https://gocon.live/

প্রযুক্তি

প্রযুক্তি ঢুকে পড়তে পারে মাথায় আপনি তৈরি আছেন তো?

প্রযুক্তি ঢুকে পড়তে পারে মাথায় আপনি তৈরি আছেন তো? প্রযুক্তি ঢুকে পড়তে পারে মাথায় আপনি তৈরি আছেন তো?
 

প্রযুক্তি ঢুকে পড়তে পারে মাথায় আপনি তৈরি আছেন তো?

 

নতুন এক প্রযুক্তির কথা শুনছি। এটি ঢুকে পড়তে পারে আপনার মাথার ভেতরে। কিছু বিশেষজ্ঞের অভিমত, এ ধরনের ব্রেইন ইমপ্ল্যান্ট টেকনোলজি তথা মস্তিষ্কে প্রযুক্তির সংযোজন ভয়াবহ ধরনের প্রাইভেসি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, এর মাধ্যমে আপনারআমার মনমানসে বাইরের কেউ ঢুকে পড়তে পারে। গারট্রুডি নামের একটি শূকরকে রাখা হয়েছিল একটি খড়বিছানো খোঁয়াড়ে। এর নজর নেই ক্যামেরার দিকে কিংবা দর্শকদের প্রতি। এটি একই সাথে এড়িয়ে চলছিল এর মস্তিষ্কের ওপর ১,০২৪ ইলেকট্রোডসের আড়িপাতার বিষয়টিও। প্রতিবারেই গারট্রুডির নাক গবেষকের হাতের ওপর ঘষছে, যা থেকে একটি মিউজিক্যাল জিঙ্গলের শব্দ আসছিল। এটি কর্মকান্ডের সঙ্কেত দিচ্ছিল এই শূকরটির নাক নিয়ন্ত্রণকারী স্ন্যায়ুকোষগুলোতে। 

 

এই পৌনঃপুনিক সঙ্কেতগুলো ছিল ২০২০ সালের ২৮ আগস্টে ‘নিউরোলিঙ্ক’ কোম্পানির উদঘাটিত ‘নার্ভ-ওয়াচিং টেকনোলজি’র অংশ। নিউরোলিঙ্ক হচ্ছ ক্যালিফোর্নিয়ার সানফান্সিসকোভিত্তিক একটি কোম্পানি। ‘বিভিন্ন উপায়ে আপনার মাথার খুলির ছোট ছোট তার লাগানো একটি  Fitbit-এর মতো’ এভাবেই এলন মাস্ক সেদিন তার কোম্পানির এই প্রযুক্তির বর্ণনা দেন।’স্ন্যায়ুবিজ্ঞানীরা মস্তিষ্ক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক দশক ধরে অনেক গবেষক পশুর স্ন্যায়ুকোষের কর্মকাÐ রেকর্ড করে চলেছেন। কিন্তু এলন মাস্ক ও অন্যান্য গবেষক এ ক্ষেত্রে অনেকএগিয়ে আরো কিছু কাজ করেছেন। তারা চান আমরা যেন আরো ভালোভাবে আমাদের প্রিয় স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে ও আবার সচল করে তুলতে পারি। অথবা হতে পারে আমরা আমাদের মস্তিষ্কে ভিডিও গেম রিপ্লে করতে পারি। এমনকি একদিন আমরা মনের ইশরায় গাড়ি ডাকতে পারি।

  

যখনই গারট্রুডির নাক কোনো কিছু স্পর্শ করেছিল, তখনই তার মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো ছুড়ে দেয় ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল। এসব সিগন্যাল চিহ্নিত করা হয় ইমপ্ল্যান্ট করা তথা মস্তিষ্কে প্রোথিত করা একটি যন্ত্রে। ছবিতে সিগন্যালগুলো দেখানো হয়েছে কালোর ওপর ঢেউ তোলা রেখার মাধ্যমে। একই ধরনের প্রযুক্তি একদিন সহায়ক হতে পারে প্যারালাইসিস রোগী কিংবা পাগলদের জন্য। ছবি : নিউরোলিঙ্ককিছু বিজ্ঞানী গারট্রুডির সূচনাকে অভিহিত করেছেন নজরকাড়া বিস্ময় হিসেবে। কিন্তু ‘তেসলা’ গাড়ির প্রস্তুতকারক এলন মাস্ক মানুষকে এর আগেই বিস্মিত করেছেন। ‘আপনি এলন মাস্ককে এমন কোনো ব্যক্তি হিসেবে ভাবতে পারেন যিনি নিজে তৈরি করেছেন তার ইলেকট্রিক গাড়ি এবং তা পাঠিয়েছেন মঙ্গলগ্রহের চারপাশের কক্ষপথে’ বলেন ক্রিস্টফ কোচ। তিনি ওয়াশিংটনের সিয়াটলের অ্যালেন ইনস্টিটিউট ফর ব্রেইন সায়েন্সের একজন নিউরোসায়েন্টিস্ট।মস্তিষ্কপ্রযুক্তি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা পেতে পারি এক্সটার্নাল হেডসেট, এই হেডসেট আমাদের জানিয়ে দিতে পারে ক্ষুধা (হাঙ্গার) ও একগুঁয়েমিজনিত ক্লান্তির (বোরডম) মধ্যকার পার্থক্য। মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপিত ইলেকট্রোডস আমাদের সহায়তা করতে পারে আমাদের ইচ্ছা সঞ্চালন করতে বাস্তব জীবনে কথা বলতে। বালাটি ¯œায়ুর ইমপালস কাজে লাগিয়ে কি-বোর্ড, মাউস ও টাচ স্ক্রিন ছাড়াই টাইপ করতে পারে। আজকের দিনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোকের ওপর এরই মধ্যে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ব্রেইন কমপিউটার ইন্টারফেস ইনটেনশনের কাজ সঞ্চালিত করে। শুধু ব্রেইন সিগনাল দিয়েই এসব মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা ও যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছে এমনকি কৃত্রিম বাহু ব্যবহার করতে পারছে পেয়ালাতে চুমুক দিয়ে কিছু পান করতে। কিন্তু ব্রেইন চাটার শোনা ও বোঝার ও এমনকি তা আরো পরিশুদ্ধ করার সক্ষমতা মানুষের জীবনে মানোন্নয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এমন সম্ভাবনা প্রবল। আর এই নিউরনগত আড়িপাতা আরো অনেক উপায়েই উপকারী হতে পারে চিকিৎসার ক্ষেত্রে। তবে, এ ধরনের প্রযুক্তি জন্ম দিতে পারে নানা প্রশ্নের কে আমাদের মস্তিষ্কে ঢুকবে, কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য?

 

মনের চিন্তা পাঠ

 

গবেষক ও চিকিৎসকেরা দীর্ঘকাল থেকে উপায় অনুসন্ধান করে আসছেন অন্য কারো মাথা থেকে কোনো তথ্য বা মনের কথা বের করে নিয়ে আসায় নিজেদের সক্ষম করে তোলার জন্য। তারা চান ওই ব্যক্তির সাথে কোনো কথা না বলেই তার মনের কথা জেনে নিতে। এ কাজটিকে সাধারণত বলা হয় মাইন্ড রিডিং বা মনপাঠ। এই সক্ষমতা অর্জনের সুবিধা হচ্ছে, তখন আর কারো মনের কথা জানার জন্য তার অঙ্গ সঞ্চালন কিংবা কথা বলা বা টাইপ করার প্রয়োজন হবে না। এই পদ্ধতি তাদের জন্য উপকার বয়ে আনতে পারে, যারা শারীরিকভাবে অচল হয়ে পড়েছেন; শরীর নড়াচড়া করতে পারেন না ও কথা বলতে পারেন না। মস্তিষ্কে প্রোথিত (ইমপ্লানটেড) ইলেকট্রোডগুলো মস্তিষ্কের মুভমেন্ট এরিয়ার সিগন্যাল রেকর্ড করতে পারে। এর মাধ্যমে কিছু লোক সুযোগ পায় রোবটিক প্রসথেসিস (রোবটসমৃদ্ধ কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ) নিয়ন্ত্রণের।

  

২০১৯ সালের জানুয়ারি জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রোড প্রোথিত করেন রবার্ট বাজ চিমেলেস্কির মস্তিষ্কে। সার্ফিং করার সময় এক দুর্ঘটনায় ওই ব্যক্তির হাত ও পা অচল হয়ে পড়ে। তার মস্তিষ্কের উভয় পাশের সিগন্যাল ব্যবহার করে চিমেলেস্কি সক্ষম হন তার কৃত্রিম হাত নিয়ন্ত্রণে। এই হাত দুটি দিয়ে তিনি ফর্ক ও ছুরি ব্যবহার করে নিজে নিজে খাবার খেতে পারেন। গবেষকেরা গত বছর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। রবার্ট বাজ চিমেলেস্কি তার কিশোর বয়স থেকেই কোয়াড্রিপ্লেজিয়ায় ভুগছিলেন। কোয়াড্রিপ্লেজিয়া এক ধরনের প্যারালাইসিস, যার ফলে ঘাড়ের নিচ থেকে শুরু করে জিহ্বা পর্যন্ত এবং পা ও বাহু অচল হয়ে পড়ে। মেরুদন্ডে সেই স্ন্যায়ুর ওপর আঘাতের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়, যে স্ন্যায়ু চলাচল ও শরীরের বিভিন্ন অংশে সচেতনতার বার্তা পাঠিয়ে থাকে। সে যাই হোক, চিমেলেস্কি তার মস্তিষ্কের উভয় পাশে প্রোথিত ইলেকট্রোডের মাধ্যমে মস্তিষ্কের সিগন্যাল ব্যবহার করেন কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে। তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন দুটি রোবটিক হাত। একটি হাত দিয়ে ধরেন ফর্ক আর অন্য হাতটি ব্যবহার করেন ছুরি চালানোর কাজে। অন্য গবেষকেরা কথা বলতে অক্ষম এক প্যারালাইসিস রোগীর মস্তিষ্কের সিগন্যাল থেকে কথা ডিকোড করেছেন। এক ব্যক্তি কমপিউটার স্ক্রিনে দেখতে পান এই প্রশ্ন : Would you like some water? তখন তিনি এ প্রশ্নের জবাব লিখেন এভাবে : No, I am not thirsty|তার কাছে ছিল একটি কমপিউটার, যেটি তার মস্তিষ্ক থেকে পাওয়া সিগন্যালের বার্তাটি ব্যবহার করে প্রিন্ট করতে পারে। 

 

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই ঘটনার বর্ণনা প্রকাশ করে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর। সেটি ছিল মস্তিষ্ক ও কমপিউটারের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার এক অগ্রসর উদাহরণ। আটলান্টার এমরি ইউনিভার্সিটির নিউরোএথিসিস্ট কারেন রোমেলফেঙ্গার বলেন, ‘এর আগে কখনোই আমরা দেহের অন্যান্য অঙ্গের সাথে মিথষ্ক্রিয়া করে এ ধরনের তথ্য পেতে দেখিনি।’ এই ভদ্রমহিলা আরো বলেন, উদাহরণত সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ও লিখনে সার্বিকভাবে প্রয়োজন সিন্ধান্তসূচক পদক্ষেপ।এই ভদ্রমহিলা বলেন, এখন পর্যন্ত মস্তিষ্ক থেকে তথ্য বের করে আনার নানা পদক্ষেপের জন্য প্রয়োজন পড়ে স্থূলকায় যন্ত্রপাতি। সেই সাথে গবেষকদের ব্যবহার করতে হয় খুবই কমপিউটিং পাওয়ার। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাদের প্রয়োজন ইচ্ছুক অংশগ্রহণকারী। কমপক্ষে এখন পর্যন্ত মনের ভেতরে প্রবেশের যেকোনো পদক্ষেপ সহজেই ভেস্তে যেতে পারে যদি অংশগ্রহণকারী চোখ বুজে ফেলে কিংবা তার মধ্যে ঘুমঘুম ভাব চলে আসে। অধিকন্তু, রোমেলফেঙ্গার বলেন, ‘উদ্বেগের বিষয় হলো মাইন্ড রিডিং হচ্ছে খুবই ভাসা ভাসা-আবছা আবছা; নিশ্চিত কিছু নয়। আমার বিশ্বাস, কোনো  স্ন্যায়ুবিজ্ঞানীরাইনিশ্চিত জানেন না, মন তথা মাইন্ড আসলে কী এবং চিন্তাভাবনা তথা থট আসলে কী। এর ফলে আমি মাইন্ড রিডিং নিয়ে ততটা ভাবি না। ভাবি না আজকের দিনের এ সম্পর্কিত প্রযুক্তি নিয়ে।’কিন্তু নিউ ইয়র্ক সিটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুজীববিজ্ঞানী র্যাফায়েল উস্তি বলেন কিন্তু এ ক্ষেত্রে দ্রæত পরিবর্তন আসতে পারে। আমরা খুবই কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছি মানুষের মস্তিষ্ক থেকে ব্যক্তিগত তথ্য বের করে আনার ক্ষেত্রে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে মানুষ কীদেখেছে ও কী শব্দ সে শুনতে পারে তা ডিকোড করার ব্যাপারে। 

 

নিউরোটেক কোম্পানি কার্নেলের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন একটি হেলমেট। সবেমাত্র এটি বাজারে এসেছে। এটি কাজ করে একটি বহনযোগ্য স্ক্যানার হিসেবে। এটি আলোকপাত করে মস্তিষ্কের সুনির্দিষ্ট কিছু অংশের কর্মকান্ডের ওপর। আজ পর্যন্ত কোম্পানিগুলো কাজ করছে আমাদের বিহেভিয়ার বা আচরণ নিয়েÑ আমাদের পছন্দ-অপছন্দ, আমাদের ক্লিক ও আমাদের কেনাকাটার ইতিহাস নিয়ে যা থেকে আমাদের বিস্ময়করভাবে যথাযথ একটি প্রোফাইল তৈরি করা যায়। ভবিষ্যদ্বাণীমূলক অ্যালগরিদম ভালো আন্দাজ-অনুমানই দিতে পেরেছে। কিন্তু এগুলো শুধুই আন্দাজ-অনুমান। র্যাফায়েল উস্তি বলেন ভবিষ্যতে প্রযুক্তি হয়তো এমনকি সাবকনসাস থট (আধাসচেতন চিন্তাভাবনা) উদঘাটন করতে সক্ষম হতেপারে। আর সেটাই হবে প্রাইভেসি নিয়ে উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এরপর আর বাকি থাকল কী?

 

পরবর্তী পদক্ষেপ : আচরণ পরিবর্তন?

 

এরই মধ্যে আমাদের হাতে এমন প্রযুক্তি রয়েছে, যা ‘ব্রেইন অ্যাক্টিভিটি’ পাঠ করতে বা জেনে নিতে পারে; এবং তা পরিবর্তন করতে পারে। এ ধরনের যন্ত্র দিয়ে কোনো মৃগি রোগীর আসন্ন আক্রমণ চিহ্নিত করতে পারে এবং তা রোধ করতে পারে। কিংবা আক্রান্ত হওয়ার আগেই এর কম্পন ঠেকাতে পারে। গবেষকেরা এমনকি অবসেসিভকমপালসিভ ডিজঅর্ডার, অ্যাডিকশন ও ডিপ্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। কিন্তু মস্তিষ্কের কর্মকান্ড পরিবর্তনের যথাযথভাবে পরিবর্তনের ক্ষমতা ও কারো আচরণ পরিবর্তনের বিষয় বড় ধরনের সমস্যাকর প্রশ্নের জন্ম দেবে।বিজ্ঞান এখনো তা করতে সক্ষম হয়নি। তবে ইঙ্গিত মিলেছে তা করা সম্ভব। গবেষকেরা এরই মধ্যে সৃষ্টি করেছেন ‘ভিশন ইনসাইড মাউস ব্রেইনস’। তারা এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন ‘অপটোজেনিটিকস’ নামের টেকনিক। এটি আলো ব্যবহার করে স্নায়ুকোষের ক্ষুদ্র একটি দলকে অধিকতর উদ্দীপ্ত করে তুলতে। র্যাফায়েল উস্তি বলেন= এভাবে গবেষকেরা ইঁদুরদের কিছু রেখা দেখতে দেন, যেগুলো সেখানে ছিল না। কিন্তু ইঁদুরগুলোর আচরণ ছিল এমন, যেন আসলেই এই রেখাগুলো দেখেছে। র্যাফায়েলের গবেষক দল এর কয়েকটি পরীক্ষার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি প্রভাবিত ইঁদুরগুলোর নাম দেন ‘পাপেট’। এসব নতুন অগ্রগতি ঘটেছে আমাদের এমন সব প্রযুক্তির প্রেক্ষাপটে, যেসব প্রযুক্তি আমরা আরামের সাথে ব্যবহার করছি।.

 

মস্তিষ্ক ও চিন্তাভাবনার প্রাইভেসি রক্ষা

 

কারো কারো মতে, মস্তিষ্কপ্রযুক্তি আমাদের প্রাইভেসিতে কতটুকু অনুপ্রবেশ করবে, তা নিয়ে ভাবার সময় এখনো আসেনি। আবার অনেকেই এই অভিমত মানতে নারাজ। র্যাফায়েল উস্তি ও অন্যরা চান, আমাদের প্রাইভেসি সুরক্ষায় কঠোর আইন থাকা দরকার। তারা খুশি হবেন, যদি আমাদের মস্তিষ্ককোষ ডাটা সুরক্ষিত থাকে, ঠিক যেমনটি আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সুরক্ষিত আছে। কেউ কারো লিভার তথা যকৃত অনুমতি ছাড়া চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য দেহ থেকে বের করে নিতে পারে না। এসব গবেষকের অভিমত, আমাদের নিউরাল ডাটা একইভাবে সুরক্ষা পাবে। 


এই অভিমতটি গ্রহণযোগ্যতা পায় দক্ষিণ আমেরিকার চিলিতে। দেশটি এখন বিবেচনা করছে, নিউরাল ডাটা সংরক্ষণের জন্য নতুন সুরক্ষা দেবে কিনা, যাতে কোনো কোম্পানি কারো অনুমতি ছাড়া আপনার ডাটা পেতে না পারে। অন্য গবেষকেরা এ ব্যাপারে অনেকটামধ্যপন্থা অবলম্বনের পক্ষে। যেমন : ইনেকা মনে করেন, মানুষের ব্রেইন ডাটা বিক্রি কিংবা অন্যকে দেয়ার ব্যাপারে নিজস্ব পছন্দের সুযোগ থাকা উচিত। মানুষ চাইলে যেন পছন্দের কোনো কিছুর বিনিময়ে কিংবা নগদ অর্থের বিনিময়ে তার ব্রেইন ডাটা বিক্রি করতে পারেন। তিনি বলেন, এভাবে মানবমস্তিষ্ক হয়ে উঠছে নয়া সম্পদ। তার এই অভিমত সেসব কোম্পানির অনুক‚লে যায়, যেগুলো ব্রেইন ডাটা মাইনিংয়ে আগ্রহী। 


কিন্তু এই ডাটা ব্যবস্থাপনার কাজটি কীভাবে চলবে, তা নির্ধারণ সহজ কাজ নয় এমনটি মনে করেন এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোমেলফেঙ্গার। এ ক্ষেত্রে জেনারেল গাইডলাইন হয়তো পাওয়া যাবে বিশটিরও বেশি ফ্রেমওয়ার্ক, গাইডলাইন, নীতি তৈরি করা হয়েছে নিউরোসায়েন্স নিয়ন্ত্রণের জন্য। অনেকে এসব বিষয় মোকাবেলা করেন ‘মেন্টালপ্রাইভেসি’ ও ‘মেন্টাল লিবার্টি’ হিসেবে, যেখানে মানুষের স্বাধীনতা থাকবে তার নিজস্ব মানসিক জীবন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে। রোমেলফেঙ্গার মনে করেন, এ ধরনের গাইডলাইন নিয়ে ভাবা যেতে পারে। এরপরও প্রযুক্তির ভিন্নতা রয়েছে প্রযুক্তি কী করতে পারে এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব কী হতে পারে। তিনি বলেন, এই সময়ে ‘ওয়ান-সাইজ-ফিটস-অল’ ধরনের কোনো সমাধানের অস্তিত্ব নেই্। বরং এর পরিবর্তে প্রতিটি কোম্পানি বা গবেষণা গোষ্ঠীর উচিত নৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা। কারণ, ব্রেইন ডাটা ব্যবহার নিয়ে তাদের গবেষণা এগিয়ে চলছে। এই মহিলা ও তার সহকর্মীরা সম্প্রতি প্রস্তাব করেছেন পাঁচটি প্রশ্ন। এই প্রশ্নগুলো গবেষকেরা নিজেদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন; নৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করার আগে। তাদের এই প্রশ্নে জনগণের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, একটি প্রযুক্তি গবেষণাগারের বাইরে কীভাবে ব্যবহার হওয়া উচিত?তবে রোমেলফেঙ্গার বিশ্বাস করেন, এই প্রযুক্তির উন্নয়নের গবেষণাকে এগিয়ে নেয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেসি লঙ্ঘনের চেয়ে আমার বেশি ভয় জনগণের আস্থা কমে যাওয়া নিয়ে। আমার ভয় এই প্রযুক্তি যা কিছু ভালো করতে পারে তার অবমূল্যায়িত হয় কিনা।’

 

ব্রেইন ডাটা মাইনিংয়ের নীতি-সম্পর্কে সুস্পষ্ট না হলে মনে হয় না এর জন্য আগামী নিউরোটেকের অগ্রগতি শ্লথ হয়ে যাবে। কিন্তু ব্রেইন ডাটা মাইনিং করা যথাযথ হবে কিনা, তা নিয়ে সুষ্ঠু চিন্তাভাবনা আমাদের করণীয় নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটি সহায়ক হতে পারে, মানুষ হিসেবে আমাদের সুরক্ষা দেয়ার ব্যাপারে









০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।