ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রয়োজন ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকা। দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবার জন্য ধাপে ধাপে ওয়াইফাই প্রযুক্তির অনেক উন্নয়ন হয়েছে; ওয়াইফাই ৫ এর পর এবার এসেছে ওয়াইফাই ৬। এই দুই ভার্সনের সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরেছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট জিহ্যাকস ডটকম। 

ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকা প্রয়োজন। ওয়াইফাই প্রযুক্তি উচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়েছে; ওয়াইফাই ৫ এর পর ওয়াইফাই ৬ এসেছে। 


ওয়াইফাই ৫–এর পেছনের গল্প

একটা সময়ে ইন্টারনেট বাফারিং খুব সাধারণ বিষয় ছিল। এই সময়ে পঞ্চম প্রজন্মের ওয়াইফাই ৫ (৮০২ দশমিক ১১ এসি) প্রযুক্তি বাজারে আসে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। আগের ওয়াইফাইগুলোর তুলনায় এর গতি ও কভারেজ বেশি। ডিজিটাল বিপ্লবের প্রাথমিক পর্যায়ে ওয়াইফাই ৫ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। এর সর্বোচ্চ গতি ৩ দশমিক ৫ জিবিপিএস ও এটিতে একাধিক ডিভাইস একসঙ্গে যুক্ত করা যায়। এই প্রযুক্তি গেম স্ট্রিমিং থেকে শুরু করে ঘরে থেকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সবার বেশি গতির ইন্টারনেটের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ওয়াইফাই ৫ থেকে ওয়াইফাই ৬–এ পরিবর্তনের সময় এসে গেছে। 


ওয়াইফাই ৬: যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা 

যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে ষষ্ঠ প্রজন্মের ওয়াইফাই ৬ (৮০২ দশমিক ১১ এএক্স)। বিষয়টি এভাবে কল্পনা করে দেখা যেতে পারে—অনলাইনে সিনেমা দেখার জন্য আপনি অন্যদের আমন্ত্রণ করেছেন, পাশের ঘরে আপনার সন্তান অনলাইনে গেম খেলছে, একই সঙ্গে আপনি সহকর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সেও অংশ নিতে পারছেন। এসব কাজ একসঙ্গে কোনো ধরনের বাফার ছাড়া করতে চাইলে ওয়াইফাই ৬ সেটি সম্ভব করতে পারে।


কল্পনার চেয়েও দ্রুত গতি

ওয়াইফাই ৬–এর গতি ৯ দশমিক ৬ জিবিপিএস। অনেক বেশি ডেটা খরচ করে এমন অ্যাপ্লিকেশন স্বচ্ছন্দে চালাতে চাইলে এই প্রযুক্তি দরকার। গেমিং সেশন বা ৪কে ভিডিও দেখার সময় এখন আর বাফার হবে না। ওয়াইফাই ৬ ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। 

আবার ভাবুন বন্ধুদের সঙ্গে ভার্চুয়াল গেমিংয়ের সময় কোনো ল্যাটেন্সি থাকবে না। ফলে গেমের প্রতিটি মুহূর্তকে বাস্তব মনে হবে। 


একসঙ্গে অনেক ডিভাইস ব্যবহার

সাধারণ রাউটারে একসঙ্গে অনেকগুলো ডিভাইস যুক্ত করলে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। তবে ওয়াইফাই ৬–এ সে সমস্যা নেই। টিভি, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, স্মার্ট ফ্রিজের মতো বিভিন্ন ডিভাইস এক সঙ্গে ব্যবহার করলেও ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া বা নেটওয়ার্ক দুর্বল হবে না। 

 

ওয়াইফাই ৬–এর কার্যকারিতা

ওয়াইফাই ৬–এ অর্থোগোনাল ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপল এক্সেস (ওএফডিএমএ) ও বেসিক সার্ভিস কালারিংয়ের (বিএসএস) মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে রাউটার একসঙ্গে বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে, ডেটার জট কমায় ও নেটওয়ার্কের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে। 


কোনটি বেছে নেবেন

ওয়াইফাই ৫ ইন্টারনেট ব্যবহারকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। কিন্তু ওয়াইফাই ৬ সম্প্রসারণশীল ডিজিটাল দুনিয়াকে জয় করবে। যারা সবচেয়ে ভালো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে চান তাঁদের জন্য নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভালো হবে ওয়াইফাই ৬। একসঙ্গে বিভিন্ন ডিভাইসে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা, দ্রুত গতি ও উন্নত কার্যকারিতার মাধ্যমে একে ওয়াইফাই ৫ থেকে আলাদা করা যায়। গেমিং, দূরবর্তী কাজ ও স্ট্রিমিংয়ের জন্য ওয়াইফাই ৬ ডিজিটাল যাত্রায় অনন্য মাত্রা যোগ করবে।