খাবারের টেবিলে বসে স্মার্টফোন ব্যবহার এখন অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে খাবারের ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইউনিভার্সিটি অব চেস্টারের এক বিজ্ঞানী।
ইউনিভার্সিটি অব চেস্টারের ফিজিওলজি বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক গ্যারেথ নাই জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে জমে থাকা ক্ষতিকর জীবাণু খাবারের টেবিলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে খাদ্য বিষক্রিয়া থেকে শুরু করে ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ ঘটাতে পারে। স্মার্টফোনে থাকা জীবাণুর ধরন নির্ভর করে ব্যবহারকারীর পেশা এবং অভ্যাসের ওপর। স্বাস্থ্যকর্মীদের ফোনে থাকা জীবাণুর কারণে ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং মেনিনজাইটিস রোগ হতে পারে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের ফোনেও খাদ্য বিষক্রিয়া ও হজমজনিত সমস্যার জন্য দায়ী গ্রাম পজিটিভ স্পোর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
গ্যারেথ নাই বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি ফোনেই ই-কোলাইসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া মূলত আমাদের হাত থেকেই ফোনে ছড়ায়। প্রতিদিন আমাদের হাত ১৫০টির বেশি বিভিন্ন বস্তু স্পর্শ করে। প্রতিটি স্পর্শের মাধ্যমে জীবাণু হাতে এসে জমা হয় এবং সেখান থেকে ফোনে পৌঁছে যায়। বিশেষ করে বাথরুমে ফোন ব্যবহার করলে জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।’
জীবাণু প্রতিরোধে ফোন পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে ক্যাম্পেয়ার অ্যান্ড রিসাইকেলের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফোন পরিষ্কার করার আগে অবশ্যই সেটি আনপ্লাগ করতে হবে। ফোনের কভার খুলে সেটি গরম সাবান পানিতে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। তবে কভারটি চামড়ার তৈরি হলে বিশেষ ক্লিনার ব্যবহারের পাশাপাশি ফোনের বাইরের অংশ থেকে ধুলা ও ময়লা পরিষ্কার করতে লিন্ট-ফ্রি কাপড় ব্যবহার করতে হবে। ফোনের পোর্টে জমে থাকা ধুলা বা ময়লা পরিষ্কার করতে কাঠের টুথপিক ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া ৭০ শতাংশ আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল দিয়ে ফোন মুছতে হবে। পাশাপাশি বোতাম ও স্পিকারের আশপাশে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তবে ফোনের পোর্টে সরাসরি কোনো তরল স্প্রে করা যাবে না। পাশাপাশি নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাও অত্যন্ত কার্যকর।
সূত্র: ডেইলি মেইল
০ টি মন্তব্য