সাইবার অপরাধের ধরন ও তা থেকে বাঁচার উপায়
আমরা সবাই নিজের জীবনে ব্যাপকভাবে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে ব্যাংকিং সবকিছুই এখন ইন্টারনেটে। তাই নিজেকে ইন্টারনেট তথা সাইবার স্পেসে নিরাপদ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সব থেকে বেশি সাইবার ক্রাইম হয় সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে। আর সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেয়েরা। বর্তমানে বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইম সংঘটিত হওয়ার সাধারণ কারণগুলো হলো-:
* প্রেমের সম্পর্ক ভাঙার পর সম্পর্ক থাকাকালীন আদান-প্রদান করা একান্ত ব্যক্তিগত মেসেজ, ফটো, ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেয়া।
* পারিবারিক ঝামেলা বা বিবাহিত দম্পতির ছাড়াছাড়ির পর ছবি বা ভিডিও ছেড়ে দেয়া।
* ব্ল্যাকমেইল ফেসবুক, হোয়াটসআপ, ইনস্টাগ্রাম যেকোনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে বা প্রোফাইলে প্রাইভেসি মেইনটেইন না করা হলে ব্যক্তিগত ছবি ফটোশপ করে বা অশ্লীল পেজে বাজে ক্যাপশন দিয়ে ছেড়ে দেয়া।
* অশ্লীল ফটো, ভিডিও, অডিও, মেসেজ।
যেভাবে ঘটে এবং যেভাবে সুরক্ষিত থাকতে হবে
০১. সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে সাধারণত তথ্য- নিরাপত্তা সম্পর্কিত কার্য সম্পাদনের জন্য মানুষকে মনস্তাত্তিক ভাবে ব্যবহার করে গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নেয়াকে বোঝায়। এক্ষেত্রে সাধারণত হ্যাকারেরা (যিনি অন্যের ক্ষতি করতে চান), ভিকটিমের সাথে তাদের সামাজিক সম্পর্ক যেমন বন্ধুত্ব, পারিবারিক সম্পর্ক ইত্যাদি ব্যবহার করে ভিকটিম সম্পর্কে ধারণা নিয়ে থাকে ও ভিকটিমের ইউজারনেম বা পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
০২. ফিশিং এবং স্প্যামিং ফিশিংয়ের জন্য প্রতারকেরা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। সেটি হয়তো কোনো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের মিরর কিংবা দেখতে সুপ্রতিষ্ঠিত নতুন কোনো একটি ওয়েবসাইটের মতো দেখতে। প্রতারকেরা অনলাইন ব্যবহারকারীকে ই-মেইল বা তাৎক্ষণিক মেসেজের মাধ্যমে সেটাতে লগইন বা নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে আহ্বান জানায়। তার জন্য হয়তো বেশ ভালো উপহারের লোভও দেখাতে পারে।
ধরুন, আপনি www.aliexpress.com-এর নিয়মিত গ্রাহক। এই ই-কমার্স সাইটটিতে ব্যবহার করা ই-মেইলে একদিন একটি মেইল এলো এবং সেখানে বলা হলো আপনার অ্যাকাউন্টটি টিকিয়ে রাখার জন্য আবার ভেরিফাই করতে হবে। ই- মেইলে ভেরিফাই লিঙ্কও সংযোগ করে দিল। লিঙ্কটি দেখতে ঠিক এ রকম-www.aliexpreess. com/verify। আপনি হয়তো তাড়াহুড়োর জন্য বা একটুখানি সচেতনতার অভাবে লিঙ্কে ব্যবহার করা বাড়তি ‘ব’টি খেয়াল করলেন না এবং তাৎক্ষণিক তাদের কথামতো সব তথ্য দিয়ে ভেরিফাই করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু জানলেনও না যে সাথে সাথেই আপনার সব তথ্য কোনো একদল প্রতারক/হ্যাকারের কাছে চলে গেছে, যার মাধ্যমে আপনার বড় ধরনের ক্ষতিও হতে পারে।
০৩. ফোন ভিশিং এবং স্মিশিং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই দুটি পদ্ধতি আমাদের দেশে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার ফাঁদ হিসেবে পরিচিত। ভিশিং ও স্মিশিংয়ের পদ্ধতি একই হলেও একটি ব্যবহার করা হয় ফোন কলের মাধ্যমে, আরেকটি এসএমএসের মাধ্যমে। যার জন্য প্রতারকেরা ‘কনভিসিং মেথড’ ব্যবহার করে থাকে। কিছু কিছু মেইল এসে থাকে, যেখানে লেখা থাকে to restore access to your bank account সাধারণভাবেই মানুষ এই ধরনের লিঙ্কগুলোতে গিয়ে ক্লিক করে থাকেন।
থেকে নাকি ফোন আসে যে তারা সে কোম্পানির কর্মকর্তা বা কর্মচারী তারা তার অ্যাকাউন্টটা যাচাই করার জন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর সাথে তার পিন নম্বর (এটিএম) চেয়ে থাকে। এটাও এক ধরনের আক্রমণ। এটা বর্তমানে এসএমএসের মাধ্যমে মোবাইলেও ছড়িয়ে পড়েছে।
০ টি মন্তব্য