আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা
দুর্দান্ত হলেও এর পর গত ৬ ম্যাচে আর কোন জয়ের দেখা পায়নি সাকিন আল হাসানের দল।
সেমি-ফাইনালের দৌড়ে টুর্নামেন্টে সবার আগে ছিটকে যাওয়া দলটির নামও বাংলাদেশ। গ্রুপ
পর্বে নিজেদের শেষ ২ ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য এখন ২০২৫ সালের আইসিসি
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে কোয়ালিফাই করা।
বিশ্বকাপে নিজেদের ৮ম ম্যাচে আজ (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সাবেক
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। এখন পর্যন্ত ৭
ম্যাচে ১ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার নবম স্থানে অবস্থান বাংলাদেশের। তাদের
পেছনে শুধুমাত্র ইংল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আশা জিইয়ে রাখতে হলে শেষ ম্যাচে
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার আগে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়লাভ করার কোন বিকল্প নেই
সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাদের সামনে।
এখানে বলে রাখা আবশ্যক আইসিসি সম্প্রতি নিশ্চিত করেছে যে বিশ্বকাপ ক্রিকেট
২০২৩’র গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকা
৭টি দল স্বাগতিক পাকিস্তানের সাথে অংশ নিবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫-এ। ৮ দলের এই টুর্নামেন্টে স্বাগতিক হিসেবে পাকিস্তান
ইতিমধ্যেই কোয়ালিফাই করেছে। এখন পাকিস্তান যদি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে প্রথম ৭
দেশের মধ্যে থাকে সেক্ষেত্রে অষ্টম স্থানে থাকা দলটি সুযোগ পাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে খেলার।
বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকা পাকিস্তান বেশ ভালোভাবেই
টিকে আছে সেমি-ফাইনালে খেলার লড়াইয়ে। শেষ
ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ অফ-ফর্মে থাকা
ইংল্যান্ড। পয়েন্ট তালিকার সমীকরণটা এমন যে
পাকিস্তান গ্রুপ পর্বে প্রথম চারে যদি থাকতে নাও পারে, প্রথম ৭ দলের মধ্যে থাকা তাদের প্রায় নিশ্চিত (নেট রানরেটে অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকার কারনে)। ফলে অষ্টম স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করতে পারলেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিট মিলবে- এটাও মোটামুটি হলফ করে বলা যায়।
শ্রীলঙ্কার সেমি-ফাইনাল খেলার আশা
ক্ষীণ হলেও পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। সেক্ষেত্রে নিজেদের শেষ ২ ম্যাচে বাংলাদেশ ও
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের কোন বিকল্প নেই গত ম্যাচে ভারতের কাছে ৩০২ রানের
বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হওয়া লংকানদের সামনে। শেষ ২ ম্যাচ জিতলেও গ্রুপের অন্যান্য
ম্যাচের ফলাফল ও নেট রানরেটের সমীকরণ নিজেদের পক্ষে থাকলে তবে কেবল শেষ চারে থাকার
সুযোগ থাকবে তাদের জন্য।
এখানে উল্লেখ্য, ভারত ও দক্ষিণ
আফ্রিকা ইতিমধ্যেই নিজেদের সেমি-ফাইনালে উত্তরণ
নিশ্চিত করেছে। শেষ চারের বাকি ২টি স্থানের জন্য লড়ছে ৬টি দলঃ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, আফঘানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডস। নেট রানরেটে শক্ত
অবস্থানে থাকায় অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান
সেমি-ফাইনালের রেসে কিছুটা হলেও
অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে।
লড়াই যেমন চলছে সেমি-ফাইনাল খেলার জন্য
তেমনি প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিটের জন্যেও। এক্ষেত্রে তালিকার শেষ ২ দল বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের
যেমন সুযোগ রয়েছে প্রথম আটে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করার তেমনি শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের প্রথম আটে থাকা পুরোপুরি নিশ্চিত
নয়।
সুতরাং বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসও রয়েছে
চ্যাম্পিয়ন ট্রফি’তে কোয়ালিফাই করার
দৌড়ে। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের জন্য এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই একমাত্র লক্ষ্য।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের সামনে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল খেলার সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে খেলা নিশিচত করার লক্ষ্যও রয়েছে।
চ্যাম্পিয়নস
ট্রফিতে যেভাবে কোয়ালিফাই করতে পারে বাংলাদেশ
চ্যাম্পিয়ন ট্রফি
২০২৩ এর টিকিট পেতে হলে নিজেদের শেষ ২ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে
বাংলাদেশকে অবশ্যই জয়লাভ করতে হবে। তবে তাতেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা সুনিশ্চিত
হবে এমন নয়। শেষ ২ ম্যাচে জয় পেলে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৬। শ্রীলঙ্কা যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারায়
তাদেরও পয়েন্ট হবে ৬, অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস যদি তাদের শেষ ২ ম্যাচ
থেকে (ইংল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে) ১টি ম্যাচেও জয়লাভ করে তবে তাদেরও পয়েন্ট হবে ৬। সেক্ষেত্রে নেট রান রেটের সমীকরণ চলে
আসবে এবং বর্তমানে বাংলাদেশ নেট রান রেটে বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও
নেদারল্যান্ডসের চেয়ে।
চ্যাম্পিয়নস
ট্রফির দৌড়ে বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ কিন্তু ইংল্যান্ডও। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের
সাম্প্রতিক ফর্ম খুব ভালো না হলেও নিজেদের শেষ ২ ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তানের
বিপক্ষে জয় পেলে ইংল্যান্ডও ৬ পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করবে। এই মুহূর্তে নেট
রান রেটে তারা বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে হয়তো আছে, কিন্তু শেষ ২ ম্যাচে ভালো খেলে সেটা বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ
কিন্তু তাদের সামনে রয়েছে।
শেষ দুটো ম্যাচ
জিতলেও বাংলাদেশের সামনে অনেকগুলো ‘যদি কিন্তু’ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে কোয়ালিফাই করার পথে। প্রথমত নিজেদের ম্যাচ ২টিতে জয়লাভ
করতে হবে এবং জেতার পাশাপাশি নেট রান রেটের দিকেও লক্ষ্য রাখতে। দ্বিতীয়ত আশা করতে হবে প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডের ম্যাচগুলোর ফলাফল যেন
বাংলাদেশের পক্ষে যায়। আর এই সব কিছু সম্ভব হলে তবেই কেবল বাংলাদেশ ২০২৫ সালে
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে খেলার সুযোগ পাবে।
তথ্য সূত্রঃ ক্রিকইনফো
অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার ৩য়
পর্বে অংশ নিতে ক্লিক করুনঃ
https://computerjagat.com.bd/post/3065
০ টি মন্তব্য