ফেসবুকে যা কখনও পোস্ট করা উচিত নয়
ফেসবুক বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অনেকেই আছেন যারা না জেনে, না বুঝে অনেক বিষয় পোস্ট করে থাকেন, শেয়ার করে থাকেন অনেক ছবি। এরা জানেন না, ফেসবুকে কী পোস্ট করা উচিত আর কী পোস্ট করা উচিত নয়। তেমনই জানেন না ফেসবুকে কী শেয়ার করা উচিত আর কী করা উচিত নয়। এ ধরনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টধারীদের উদ্দেশে এ লেখার অবতারণা।
পার্সোনাল ও ফিন্যান্সিয়াল সিকিউরিটিতে ডাটা ফিক্সড করা
যখন ফেসবুকে থাকবেন, তখন কোনো অবস্থাতেই আপনার পার্সোনাল অ্যাড্রেস, টেলিফোন নাম্বার, জন্মের সাল, মায়ের মেইডেন নাম অথবা এ ধরনের অন্য কোনো তথ্য, যা অপরাধীরা আপনার আইডেন্টিটি চুরি করতে ব্যবহার করতে পারে। অনলাইনে আপনার পোস্ট করা এসব তথ্য-উপাত্ত হামলাকারীদের জন্য খুব সহজ করে দিয়েছে আইডেন্টিটি চুরি করতে। সুতরাং নিজেকে রক্ষা করুন এবং এ ধরনের কাজ আর কখনই করবেন না, যাতে সহজে আইডেন্টিটি চুরি হয়ে যেতে পারে।
পাসওয়ার্ডের লক্ষণ
এমন কিছুপোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন , যা হ্যাকারদের কাছে আপনার পাসওয়ার্ডেও সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে। আপনার অনলাইন সিকিউরিটি প্রো টেক্ট করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এমন তথ্য পোস্ট করা এড়িয়ে যাওয়া, যা আপনার ব্যবহার করা পাসওয়াডের্র ইঙ্গিত হতে পারে অথবা সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রশ্নের উত্তরে আপনি যা বলেছিলেন। এরপরও যদি অনিরাপদ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাহলে নিজে নিজে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার সেট করুন। আপনার শৈশবের পোষা প্রাণী, যে শহর থেকে বড় হয়েছেন তার নাম, অথবা আপনার প্রথম বন্ধু বা বান্ধবীর নাম ইত্যাদি সম্পর্কে অহেতুক পোস্ট করা থেকে বিরত থাকনু । কেননা, হ্যাকারেরা এসব তথ্য বারবার ব্যবহার করে তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেষ্টা করে। সত্যিকার অর্থে বলা যায়, স্যোশাল নেটওয়ার্ক এসব তথ্য মোটেও জানতে চায় না। সুতরাং, ফেসবুকে এসব তথ্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকুন ।
লোকেশন সম্পর্কে তথ্য
ফেসবুকে থাকা অবস্থায় আপনার লোকেশন সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন । যদি আপনার প্রাইভেসি সেটিং সম্পকে সতর্ক না থাকেন, তাহলে যখনই আপনার ছবি আপলোড করবেন অথবা আপনার চিন্তা-ভাবনা পোস্ট করবেন তখন আপনার লোকেশন সবার কাছে উন্মোচিত হয়ে যাবে। আপনাকে ট্র্যাক করতে পারে এমন কাউকে প্রতিহত করতে যদি চান, তাহলে আপনার লোকেশন তুলে ধরা থেকে বিরত থাকুন । আপনি যে বাসায় নেই, তা খবু সহজেই হ্যাকারেরা বঝুতে পারবে, যদি বিমানবন্দর অথবা অন্য কোনো অবকাশ কেন্দ্র থেকে কোনো পোস্ট করে থাকেন।
ভ্রমণের পরিকল্পনা করা
ঘর খালি করে শহরের বাইরে ভ্রমণ করার পরিকল্পনা বিশ্ববাসীকে জানানোর অভিপ্রায় মোটেও ভালো ধারণা হিসেবে গণ্য করা যায় না। হ্যাকারেরা বা অপরাধীরা সব সময় স্যোশাল নেটওয়ার্কে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে থাকে শিকারি ধরতে। সম্ভাব্য টার্গেটকে কখন শিকার করতে হবে তা বোঝার জন্য অপরাধীরা সব সময় স্যোশাল নেওয়ার্কে তীক্ষ্ণ নজর রাখে। সুতরাং ভ্রমণসংশ্লিষ্ট তথ্য জানিয়ে কোনো পোস্ট দেয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কেননা, আপনার অনুপস্থিতিতে হ্যাকারেরা তাদের লক্ষ্য হাসিলের জন্য তৎপর হয়ে উঠবে।
মনোযোগ প্রার্থনা করে পোস্ট
অস্পষ্ট পোস্ট যেগুলো বিশেষভাবে কাউকে জিজ্ঞেস করছে, যেমন “what’s wrong?” বা “what happened?” বা “what’s the good news?” ইত্যাদি সম্পূর্ণ ধরনের বাজে কিছুপোস্ট, যা মূলত অন্যদের মনোযোগ আকৃষ্ট বা কমপ্রিমেন্ট আদায়ের চেষ্টা করে। অস্পষ্ট পোস্ট দেখতে কেউ পছন্দ করেন না, যেমন ব্যাপকভাবে প্রচলিত “worst day ever” অথবা “best day ever” ইত্যাদি। আমাদের খেয়াল রাখা উচিত, কেউ অস্পষ্ট পোস্ট পত্র করে না। ফেসবুক ফেন্ড্রদের প্রতি সুবিবেচক হওয়া উচিত এবং কখনও তাদেরকে কোনো বিষয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে দেবেন না। আবার যদি কারও মনোযোগ আকষর্ণ করার জন্য কোনো পোস্ট রাইট করেন, তাহলে ভেবে দেখুন তা শেয়ার করা ঠিক হবে কিনা।
একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা সম্পর্ক অথবা মেডিক্যাল রিপোর্ট শেয়ার না করা
হতে পারে আপনি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন, ডাক্তারের কাছ থেকে খারাপ কোনো রিপোর্ট পেলেন অথবা আপনার পরিকল্পনায় বন্ধু কীভাবে আপনাকে নিরুৎসাহী করলো ইত্যাদি একান্ত বক্তিগত ডিটেনলস, কোনোভাবে সবার সাথে শেয়ার করা ঠিক হবে না। তবে আপনার জীবনে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা শেয়ার করা যেতে পারে। তবে সম্প্রসারিত স্যোশাল নেটওয়ার্কে সব কিছু শেয়ার করার পরে প্রয়োজনীয়তা বোধ করা ঠিক নয়, বিশেষ করে যেগুলো ঘৃণ্য, জঘন্য। সব সময় মনে রাখতে হবে, আপনার করা পোস্ট অফিসের সহকর্মী , বস সহ সবাই দেখতে পারবে। সুতরাং ফেসবুকে এ ধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন ।
যেসব ছবি প্রাইভেট করবেন
আপনি প্রাইভেট করে রাখতে চান এমন ছবি শেয়ার করার জন্য ফেসবুক ম্যাসেজ মোটেও একটি ভালো ক্ষেত্র নয়। ফেসবুকে নগ্ন ছবি পোস্ট না করা এক সাধারণ জ্ঞান। মনে রাখা দরকার, ম্যাসেজের মাধ্যমেও স্যোশাল নেটওয়ার্কে সেগুলো সেন্ড না করা ভালো। আপনি সত্যি সত্যিই অনলাইনে যেসব ছবি পোস্ট করতে না চান, তাহলে সেগুলো কারও কাছে সেন্ড করবেন না অথবা কোনোভাবে আপলোড করবেন না
০ টি মন্তব্য