মানুষের মস্তিষ্কের রহস্য ও ক্ষমতা সম্পর্কে এখনও অজানা অনেক কিছু। এই অজানাকে জানতে কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার মানব-মস্তিষ্কের কোষকে কীভাবে কমপিউটার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যুক্ত করা যায় তা নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণার ফলাফল।
বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচার ইলেকট্রনিকসে প্রকাশিত নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন এই আবিষ্কার নিউরোমরফিক কমপিউটিংয়ের অগ্রগতির ক্ষেত্রে অনেক বেশি অবদান রাখবে।
মস্তিষ্কের গঠনগত ও কার্যগত একক হল নিউরন। তার সাহায্যে মস্তিষ্কের মধ্যে বিপুল তথ্য বিশ্লেষিত হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, এর অন্যতম কারণ মস্তিষ্কের ‘প্রসেসর’ ও ‘মেমরি ডিভাইস’ দু’টির কাজই করে নিউরন।
এইবার, মস্তিষ্কের নিউরন যেভাবে কাজ করে, কমপিউটারও যাতে সেভাবে অনায়াসে কাজ করতে পারে, সেই পথ খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকেরা মানুষের স্টেম সেল থেকে উদ্ভূত একটি ত্রিমাত্রিক ব্রেইন অর্গানয়েড বা মস্তিষ্ক টিস্যুর অনুরূপ একটি টিস্যুর সাহায্যে ‘ব্রেইনোওয়্যার’ নামে একটি সিস্টেম তৈরি করেছেন।
ল্যাবরেটরিতে তৈরি মানুষের মস্তিষ্কের কোষকলা বা অর্গানয়েডের সাথে কমপিউটারের সার্কিট যোগ করে তৈরি এই সিস্টেম ভয়েস রেকগনিশন করতে সক্ষম।
ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনের গবেষক ফং কুয়ো ও তার সঙ্গী গবেষকদের আবিষ্কৃত এই কমপিউটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো এখনও শতভাগ ফলাফল দিতে না পারলেও তাদের মতে, এই আবিষ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
একটি নির্দিষ্ট অর্গানয়েডকে কমপিউটারের সার্কিটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তার পরে, সেগুলোর মাধ্যমে পাঠানো হয় মৃদু বিদ্যুৎ তরঙ্গ।
অর্গানয়েডের প্রতিক্রিয়া একটি সেনসরের সাহায্যে গ্রহণ করা হয়। মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের সাহায্যে বিশ্লেষণ করা হয় প্রতিক্রিয়ার অর্থ।
এই ব্রেইনোওয়্যারের ভাষাগত দক্ষতা যাচাই করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা সেটিকে আটজন পুরুষ কণ্ঠের ২৪০টি অডিও ক্লিপ শোনান যেখানে ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুল উত্তর দিয়েছিল সিস্টেমটি।
‘ব্রেনোওয়্যার’ আবহাওয়া সংক্রান্ত আগাম তথ্য এবং আরও জটিল কাজ করতে পারে কি না তা নিয়ে আরও গবেষণা চালাবেন তারা।
০ টি মন্তব্য