https://gocon.live/

ল্যাপটপ চুরি নিয়ে বেসিস সচিবের ব্যাখ্যা

ল্যাপটপ চুরি নিয়ে বেসিস সচিবের ব্যাখ্যা ল্যাপটপ চুরি নিয়ে বেসিস সচিবের ব্যাখ্যা
 
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সচিবালয় থেকে সম্প্রতি একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে।

এ নিয়ে বেসিস সচিব হাশিম আহম্মদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন তা তুলে ধরা হলো।mআপনারা অনেকেই হয়তো জানেন, আমি ২০০৮ সালে বেসিস-এ যোগদান করি।

গত ১৬ বছরে আমি সম্মানিত ৭ জন বেসিস সভাপতি এবং ৭টি পৃথক বোর্ডের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি এবং প্রত্যেক নির্বাহী কমিটির কাছে সমানভাবে অনুগত থাকার চেষ্টা করেছি।

এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তাদের প্রত্যেকের কাছে আমি ঋণি। তারা আমাকে যথেষ্ট সম্মানিত করেছেন। বিগত ১৬ বছরে আমি ও বেসিস সচিবালয়ে নিযুক্ত আমার সহকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি বেসিস-এর স্বার্থ রক্ষাসহ এর সকল কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে।

নিজেকে বেসিস পরিবারের অন্যতম সদস্য ভেবে এর জানমাল ও তথ্য উপাত্ত রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। বেসিসের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নির্ধারিত অফিস সময়ের চেয়েও গড়ে ৩/৪ ঘণ্টা করে বেশি কাজ করে যাচ্ছি।

বেসিস-এর যেকোনো তথ্য, উপাত্ত সুরক্ষায় বেসিস-এর কর্মকর্তাদের সাথে এনডিএ স্বাক্ষর করাসহ ডেটা ব্যাকআপের সম্ভব সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।  

সম্প্রতি বেসিস সচিবালয়ে চুরির একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। যে বিষয়ে একাধিক পত্রিকায় যেভাবে খবর প্রকাশিত হয়েছে এবং ফেইসবুকে বেসিস মেম্বারস প্ল্যাটফরমে যেভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করা হচ্ছে তাতে আমি বিস্মিত হয়েছি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বেসিস সচিবালয়ের হিসাব বিভাগের থাই গ্লাসের জানালা দিয়ে একজন অজ্ঞাতনামা চোর ঢুকে প্রথমে বিভিন্ন ড্রয়ার ঘেঁটে প্রায় দেড় লাখ টাকা ও হিসাব বিভাগের দুজন কর্মকর্তার ডেস্কে রাখা দুটি এইচপি ল্যাপটপ নিয়ে যায়।

ব্যাপারটি ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ সকালে অফিসে এসে বুঝতে পারি কক্ষে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। সাথে সাথে সিসিটিভি চেক করে নিশ্চিত হই এবং বেসিস সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি (প্রশাসন) এবং সহ-সভাপতি (অর্থ) মহোদয়কে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করি এবং তাদের পরামর্শ নিয়ে তেজগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করি।

পুরো ব্যাপারটার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের সাথে শেয়ার করি, যা বেসিস সচিবালয়ে সংরক্ষিত আছে। পরবর্তিতে তেজগাঁও থানা থেকে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা সরেজমিন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন।

অপর একজন কর্মকর্তা মামলার আইও হিসেবে নিযুক্ত হয়ে তদন্ত পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে মামলাটি ডিবিতে ন্যস্ত করার জন্য পৃথক একটি আবেদন ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে। 

বিগত ১৬ বছরে বেসিস অফিসে এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া বেসিস সচিবালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমের সকল বিষয় বেসিস সদস্যদের অবহিত করার প্রয়োজন হয় না।

তাৎক্ষণিক করণীয় বিবেচনায় বিষয়টি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, যে জানালা দিয়ে চোর এসেছে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব বিডিবিএল এর নিরাপত্তারক্ষীদের উপর বর্তায়।

সে কারণে বিডিবিএল কর্তৃপক্ষেকে লিখিতভাবে জানিয়ে বিষয়টস্থ সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীকে খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে এবং ঘটনার ৩ দিনের মধ্যে জানালার বাইরে দিয়ে গ্রিল দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এতগুলো টাকা কেন ব্যাংকে জমা না করে অফিসে রাখা হলো এবং কেন কক্ষের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যাপারটি হিসাব বিভাগের দুজন কর্মকর্তা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, সেজন্যে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে ব্যাপারে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়েছে।

সবমিলিয়ে ব্যাপারটি যেহেতু তদন্তাধিন, সেহেতু সম্মানিত সদস্যগণ নতুনভাবে কোনো তদন্ত পরিচালনা করলে তাতে আমি ও আমার সহকর্মীরা সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি। 

এখানে উল্লেখ্য, চুরির ঘটনাটি অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক সন্দেহ নেই, কিন্তু কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, ল্যাপটপ যেহেতু চুরি হয়েছে, সেহেতু হিসাব বিভাগের অনেক ডেটা ও তথ্যও চুরি হয়ে গেছে।

ল্যাপটপে কিছু ওয়ার্ড ও এক্সেল ফাইল ছিল ঠিকই কিন্তু বেসিস-এর কোনো হিসাব চুরি হারিয়ে যায়নি। বেসিস বহুবছর থেকেই ক্লাউড বেইজড একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আসছে। শুধু তাই নয়, বেসিস সচিবালয়ের সকল ডেটা, তথ্য, উপাত্ত এবং সকল ডকুমেন্টস প্রতিদিনই ফিজিক্যাল ও ক্লাউড বেইজড সার্ভারে সুরক্ষিত থাকে।

তাছাড়া ব্যাংক স্টেইটমেন্ট বা ব্যাংক রিকনসিলিয়েশনের এবং সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত নির্বাহী কমিটির সভায় আপডেট করার পাশাপাশি ফিজিক্যাল ফাইল হিসেবে সংরক্ষিত আছে বা থাকে।

সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, চোর কেবলমাত্র ল্যাপটপ আর টাকা ছাড়া কোনো ডকুমেন্ট নেয়নি। সুতরাং বেসিস সচিবালয়ের কোনো ডকুমেন্ট হারায়নি বা চুরি হয়নি এবং এর সাথে অডিট ফার্ম পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই। 

পরিশেষে বলতে চাই, বেসিস সচিবালয়ের প্রত্যেক কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে করা হয়।

আমি মাত্র ৫ জন জনবলের বেসিস সচিবালয়ে যোগদান করেছিলাম। এখন জনবলের সংখ্যা ৩৫। গত ১৬ বছরে শতাধিক কর্মকর্তা বেসিস থেকে গিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে, কেউ কেউ উদ্যোক্তা হয়ে বেসিস সদস্যও হয়েছেন।

বেসিস সচিবালয় সকল সদস্যদের কাছে দায়বদ্ধ, সচিবালয়ের কোনো কর্মকর্তা কিংবা কোনো কাজের ব্যাপারে আপনাদের মূল্যবান মতামত আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো।

কিন্তু সপ্তাহে ৬ দিন এমনকি বছরের বেশকিছু দিন ৭দিনও সকাল-সন্ধ্যা যে ছেলেমেয়েগুলো কাজ করে, তাদের যেকোনো ভুলত্রুটি আপনারা অভিভাবক হিসেবে আমাকে জানালে আমি সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।  

বেসিস আপনাদেরই গড়া এবং আপনাদের প্রাণের সংগঠন। সুতরাং বেসিস ও বেসিস সচিবালয় নিয়ে আপনাদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য আর যাই হোক, অপরাপর বাণিজ্য সংগঠন, সরকার ও অংশীজনদের কাছে বেসিস-এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা ছাড়া ইতিবাচক কোনো ফল বয়ে আনবে না।

অপরদিকে, এটা বেসিস সচিবালয়ে কাজ করার জন্য বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে কোনোভাবেই অনুপ্রাণিত করবে না বলে মনে করি। যা বেসিস সচিবালয়কে যুগপোযোগী ও প্রয়োজনীয় সক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলার প্রয়াসকে ব্যাহত করবে।

পরিশেষে, বেসিস সচিবালয়ের দক্ষতা ও সেবার মান বাড়াতে আপনাদের যেকোনো ইতিবাচক পরামর্শ আমরা সাদরে গ্রহণ করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।







০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।