রাজধানীর আইসিট টাওয়ারের বিসিসি সম্মেলনকেন্দ্রে উদ্বোধন করা হলো নিজস্ব টুলসেটের ওপর জাতীয়ভাবে তৈরি এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম জি-ব্রেইন।
বাংলাদেশের সংবিধান, বাজেট এবং স্টার্টআপ এই তিনটি জিপিটি নিয়ে জিব্রেইনবিডি.এআই প্লাটফর্মটি। ইংরেজিতে অনুসন্ধান সুবিধা নিয়ে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর টুলসটি তৈরি করেছে ওরিয়ন ইনফরমেটিকস ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।
জি-ব্রেইন উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এআই ধীরে ধীরে এতোটাই শক্তিশালী হচ্ছে যে তারা সৃজনশীলতার মাধ্যমে দৈত্য হয়ে উঠছে।
তাই একে ভালোভাবে ব্যবহার শিখতে হবে। তাই এই পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
এজন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বে সরকার সর্বাত্ম গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিগগিরই একটি এডিপিজিপিটি তৈরি শুরু হবে।
শিক্ষার্থীদের শিখন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় জিপিটি ব্যবহার শুরুর কথা জানিয়ে পলক বলেন, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরাও যেন এআই শিখতে পারেন সেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
একজন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০টি জিপিটি তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি, সাংবাদিকতা সব ক্ষেত্রেই এআই শিখতে হবে।
এআই-কে পারমানবিক বোমার সঙ্গে তুলনা করেন তিনি বলেন, এআই নিজেই কাজ করতে পারে বলে এতে মারাত্মক ঝুঁকিও রয়েছে।
ডিপটেক, সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আমাদের চাওয়া-পাওয়া, রাগ-ক্ষোভ সব জেনেগেছে। এই যেমন একজন কোটিপতি অসুস্থ হওয়ার পর তার কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়।
আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ এআই আইনের খসড়া তৈরি করা হবে বলেও জানান জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে জি-ব্রেইন বৈশিষ্ট ও আক্টিটেকচার উপাস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টি কাজী জামিল আজহার।
তিনি জানালেন, এআই অনেকটাই মানুষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে। মানুষের ব্রেইন যেভাবে চিন্তা করে। কিওয়ার্ড সার্চের ক্ষেত্রে ‘ভেক্টর বেজড’ বড় ইস্যু। তাই এআই মানুষের মতো ডিটারমেনিক নয়।
তার ফলাফল সবসময় একই থাকবে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ডেটা সেন্টার থেকে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এআই সেবা পেতে তাদেরকে ডাটার সঙ্গে টাকা পাঠিয়ে ফলাফল পেতে হয়।
এজন্য জাতীয় ভাবে নিজস্ব এআই থাকা দরকার। স্বাগত বক্তব্যে বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার জানান, গুগল, মাইক্রেসফটের মতো আমরাও জাতীয়ভাবে ইনোভেশন তহবিলের সহায়তায় জি-ব্রেইন তৈরি করা হয়েছে।
এটি ন্যাশনাল ডাটাসেন্টারে সংরক্ষিত থাকবে। সরকারি চাকুরিদের তাৎক্ষণিক তথ্যসেবা পেতে এই প্লাটফর্মটি কাজে লাগবে।
ওরিয়ন ইনফরমেটিকস চেয়ারম্যান স্থপতি ইকবাল হাবিব বললেন, সারা পৃথিবী যখন প্রস্তুতি নেয় বাংলাদেশ তখন থেমে থাকে না।
করোনার সময় আইসিটি বিভাগ প্রমাণ করেছে বাংলাদেশকে দাবায়ে রাখা যাবে না। পরিবর্তনের সময় নিজেদের বদলাতে না পারলে ঝড়ে পড়তে হবে।
এক্ষেত্রে তিনটি জিপিটি তৈরির মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পারলাম চ্যাটজিপিটির অধীন থাকবো না। আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন বলেছেন, এআই-কে আমি আলাদীনের দৈত্য মনে করি।
তার কাছে আদেশ করা মাত্রই সেবা পাওয়া যায়। তাই তাকে কাজে লাগাতে না পারলে এই দৈত্য আমাদের খেয়ে ফেলবে। তাই একে পরিচালনার দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
এজন্য জি-ব্রেইনে বাংলাভাষা ইনপুট করার পরামর্শ দেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আইডিয়া প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোসেনসহ আইসিটি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
০ টি মন্তব্য