২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব
এক সময় মনে করা হতো, দেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলে দেশে বেকারত্বের হার অনেক বেড়ে যাবে। কর্মহীন হয়ে পড়বে বিপুলসংখ্যক দক্ষ কর্মজীবী মানুষ। কেননা, প্রযুক্তির কল্যাণে সব ধরনের কাজ হবে অধিকতর সহজ, দ্রুততর, নিখুঁত ও আকর্ষণীয় যা প্রকারান্তরে দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। কিন্তু, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল এবং অমূলক।
তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দেশে প্রতিনিয়তই সৃষ্টি হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর নিত্যনতুন সব পেশা, ব্যবসায় ও কর্মক্ষেত্র। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন ব্যবসায়সহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ড। সুতরাং প্রত্যাশা করা যায়, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই বিশেষ করে গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির খাত হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে এই এগিয়ে যাওয়ার গতি অনেক বেড়েছে। এ সময়ে দেশে যেমন বেড়েছে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা, তেমনি বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি ট্যাব ও স্মার্টফোনের ব্যবহার। বেড়েছে দেশে সফটওয়্যার শিল্পসংশ্লিষ্ট পণ্য উৎপাদন ও রফতানি আয়।
আইসিটি খাতসহ অন্যান্য খাতেও বাংলাদেশের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। সহজ কথায় বলা যায়, সবকিছু মিলিয়েই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এ কথা সত্য, আইসিটিতে আমাদের আশপাশের দেশগুলো যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ সেই গতিতে এগোতে পাড়ছে না যথাযথ সময়ে নীতিনির্ধারণী মহলের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং কমিশনভোগীদের দৌরাত্ম্যের কারণে। যদি এসব প্রতিন্ধকতা দূর করা সম্ভব হয়, তাহলে নিশ্চিত করে বলা যাবে, বাংলাদেশ পৃথিবীর কোনো দেশ থেকে আর পিছিয়ে থাকবে না। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব। তবে এজন্য দরকার দেশের সবার মধ্যে দেশাত্মবোধ উদ্বুদ্ধ করা। সবার মধ্যে যথাযথভাবে দেশাত্মবোধ জাগ্রত হলে বাংলাদেশ অবশ্যই উন্নত দেশে পরিণত হবে। কেননা, সবার মনে জাগ্রত দেশাত্মবোধের কারণে যেমন দূর হবে দুর্নীতি, তেমনি কমবে কমিশনভোগীদের দৌরাত্ম্য।
০ টি মন্তব্য