ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বাংলাদেশেই বেঁচে থাকবে। পৃথিবীর এমন কোন ডিজিটাল যন্ত্র নাই যে যন্ত্রে বাংলাভাষা লেখা যায় না। পৃথিবীর ৩৬ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ খুবই সক্রিয়। তিনি বলেন, গত এক দশকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে বাংলার ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের রাজধানী এখন ঢাকা ।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার রাতে ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে রকমারি ডট কম আয়োজিত ‘নগদ রকমারি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর দেশের মূদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে উল্লেখ করে বলেন, প্রকাশকদের বড় সমস্যার নাম মার্কেটিং। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে সে সংকট আজ কেটে গেছে।
ডিজিটাল যন্ত্রে বাংলাভাষার এই উদ্ভাবক বলেন, কাগজের যুগ শেষ, সামনের দিন হবে ডিজিটাল বইয়ের যুগ। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল বইয়ের প্রণেতা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘পৃথিবী এখন ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল বইয়ের সংমিশ্রনের যুগ অতিক্রম করছে’। কাগজের বইয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল বই প্রকাশে এগিয়ে আসতে প্রকাশকদের পরামর্শ দেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত। তিনি বলেন, আমাদের নতুন লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। ‘
স্মার্ট বাংলাদেশ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সুখী সমৃদ্ধ স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার চুড়ান্ত পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রাম এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা জন্য সকলকে সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। দেশে ডেস্কটপ পাবলিশিংয়ের জনক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডেস্কটপ পাবলিশিংয়ের আগে দেশে সীসার হরফ তার পর ফটো টাইপসেটার ছিল মূদ্রণ শিল্পের প্রযুক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়।
এটি আমার জন্য সৌভাগ্যের যে দেশের কাগজে প্রকাশিত বইয়ের শতভাগ আমার তৈরি অক্ষর দিয়ে ছাপা হয়। মন্ত্রী প্রযুক্তি ও মানুষের মিশেলে একটি স্মার্ট সাম্য সমাজ বিনির্মাণে চলমান কর্মসূচি বেগবান করতে লেখক, প্রকাশক ও বিক্রেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশে ও দেশের বাইরে বই পাঠকের হাতে পৌঁছে দিতে রকমারির পথ অনুসরণ করে অন্যদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে।
ব্যবসায়িক দিক বিবেচনায় রেখে কাগজের বইয়ের বাইরেও ডিজিটাল বই প্রকাশ ও বিক্রয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, বই বাজারজাত করতে লাগসই কৌশল গ্রহণ করার সুযোগ আছে এবং এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর, কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল প্রমূখ বক্তৃতা করেন। বক্তারা পাঠকদের কাছে বই প্রাপ্তি সহজলভ্য করতে ডিজিটাল প্লাটফর্ম রকমারির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তারা বলেন এই ধরণের উদ্যোগ পাঠক সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। পরে মন্ত্রী নির্বাচিত লেখক ও প্রকাশকদের মধ্যে বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।
০ টি মন্তব্য