শুধু কথা বলা নয়, মানুষের জীবন বদলের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। এটি কেবল নেতিবাচক ব্যবহারই করেনি তবে এটি কিছু লোকের জন্য বেঁচে থাকার উপায় হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে কম শিক্ষা বা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন লোকেরা মোবাইল ব্যবহার করে বর্ণমালা শিখতে, নতুন ভাষা শিখতে, মুখে কথা বলতে (ভয়েস টু টেক্সট) এবং মোবাইলে লিখতে সিখে গিয়েছে।
এছাড়াও, লিখিত বার্তাটি ভয়েস এবং সাউন্ডে রূপান্তরিত হয়, ছবি বা অডিও বা ভিডিও ফাইলগুলি ক্লাউডে সংরক্ষণ করা হয় এবং মোবাইল ভিডিও তৈরি এবং টিকটকে প্রকাশ করা হয়।তাদের কাছে মোবাইল কেবলমাত্র জীবনের একটি নতুন অনুষঙ্গই না, মোবাইল তাদের কাছে এমন একটা প্রযুক্তি যা মানুষের জীবনের মৌলিক সত্তার জাগরণ ঘটায়।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএডিএস) সেমিনারে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেমিনারে বলা হয়, বিকাশ ও রকেটসহ বেশ কিছু ব্যাংকিং কার্যক্রম এখন মোবাইল নির্ভর। এখন খন ই-কমার্স কমার্সকে আর এম-কমার্স বলা হয় না। সুতরাং মোবাইল মানুষদের অনেক কিছুই শেখাচ্ছে এবং জীবনকে সহজও করেছে।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, মোবাইল ফোনের অপব্যবহার নিয়ে অনেক গবেষণা আছে। কিন্তু এ যে বিশাল ইতিবাচক প্রভাব মানব জীবনে আছে সেটি নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। এই গবেষণায় দেখা গেছে কিভাবে একজন সাধারণ মানুষও মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার করে। অনেককে আইসিটি নিরাপত্তার বিষয়টিও সচেতন থাকতে দেখা যায়। এই গবেষণা আরও বিস্তৃত করা দরকার।
সাত্তার মন্ডল বলেন, মোবাইল জীবনের অংশ। এটি দ্রুত মানুষের জীবনের সত্তা হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি সমাজের মূল্যবোধকে নষ্টও করেছে। সেই সঙ্গে সময়ের মতো দুষ্প্রাপ্য সম্পদ নষ্ট হচ্ছে মোবাইল ফোনে। এসব নিয়েও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন আছে।
আলমাস কবীর বলেন, মোবাইল মানুষের আচরণগত পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে সবকিছুই আছে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন এখন অলিক কিছু নয়। এটির বাস্তবায়ন সম্ভব। মোবাইল ফোনের মতো ডিভাইস মানুষকে নতুন জীবন দিয়েছে।
আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডল, বেসিসের সৈয়দ আলমাস কবির প্রমুখ।
গবেষণা পত্রে গোলাম নবী মজুমদার বলেন, মোবাইল ফোনের গুরুত্বটা তখনই স্পষ্ট হয় যখন তাদের (গবেষণায় অংশ নেওয়াদের) ফোনটা প্রয়োজন কিন্তু কাছে থাকে না বা তখন সেটা ব্যবহার করার উপযোগী নয়। মোবাইল ফোন কেবল মাত্র একটা যন্ত্র নয় যা লোকে ব্যবহার করে । মোবাইল নামক এই ডিজিটাল মেশিন ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে মানুষ আসলে নিজেকেই বার বার নতুন করে আবিস্কার করে। যা সাধারণত ভাবা হয় অসম্ভব। আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভবটা সম্ভব হয়েছে মোবাইলের মাধ্যমদ্ধম
দেশের পিছিয়ে পড়া যুবকদের (১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী এবং কোন আনুষ্ঠানিক বা নামমাত্র শিক্ষা নেই) মোবাইল ফোনের দৈনন্দিন ব্যবহারের উপর একটি জরিপ করা হয়েছিল, সেমিনারে জানানো হয়েছে। ১৩০ জন মহিলা সহ সারা দেশে আটটি বিভাগে ২৪০ জনের কাছ থেকে গুণগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রথমে ইন্টারভিউ রেকর্ড করা হয়েছে, তারপর তা ট্রান্সক্রিপ্ট করে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে। একজন মোবাইল ব্যবহারকারীর গল্প বিস্তারিত জানার জন্য আমরা একাধিকবার ফলোআপ ইন্টারভিউ করেছি। পাশাপাশি সংগ্রহ করেছি বিভিন্ন প্রমাণ।
ডক্টর বিনায়ক সেন বলেন, মোবাইল ফোনের অপব্যবহার নিয়ে অনেক গবেষণা রয়েছে। কিন্তু মানবজীবনে এর ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে খুব বেশি গবেষণা করা হয়নি। এই সমীক্ষাটি দেখায় যে কীভাবে একজন সাধারণ মানুষও মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার করে। অনেকে আইসিটি নিরাপত্তা সম্পর্কেও সচেতন বলে মনে হয়। এই তদন্ত আরও বাড়ানো উচিত।
সাত্তার মন্ডল বলেন, মোবাইল জীবনের একটি অংশ। এটি দ্রুত মানুষের জীবনের সত্তা হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি সমাজের মূল্যবোধকে নষ্টও করেছে। সেই সঙ্গে সময়ের মতো দুষ্প্রাপ্য সম্পদ নষ্ট হচ্ছে মোবাইল ফোনে। এসব নিয়েও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন আছে।
আলমাস কবীর বলেন, মোবাইল মানুষের আচরণগত পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে সবকিছুই আছে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন এখন অলিক কিছু নয়। এটির বাস্তবায়ন সম্ভব। মোবাইল ফোনের মতো ডিভাইস মানুষের মধ্যে নতুন প্রাণ দিয়েছে।











০ টি মন্তব্য