https://gocon.live/

প্রযুক্তি

ভিওডি প্রযুক্তি : ভিডিও অন ডিমান্ড

ভিওডি প্রযুক্তি : ভিডিও অন ডিমান্ড ভিওডি প্রযুক্তি : ভিডিও অন ডিমান্ড
 

ভিওডি প্রযুক্তি : ভিডিও অন ডিমান্ড


‘নেটফ্লিক্স’ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওটিটিনির্ভর ভিওডি ভিডিও অন ডিমান্ড প্ল্যাটফর্ম। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ১৯২.৯৫ মিলিয়ন, যার মধ্যে শুধু ইউএসতে ৭২.৯ মিলিয়ন রয়েছে। এ বছর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৬.১৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করে। কিন্তু, ‘নেটফ্লিক্স’ বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক ভিডিও অন ডিমান্ড প্রতিষ্ঠান নয়।


ভিডিও অন ডিমান্ড কী 


ভিডিও অন ডিমান্ড (ভিওডি) একটি ইন্টারেক্টিভ প্রযুক্তি। এতে একজন দর্শক ভিডিও অন ডিমান্ড পদ্ধতিতে কমপিউটার অথবা টিভি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে তার পছন্দ অনুযায়ী নির্ধারিত ভিডিও কনটেন্ট দেখতে ও ডাউনলোড করতে পারেন। আবার কিছু ভিডিও বিনামূল্যে দেখা যায় বিজ্ঞাপনের কল্যাণে। ক্যাবল সেট টপ বক্স ব্যবহার করে ক্যাবল টেলিভিশন সাবস্ক্রাইবারেরা ক্যাবল ভিডিও অন ডিমান্ডের মাধ্যমে ভিডিও কনটেন্ট দেখেন। ভিওডি ক্যাবল সাপোর্টেড নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে একজন দর্শক যেমন একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে সেবা নিতে পারেন, পাশাপাশি ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি মাধ্যমে অগ্রসরমান প্রযুক্তিসম্পন্ন সেবাও নিতে পারেন। এতে রিয়েল টাইম স্ট্রিমিং প্রটোকলের মাধ্যমে ভিডিও ডাটা বা তথ্য প্রেরণ সম্পন্ন হয়। ভিডিও অন ডিমান্ড তাৎক্ষণিকভাবে দর্শককে তাদের টিভি বা কমপিউটারে ভিডিও দেখার সুবিধা দেয়। এ প্রক্রিয়ায় খেলাধুলা, শিক্ষা, বিনোদন, চলচ্চিত্রের মতো অনেক ধরনের অনুষ্ঠান ভিওডি প্রতিষ্ঠান বাছাই করে দেখার সুবিধাও প্রদান করে। প্রচলিত টিভি যেখানে ব্রডকাস্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে সম্প্রচারিত হয়, সেখানে ইউনিকাস্ট তরঙ্গ প্রেরণ পদ্ধতিতে ভিওডির একটি সাব- সেট বা অন্তর্গত হিসেবে ওটিটি (ওভার দ্য টপ) নির্দিষ্ট দর্শকের কাছে প্রচারিত হয়। উপযুক্ত ইন্টারনেট ব্র্যান্ডউইডথের একটি উল্লেখযোগ্য কার্যকারিতা থাকে ভিওডিতে এবং কনফারেন্স, মিটিংয়ের জন্যও ভিওডি ব্যবহার হয়ে থাকে। 


বাংলদেশি অ্যাপসভিত্তিক কিছু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম : বায়োস্কোপ, বঙ্গবিডি, রবি টিভি প্লাস। ফোর্বসের তথ্যানুযায়ী, ইউএসএতে বসবাসকারী ৭০ শতাংশ মানুষের অন্ততপক্ষে একটি ভিডিও অন ডিমান্ড সাবস্ক্রিপশন আছে এবং গড়ে ৮.৫৩ ডলার প্রতি মাসে প্রদান করে।


ভিডিও অন ডিমান্ডের শুরু 


প্রথম ভিওডি ওটিটি বাণিজ্যিক সেবা ১৯৯৮ সালে হংকংয়ে শুরু হয়। হংকং টেলিকম প্রতিষ্ঠান ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে আইটিভি (ইন্টারেক্টিভ টিভি)


চালু করে। বর্তমান সময়ের আলোচিত ‘নেটফ্লিক্স’ ভিওডি প্রতিষ্ঠান তখনও মেইলের মাধ্যমে তাদের প্রথম ডিভিডি সেবা প্রদান শুরু করেনি। ভিডিও অন ডিমান্ড সেবা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক সার্ভারে তাদের অনুষ্ঠানগুলো সংরক্ষিত রাখে, যাতে অঞ্চলভিত্তিক সেবা নেয়া গ্রাহকের কাছে ডাটা বা তথ্য প্রেরণে ইন্টারনেটে কোনো প্রকার সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয়।


ওটিটি কী 


ওটিটি হচ্ছে ‘ওভার দ্য টপ’ উচ্চগতি ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে টিভি কিংবা চলচ্চিত্রের কনটেন্ট দেখা। একটি নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে ইউনিকাস্ট তরঙ্গের মাধ্যমে ইন্টারেক্টিভ প্রযুক্তিতে একজন দর্শক নির্দিষ্ট দিনের জন্য এই সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়া যাদের টিভি সেট ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত, অর্থাৎ আইপিটিভি (ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি) ও সিটিভি (কনেক্টেড টিভি) সুবিধা রয়েছে তারা ওটিটি সেবা গ্রহণ করেন। ওটিটির অন্তর্ভুক্ত তিনটি ভাগ রয়েছে এভিওডি (অ্যাডভার্টাইজমেন্ট বেজড ভিডিও অন ডিমান্ড), এসভিওডি (সাবস্ক্রিপশন ভিডিও অন ডিমান্ড) এবং টিভিওডি (ট্রানজেকশনাল ভিডিও অন ডিমান্ড)। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, আইটিউনস এবং ‘এইচবিও নাও’ সেবা ওটিটির আওতাভুক্ত। কমপিউটার কিংবা মোবাইল থেকে সরাসরি ওটিটি কনটেন্টে প্রবেশ করা যায়। এটি ওয়েবনির্ভর টেলিভিশন কিংবা ইন্টারনেট সুবিধাসংবলিত ডিভাইস থেকে যেকেউ দেখতে পারেন, যেমন অ্যাপল টিভি।


এসভিওডি 


সাবস্ক্রিপশন ভিডিও অন ডিমান্ড (এসভিওডি) আমাদের সবার পরিচিত টিভি প্যাকেজ পদ্ধতির মতো। প্রতি মাসে একটি নির্ধারিত মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে দর্শক তার ইচ্ছেমতো ভিডিও কনটেন্ট দেখতে পারবেন। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম এবং নতুন ডিজনি প্ল্যাস বর্তমানে সবার কাছে বেশ পরিচিত। ২০০৭ সালে নেটফ্লিক্স স্ট্রিমিং সেবা চালু করে এবং তাদের প্রথম অরিজিনাল ভিডিও কনটেন্ট ‘হাউজ অব কার্ডস’ সিরিজ রিলিজ দিয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়। আর দ্রুত সময়ে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর সাথে জনপ্রিয় হয় ‘নেটফ্লিক্স’ প্রতিষ্ঠান।


টিভিওডি 


ট্রানজেকশনাল ভিডিও অন ডিমান্ড (টিভিওডি) পদ্ধতিতে একজন দর্শক একটি ভিডিও কিংবা সুনির্দিষ্ট সংখ্যক ভিডিওর জন্য ভিডিও অন ডিমান্ড প্রতিষ্ঠানকে অর্থ প্রদান করেন। এই পদ্ধতির প্রতিষ্ঠান তাদের সার্ভিস একবারে ভাড়া কিংবা বিক্রি করে দেয়। দুই ধরনের টিভিওডি আছে একটি Electronic Sell Through, যাতে সাবস্ক্রিপশন ফি দেয়া ব্যক্তি সবসময় সেই ভিডিওগুলো কিংবা সিরিজে নিয়মিত তার অ্যাকাউন্ট দিয়ে প্রবেশ করতে পারেন। অ্যাপলের আইটিউনস স্টোর টিভিওডি সেবার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ। টিভিওডি দুই ধরনের। একটি Electronic Sell Through কিংবা ডিটিও (Download to Own) নামেও বেশ পরিচিত। এতে একটি ভিডিও কনটেন্ট একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে অসংখ্যবার দেখার সুযোগ থাকে। অপরদিকে Download to Rent (wWwUAvi) (ডিটিআর) একটি নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত দর্শকের কনটেন্টটি প্রবেশের সুযোগ পায়।


এভিওডি 


অ্যাডভার্টাইজমেন্ট বেজড ভিডিও অন ডিমান্ড অনেকটা টিভি সম্প্রচারের মতো, বিজ্ঞাপন থাকে ভিডিও কিংবা অনুষ্ঠানের মাঝে। এজন্য দর্শককে কোনো সাবস্ক্রিপশন ফি প্রদানের দরকার পড়ে না। ইউটিউব, ডেইলিমোশন ইচ্ছে করলেই দেখতে পারবেন। এখানে ভিডিও নির্মাণের খরচটি মূলত ভিডিওর মাঝে দেয়া বিজ্ঞাপন থেকে আয় করে উঠানো হয়। কিন্তু একজন পেশাদার প্রিমিয়াম ভিডিও কনটেন্ট নির্মাতা কখনই তার আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট বেজড ভিডিও অন ডিমান্ড (এভিওডি) পদ্ধতি অনুসরণ করেন না, কারণ এতে তার ভিডিও নির্মাণের খরচ উঠানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রিমিয়াম ভিডিও নির্মাতা সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতি বেশি পছন্দ করেন। ইউটিউব প্রিমিয়াম কনটেন্টের জন্য সাবস্ক্রিপশন নির্ধারণ চালু করেছে।


ভিডিও অন ডিমান্ড ব্যবসায় শুরু করতে যা দরকার 


২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মার্কেট ৮০.২৪১ ইউএস ডলার ছিল। অর্থনৈতিক এবং ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্যবসায়, প্রযুক্তিসহ বিনোদনের জন্য ভিডিও দেখার আগ্রহ গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তাই ভিওডি ব্যবসার প্রারম্ভিকে খেয়াল করার বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো


ভিডিও অন ডিমান্ডের বিষয় নির্বাচন 


নেটফ্লিক্স যখন ভিডিও অন ডিমান্ড মডেল ব্যবসায় শুরু করেছিল তখন তাদের তেমন প্রতিযোগী ছিল না, কিন্তু বর্তমানে অ্যামাজন প্রাইম, ডিজনি প্ল্যাস, অ্যাপল টিভির মতো বিজনেস জায়ান্ট কোম্পানিগুলো এই সেক্টরে ভালো প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখন একটি ভিওডি কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানো নিয়ে কাজ করবেন তখন বিষয়বস্তু ইউনিক হতে হবে। অনেকে স্পোর্টস নিয়ে কাজ করতে পারেন, আবার কেউ চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করতে পারেন, কিন্তু সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে কনটেন্ট কেমন হবে। কনটেন্ট দিয়ে যদি দর্শককে আগ্রহী করে তুলতে না পারেন তাহলে এত নামকরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। আর আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যখন বাংলা বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবেন, আপনি কেমন কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মে আপলোড করলেন সেটা আবশ্যক। কারণ সাবস্ক্রিপশন করার আগে একজন মানুষ চাইবেন গুণগত মান।


ভিডিও কনটেন্ট ও রাইটস 


ভিওডি প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট পাবলিশ করার আগে লক্ষ রাখতে হবে তা আপনার ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্য কি-না। কনটেন্টের মালিক, বণ্টনকারীদের মধ্যে ভিডিও কনটেন্ট রাইটস নিয়ে চুক্তি থাকতে হবে। এই বিষয়গুলো নির্ধারণ করবে কোন কনটেন্ট পাবলিশ করবেন এবং কী পরিমাণ আয় আপনারা শেয়ার করবেন ও কীভাবে সামগ্রিক কাজ সম্পাদন হবে।


বিজনেস মডেল ও মনিটাইজেশন 


ইউটিউব বিশ্বব্যাপী ২০১৯ সালে বিজ্ঞাপন থেকে ১৫.১৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে এবং নেটফ্লিক্স সাবস্ক্রিপশননির্ভর ভিডিও অন ডিমান্ড মডেলে ২০১৯ সালে ২০.১৫৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে। ব্যবসায়ের ধরন কেমন হবে এবং ভিওডি প্ল্যাটফর্ম থেকে কীভাবে আয় করবেন তা প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে। ব্যবহারকারীরা কি সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে ভিডিও দেখার সুযোগ পাবেন নাকি বিজ্ঞাপন মাধ্যমে তাদের ভিডিও অন ডিমান্ড সেবা দেবেন তা নিয়ে কাজ করতে হবে। সেই অনুযায়ী আপনার সেবার মূল্য নির্ধারণ করবেন।


প্রযুক্তিগত অবকাঠামো 


ভিওডি ব্যবসায় যাত্রা করার সময়ে কিছু বিষয় জানতে ও তা নিয়ে কাজ করতে হবে। সিএমএস (কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) কেমন হবে তার কাঠামো ঠিক করতে হবে। কারণ কোন কনটেন্ট আপলোড করা এবং তা নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ বিষয়টি, অর্থাৎ কিওয়ার্ড, ভিডিও এসইও সব কাজ সিএমএসে বেশি প্রাধান্য পায়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক (সিডিএন), যা একটি নেটওয়ার্ক সার্ভার, এটি ভিডিও কনটেন্টের স্ট্রিমিং ক্ষেত্রে বেশ প্রাধান্য পায়। অডিয়েন্স কোথায় অবস্থান করছে সেটা বিষয় নয়, খেয়াল করতে হবে সিডিএনের মাধ্যমে ব্যবহারকারী যথাসম্ভব সবচেয়ে ভালো ও দ্রুত প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করার সুযোগ পায়। PaaS (Platform as a Service) মডেলে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, অর্থাৎ মোবাইল অ্যাপস, ওয়েব হোস্টিং, স্টোরেজ, ব্র্যান্ডউইডথ, ইউজার ম্যানেজমেন্ট, ডাটাবেজ। অপরদিকে ব্যবহারকারীর ওপর নির্ভর করবে ভাষাগত বিষয়, সাব-টাইটেল, সাউন্ড ট্র্যাক, স্ট্রিমিং এবং কানেকশনের মাধ্যমে সবচেয়ে ভালো ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের সুযোগ পাবে। পেমেন্ট সিস্টেম কেমন হবে, কী ধরনের ভিওডি হবে তার ওপর ওয়েবসাইটটি বিন্যস্ত করা এবং পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম মেইনটেইন্স ও নিয়মিত আপডেট রাখা।


ডাটা ও মার্কেট 


ডিজিটাল টিভি রিসার্চের তথ্যনুযায়ী, ভিডিও মার্কেটের ৩০ শতাংশ ২০২২ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে থাকবে। কাস্টমারদের কাছে কীভাবে যাবেন তার জন্য কম্পিটিটর কী করছে তা যেমন বুঝতে হবে তেমনি পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চইঞ্জিন, ই-মেইল মার্কেটিংসহ ভিডিও কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলোতে কাস্টমার আসলে কী চান সেই বিষয়ের ওপর নির্ভর করে কনটেন্ট আইডিয়া ডেভেলপ এবং টার্গেট অনুযায়ী আপনার মার্কেটিং ও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।


ভিডিও অন ডিমান্ড ওয়েবসাইট তৈরি করবেন যেভাবে 


বর্তমান সময়ে বিশ্বপ্রযুক্তি অনেক কঠিন কাজকে সহজ করেছে। আপনি যদি নিজে ভিডিও অন ডিমান্ড প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চান, তাহলে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ভিডিও অন ডিমান্ড সলিউশন প্রোভাইড করে। মুভি, দ্য কাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়ে সহজে নিজের একটি ভিডিও অন ডিমান্ড প্ল্যাটফর্ম সেবা চালু করতে পারেন।


দ্য কাস্ট 


ক্লাউডনির্ভর এইচডি ভিডিও এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জনপ্রিয় হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম https://www.dacast.com/ প্রতিষ্ঠান। সহজে ভিওডি অপারেশন পরিচালন, পেমেন্ট পদ্ধতি, কাস্টমার যেখান থেকেই ভিডিও চালু করুক না কেনো ‘দ্য কাস্ট’ সিডিএনের (কনটেন্ট ডেলেভারি নেটওয়ার্ক) মাধ্যমে যেকোনো ডিভাইসে উচ্চমানের সেবা প্রদান করতে পারেন। এইচটিএমএল৫ ভিডিও প্লেয়ার সুবিধা দেয়, এটি মনিটাইজেশনের বেশ কিছু সুবিধা যেমন, Pay per view, সাবস্ক্রিপশন এবং বিজ্ঞাপননির্ভর চ্যানেল প্ল্যাটফর্ম করতে সহায়তা করে। উচ্চমানের লাইভ স্ট্রিমিং সুবিধা দেয়, আর এজন্য একটি ক্যামেরা, মাইক্রোফোন এবং একটি OBS স্টুডিওর মতো বিনামূল্যের এনকোডার হলেই চলবে। আপনি যত ব্যবসায়িক পরিধি বাড়াবেন তখন পেইড এনকোডার লাগবে। কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট, এপিআই, পর্যবেক্ষণের সুবিধা রয়েছে।


কীভাবে ওটিটি কিংবা ভিওডি প্ল্যাটফর্মের মার্কেটিং করবেন 


প্রথমে আপনার অডিয়েন্সকে বুঝতে হবে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচিত করানোয়। কোন মার্কেটিং চ্যানেল কিংবা প্ল্যাটফর্ম ভালো কাজ করবে তার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করতে হবে। এর মধ্যে এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, অফার, প্রমোশন, অ্যাফিলিয়েশন গুরুত্ব দিতে হবে। কীভাবে মার্কেটিং করবেন তার কিছু কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হলো


এসইও করুন 


সার্চইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইন্টারনেটে সার্চইঞ্জিনে একটি প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয় করায় বেশ কার্যকর। এজন্য আপনার ভিডিওটি স্কিমা মার্কআপ, ওপেন গ্রাফ ট্যাগ ব্যবহার করে আপলোড এবং সার্চইঞ্জিনের ওয়েবমাস্টার টুলে সাবমিট করুন। কম্পিটিটর পর্যবেক্ষণ, রিসার্চ টুল এএইচরেফসের ব্যবহার করে ভিডিওতে উপযুক্ত কিওয়ার্ড পাওয়া ও তা ভিডিওতে দেয়া, মেটা ডাটা, সাইটম্যাপ, ভিডিও নাম, থাম্বনেল ফাইল ফরম্যাট Mpg, mp4-এর মতো বিষয়গুলো সঠিক ব্যবহার করে ভিডিও রিচ স্নিপেট তৈরি করুন। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে অর্গানিক ভিজিটর তৈরি করতে পারবেন তা থেকে অ্যাঙ্কর টেক্সট ব্যবহার করে ভিজিটর আনতে প্ল্যাটফর্মে লিঙ্ক নেন। কারণ এগুলো সার্চ রেজাল্টে কার্যকর ভ‚মিকা রাখে।


ইমেইল মার্কেটিং 


নির্দিষ্ট কাস্টমারের কাছে দ্রুত সময়ে কোম্পানির অফার ও উদ্যোগের খবর দিতে ই-মেইল ক্যাম্পেইন একটি ভালো উপায়। কিন্তু এজন্য সাবস্ক্রাইব অপশন থাকতে হবে, যারা আপনার প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের উপকারে আসবে বলে মনে করেন তাদের মেইল পাঠাতে পারেন। তাদের ফিডব্যাকও জানতে পারবেন। মেইলচিম্পের মতো ই-মেইল মার্কেটিং টুল এক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।


ভিডিও মার্কেটিং 


ইউটিউব অনলাইনে দ্বিতীয় বৃহৎ সার্চইঞ্জিন এবং সবচেয়ে বড় ভিডিও হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম। প্রতিদিন ১.৯ বিলিয়ন মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করেন যারা অনলাইন ব্যবহারকারীর এক-তৃতীয়াংশ। তাই ইউটিউব, ভিমিওর মতো বড় ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলো টার্গেট করে ভিডিও তৈরি করে মার্কেটিং করতে পারলে ভালো একটি অডিয়েন্স ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য আনা সম্ভব। আর এই ভিডিওগুলো ভাইরাল হলে দ্রুত মানুষ আপনার ব্র্যান্ড জানবেন। এ ছাড়া পেইড ভিডিও অর্থাৎ ভিডিও বিজ্ঞাপন দেয়াও বেশ কার্যকর ব্র্যান্ড পরিচয় এবং ভিজিটর তৈরি করায় কাজে আসে।


অফার ও প্রমোশন 


গ্রোথ মার্কেটিং খুব জনপ্রিয় শব্দ মার্কেটিংয়ে। প্রথমে কিছু ভিডিও ফ্রিতে অথ বা একজন আরেকজনকে অফার করলে সেও কিছু সুবিধা পাবে এরকম একটা প্রমোশন করতেই পারেন। বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে এবং মানুষের উপকার আসে এরকম অনেক অফার নিয়ে আপনি প্রতিষ্ঠানের কথা উপস্থাপন করতে পারেন।


সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং 


দ্রুত অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানোর সহজ উপায় ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো। উপযুক্ত কনটেন্ট, ছবিসহ পোস্ট, লাইভ স্ট্রিমিং, কুইজ, কনটেস্ট এবং ব্র্যান্ড প্রোফাইল শক্তভাবে তৈরি করতে পারলে দ্রুত মানুষের কাছে কোম্পানি পরিচিত করা সম্ভব। আর এই পরিচিত থেকে ইউজার বা ব্যবহারকারী তৈরি করা অধিক কার্যকর।


অফলাইন ব্র্যান্ড ক্যাম্পেইন 


অডিয়েন্স কেমন এবং আপনার নিশ বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিষয়বস্তু কী তার ওপর ভিত্তি করে অনলাইনের বাইরে গিয়ে অফলাইন মার্কেটিং পরিকল্পনা তৈরি করুন। বিলবোর্ড, প্রিন্ট ক্যাম্পেইন (বিশেষ করে পত্রিকায় কোম্পানির সুযোগ সুবিধা উল্লেখ এবং লিফলেট) প্রকাশ করতে পারেন, যা সরাসরি আপনার অডিয়েন্সের কাছে দ্রুত পৌঁছাবে। এছাড়া টিভি বিজ্ঞাপন, ম্যাসেজিংয়ের মাধ্যমে ব্র্যান্ড ক্যাম্পেইন করুন।


সার্চইঞ্জিন মার্কেটিং ও অনলাইন বিজ্ঞাপন 


পেইড সার্চইঞ্জিন মার্কেটিং কাস্টমার আনতে ভালো কাজ করে। বড় বড় সার্চইঞ্জিনগুলোতে পিপিসি (Pay per click) মাধ্যমে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ক্যাম্পেইন করে নতুন কাস্টমার তৈরির পাশাপাশি পুরনো কাস্টমার ফিরিয়ে আনা যায়। তাছাড়া অনলাইনে ব্যানার ক্যাম্পেইন করে কোম্পানির কথা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের কাছে পৌঁছানো যায়।


ওটিটি কিংবা ভিডিও অন ডিমান্ড বর্তমান ডিজিটাল সময়ে বেশ অগ্রসরমান একটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী এর আরও প্রসার হবে, তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাংলা কনটেন্ট নিয়ে ভালো উদ্যোগ ও কাজ করার বেশ সম্ভাবনা আছে








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।