বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মীদের আর্থিক সহায়তা সহজলভ্য করতে এটুআই এর মাইগভ (www.mygov.bd) প্ল্যাটফর্মে ‘অভিবাসন ঋণ’ সেবা চালু হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও এটুআই এর যৌথ উদ্যোগে এ বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর এ সেবায় সহজেই অনলাইনে আবেদন, যাচাই-বাছাই শেষে ঋণ অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০০ জনের বেশি বিদেশগামী কর্মী প্রায় তিন কোটি টাকা ঋণ সহায়তার সুবিধা নিয়েছেন।
আগে বিদেশগামীদের ঋণসহায়তার জন্য একাধিকবার ব্যাংকে যেতে হতো, সময় লাগত, যাতায়াতের খরচ বাড়ত, দাপ্তরিক জটিলতাও ছিল। এসব জটিলতা কমিয়ে প্রক্রিয়াকে দ্রুত, স্বচ্ছ ও নাগরিকবান্ধব করতে সেবাটি ডিজিটাল রূপে আনা হয়েছে। এখন সেবাপ্রার্থীরা মাইগভে লগইন করে ‘অভিবাসন ঋণ’ সেবা বেছে নিলে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ ও কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড করে অনলাইনেই আবেদন জমা দিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা ডিজিটালভাবে যাচাই করে অনুমোদিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাংক কার্যক্রম শেষে অর্থ সরাসরি আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। মাইগভ ও ব্যাংকের যৌথ ট্র্যাকিংয়ের কারণে গড়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদন সম্পন্ন হচ্ছে। যার ফলে সময় সাশ্রয় হচ্ছে, যাতায়াত খরচ ও দাপ্তরিক হয়রানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
আবেদনের সময় অন্যান্য প্রযোজ্য নথির সঙ্গে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, পাসপোর্ট, ভিসা, বিএমইটি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংযুক্ত করতে হয়। জামিনদারের ক্ষেত্রেও জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিকত্ব সনদ ও ছবি জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। বর্তমানে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
ব্যবহারকারীদের মতে, আগের তুলনায় আবেদন প্রক্রিয়া এখন আরও সহজ, দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য হয়েছে। নাগরিক ড্যাশবোর্ডে আবেদন অবস্থার হালনাগাদ থাকায় কার্য প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতাও বেড়েছে। এ বিষয়ে সেবাগ্রহিতা রাকিব আহমেদ বলেন, “দীর্ঘদিনের বিদেশে চাকরি করার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি মাইগভে নিবন্ধন করে ঋণসহায়তার জন্য অনলাইনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের কুমিল্লা শাখায় আবেদন করি। প্ল্যাটফর্মের ধাপে ধাপে নির্দেশনায় ডকুমেন্ট আপলোড থেকে শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ সবকিছুই নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই কনফার্মেশন কল ও যাচাইকরণ শেষ হয়। দালাল নির্ভরতা ও লম্বা লাইনের ঝামেলা ছাড়াই এখন আমি বৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতিতে।”
এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাঃ আব্দুর রফিক বলেন, “আমাদের বিভিন্ন জাতীয় ডাটাবেসের সঙ্গে একীভূত করে আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও স্বয়ংক্রিয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, বিএমইটির ডাটাবেস বিদ্যমান সিস্টেমে যুক্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, “উদ্যোগটিতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত রয়েছে। বর্তমানে ‘অভিবাসন ঋণ’ শুধু প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রধান শাখা, ঢাকার কাকরাইল, কেরানীগঞ্জ এর পাশাপাশি মানিকগঞ্জ ও কুমিল্লাসহ পাঁচটি শাখার মাধ্যমে দেওয়া হলেও, পর্যায়ক্রমে খুব শীঘ্রই বাকি ১১৫টি শাখা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অন্যান্য দপ্তর যেমন কর্মসংস্থান ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড এর ঋণসেবাও মাইগভে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ চলমান আছে।”










০ টি মন্তব্য