তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াটেকের ফাইভজি প্রসেসরনির্ভর স্মার্টফোন চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বিক্রি ৫৩ শতাংশ বেড়েছে।
ফ্ল্যাগশিপ ক্যাটাগরির স্মার্টফোনের বিক্রি বৃদ্ধির কারণে বাজারে আধিপত্য ধরে রাখা কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগননির্ভর স্মার্টফোন বিক্রিকে ছাড়িয়ে গেছে মিডিয়াটেক।
এর আগে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকেও আন্তর্জাতিক বাজারের বড় অংশ দখলে রেখেছিল কোম্পানিটি। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে মিডিয়াটেকের ফাইভজি প্রসেসর নির্ভর স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৪৭ লাখ ইউনিট, যা ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখ ইউনিটে।
এ প্রবৃদ্ধির ফলে মিডিয়াটেকের বাজার হিস্যা এ সময়ের মধ্যে ২২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে।
এ প্রবৃদ্ধি মিডিয়াটেককে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কোয়ালকমকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন ওমডিয়ার বিশ্লেষকরা।
মিডিয়াটেকের বিক্রি প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো সাশ্রয়ী মূল্যের ফাইভজি স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বেড়ে যাওয়া। প্রথম প্রান্তিকে ২৫০ ডলার মূল্যের নিচে তৈরি স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে মিডিয়াটেকের বিক্রি বেড়েছে ৬২ শতাংশ।
এ সেগমেন্টের স্মার্টফোন বিক্রি বাড়ার কারণেই চলতি বছর মিডিয়াটেকের বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে বাজার বিশ্লেষক সংস্থা ক্যানালিসের চলতি বছরের মার্চের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, বছরওয়ারি হিসাবে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে অন্যান্য চিপ নির্মাতাদের তুলনায় মিডিয়াটেক চিপনির্ভর স্মার্টফোন বেশি তৈরি হয়েছে।
এর বিপরীতে চলতি বছর প্রথম প্রান্তিকে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ইউনিট, যা গত বছর ছিল ৪ কোটি ৭২ লাখ।
একই সময় এর বাজার হিস্যা কমে ৩১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমেছে। এদিকে যদিও মিড রেঞ্জ ক্যাটাগরিতে স্ন্যাপড্রাগন স্মার্টফোন বিক্রিতে এগিয়ে থাকলেও অ্যাপল প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিতে বিক্রির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে।
এছাড়া বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, ৭১ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে অ্যাপল এখনো প্রিমিয়াম স্মার্টফোন বিক্রিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
মিডিয়াটেক ও স্ন্যাপড্রাগন ছাড়াও ফাইভজি স্মার্টফোন বাজারে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে রয়েছে এক্সিনোস, গুগল, কিরিন ও ইউনিসোকের চিপসেট।
যাদের সমন্বিত বিক্রির হার ১৭ শতাংশ। এ বিক্রি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে হুয়াওয়ে সিক্সটি মেট প্রো ও নোভা টুয়েলভ সিরিজের স্মার্ট বড় অবদান রেখেছে।
এর আগে গত বছরের শেষের দিকে মিডিয়াটেকের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, সামনের বছরগুলোয় প্রিমিয়াম সেগমেন্টের চিপ খাতে অ্যাপল ও কোয়ালকমের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে কোম্পানিটি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ফাইভজি প্রযুক্তির ব্যবহার ও চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। আগে শুধু ফ্ল্যাগশিপ মডেলের ক্ষেত্রে ফাইভজি প্রযুক্তি দেখা গেলেও এখন তা মিড রেঞ্জ ও এন্ট্রি লেভেলে স্মার্টফোনেও ব্যবহার হচ্ছে।
ফাইভজি প্রযুক্তির দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে এজন্য প্রতিযোগিতা বেড়েছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা।
০ টি মন্তব্য