কর্মক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা : দায়িত্ব যখন সবার
এখন আইটি কালচারের যুগ। কমপিউটার ও স্মার্ট ডিভাইস ছাড়া অফিসও চিন্তার বাইরে! শুধুকাজ নয়; প্রতিষ্ঠানের কর্মী তালিকা থেকে দিনের, মাসের এমনকি বছরের পর বছরের আয়-ব্যয়সহ সব তথ্যও কমপিউটারে ডিজিটাল ফাইল আকারে সংরক্ষিত থাকে। তাই অফিসিয়াল কমপিউটারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাসার বা ব্যক্তিগত কাজের কমপিউটারের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ছোট কিংবা বড় প্রতিষ্ঠান যেমনই হোক না কেন, সেখানে কর্মরত প্রতিটি মানুষের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেমন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব, তেমনি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও সম্পদ রক্ষায় সচেতন থাকা এর প্রতিটি কর্মীর দায়িত্ব। প্রাতিষ্ঠানিক সাইবার নিরাপত্তায় করণীয় নিয়েই আমাদের এবারের আলোচনা।
পরিচালনা পর্ষদের করণীয় নিরাপদ নেটওয়ার্ক
অফিস বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সবাই যে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন তা নিরাপদ রাখা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কর্তৃপক্ষের একটি অন্যতম দায়িত্ব। একজন সচেতন মালিক বা পরিচালক হিসেবে অফিসের নেটওয়ার্ক নিরাপদ কি না মাঝে মাঝে তার খোঁজ নিন। যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া থাকলে সার্ভার কমপিউটারের নিরাপত্তা বিধানে সার্ভার সিকিউরিটি ব্যবহার করাসহ কেন্দ্রীয়ভাবে ভিপিএন ইনস্টল ও অফিসের প্রতিটি কমপিউটারে প্রিমিয়াম মানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা নিশ্চিত করুন।
অ্যাডমিন ক্রেডেনশিয়াল
পরিচালনা পর্ষদের পর অফিসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগ। তাই অ্যাডমিন ক্রেডেনশিয়ালে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। অ্যাডমিন আইডির অ্যাকসেস যেন কোনোভাবেই নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গের বাইরে না যায়, তা নিশ্চিত রাখতে হবে সব সময়।
আপ টুডেট ওএস ও সফটওয়্যার
অনেক সময় এমবি বাঁচাতে ও ইন্টারনেটের স্পিড ধরে রাখতে বিভিন্ন অফিসে উইন্ডোজের অটো-আপডেট বন্ধ রাখা হয়। এটি যেকোনো সময় ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। কাজের নিরবচ্ছিন্নতা ধরে রাখার জন্যই অফিসের প্রতিটি কমপিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ও নিত্য ব্যবহৃত সব সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেটেড রাখতে বলে দিন।
কর্মীদের জানান ডাটা ও সচেতনতার গুরুত্ব
অফিসিয়াল কমপিউটার ও তাতে সংরক্ষিত ডাটার নিরাপত্তায় শুধু কর্তৃপক্ষ নয়, প্রয়োজন কর্মীদের সচেতনতাও! তাই বছরে অন্তত একবার নতুন-পুরনো সহকর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করুন সাইবার সিকিউরিটি ট্রেনিং। সহকর্মীদের জানান তাদের কমপিউটারে রক্ষিত ডাটা কতটা মূল্যবান এবং এসব ডাটা হ্যাক হলে তা কতটা মারাত্মক হতে পারে? সহকর্মীদের এটাও বুঝিয়ে বলুন, এসব ডাটা কোনো কারণে হ্যাক হলে একদিকে যেমন অফিসের গোপনীয় তথ্য অন্য কারও হাতে চলে যেতে পারে, তেমনি তাদের পারফরম্যান্সও হতে পারে প্রশ্নের মুখোমুখি।
সাপ্তাহিক ব্যাকআপ
বিশেষ দিন/বৈরী আবহাওয়া কিংবা কাজের চাপ যাই হোক না কেন, সপ্তাহের শেষ দিন ছুটির আগে যার যার পিসির ফাইল ব্যাক আপ করা বাধ্যতামূলক করে দিন! সহকর্মীর সংখ্যা ও কাজের চাপ অনুযায়ী এক বা একাধিক এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক কিনে নিন। শুরুতে খরচ বেশি হচ্ছে মনে হলেও চূড়ান্ত সময়ে এটি আপনাকে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
সচেতন কর্মীদের করণীয়
সাইবার নিরাপত্তা মানে শুধু অফিস বা প্রাতিষ্ঠানিক কমপিউটারের নিরাপত্তা নয়। এটি অনলাইনে সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তাই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা অ্যাডমিনের করণীয়সমূহের বাইরেও একজন সচেতন কর্মী হিসেবে কিছুসাধারণ নিয়ম মেনে চলা উচিত, যা এখানে আলোচনা করা হলো।
০ টি মন্তব্য