https://gocon.live/

প্রযুক্তি

নজরদারি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে

নজরদারি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে নজরদারি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে
 

নজরদারি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে


বিশ্বজুড়ে নজরদারি বা সিকিউরিটি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, ফিজিক্যাল সিকিউরিটি প্রোডাক্ট মার্কেট এ বছর ছিল ৩১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যা ২০১৭ সালের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি। গত চার বছর ধরে ৬.৮৭ শতাংশ হারে নজরদারি পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে। গবেষকেরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, নজরদারি পণ্যের বাজার ২০২৩ সাল নাগাদ ৫১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে।


এর মধ্যে ভিডিও সার্ভিলেন্স প্রোডাক্ট বা সিসিটিভির বাজার হবে সবচেয়ে বড়। ২০২৩ সাল নাগাদ ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ হারে বাড়বে এর বাজার। এর মধ্যে এআই ভিডিও অ্যানালিটিকসের চাহিদাও বাড়তে দেখা যাবে। এ খাতে বাজার আগামী ৫ বছরে বেড়ে আরও ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন যুক্ত করবে। আগামী ১০ বছরে এআই ভিডিও অ্যানালিটিকস খাতটি গেম চেঞ্জার হয়ে উঠবে। এ খাতটি ঘিরেই নতুন পণ্য বাজারে আসবে।


চীনসহ এশিয়ার বাজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এর বাইরে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের বাজারে সার্ভিল্যান্স পণ্যের চাহিদা থাকবে। ভিডিও সার্ভিল্যান্স যন্ত্রপাতি তৈরিতে এগিয়ে থাকবে চীন।


সার্ভিল্যান্স খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে সার্ভিল্যান্স পণ্যের চাহিদা বাড়বে। এর মধ্যে বাংলাদেশের বাজারেও এ পণ্যের চাহিদা থাকবে। ৬ বছর আগে থেকে বিশেষ করে ২০১২ সাল থেকে ভিডিও সার্ভিল্যান্স পণ্যের চাহিদা দেশের বাজারে বাড়তে থাকে। ২০১৯-২০ সালে এ ধরনের পণ্যের বাজার আরও বড় হবে বলে দেশের সার্ভিল্যান্স খাতের ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। এখাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে নিরাপত্তা পণ্যের বাজার বড় হচ্ছে। বিশেষ করে দেশে সিসিটিভির বাজার বড় হচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে এর বাজার বাড়তে শুরু করে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ সিসিটিভির চাহিদা রয়েছে।


গোপনে ভিডিওর মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা (সার্ভিল্যান্স সিস্টেম) বা সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন) এখন বেশ পরিচিত। ১৯৪২ সালে জার্মানিতে প্রথম সিসিটিভি ব্যবহার হয়। জার্মানির ভি-২ রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্য ধারণ করতে একটি কারিগরি পদ্ধতি হিসেবে সিসিটিভির ব্যবহার শুরু হয়। এই সিসিটিভি তৈরি করে সিমেন্স এজি। জার্মানির প্রকৌশলী ওয়াল্টার ব্রুচ এটির কারিগরি নকশা ও সিস্টেম ইনস্টল করেন। টেলিভিশন সম্প্রচারযন্ত্রের মতো একটি অ্যান্টেনা ব্যবহার করে যেকেউ সিসিটিভির ফুটেজ দেখার সুযোগ পেতেন। তবে সার্কিটের বাইরের কেউ তা দেখার সুযোগ পেতেন না। এই রেকর্ডিং তারের মাধ্যমে বা পিয়ার টু পিয়ার (স্বাধীন গ্রাহক থেকে গ্রাহকের মধ্যে যোগাযোগ) তারহীন যোগাযোগের মাধ্যমে সম্প্রচার করার সুবিধা ছিল। ‘সিসিটিভি’ শব্দটি সাধারণত নজরদারি করার ক্যামেরার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে চল্লিশের দশকের পর থেকে সিসিটিভির ব্যবহার শুরু হয়।


সেই সময়কার সিসিটিভির সাথে আধুনিককালের সিসিটিভির মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য চোখে পড়ে। ওই সময় সিসিটিভির দৃশ্য রেকর্ড এবং তা সংরক্ষণ করার সুযোগ ছিল না। অধিকাংশ সিস্টেম তখন সব সময় নজরদারিতে রাখতে হতো। এরপরই ম্যাগনেটিক টেপের উদ্ভাবন ও ব্যবহার শুরু হলে তাতে ভিডিও রেকর্ড করে রাখার সুবিধা যুক্ত হয়। রিল-টু-রিল সিস্টেমে অবশ্য অনেক বেশি সময় লাগত এবং এর খরচও ছিল অনেক বেশি। বর্তমান সময়ের তুলনায় সে সময়ে রিলের স্টোরেজ ক্ষমতাও ছিল অনেক কম এবং ম্যানুয়াল সিস্টেমে তা ধারণ করতে হতো। এ ধরনের অসুবিধার কারণেই সিসিটিভির ব্যবহার তখন জনপ্রিয় হয়নি। সত্তরের দশকে ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডিং প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে তথ্য রেকর্ড ও মুছে ফেলার সুবিধা সহজতর হয়ে যায় এবং নজরদারি করার প্রযুক্তিও পরিচিত হয়ে ওঠে। একসাথে একাধিক ডাটা স্ট্রিম করার জন্য মাল্টিপ্লেক্সিং পদ্ধতির উন্নয়ন, সুলভ ডিজিটাল স্টোরেজ পণ্যের কারণে পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আধুনিক সিসিটিভি নেটওয়ার্কে নজরদারির কাজের জন্য একসাথে একাধিক ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।


আশির দশকে এসে সিসিটিভি নেটওয়ার্কের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে অপরাধ ঠেকানোর জন্য সিসিটিভির ব্যবহার শুরু হয় আশির দশকে এসে। বর্তমানে ব্যাংক থেকে শুরু করে রাস্তা, অফিস, দোকান এমনকি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বাড়িতেও সিসিটিভি বসানো হচ্ছে।


দেশে সিসিটিভির বাজার সম্পর্কে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার সিসিটিভির চাহিদা রয়েছে এখন। এর চাহিদা বাড়ছেই। এনালাগ ক্যামেরা আর আইপি দুই ধরনের ক্যামেরার চাহিদা রয়েছে। তবে সিসিটিভি সেবা সাধারণ ব্যবহারকারীর বাজেটের মধ্যে চলে এসেছে। এখন সব যন্ত্রাংশ মিলিয়ে কম খরচে পাওয়া যাচ্ছে এসব সেবা। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা অনেকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বা সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার দিকে জোর দিচ্ছেন। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার চাহিদা বেড়েছে।


এক্সেল টেকনোলজিসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে দেশে সিসিটিভির চাহিদা অনেক বেড়েছে। এখন অনেক কম খরচেই নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি সেট করা যায়। তাই অনেকেই এ সুবিধা নিচ্ছেন। নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সবাই। সিসিটিভির সাথে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির চাহিদাও বাড়ছে। ডিভিআর, স্টোরেজ, ক্যাবল ও মনিটরের বিক্রি বেড়ে গেছে।


নজরদারি পণ্য বিক্রেতারা বলছেন, এ খাতে এখন বছরে ৫ লাখ পর্যন্ত পণ্যের চাহিদা আছে, যা প্রতিবছর ডবল হয়ে যেতে পারে। এ খাতে দেশের বাজার কয়েক হাজার কোটি পর্যন্ত ছাড়াতে পারে








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।