https://powerinai.com/

প্রযুক্তি

সফটওয়্যার রপ্তানি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় খাত

সফটওয়্যার রপ্তানি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় খাত সফটওয়্যার রপ্তানি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় খাত
 

সফটওয়্যার রপ্তানি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় খাত


করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি খাত। তাতে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। নতুন রেকর্ড হচ্ছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে। রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য, দেশীয় মুদ্রায় যা পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকার সমান।


বিশ্বে প্রযুক্তির যুগ এগিয়ে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগে আমরা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা মহামারী চলাকালীন এর সবই চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে বিশ্বের অনেক দেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সরকার অতীতে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে এবং আশা করছে ভবিষ্যতে তা ছাড়িয়ে যাবে।


বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ২৩টি দেশের ওপর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে। আরো ৪০টি দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অন্য কথায়, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের সামনে আসতে পারে এমন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ।


২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে বাংলাদেশের। দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশে তৈরি ডিজিটাল ডিভাইসের রপ্তানি আয় বর্তমানের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। একই সময়ে আইসিটি পণ্য ও আইটি-এনাবল সার্ভিসের অভ্যন্তরীণ বাজারও ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বাজার ধরতে ডিজিটাল ডিভাইস তথা মোবাইল ফোন, কমপিউটার ও ল্যাপটপের মতো আইটি পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার। এরই প্রধান অংশ হবে সফটওয়্যার রপ্তানি।


এ রোডম্যাপের সঠিক বাস্তবায়ন হলে দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে। প্রায় ২০০ কোটি ডলারের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হবে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন। আইসিটি বিভাগের আশা, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আইসিটি এবং আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) পণ্য উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে। এটি সরকারের সবার জন্য ডিজিটাল অ্যাক্সেস এজেন্ডা বাস্তবায়নেরও সহায়ক হবে। 


দেশের উদীয়মান মধ্যবিত্ত ও সচ্ছল শ্রেণির ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ডিভাইস ও কনজ্যুমার গ্যাজেটের চাহিদা আন্তর্জাতিক হাইটেক শিল্পে বাংলাদেশের প্রবেশে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। রোডম্যাপে সরকারি কেনাকাটায় দেশে উৎপাদিত আইসিটি পণ্যের ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কেনাটাকায় জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি সহজ করতে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ইংল্যান্ড বা অন্য কোনো দেশে হাব স্থাপনেরও প্রচেষ্টা চলত, তুলনামূলক প্রতিযোগী বেতন-কাঠামোয় শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা, স্থানীয় বাজার চাহিদা এবং সরকারি নীতির সহায়ক কাঠামো বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছে আইসিটি বিভাগ। 


বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই সফলভাবে প্রোডাকশন লাইন স্থাপনকারী ওয়ালটন, স্যামসাং, অপ্পো, ডাটা সফটের উদাহরণ দিয়ে বিভাগটি বলছে এসব উদ্যোগ আগামীতে স্থানীয়ভাবে ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে আরও উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। তবে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কিছু বাধাও চিহ্নিত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর মধ্যে বাংলাদেশে অধিক পুঁজি খরচের দিকটিকে শীর্ষে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষতার অভাব, শিল্প সহায়ক বাস্তুতন্ত্রের দুর্বলতা, মান নিশ্চিতকরণ এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্তির সমস্যা, সরকারি ক্রয়ে স্থানীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দানে দরকারি বিধিমালার অভাব, স্থানীয় পণ্যের ব্যাপারে জনসচেতনতার অভাব এবং ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারকদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার অভাবকে প্রধান প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কৌশলগত দিক : চারটি কৌশলগত বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন এ রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে : সরকারি- বেসরকারি খাতে স্থানীয় পর্যায়ে সক্ষমতা উন্নয়ন, সচেতনতা সৃষ্টি ও ব্র্যান্ডিং, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং নীতি-সহায়তা। এর আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য স্বল্পমেয়াদে, ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে মধ্যমেয়াদে ও ২০৩১ সালের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে কিছু কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। স্বল্পমেয়াদে প্রযুক্তিপণ্যের দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করে চাহিদা নিরূপণ, সক্ষমতা উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণের কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হবে। 


বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোগে আইটিপণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হবে টেস্টিং ল্যাব। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিদেশে পণ্য রপ্তানি করতে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ইংল্যান্ড বা অন্য কোনো দেশে হাব স্থাপন করা হবে। আইসিটি বিভাগের সহায়তায় এ সময়ে দেশে আইসিটি খাতের জন্য দক্ষ পাঁচ লাখ কর্মী গড়ে তুলবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ মডিউল ও সিলেবাস তৈরি করবে দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। 


আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ সম্পর্কে অন্যান্য দেশের মনোভাব উপলব্ধি ও নেতিবাচক মনোভাব থেকে উত্তরণের জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশে উৎপাদিত আইসিটি পণ্যের বিবরণ নিয়ে আইসিটি বিভাগ তৈরি করবে জাতীয় পোর্টাল। তাছাড়া এ সময়ে সরকারি কেনাকাটায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেশীয় পণ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ডিজিটাল ডিভাইস ও এর ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের ওপর বিভিন্ন ধরনের শুল্ক ও কর যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে কাজ করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।


সফটওয়্যার হলো এক ধরনের নির্দেশাবলি, ডাটা বা প্রোগ্রামের একটি সেট; যা কমপিউটার পরিচালনা করতে এবং নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে ব্যবহার হয়। এটি একটি জেনেরিক শব্দ যা একটি ডিভাইসে চালানো অ্যাপ্লিকেশন, স্ক্রিপ্ট এবং প্রোগ্রামগুলোকে বোঝাতে ব্যবহার হয়। কমপিউটারের পরিবর্তনশীল একটি অংশ হিসাবে বলা যেতে পারে সফটওয়্যারকে। সফটওয়্যারকে কিছু নির্দেশের মিশ্রণ এবং সংগঠন বলা যায়। যার মাধ্যমে কমপিউটারের দ্বারা একটি বিশেষ কাজ করানোর প্রাগ্রাম করা হয়েছে। ফলে সফটওয়্যারে থাকা নির্দেশ ও প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে কমপিউটার ডিভাইসের বিভিন্ন হার্ডওয়্যারকে নিয়ন্ত্রণ করে কমপিউটারের বিভিন্ন কাজ প্রসেস করে।


সফটওয়্যার মূলত দুই ধরনের হয়। সিস্টেম সফটওয়্যার আর অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। সিস্টেম সফটওয়্যার টিভি ছাড়া কীভাবে পরীক্ষা করবেন, আপনার টিভি রিমোট কাজ করছে কি-না? এই সফটওয়্যার প্রোগ্রাম কমপিউটারের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম এবং হার্ডওয়্যার চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়। সিস্টেম সফটওয়্যার হলো কমপিউটারে এমন একটি প্রোগ্রাম, যা কমপিউটার হার্ডওয়্যার এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে ইন্টারফেস তৈরি করে। সিস্টেম সফটওয়্যার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের কার্যক্রম এবং ফাংশন সমন্বয় করে। উপরন্তু, এটি কমপিউটার হার্ডওয়্যারের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্য সব ধরনের সফটওয়্যার কাজ করার জন্য একটি পরিবেশ বা প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের অন্যতম উদাহরণ এটি অন্যান্য কমপিউটার প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। সিস্টেম সফটওয়্যারের অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ফার্মওয়্যার, কমপিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রানসলেটর সিস্টেম ইউটিলিটিস।


সফটওয়্যারের সবচেয়ে সাধারণ প্রকার হলো অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। এটি মূলত কমপিউটার সফটওয়্যার প্যাকেজ, যা ব্যবহারকারীর জন্য বা কিছু ক্ষেত্রে অন্য অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে। একটি অ্যাপ্লিকেশন স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে, অথবা এটি প্রোগ্রামের একটি গ্রুপ হতে পারে যা ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপ্লিকেশনটি পরিচালনা করে। সহজ কথায়, যে সফটওয়্যারগুলো শুধুমাত্র বিশেষ ধরনের নির্দিষ্ট ও সিঙ্গেল কাজ করার জন্য তৈরি করা হয় তাকে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার বলে। আধুনিক অ্যাপ্লিকেশনগুলোর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে অফিস স্যুট, গ্রাফিক্স সফটওয়্যার, ডাটাবেজ এবং ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম, ওয়েব ব্রাউজার, ওয়ার্ড প্রসেসর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট টুল, ইমেজ এডিটর এবং যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম। লেখালেখির জন্য মাইক্রোসফট। লেখালেখির জন্য আপনি এই সফটওয়্যারটি ছাড়া অন্য কিছু আর কল্পনাই করতে পারবেন না। এই প্যাকেজটিতে আপনি ওয়ার্ড ফাইল থেকে শুরু করে, আপনার প্রেজেন্টেশন কিংবা হিসাব-নিকাশের জন্য পাবেন এক্সেল যা প্রতিদিন আমাদের কোনো না কোনো কাজে লাগেই। প্রেজেন্টেশনের জন্য পাওয়ার পয়েন্ট, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন তৈরি ও উপস্থাপন আপনাকে জানতেই হবে যদি আপনি যে কোনো কাজ করেন না কেন। হিসাব-নিকাশে উপকারী মাইক্রসফট এক্সেল। মাইক্রোসফট এক্সেল সফটওয়্যারটির ব্যবহার ও প্রয়োগ জানা এখন বেশ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। 


সফটওয়্যার রপ্তানি বাংলাদেশের জন্য একটি উদীয়মান সম্ভাবনাময় খাত। রপ্তানির পাশাপাশি দেশে এর অধিকতর ব্যবহার আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভবিষ্যতে এই খাত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আরও বড় ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক নয়, ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেক তরুণ আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আয় করছে। তারা প্রচলিত ধারার চাকরি না খুঁজে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও নারীদের এই সফটওয়্যার খাতে আরো সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমেও সফটওয়্যার শিল্পের আরো উন্নয়ন সম্ভব। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সফটওয়্যার তৈরি ও বিপণনে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। বেসিসের এ ধরনের আয়োজন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও স্থানীয় বাজারে সফটওয়্যার খাতের চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে। সফটওয়্যার শিল্প একটি বিশেষায়িত খাত। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে এ খাতের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। 


দেশি সফটওয়্যারে আস্থা বাড়াতে কাজ করছে বেসিস। দেশে সফটওয়্যারশিল্পের সাথে যুক্ত প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই সদস্য বেসিসের। তাদের হাত ধরেই দেশে তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যার। ব্যবহার হচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য দেশেও। অথচ দেশের অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই দেশে তৈরি সফটওয়্যার কিনতে আস্থার সংকটে ভোগে।


এ অবস্থার পরিবর্তন চায় বেসিস। বেসিস দেশে তৈরি সফটওয়্যারের ব্র্যান্ডিং ও আস্থা বাড়াতে কাজ করছে। সরকারি কেনাকাটায় দেশে তৈরি সফটওয়্যারকে প্রাধান্য দিতে সরকারের সাথে আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থ সহায়তা, স্থান সংকুলান, মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি ও বিপণনে সহায়তা করছে বেসিস। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে, পাশাপাশি বাড়বে ব্যবসার প্রসার।


শুরু থেকেই দেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করছে বেসিস। মূলত দেশি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষা করে চলছে। এ জন্য দেশের প্রতিটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে কমপক্ষে একটি তলা (ফ্লোর) নতুন ও ছোট সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে বরাদ্দ কাজ করছে সরকার। শুধু তাই নয়, সরকারের কাছে ৫০ শতাংশ ছাড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়টি সামনে আসতে পারে। সহজ শর্তে বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবায়ও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসতে পারে। দেশের সফটওয়্যার শিল্পের বর্তমান অবস্থান কী, কতই বা রপ্তানি আয়, দেশের সফটওয়্যার বাজারের আকার কত হবে। এ নিয়ে নানা জনের নানা কথা শোনা যায়। তাই বড় পরিসরে যাত্রা শুরুর আগে দেশের সফটওয়্যার শিল্পের খুঁটিনাটি তথ্য জানতে ‘বাজার গবেষণা’র ওপর জোর দিতে হবে। দেশি সফটওয়্যারের সক্ষমতা, অভ্যন্তরীণ বাজারের পরিমাণ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে পরিকল্পনা করে এগুতে হবে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতের জন্য কী পরিমাণ দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন, তাও জানা প্রয়োজন। 


আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলাও দেশের জন্য অন্যতম লক্ষ্য। তাই শুরু থেকেই বড় পরিসরে মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দিতে হবে। শুধু সফটওয়্যার নির্মাতাই নয়, দক্ষভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কর্মীবাহিনীও গড়ে তুলতে হবে। অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যারের বাজার ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে, তা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।


দেশের বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই আবার দেশি সফটওয়্যার নির্মাতারা দখল করেছে। বড় প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোর ক্ষেত্রে এখনো বিদেশি সফটওয়্যারের ওপর নির্ভরতা থেকে গেছে। দেশের ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে বেশিরভাগেই দেশি সফটওয়্যার ব্যবহার হচ্ছে। দেশের সফটওয়্যার খাতে বেশি চাহিদা রয়েছে ইআরপি, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরিসহ ডিজিটালাইজেশনের কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যার।


দেশের বাজারে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এখন আমাদের সফটওয়্যার নির্মাতারা বিদেশেও রপ্তানি করছে। তবে আমাদের দেশ থেকে বড় ধরনের একক সফটওয়্যার রপ্তানি হাতেগোনা। এখন পর্যন্ত আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপিও, সার্ভিস রপ্তানি করা হচ্ছে বেশি। বিপিওর ক্ষেত্রে ব্যাংকের নানা কাজ, নানা রকম সেবা দেওয়া হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে গ্রাফিকস, ওয়েবের কাজ হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে সফটওয়্যার এখনো রপ্তানির সব অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে আসে না বলেন প্রকৃত তথ্য পাওয়া কঠিন। তা ছাড়া সফটওয়্যার খাতের প্রকৃত আয় নিয়ে কোনো জরিপ নেই। এর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন রয়েছে।


অবশ্য বেসিসের করা হিসাবের সঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবের বড় পার্থক্য থাকে। ইপিবির হিসাবে ফ্রিল্যান্সার, সফটওয়্যার ডেভেলপার ও কল সেন্টারগুলোর সেবা রপ্তানির আয় দেখানো হয় না। ইবিপি তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমপিউটার সার্ভিস থেকে রপ্তানি ছিল ১৫ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। 


শতকোটি ডলার রপ্তানি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে


আগে আমাদের নিয়ে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব কাজ করত। এখন আমরা সব দিক থেকেই নেতিবাচক ধারণাটিকে ইতিবাচক করতে পেরেছি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করতে পারবে কেউ বোধহয় বিশ্বাস করতে পারেনি। এখনো হয়তো কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না আমরা ৫ বিলিয়নে পৌঁছাতে পারব। বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখাতে পারে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে। এর বড় কৃতিত্ব হচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্ম। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রপ্তানির মানে শুধু সফটওয়্যারে সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশ হার্ডওয়্যারেও উন্নতি করছে। আমরা বিদেশি সফটওয়্যারকে রিপ্লেস করছি। বিদেশি সফটওয়্যারের জায়গায় দেশি সফটওয়্যার প্রতিস্থাপন করতে পেরেছি। আমাদের সফটওয়্যার ১৮০টির বেশি দেশে রপ্তানি হয়। আমাদের সফটওয়্যার আয়ারল্যান্ডের পুলিশ ব্যবহার করে, সিকিউরিটির জন্য আমাদের সফটওয়্যার আছে, মোবাইল অপারেটররা ব্যবহার করছে। এটার গতি অতীতের সাথে তুলনা করলে সম্ভাবনা এখন অনেক বেশি।


তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার রপ্তানিতে অগ্রগতির চিত্র 


বাংলাদেশ থেকে অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৮ লাখ (২.৮ মিলিয়ন) ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফটওয়্যার রপ্তানি শুরু করে। ওই বছর রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ ডলার। এরপর ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ১ কোটি ২৬ লাখ ডলার, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ২ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ২ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৪ কোটি ডলার, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার অতিক্রম করে। ওই অর্থবছরে মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এই আয় বেড়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার ও ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে প্রায় ১৩ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খাত থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮০০ মিলিয়নের বেশি আয় হয়েছে।


নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা আর সমস্যা পাশ কাটিয়ে সফটওয়্যার খাত সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান প্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা। সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা রপ্তানির অবস্থাও যথেষ্ট ভালো বলে মনে করছেন অনেকই। এই খাত বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় ১৫টি রপ্তানি খাতের একটি। আইটি ও আইটি সক্ষম সেবা (আইটি-আইটিইএস) শিল্পের ‘বেটিং অন দ্য ফিউচার দ্য বাংলাদেশ আইটি-আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক শ্বেতপত্রে ২০১৭ সালে স্থানীয় আইটি ও আইটিইএস শিল্পের রাজস্ব উৎপাদন ০.৯-১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২৫ সালে তা পাঁচগুণ বেড়ে ৪.৬-৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।


সফটওয়্যার খাতে কাজের চিত্র


বর্তমানে সফটওয়্যার খাতের যেসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সেবা, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।


বাংলাদেশের কয়েকটি সফটওয়্যার উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সফটওয়্যার রপ্তানি খাতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে আয় বেশি। অন্যান্য সেবা খাতের আয় বেশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের সফটওয়্যার নির্মাতাদের তৈরি ইআরপি সলিউশনের চাহিদা বেশি। এর পাশাপাশি চ্যাটধর্মী অ্যাপ্লিকেশন, বিলিং সফটওয়্যার, মোবাইল অপারেটর ও নেটওয়ার্ক পরিচালনার সফটওয়্যারের চাহিদা রয়েছে। সফটওয়্যার রপ্তানির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি পর্যায়ের ডিজিটালাইজেশনের কাজে বাংলাদেশের একাধিক প্রতিষ্ঠান ভালো কাজ করছে।


বিদেশের পাশাপাশি দেশের সফটওয়্যার চাহিদা মেটাতে কাজ করছে কণা সফটওয়্যার ল্যাব নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নগদ নামে ডাক বিভাগের যে আর্থিক সেবা চালু হয়েছে এর প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজটিও করেছে দেশি ওই প্রতিষ্ঠানটি। এর বাইরে বিভিন্ন দেশেও বিভিন্ন সফটওয়্যার রপ্তানিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।


ব্লকচেইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেবা দিতে কাজ করছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ই-জেনারেশন। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ও বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান জানান, তার প্রতিষ্ঠান মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ ১০টি দেশে সফটওয়্যার রপ্তানিতে কাজ করছে। দেশের ১ বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার বাজারেও তার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। বেসিসে সভাপতি থাকা অবস্থায় ১ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা সফল করা গেছে বলে মনে করেন তিনি এবং বলেন, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানির আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।


শতকোটি ডলার রপ্তানি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে


ভারত, চীন ও ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি এখন ফিলিপাইন, পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর সাথে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। তবে দেশে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারকেও গুরুত্ব দিতে হবে। এ ছাড়া ব্লকচেইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে মানানসই প্রযুক্তি নিয়ে দেশি উদ্যোক্তাদের কাজ করতে হবে।


বাংলাদেশে সফটওয়্যার উন্নতির ধারাকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন দেশের প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা। বিদেশিরাও বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারে আগ্রহ দেখিয়েছে ভুটান, মালদ্বীপ ও কঙ্গো। এর আগে বাংলাদেশি সফটওয়্যার নির্মাতারা খুব ভালো কাজ করছেন বলে প্রশংসা করেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল, মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী তারিক আলি লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো। বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দেশে কাজের সুযোগ দেওয়ার আগ্রহের কথাও প্রথম আলোকে বলেন তারা।


২০০৭ সাল থেকেই সফটওয়্যার ভারত ও নেপালে রপ্তানি হচ্ছে। এখন আফ্রিকার কেনিয়া ও তানজানিয়াতে রপ্তানি শুরু হয়েছে। শিগগিরই আরও কয়েকটি দেশে বাংলাদেশি সফটওয়্যার রপ্তানি শুরু হবে। এর আগে আয়ারল্যান্ডের পুলিশ বাংলাদেশের সফটওয়্যার ব্যবহার করেছে।


সামনে এগিয়ে যেতে হবে


সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি সেবার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা যেমন বাড়ছে তেমনি তৈরি হচ্ছে নানা চ্যালেঞ্জ। বেসিস, বাক্যসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বেসরকারি শীর্ষ সংগঠনগুলো হিসাবে দেশে দেড় হাজার আইটি ও আইটিইএস কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের পাঁচশ কোম্পানি রপ্তানিতে রয়েছে। শুধু বেসিসে এক হাজারের বেশি সদস্য কোম্পানি রয়েছে। অটোমেশন, প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সাথে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে বলে মনে করছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।


বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের তথ্য অনুযায়ী তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো যেমন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্ক, সবখানে উচ্চগতির ইন্টারনেট-সংযোগ নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে পারলে আরও দ্রুত সফটওয়্যার খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।


এক দশকের বেশি সময় ধরে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ খাত থেকে রপ্তানিতে বেশ অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। গত অর্থবছরে প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে ১৭৯.১৯ মিলিয়ন ডলার। অথচ যদি মাত্র পাঁচ বছর আগে ফিরে দেখা যায় তবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা ছিল  ১০ কোটি ডলার।


উন্নতির এ ধারা ভালো বলে মনে করছেন দেশের প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা। বিদেশিরাও বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারে আগ্রহ দেখিয়েছে ভুটান, মালদ্বীপ ও কঙ্গো। বাংলাদেশি সফটওয়্যার নির্মাতারা খুব ভালো কাজ করছেন বলে প্রশংসা করেছেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল, মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী তারিক আলী লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো। বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দেশে কাজের সুযোগ দেওয়ার আগ্রহের কথা বলেছেন। সম্প্রতি রাজধানীর দোহাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এসে তাদের আগ্রহের কথা জানান তারা। ২০১৭ সালে স্থানীয় আইটি ও আইটিইএস শিল্পের রাজস্ব উৎপাদন ০.৯-১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৫ সালে আইটি ও আইটিইএস শিল্পের রাজস্ব উৎপাদন ৪.৬-৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে।


ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল বলেন, ইতিমধ্যে ভুটানের ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশের দোহাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে উল্টো চিত্রও আছে। এ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধীরে ধীরে আমাদের উন্নতি হচ্ছে। তবে বর্তমান বিশ্ববাজার বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশকে বাজার  তৈরি করে নিতে হচ্ছে।


‘আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসর তেমন বড় নয়। আবার আমাদের দেশের অনেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই নিজেরা সব কাজে অভিজ্ঞ বলেও প্রচার করে। বিদেশে এ কাজটি হয় না। তারা যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ এবং সেটিই তারা করে। এ বিষয়টি নজর দেওয়ার পাশাপাশি এ খাতে সরকারের ভর্তুকি বাড়ানো উচিত। দেখা যায়, তথ্যপ্রযুক্তিতে ভালো, এমন দেশের প্রধান কিংবা দেশ পরিচালনাকারীরা যখন বিদেশ সফরে যান, সেখানে নিজেদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সাফল্য তুলে ধরেন। এই অনুশীলনটা আমাদের দেশে কম। এটি বাড়াতে হবে।


সফটওয়্যার রপ্তানির নতুন বাজার ও ঠিকানা খুঁজে নিতে হবে


নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা আর সমস্যা পাশ কাটিয়ে সফটওয়্যার খাত সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান প্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা। সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা রপ্তানির অবস্থাও যথেষ্ট ভালো বলে মনে করছেন অনেকেই। এই খাত বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় ১৫টি রপ্তানি খাতের একটি। গত বছরের নভেম্বর মাসে ভবিষ্যতে স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনার কথা বর্ণনা করে প্রথমবারের মতো আইটি ও আইটি সক্ষম সেবা (আইটি-আইটিইএস) শিল্পের ওপর একটি স্বাধীন শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়।’


গার্টনারের তথ্যানুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো যেমন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্ক, সবখানে উচ্চগতির ইন্টারনেট-সংযোগ নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে পারলে আরও দ্রুত সফটওয়্যার খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব। বর্তমানে সফটওয়্যার খাতের যেসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সেবা, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।


সফটওয়্যার রপ্তানিতে কতটা পথ পাড়ি?


বাংলাদেশে শুধু সফটওয়্যার খাতে রপ্তানি কত, এর নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই। যেটা আছে তা হচ্ছে আনুমানিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতে  মোট রপ্তানি আয়ের একটি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রপ্তানি আয়ের বিতর্কহীন হিসাব পাওয়া কষ্টের। এ খাত থেকে চলতি বছর ১ বিলিয়ন এবং ২০২১ সালে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।


বাংলাদেশ ব্যাংক যে হিসেবে কম্পাইল করে তার রিপোর্ট আসে বাণিজ্যিক ব্যাংক বা শিডিউল ব্যাংক যেগুলোকে বলে তার মাধ্যমে। শিডিউল ব্যাংকগুলো যে ডাটা দেয় তা দেয় সি-ফর্মের মাধ্যমে। সি-ফর্ম  কেবলমাত্র ১০ হাজার ডলারের ওপরে হলে পূরণ করতে হয়, নইলে করতে হয় না। ফলে ১০ হাজার ডলার ওপরের রপ্তানির হিসাবটা সরকার পায়। এখানে ছোট ছোট ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক রপ্তানিগুলো হিসেবে আসে না। কিন্তু ভলিউমে এগুলোই বেশি। আরও অসংগতি আছে। যে সি-ফর্ম হয় সেখানে মাত্র তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে। একটা ডাটা প্রসেসিং, একটা কনসালট্যান্সি ও আরেকটা সফটওয়্যার। এখানে আইটি এনাবল সার্ভিস, কল সেন্টারসসহ তথ্যপ্রযুক্তির অধিকাংশ ক্যাটাগরিই তো নেই।


প্রকৃতপক্ষে আমাদের সফটওয়্যার রপ্তানি খুব বেশি নয়। সফটওয়্যার রপ্তানিতে এখনো সেই রকম সক্ষমতা অর্জিত হয়নি যে ইউরোপীয় সফটওয়্যার বিট করে বাংলাদেশের সফটওয়্যার রিপ্লেস করা যাচ্ছে। আমরা ব্যাপক হারে সার্ভিস রপ্তানি করছি, আমাদের সস্তা হিউম্যান রিসোর্স রয়েছে। আমরা যে কারণে গার্মেন্টস রপ্তানি করতে পারি সে কারণে আইটি সার্ভিস রপ্তানি করতে পারি। যার অর্থ হচ্ছে দেশের প্রধান রপ্তানি ক্যাটাগরিই তো রিপোর্টেড হয় না। তাহলে কী করে ইপিবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে নির্ভর করব। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব, ‘ব্যুরো যে হিসাব করে তা বাস্তবসম্মত নয়। তারা যে ডাটা দিয়েছে তা হলো কতগুলো প্রতিষ্ঠান ভিজিট করে তাদের কাছ থেকে যা পেয়েছে তা। ব্যুরো এই কমিটির সাথে বৈঠকে আমার প্রশ্ন ছিল এই ডাটার পরিধি নিয়ে। বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর বিদেশে অফিস রয়েছে, বিদেশে কার্যক্রমের ব্যপ্তি ঘটিয়েছে তারা টাকা সেখানেই রাখে। অথচ এই টাকা বাংলাদেশি কোম্পানির, বাংলাদেশের শ্রমের টাকা। শুধু দেশের অফিস খরচ, স্টাফদের বেতন ছাড়া বাকি টাকা বিদেশেই রেখে দেন তারা। অনেকে ঝামেলা পোহাতে চান না। সি-ফরমে না গিয়ে আইটি ও আইটিইএস শিল্পের রাজস্ব উৎপাদন রেমিট্যান্স হিসেবে টাকা নিয়ে আসে।


রপ্তানি আয়ের যে হিসাব অফিসিয়ালি বলা হচ্ছে তা তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি বলে মনে করছেন প্রতিমন্ত্রী।


বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) রেফারেন্স তাদের খাতে ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার রপ্তানির কথা বলা হয়। কল সেন্টার, ডাটা এন্ট্রিসহ বিভিন্ন সেবা রপ্তানি হয়ে থাকে। খাতটিতে আয় উল্লিখিত পরিসংখ্যানের তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করেন বাক্য সংশ্লিষ্টরা।


বেসিস, বাক্যসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বেসরকারি শীর্ষ সংগঠনগুলোর হিসাবে দেশে দেড় হাজার আইটি ও আইটিইএস কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের ৫০০ কোম্পানি রপ্তানিতে রয়েছে। শুধু বেসিসে ১০৮৬ সদস্য কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক কোম্পানিকে সক্রিয় হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।


২০২১ সালের মধ্যে সফটওয়্যার খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ডিজিটাল সংস্কারে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সাথে দেশীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা উন্নয়নে জোর দিতে হবে। এ মতামত ব্যক্ত করেছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।


শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাংলাদেশের অনেক আইটি ফার্ম বিদেশি সংস্থা   থেকে মিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করছে। যাই হোক, এদের অনেকেই তাদের উপার্জন বিদেশের ব্যাংকেই রাখে, যার ফলে এই কোম্পানিগুলোর রপ্তানি রাজস্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয় না। তারা উল্লেখ করেন যে, যদিও আইটি খাত ইতিমধ্যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স হলিডে পেয়েছে।


আইটি প্রধানরা পর্যবেক্ষণ করেন, প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন নেপাল, ভুটান এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যেমন জাপান, কোরিয়া বাংলাদেশের আইটি শিল্পের জন্য সম্ভাব্য মার্কেট। নেপাল ও ভুটান বর্তমানে নিজেদের আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেখানে আমাদের দেশি ও আইটি শিল্প অনেক অবদান রাখতে পারে। একই সময়ে, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে আইওটির (ইন্টারনেট অব থিংস) জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।


শিল্প পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে ৪৫০০’র বেশি নিবন্ধিত সফটওয়্যার ও আইটিইএস কোম্পানি রয়েছে, যেগুলোতে কাজ করছে ৩ লক্ষাধিক আইটি কর্মী। স্থানীয় বাজারে সফটওয়্যারের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সরকারি তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ৭ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী আছেন। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ও অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৩০ হাজার মিলিয়ে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর পেশাজীবী রয়েছে।


বেসিসের তথ্যমতে, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর পেশাজীবী ছাড়াও দেশে ফ্রিল্যান্স-আউটসোর্সিংয়ে জড়িত আছেন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ। সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রায় দুই লাখ তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী তৈরির প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। তবে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে ১০ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী তৈরির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে সরকারের চলমান উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন ও সামনের দিনগুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এই ১০ লাখ পেশাজীবী তৈরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব।


বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটছে। এ খাতে নানা সাফল্যের কাহিনীও তৈরি হয়েছে। বর্তমানে সরকার চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আবির্ভাব এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। বিগ ডাটা অ্যানালাইটিক, ইন্টারনেট অব থিংস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো ক্ষেত্রসমূহের জন্য প্রশিক্ষিত মানুষ তৈরি করা হচ্ছে। আইটি শিল্পে দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার আইসিটি রপ্তানির লক্ষ্য পূরণ। আইসিটি রপ্তানি ইতিমধ্যে ১২০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে এবং আমরা আশাবাদী যে ২০২৫-এর আগেই আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।


যদি সফটওয়্যার কোম্পানি বলেন তবে কিন্তু মাইক্রোসফট বুঝায়। আর মাইক্রোসফটের প্রথম প্রোডাক্টটি হচ্ছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, যা একটি অপারেটিং সিস্টেম। যেটা ১৯৮৫ সালের নভেম্বরের ২০ তারিখ জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য অবমুক্ত করা হয়। তবে তার আগে কিন্তু আইবিএম কর্পোরেশন একটা অপারেটিং সিস্টেম রিলিজ দিয়েছিল। যেটা ১৯৮৫ সালের আগস্টে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু তারা যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ঠিকই, কিন্তু বড় সফটওয়্যার কোম্পানি নয়। তারা বড় হার্ডওয়্যার কোম্পানি। তাই আগে মাইক্রোসফটের নাম উল্লেখ করলাম। আই বি এম কিন্তু কম্পিউটার জগতে বিপ্লব এনে দিয়েছে তাদের উদ্ভাবিত মাইক্রো-প্রসেসরগুলোর মাধ্যমে। সুতরাং আপনি চাইলে আগে আইবিএমকেও হিসেব করতে পারেন প্রথম সফটওয়্যার কোম্পানি হিসেবে। 








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।