প্রযুক্তি দুনিয়ায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুলস। ২০২৫ সাল নাগাদ জিডিপির ৬৫ শতাংশই দখলে নিতে পারে এই টুলসটির ব্যবহার।
২০৩২ সাল নাগাদ আড়াই ট্রিলিয়ন ডলারে পরিণত হতে পারে এই বাজারটি। কিন্তু এআই এর উৎপাদনশীলতা পাশাপাশি ভিজ্যুয়াল এক্সট্রিমিজম ছড়াতে এআই এর ব্যবহার নিয়ে শঙ্কিত এখন ডাটা বিজ্ঞানীরা।
এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও রয়েছে। কানাডিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেকডেভ এর পরিসংখ্যান বলছে, দেশে ক্রমেই অনলাইনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চরমপন্থী ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট (ভিজ্যুয়াল এক্সট্রিমিজম-ভিই)।
২০২০ সালে ভিই কন্টেন্টেনের সংখ্যা ২৭ লাখ থাকলেও ২০২৪ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২০ লাখে। একইভাবে এ ধরনের ভিডিও চ্যানেলের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়েছে ৪০৫টি থেকে পৌঁছেছ এক হাজার ৫৩২টিতে।
একইসঙ্গে যৌনতাও ব্যাপক হারে ছড়াছে অ্যাপের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে জড়িয়েছে শিশুরাও। শুধু যৌনউত্তেজনাকর এক হাজার টেলিগ্রাম গ্রুপে এদেশের সাবসক্রাইবার আছে ৪৮ লাখ।নানা ফরম্যাটে দৌর্দণ্ড প্রতাপে চলছে অনলাইন জুয়া।
২০২৩ এর আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ৫ লাখ বাংলাদশী এমটিএফ স্ক্যামের শিকার হয়ে খুইয়েছেন ১.৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এমন পরিস্থিতিতে অনলাইন উপাত্ত বিশ্লেষণে অপেন সোর্স ইন্টিলিজেন্স (OSINT) ব্যবহারের মাধ্যমে আগাম হুমকী সনাক্ত করে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং বিপথগামীদের সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি ও মিডিয়ার যৌথ অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ডিজিটাল ক্ষতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ও সচেতনতা প্রেক্ষিত স্মার্ট ও নিরাপদ বাংলাদেশ নিয়ে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপে মিলেছে এমন অভিমত।
ওয়ার্কশপের শুরুতে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ডিজিটাল ক্ষতির প্রবণতা ও গতিপথের ওপর একটি তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণাত্মক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সেকডেভ এর প্রিন্সিপাল অ্যান্ড চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রাফাল রোহোজিনসকি।
এছাড়াও ডিজিটাল ক্ষতি প্রতিরোধে সমসাময়িক সচেতনতার (সিচ্যুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস) ক্ষেত্রে অপেন সোর্স ইন্টিলিজেন্স (OSINT) ব্যবহার করে কীভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও প্রকৃত অবস্থা নিরূপন করা যায় সে বিষয়ে আরেকটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন সেকডেভ এঙ্গেজমেন্ট ম্যানেজার সাবা আহমেদ।
এসময় তিনি তৃণমূলে ডিজিটাল ক্ষতি বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে কিরণ প্রকল্পের সুফল তুলে ধরেন। এতে দেখানো হয়, সচেতনতার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়াশীল কন্টেন্ট বাড়লেও দেশে এ ধরনের দুর্ঘটনা কমে এসেছে।
একইভাবে জানার অভাবে ‘কুটেক্স’ নামের একটি ফিনটেক প্রতারণা মাথাচাড়া দিয়েছে। উপস্থাপনা শেষে চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যত কর্মকৌশল গ্রহণে কর্মশালায় তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তুলে ধনেস অংশগ্রহণকারীরা।
সাবাইর স্ক্যাম নিয়ে দলীয় উপস্থাপনায় নেতৃত্ব দেন সিটিটিসি সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম; সাইবার বুলিং গ্রুপ থেকে সাইবারক্রাইম অ্যাওয়ার্নেস ফাউন্ডেশনের (সিক্যাফ) সভাপতি কাজী মুস্তাফিজুর রহমান ও ভায়োলেন্স এক্সট্রিমিজম গ্রুপ থেকে ইউএনডিপি কক্সবাজারের গবেষক মোঃ আরমান হোসাইন, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সিনিয়র রিসার্চ অফিসার জান্নাতুল মাওয়া।
কর্মশালার উদ্বোধন করেন কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস। আর সমাপনী বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র গভর্ন্সে স্পেশালিস্ট শীলা তাসনিম হক জানালেন, এই সচেতনতা কার্যক্রমটি তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে তারা ঢাকার বাইরেও এ ধরনের কর্মশালা করবেন।
০ টি মন্তব্য