জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৯ এপ্রিল সভায় শি পাওয়ার প্রকল্পঃ প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শেখ হাসিনা ২৫০ কোটি ৩ লাখ টাকার প্রকল্পটি ‘সী পাওয়ার’ থেকে ‘হার পাওয়ার’ নামে একনেকের ১৪তম সভায় অনুমোদন করে দিয়েছেন। প্রকল্পের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেয়া হবে। রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, প্রকল্পটি অনুমোদন করে দেওয়ায় আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। হার পাওয়ার প্রকল্পঃ প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প। আইসিটি বিভাগ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রযুক্তি সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প টি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি আটটি বিভাগের ৪৪ টি জেলায় ১৩০ টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটির মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নারীকে আত্মসাবলম্বী করে গড়ে তোলা।
আইসিটির মৌলিক ও নিত্যনতুন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইসিটি উন্নয়নের মূলধারায় নারী জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে ইতোপূর্বে বাস্তবায়িত শি পাওয়ারঃ প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১০,৫০০ জন নারীকে ফ্রিল্যান্সার (৪,০০০ জন), আইটি সেবাদাতা (৪,০০০ জন) ও কল সেন্টার এজেন্ট (২,৫০০ জন) এই তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে যার ফলে আইটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে, নারীরা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছে ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তথ্য
প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২৫,১২৫ জন
নারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আইটি সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে
১০,৪০০ জন; ওমেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ১০,৪০০ জন;
ওমেন কল সেন্টার এজেন্ট হিসেবে
১,০৭৫ জন এবং ওমেন ই-কমার্স প্রফেশনাল হিসেবে ৩,২৫০ জন।
প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে ০১ (এক) মাসব্যাপী মেন্টরশীপ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় আইসিটি পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি একক নারী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফরম তৈরি করা হবে। প্রশিক্ষিত নারীদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী পর্যায়ে কর্মসংস্থান এর সুযোগ তৈরি করা, অন্যান্য আইসিটি সংগঠন বা আইসিটি পেশাজীবী নারীদের সাথে যোগাযোগ, চলমান আইটি সেক্টরের বিভিন্ন তথ্য ও উদ্যোগসমূহ সম্পর্কে জানা, তথ্য আদান প্রদান, গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম এর জন্য নারী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফরমটি তৈরি করা হবে।সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে পার্টনারশীপ স্থাপন এবং চাকুরী মেলার আয়োজন করা হবে। সফল প্রশিক্ষণার্থীদের ল্যাপটপ ক্রয়ের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে।
এই
প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে
প্রান্তিক পর্যায়ের নারী জনগোষ্ঠীকে আইসিটিতে দক্ষ ও উৎপাদনশীল মানব
সম্পদে রুপান্তরে অবদান রাখবে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, সু-শাসন ও
টেকসই উন্নতি নিশ্চিত
করা সহজ হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
০ টি মন্তব্য