ব্যক্তিগত শব্দগুচ্ছ যোগ করে সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা সংশোধন ও পরিমার্জন করে ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩’ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা কমিটি। ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে তথ্য নিয়ে কাজ করার স্বাধীনতা দিয়েছে এই আইন।
এর ফলে কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা অধিকার নিশ্চিত ও তথ্য চুরি হলে সে/তারা আইনের সুরক্ষা পাবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে তথ্য ও যোগাযো প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এই আইনটি উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী আইনটি পাশ করেছেন।
আইনের বিধি অনুযায়ী, এই আইন কার্যকর করতে একজন চেয়ারম্যান ও ৪ জন সদস্য নিয়ে একটি স্বতন্ত্র্য বোর্ড গঠন করা হবে। আইন পাশ করে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করতে ন্যূনতম এক বছরের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, উপাত্তধারীর সম্মতি ছাড়া কেউ তা সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা প্রক্রিয়া করণ করতে পারবে না। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এই বোর্ডের কাছে নালিশ করতে পারবে। এরপর বোর্ড শুনানি করে রায়ের ওপর নারাজি হলে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে। পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল কর্তৃপক্ষ রায় দেবে। যদি কারিগরি কোনো বিষয় যুক্ত থাকে তবে আরো ৬০দিন সময় পাবে। অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে হবে।
আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে নিজ সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো জানিয়েছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন পরিবর্তন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন হয়েছে। নাম দেয়া হয়েছে “জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি “।
মোট ১৩টি অধ্যায়ে সংশোধিত আইনের খসড়ায় ৭১টি বিধি রয়েছে। সম্মতি, পক্ষপাতহীনতা, শুদ্ধতা, ধারণ, গুণগত মান নিশ্চিতকরণ ও উপাত্তে প্রবেশাধিকার, প্রকাশ, নিরাপত্তা, ঝুঁকি ভিত্তিক সুরক্ষা ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সুরক্ষা এবং প্রয়োগযোগ্য মানদণ্ড নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে এই আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে।
এর মধ্যে আইনে শিশু সম্পর্কিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সংক্রান্ত বিষয়ে পিতা-মাতা অথবা আইনি অভিভাবকের সম্মতির বিধান রয়েছে। একই ভাবে রাষ্ট্রকেও শর্তসাপেক্ষে ব্যক্তির তথ্য ব্যবহারে তার সম্মতি নিতে হবে।
এছাড়াও ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব এর মতো বিদেশেী কোনো কোম্পানির মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য খোয়া গেলে উক্ত কোম্পানিকে পূর্ববর্তী আর্থিক বছরের বাংলাদেশে কৃত ব্যবসায়ের মোট টার্নওভারের অনধিক ৫ শতাংশ অথবা যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তার ওপর ১৫০ শতাংশ বা যে অংকটা বড় হবে সেই অনুযায়ী আর্থিক প্রশাসনিক জরিমানা করা হবে।
প্রশাসনিক জরিমানা আদায়ে প্রয়োজনে পাবলিক রিকভারি অ্যাক্ট ১৯১৩ প্রয়োগ করা হবে। আইন পর্যালোচনা করে দেখাগেছে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনটি ভারতের আইনের বেশ কাছাকাছি এবং আশিয়ান দেশভুক্ত দেশগুলো তথা সিবিপিআর-কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক বা বহুপাক্ষিক চুক্তি বা ফোরামের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পারস্পিরিক সমতার নীতির আওতায় যেকোনো সদস্য রাষ্ট্র হতে কোনো ব্যক্তিগত উপাত্ত বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশ হতে অন্য দেশে প্রক্রিয়াকারীর কার্য-সম্পাদনে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট ফোরামের সদস্য হতে হবে।
এদিকে আইনের ধরা ৩৩ অনুযায়ী ছয়টি বিশেষ ক্ষেত্রে উপাত্ত জিম্মাদারকে উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ ও স্থানান্তরের কেক্ষেত্রে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।
নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে 'ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩'
আরও পড়ুন
মতামত দিন আপনার ইমেল প্রকাশিত হবে না।
আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন।
যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।
রিভিউ ( ০ / ৫ )
আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন।
যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।
০ টি মন্তব্য