেলে প্রকাশ পায়। কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের মূল ভিত্তি কিউবিট, যা ০ এবং ১-এর মধ্যে হতে পারে, আবার একই সাথে সুপার পজিশনে ০ এবং ১ হতে পারে। এদিকে কোয়ান্টাম কমপিউটিং স্টার্টআপ কোম্পানি ‘আয়নইক’ সিইও পিটার চ্যাপম্যান এক ইন্টারভিউয়ে উল্লেখ করেন, ডেস্কটপ কোয়ান্টাম কমপিউটার থেকে আমরা মাত্র পাঁচ বছরের দূরে আছি।


কোয়ান্টাম কমপিউটিং আরম্ভ এবং কীভাবে কাজ করে ক্লাসিক্যাল কমপিউটার যা আমরা বর্তমানে ব্যবহার করি তা বুলিয়ান অ্যালজেবরার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রক্রিয়াটি তিনটি অথবা সাতটি লজিক গেট দিয়ে পরিচালিত হয়। ডাটা শুধু (১ = অন) অথবা (০ = অফ) মান দিয়ে সংকেতাকারে লিখতে পারে। এতে অসংখ্য ট্রান্সজিস্টর ও ক্যাপাসিটর কমপিউটারে ব্যবহার করতে হয় কার্যক্রম পরিচালনায়, কিন্তু কোয়ান্টাম কমপিউটিং XOR এবং  QO1 লজিক গেট ব্যবহার করে। এতে অনেক উপাদান থাকে যেমন কোয়ান্টাম বিটস অথবা কিউবিটস। সাব-অ্যাটোমিক উপাদানকে সুরক্ষিত করে


একই সময়ে ১ অথবা ০-তে থাকার সম্ভাবনা আছে অর্থাৎ, সুপার পজিশন হয়। একটি বিট যেখানে ১ অথবা ০ হতে পারে, সেখানে কিউবিটসে সুপার পজিশন অবস্থায় থাকে। কোয়ান্টাম কমপিউটারের মৌলিক একক কিউবিট। এর প্রকৃতি কোয়ান্টাম কমপিউটিং এবং কোয়ান্টাম সুপারমেসির ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। কিউবিটস বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন পরমাণু, আয়ন, ফোটন কিংবা স্বতন্ত্র ইলেকট্রন যা ইলেকট্রিক সার্কিটের চারপাশে অবিরত চলমান। কিউবিটসে ক্ল্যাসিক্যাল বিট ০ এবং ১ একই সময়ে একই সাথে হতে পারে। কিউবিটসের সুপারপজিশন এবং এনটেঙ্গগেল বৈশিষ্ট্য আছে। সুপারপজিশনে কিউবিট একই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে এবং যার মান ০ বা ১ নয়, বরং সব কয়টি কিংবা মাঝামাঝি হতে পারে। অর্থাৎ, সবচেয়ে ভালো কোনটি নির্ধারণ করতে হবে, তা ঠিক করে থাকে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এনটেঙ্গগেল, যা কীভাবে কত জায়গা নিয়ে একসাথে যুক্ত হবে তা ঠিক করে।


ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের যাত্রা ১৯৮০ সালে শুরু হয়। তখন কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম ব্যবহার করে খুব দক্ষতার সাথে নির্দিষ্ট কিছু গণনার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়েছিল। ১৯৮১ সালে পল বেনিঅফ ‘আরগন ন্যাশনাল ল্যাব’তে কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল প্রিন্সিপলের ওপর ভিত্তি করে কমপিউটার পরিচালনার নতুন এক ধারণা নিয়ে আসেন। ১৯৩৭ সালে অ্যালান ট্যুরিঙ্গ তার পিএইচডি গবেষণাপত্রে কমপিউটার বিজ্ঞানের গাণিতিক ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে যন্ত্র গাণিতিক পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান করবে এবং ০ অথবা ১ অংক প্রতীকের মাধ্যমে সব কিছু পড়বে ও সে অনুযায়ী কাজ করবে। ১৯৮৫ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড ডয়েস তার গবেষণায় কোয়ান্টাম তত্তের মাধ্যমে কমপিউটার ডিজাইন করার সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি অ্যালান ট্যুরিঙ্গর মেশিনের বর্ণনায় কোয়ান্টাম বলবিদ্যা যোগ করে দিলেন। প্রোগ্রামে যেখানে সকল তথ্য বা ডাটা ০ অথবা ১ সংকেতের মাধ্যমে গণনা হতো, সেখানে ডেভিড ডয়েস সুপারপজিশন বা একই সময়ে ০ অথবা ১ থাকার সম্ভাবনা প্রোগ্রামের বর্ণনায় উল্লেখ করে ‘কোয়ান্টাম ট্যুরিঙ্গ যন্ত্র’ ধারণা তুলে ধরেন।


কোয়ান্টাম থিউরি বা তত্ত¡ উন্নয়ন ১৯০০ সালে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক’র ‘জার্মান ফিজিক্যাল সোসাইটির’ কাছে তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয়। সেই উপস্থাপনে শক্তি ও বস্তু একি স্বতন্ত্র ইউনিট হিসেবে অবস্থান করার ধারণা তিনি সবার কাছে তুলে ধরেন। সেখানে শক্তি কিংবা বস্তুর কণা পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে আচরণ কিংবা চলাফেরা করে এবং এই অবস্থাকে দুটি মান বা ভ্যালু দিয়ে তিনি নির্ধারণ করেন।


কোয়ান্টাম প্রসেসরে সুপার কন্ডাক্টিং কিউবিটস অথবা ‘কোয়ান্টাম বিট’ কোয়ান্টাম তথ্য বা ডাটা প্রক্রিয়া সাধন করে এবং ফলাফল মাইক্রোওয়েভ সংকেতের মাধ্যমে প্রেরণ করে। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন থেকে প্রসেসর রক্ষা করতে একটি শিল্ড স্থাপন করতে হয়।


কোয়ান্টাম কমপিউটিং অর্থনৈতিক, এরোস্পেস, নিউক্লিয়ার, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এবং বিগডাটার মতো বিষয়ে বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। আইবিএম,


মাইক্রোসফট, গুগল, আলিবাবা এবং ইন্টেলের মতো স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো যথারীতি কাজ করছে। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর গুগল ঘোষণা দেয় যে, তারা ‘কোয়ান্টাম সুপারমেসি’ নিয়ে কাজ করে সফল হয়েছে। তাদের কোয়ান্টাম কমপিউটার যে কাজ ২০০ সেকেন্ডে করতে পারে, সেই কাজ ১০ হাজার বছর সময় লাগবে একটি সুপার কমপিউটারের সম্পন্ন করতে।


মরগান স্ট্যানলি’র রিপোর্ট অনুযায়ী ক্লাসিক্যাল কমপিউটার যেখানে ক্যালকুলাসে বেশ ভালো, সেখানে কোয়ান্টাম কমপিউটার বিশ্লেষণ, প্রাইম নম্বর খুঁজে পাওয়া, অনুসরণ এবং বিন্যস্ত করায় আরও ভালো, যা নতুন কমপিউটিং যুগের দ্বার তৈরি উন্মোচন করেছে।


কোয়ান্টাম কমপিউটার ব্যাপক হারে এবং জটিল ডাটাসেট প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে পারে। এটি কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের মৌলিকত্ব ব্যবহার করে অসংখ্য জটিল ভেরিয়েবল নম্বর গণনা কার্যক্রম প্রক্রিয়া দ্রুত করে। ২০০৯ সাল থেকে গুগল খুব দ্রুত ইন্টারনেট সার্চে কাজ করছে। এ ছাড়া মাইক্রোসফট, আলিবাবার মতো বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সাইবার নিরাপত্তার জন্য কোয়ান্টাম কমপিউটিং ব্যবহার করছে। ক্ল্যাসিক্যাল কমপিউটার ট্রানজিস্টরনির্ভর ডাটা সংরক্ষণ করে।


বিশ্বের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু কোয়ান্টাম কমপিউটিং প্রজেক্ট


চীন সরকার ২০১৬ সালে অধিক নিরাপদ যোগাযোগের জন্য বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম স্যাটেলাইট চালু করে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ‘কনজ্যুমার ইলেক্ট্রনিকস শোতে (সিইএস)’ ‘আইবিএম’ প্রথম বাণিজ্যিক কোয়ান্টাম কমপিউটার প্রদর্শন করে। আইবিএমের কিউ সিস্টেম ২০ কিউবিটস ব্যবহার করে, যাতে ক্ল্যাসিক্যাল ও কোয়ান্টাম উপাদান থাকে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার আলিউন ক্লাউড ইউনিট এবং ‘চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ গবেষণার জন্য ২০১৫ সালের জুলাইয়ে সাংহাইকেন্দ্রিক ‘আলিবাবা কোয়ান্টাম কমপিউটিং ল্যাবরেটরি’ স্থাপন করে, যার মূল লক্ষ্য ই-কমার্স এবং ডাটা সেন্টারের জন্য কোয়ান্টাম সিকিউরিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা। অপরদিকে, সার্চইঞ্জিন প্রতিষ্ঠান গুগল নাসার রিসার্চ সেন্টারের কোয়ান্টাম আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ল্যাবে ‘ডি ওয়েভ সিস্টেম কোয়ান্টাম কমপিউটার’ পরিচালনা করছে।


কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের নতুন


কোয়ান্টাম কমপিউটার দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে শুধু কাজ করে তা নয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের উন্নয়নে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখছে। গুগল সেলফ ড্রাইভিং গাড়ির সফটওয়্যারের উন্নয়নে ইতিমধ্যে এর ব্যবহার শুরু করেছে। সুপার কমপিউটার মূল উপাদানগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পারে, সেখানে কোয়ান্টাম কমপিউটার একই ধরনের কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট্যের উপাদান জটিল বিষয় সমাধানে পরিচালিত হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক বাজার ব্যবস্থা অনুমান করায় ব্যবহার হবে।


‘ন্যাচারাল ম্যাটেরিয়ালে’ একদল গবেষক গত ২০ জুন কোয়ান্টাম কমপিউটিং তাদের এক গবেষণা বিষয় তুলে ধরে বলেন, কোয়ান্টাম বিটস বা কিউবিটস বর্তমানে অনেক বেশি তথ্য বা ডাটা ধারণ করতে পারে। পূর্বের তুলনায় একটি পরমাণুর কক্ষপথে ১০ হাজার গুণ বেশি সময় তথ্য অবস্থান করে কোয়ান্টাম কমপিউটারের জন্য আদর্শ অবস্থা তৈরি করে। কক্ষপথের কিউবিট চার্জযুক্ত কণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করেন, যা সংকেতাকারে প্রকাশ করেন এবং কোয়ান্টাম কমপিউটার তৈরির জন্য যা বেশ সহায়ক। কক্ষপথনির্ভর কোয়ান্টাম প্রযুক্তিটি আর্টিফিশিয়াল কোয়ান্টাম পদ্ধতির উন্নয়ন প্রশস্ত করেছে।


অর্থনৈতিক বিষয়ে কোয়ান্টাম কমপিউটিং নিয়ে ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি ‘জেপিমগ্যানচেস’ এবং ‘আইবিএম’ অর্থনৈতিক মডেলিং এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতিগত গবেষণা করছে। এছাড়া জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ‘এক্সন’ এবং আইবিএম কার্বন কীভাবে হ্রাস করে পরিবেশের উন্নয়ন করতে মডেল নিয়ে কাজ করছে।


কোয়ান্টাম কমপিউটার কীভাবে কাজ করে


কোয়ান্টাম কমপিউটার স্থিতিশীল রাখতে সাধারণত ঠান্ডা থাকতে হবে, এজন্য ডি ওয়েভ সিস্টেমের কোয়ান্টাম কমপিউটারের ভেতরে তাপমাত্রা ৪৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে থাকে। কিউবিটস তাপমাত্রার ব্যাপারে খুব স্পর্শকাতর তাই শীতল চেম্বারে রাখতে হয়, তা না হলে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ভুল হিসাব দিতে পারে। আইবিএম কোয়ান্টাম কমপিউটার একটি চেম্বারের মধ্যে থাকে, যার তাপমাত্রা ০.০১৫ কেলভিন এবং বাইরের স্তরে গড়ে ২.৭ কেলভিন তাপমাত্রা। হিসাব নিকাশে আওয়াজ ভুল করে এজন্য তৈরি করার সময় বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিত। কোয়ান্টাম কমপিউটার গঠনে ভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং প্রোগ্রামিং মডেল নিয়ে কাজ করা থাকে। কোয়ান্টাম কমপিউটারের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যালগরিদম ডেভেলপ করা হয়েছে, তার মধ্যে ‘গ্রোভার’ ব্যবহার হয় আনস্ট্রাচার্ড বা অবিন্যস্ত ডাটাবেজ খোঁজার জন্য এবং ‘শোর’ বৃহৎ সংখ্যক নম্বর সাজানোতে ব্যবহার হয়। আইবিএম কমপিউটার ১৯৯৭ সালে যখন দাবা চ্যাম্পিয়ন গ্যারি ক্যাসপারভকে পরাজিত করে তখন এটি ২০০ মিলিয়ন সম্ভাব্য সম্ভাবনা প্রতি সেকেন্ডে যাচাই করে। অর্থাৎ, কোয়ান্টাম মেশিন ১ ট্রিলিয়ন


সম্ভাবনা প্রতি সেকেন্ডে নিরূপণ করতে পারে। অ্যামহাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ক্যাথরিন বলেন, কোয়ান্টাম কমপিউটার বর্তমানের কমপিউটারগুলোর তুলনায় হাজার গুণ বেশি দ্রুত কাজ করতে পারে। সুপারপজিশন একটা পদ্ধতি যে উপায়ে কোয়ান্টামের কণা একই সময়ে বেশ কয়েক জায়গায় অবস্থান করে এবং একই সময়ে বিভিন্ন ভেরিয়েবল প্রদর্শন করতে পারে। কোয়ান্টাম কমপিউটারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় যেহেতু কম্পনজনিত কারণে কণার সংহতিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ‘আইবিএমে’র কোয়ান্টাম ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট বব সুটর আইবিএমের কোয়ান্টাম কমপিউটার কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে বলেন, কোয়ান্টাম ভলিউম (QV) নামে একটি ম্যাট্রিক আইবিএম ব্যবহার করে যা কোয়ান্টাম কমপিউটারের পাওয়ার বা শক্তি পরিমাপ করে। এ পদ্ধতিতে বৃহৎ আকারের সার্কিটের পরিমাপ হয় একই রকম প্রস্থ ও গভীরতা যা পুরো প্রক্রিয়াটির ভালো কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারে। উচ্চ বিশ্বাসযোগ্য পরিচালন, উচ্চ যোগাযোগ, বৃহৎ শক্তির সেট এবং সার্কিট পুনরাবৃত্তির সফটওয়্যার টুল চেইন সম্পন্ন কোয়ান্টাম কমপিউটিং পদ্ধতির উচ্চ কোয়ান্টাম ভলিউম থাকে। পাশাপাশি স্থিতিশীল কিউবিট একে ওপরের যোগাযোগ স্থাপন করে সংযোগ করে।


কোয়ান্টাম কমপিউটিং ভবিষ্যৎ এবং কী কাজে আসবে


আপনার একটি কাজ খুব নিখুঁতভাবে করা দরকার কিন্তু সময় বেশি নেই, আবার এদিকে ডাটা বা তথ্য অনেক তাহলে সেই বিষয়ের সহজ সমাধান কী হতে পারে? কোয়ান্টাম কমপিউটার এই কাজ করতে পারে যেভাবে সহজে


তথ্য নিরাপত্তা : এনক্রিপটেড অবস্থায় কোনো ডাটা বা তথ্য যখন আমরা সংরক্ষণ করি তখন ডিক্রিপ্টেড না করা পর্যন্ত সেই তথ্য জানা সম্ভব নয়। এনক্রিপ্ট হচ্ছে কোনো সংকেত দিয়ে মূল তথ্য গোপন করা। কিন্তু কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ে যেহেতু ডাটা খুব দ্রুত হিসেব করা যায়। তাই তথ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ভালো করার প্রয়োজন পড়বে। ‘ইকোনমিস্টে’র তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ই-কমার্স সেক্টর কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের অপব্যবহারের ফলে ধ্বংস হতে পারে। যেহেতু ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে পারলে ব্যাংকের ডেবিট- ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জেনে ফেলতে পারে এবং ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে নিতে পারে,  তাই তথ্য সুরক্ষিত রাখা এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত।


বিদ্যুৎ সাশ্রয় : কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ে কোয়ান্টাম টানেলিং নামক একটি পদ্ধতি ব্যবহার হয়, ফলে কমপিউটারে ১০০ থেকে ১০০০ গুণ নিম্নে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে।


ব্যবসা বাণিজ্যের হিসাব : কোয়ান্টাম তত্ত¡ অনুযায়ী পদার্থের একই কণা একই সাথে একাধিক জায়গায় থাকতে পারে। কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ে যেহেতু ০ এবং ১ একই সাথে সহাবস্থান করে, তাই অনেক বেশি তথ্য বা ডাটা সংরক্ষণ করতে পারে। আর অনেক বেশি হিসাব করতে পারে। তাই কোয়ান্টাম কমপিউটার সময় সাশ্রয় করে অল্প সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যের অনেক হিসাব করতে পারে।


আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স : আগামী ১০০ বছর পর কী ঘটবে প্রকৃতিতে তা আবহাওয়া ও প্রকৃতিগত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে খুব দ্রুত কোয়ান্টাম কমপিউটারে তথ্য পাওয়া যাবে। আইবিএমের মতে, কোয়ান্টাম কমপিউটিং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারে বেশ ভূমিকা রাখবে।


বিগ ডাটা : প্রতিদিন ২.৫ হেক্সাবাইট তথ্য উৎপন্ন হয়, যা ৫ মিলিয়ন ল্যাপটপের তথ্যের সমপরিমাণ। এ ছাড়া প্রতি সেকেন্ডে ৮৫ হাজারের ওপর গুগলে সার্চ করা, অর্থাৎ ভবিষ্যতে এই বিপুলসংখ্যক তথ্য বিশ্লেষণের জন্য কোয়ান্টাম কমপিউটার হবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।


কাজে অগ্রগতি : বিভিন্ন সমুদ্র এবং বিমানবন্দরে অসংখ্য যাত্রী এবং মালামালের তথ্য দ্রুত সময়ে নিখুঁত পর্যবেক্ষণের জন্য কোয়ান্টাম কমপিউটিং বেশ কাজে আসবে। এ ছাড়া চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যবস্থা, কৃষিতে সঠিক তথ্য খুঁজে পেতে তেমন সময় লাগবে না।


কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের অগ্রগতি ইতিমধ্যে ২০২০ সালে ক্যামব্রিজ কোয়ান্টাম কমপিউটিং আইবিএমের সাথে কাজ করে বিশ্বের প্রথম ক্লাউডনির্ভর কোয়ান্টাম র‌্যানডম নম্বর জেনারেটর ব্যবহারকারীদের ভেরিফিকেশনের জন্য তৈরি করেছে। এতে সাইবার ইস্যুতে ডাটা সুরক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ সুনিশ্চিত হয়।


বৈশ্বিক উষ্ণতা সমাধান ‘মাইক্রোসফট’র কোয়ান্টাম সফটওয়্যার বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার ড. ক্রিস্তা এসভরের মতে, কোয়ান্টাম কমপিউটারের সাহায্যে আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতার গতি-প্রকৃ তি বুঝতে পারব, সেই সাথে কার্বন নির্গত কভিাবে নিয়ন্ত্রণ করে পৃথিবী রক্ষা করা যায় সেই কাজ করা সম্ভব।


কোয়ান্টাম কমপিউটিং ভবিষ্যতে ক্লাউড সার্ভিসের ওপর নির্ভর করে প্রযুক্তি বিশ্বে অনেক কাজ দ্রুত এবং সাশ্রয়ী করবে। পাশাপাশি অনেক বিষয়ে সমাধান দূর থেকেও বিভিন্ন দেশ সহজে করতে পারবে








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।