https://comcitybd.com/brand/Havit

অপরাধী শনাক্তে ফেসওয়াচ

অপরাধী শনাক্তে ফেসওয়াচ অপরাধী শনাক্তে ফেসওয়াচ
 
অন্যান্য দিনের মতোই সেদিনও সারা (ছদ্মনাম) সুপারশপে ঘোরাঘুরি করছিলেন কিছু চকোলেট কিনবেন বলে। কিন্তু হঠাৎ দোকানের এক কর্মী এসে তাঁকে চোর সাব্যস্ত করে বসে।

দোকান থেকে বের করে দেন। তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করা হলেও পাওয়া যায়নি কোনো আলামত। তবুও সারাকে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং স্থানীয় সব দোকানে তাঁকে করা হয় নিষিদ্ধ।

বাড়ি ফেরার পথে অঝোরে কাঁদছিলেন সারা আর বলছিলেন, তিনি তো কখনো চুরি করেননি। তাহলে তাঁকে কেন এই ধরনের লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। 

মূলত ‘ফেসওয়াচ’ নামক এক ফেস রিকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে ভুলভাবে সারার মুখ চিহ্নিত করা হয় চোর হিসেবে। আর তাই তাঁকে দোকান থেকে চোর মনে করে বের করে দেওয়া হয়।

ফেসওয়াচ যুক্তরাজ্যের দোকানগুলোতে বেশ প্রচলিত। চোর এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

শুধু দোকানগুলোতেই নয়, লন্ডনের পুলিশও অপরাধী শনাক্ত করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। ফেসওয়াচ ক্যামেরাযুক্ত পুলিশের সাদা ভ্যানগুলোকে দেখা যায় লন্ডনের রাস্তায়।

ক্যামেরাগুলোতে পথচারীদের হাজার হাজার ছবি তোলা হয়। সেই সব ছবি থেকে যদি কারো ছবি পুলিশের ওয়ান্টেড লিস্টে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে মিলে যায় তাহলে পুলিশ ওই সম্ভাব্য ব্যক্তিকে আটক করে।

এভাবে বহু সম্ভাব্য অপরাধীকে আটক করেছে পুলিশ। ফেস রিকগনিশন সিস্টেম ‘ফেসওয়াচ’ বানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফেসওয়াচ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। 

এটি ক্লাউডভিত্তিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। চুরি ও অপরাধ প্রবণতা কমাতে এই বায়োমেট্রিকস সিস্টেম সরবরাহ করছে তারা।
যুক্তরাজ্যের খুচরা দোকান, মার্কেট, সুপারশপগুলোতে এরই মধ্যে ব্যবহার শুরু হয়েছে এই প্রযুক্তির। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের দোকানগুলোতে প্রতিবছর লাখ লাখ চুরির ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় পথচারীদের থাকতে হয় আতঙ্কে। আর তাই ফেসওয়াচ ব্যবহার করা শুরু করেছেন দোকানিরা। এই সিস্টেম বর্তমান সিসিটিভি নিরাপত্তা সিস্টেম থেকে আরো উন্নত। 

ক্লাউডে পুলিশের ওয়ান্টেড লিস্টে থাকা অপরাধীদের ছবি থাকে ফেসওয়াচ সিস্টেমে। যখন ওই অপরাধীরা ফেসওয়াচ সিস্টেমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে তখন এই সিস্টেম একটি সতর্ক সংকেত পাঠায়।

মূলত সেটির ডাটাবেইসে থাকা অপরাধীর ছবির সঙ্গে ক্যামেরায় ধরা পড়া ব্যক্তির বায়োমেট্রিক চিত্র তৈরি করে, যা এক সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে। তবে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া না গেলে ওই চিত্র মুছে ফেলা হয়। 

এই প্রযুক্তি সফলতার সঙ্গে অপরাধীদের শনাক্ত এবং নজরদারি করছে, তেমনি এটির ত্রুটিও আছে। যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা এই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ এবং ত্রুটি নিয়ে বেশ চিন্তিত।

এই প্রযুক্তি বেশ কয়েকবার সাধারণ মানুষকে অপরাধী হিসেবে শনাক্ত করেছে। লন্ডন ব্রিজের কাছ দিয়ে পুলিশের একটি ফেসওয়াচযুক্ত গাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন শন থম্পসন।

হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাঁকে আটক করে পুলিশ, কারণ ফেসওয়াচে তাঁর মুখ কোনো অপরাধীর সঙ্গে মিলে গেছে।

পরে তাঁকে ২০ মিনিট পুলিশের হাতে আটক থাকতে হয়। পরে নিজের হাতের আঙুলের ছাপ এবং পাসপোর্টের কপি দেখালে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এভাবে বহু ব্যক্তি ভুয়া পরিচয়ের শিকার হয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ফেসওয়াচের কারণে। যেমনটা চকোলেট কিনতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়েছিলেন সারা। যদিও ফেসওয়াচ পরে তাঁকে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং স্বীকার করেছে, এটি সফটওয়্যারগত ত্রুটির জন্য হয়েছিল।







০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।