https://gocon.live/

প্রযুক্তি

স্মার্ট গেমের রাজ্যে বাংলাদেশ

স্মার্ট গেমের রাজ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট গেমের রাজ্যে বাংলাদেশ
 

স্মার্ট গেমের রাজ্যে বাংলাদেশ


আজকের বাংলাদেশেও স্মার্টফোন হয়ে উঠেছে খেলার মাঠ। এই মাঠে শহরের শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি এখন ভিড় বাড়ছে শহরতলি থেকে গ্রামের যুবকদের। বৈশ্বিক গেমের পাশাপাশি তারা এখন খেলছেন দেশের তৈরি গেমও। আবার দেশে তৈরি এমন কিছু গেমও রয়েছে, যা খেলা হচ্ছে দেশের বাইরে।


গেম খেলতে দিন দিন স্মার্টফোনের প্রতি টান বাড়ছে শিশুদের। কৈশোর জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। কমপিউটার, ল্যাপটপ, গেমিং কন্সোল ছেড়ে তারা এখন ছুটছেন নিত্যনতুন মোবাইল গেমের দিকে। ফ্রি গেমের পাশাপাশি পেইড গেমও খেলছেন। কিছুদিন আগেও যারা সিডি কিনে গেম খেলতেন, তারা এখন মার্কেট থেকে রিডিং কার্ড বা গিফট কার্ড কিনছেন। ঢাকার অভিজাত এলাকায় গুগলের গেমিং কার্ডের বাজার দিন দিন চাঙ্গা হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়েও মোবাইল গেম উন্নয়নের ক্ষেত্র ঋদ্ধ হচ্ছে। তবে গুগল প্লে স্টোর থেকে সরাসরি গেম কেনার সুবিধা না থাকায় এই বাজারটি ঘুরছে একই বৃত্তে। তারপরও তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যম আর উৎসাহে দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে স্থানীয় মোবাইল গেমের বাজার।


বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোবাইল ফোনের সক্রিয় সংযোগ বা সিম সংখ্যা ১৪ কোটি ৭ লাখ। একই সময় মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯২ লাখ। সম্প্রতি পাওয়া তথ্য মতে, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা গড়ে ন্যূনতম একটি অ্যাপস ব্যবহার করেন। প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করেন অ্যাপস ব্যবহারে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ৮৬ শতাংশ সময় ব্যয় করেন অ্যাপস ব্যবহারে। আর এসব অ্যাপের বেশিরভাগই বিভিন্ন গেম। বর্তমানে বিশ্বে গেমের বাজার প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার। বেসিসের তথ্যমতে, বাংলাদেশে মাত্র ৮ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান গেম ডেভেলপমেন্টের সাথে জড়িত। গেম তৈরির ক্ষেত্রে যতটা অগ্রগতি হয়েছে, বিপণনের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশ। তাই মজার ও প্রয়োজনীয় গেম ডেভেলপমেন্ট করতে পারলে বিলিয়ন ডলারের বাজারে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে মাইন্ডফিশার গেমসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জামিল রশিদ বলেন, দেশীয় খাতে গেম বেশ কম, তাই যদি দেশীয় বাজার লক্ষ্য করে ভালো গেম তৈরি করা যায় তাহলে অনেক বেশি সাড়া পাওয়া যাবে। নতুনদের গেম তৈরি করতে হলে কোয়ালিটির দিকে নজর দিতে হবে।


নতুন কেউ যদি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে চায় তাহলে কোন বিষয়ে নজর দিতে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অডাসিটি আইটি সলিউশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সিদ্দিক আবু বাক্কার বলেন, নতুন ডেভেলপারেরা যদি দেশীয় মার্কেট লক্ষ করে অ্যাপ তৈরি করতে চান তাহলে প্রথমে কোনো একটি সমস্যার সমাধান করতে হবে। যদি অ্যাপ ব্যবহারকারীদের উপকার হয় তাহলে তা জনপ্রিয়তা পাবে এবং লাভবান হওয়া যাবে। নতুনরা কীভাবে স্কিল ডেভেলপ করবেন, এই সম্পর্কে আইটিআইডব্লিউর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তানভীর আদনান বলেন, গেম খাতে কাজ করতে হলে অবশ্যই তাদের আগ্রহী হতে হবে বিষয়টি নিয়ে। গেম নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরের কোর্স রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে তেমন নেই। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইন্টারনেট থেকে শেখা।


মোবাইল ময়দানে


বিকেলে হলেই বল-ব্যাট নিয়ে মহল্লার মাঠে দে ছুট। বৃষ্টি-বাদলে ঘরে বসেই ক্যারাম, লুডু খেলা। অবসরে টিভি ছেড়ে কার্টুন দেখা। স্কুলের মাঠে সহপাঠীদের সঙ্গে হা-ডু-ডু, মোরগ লড়াই, লং জাম্প, বোম্ব বাস্টিংয়ে রঙিন হয়ে উঠত শৈশব। এর ফাঁকে অনেক কিশোরই মাঠে নয় খুপড়ি দোকানে পা বাড়াতো ভিডিও গেম খেলতে। টিফিনের জমানো টাকা দিয়ে ছুটে যেত মোস্তফা ও ডাবল ফাইট কিংবা ভাইস সিটি। কন্ট্রোলার হাতে ভিডিও গেমের সে কী উত্তেজনা! এরই মধ্যে সিডি কিনে ঘরে বসেই ডেস্কটপ পিসিতে শুরু হয় গেম খেলার চল। পাজল গেম ছাপিয়ে ভার্চুয়াল গেমের প্রেসার বাড়তে থাকে।


এরই মধ্যে স্কুলগুলো তরতরিয়ে ওপরে বাড়লেও প্রশস্ততায় কমতে থাকে। শহুরে জীবনে দেখা দেয় খোলা মাঠের হাহাকার। ফলে অল্প দিনেই পিসির পর্দা হয়ে ওঠে খেলার মাঠ। শৈশব-কৈশোরের খেলনায় যুক্ত হয় নানান গেমিং কন্সোল। অন্যদিকে ফিচার ফোনে পিং বল, সাপের খেলার মতো গেমে বয়সীরাও মেতে ওঠেন। পোকেমন গো’র মতো বৈশ্বিক গেমের তালিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনের ‘টিক ট্যাক টয়’ ও ‘গো গো টাইগার’ আদরণীয় হয়ে ওঠে। একই সময় ব্রাউজার ও ওয়েবভিত্তিক গেমে মনোযোগী হয়ে ওঠেন মাঝবয়সীরা। ২০০৯ সালের দিকে শাপলা অনলাইনের উন্নয়ন করা ‘রাইভালটি’, ‘ব্যান্ডটাইকুন’ ও ‘কমান্ডস্টার’ তাদের অনেকের কাছে বেশ পরিচিত। আরগু ভেনচারের তৈরি ‘পপ টু স্পেল কিডস’, ফান রক মিডিয়ার ব্রাউজারভিত্তিক গেম (মোবাইল, কমপিউটার ও ফেসবুকের মাধ্যমে খেলা সম্ভব) ‘কমান্ডস্টার’, ‘রাইভালটি’ ও ‘ব্যান্ডটাইকুন’ বাংলাদেশের গেমের ইতিহাসে মাইলফলক বলা যায়।


আঙুলের স্পর্শে


কেবল বড়রা নয়, হালে ইন্টারনেট সংযোগে অনলাইন গেমিং রাজ্যের সাথে যোগাযোগ বাড়ে নতুন প্রজন্মের। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে পুল খেলাটা মশহুর হয়ে ওঠে। চলতি দশকের শুরু থেকেই ধীরে ধীরে শিশু কিশোরদের খেলার ময়দান হয়ে ওঠে স্মার্টফোন। ৫-৬ ইঞ্চি পর্দার এই ডিভাইসে স্পর্শ অনুভূতি যুক্ত হওয়ায় জমে ওঠে ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস, মিনি মিনি শেয়ার। ক্রিকেট, ফুটবল ও রেসিংয়ের তুমুল জনপ্রিয়তার মধ্যেই গেমের রাজ্যে যোগ হয়েছে লুডু ফ্রেন্ডস। প্রতিদিনই অ্যাপের মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে বিষয় বৈচিত্র্যময় মোবাইল গেম। জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বাংলাদেশের রাইজ অ্যাপ ল্যাবসের ‘ট্যাপ ট্যাপ ট্যাপ মার্বেল, ‘লাভার ফ্রগ’, ‘ঘোস্ট সুইপারফল রেইনি’, ‘আইওয়্যারহাউস’, ‘গ্লুবার’, ‘শুট দ্য মানকি’, ‘ফ্রুইটিটো’ ও ‘বাবল অ্যাটাক’, মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনের তৈরি ‘লিটল তন্ময়’, ‘ম্যাডমেটিং’ ও ‘মানকি জাম্প’।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।