ডাক
ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ও ডিজিটাল
প্রযুক্তি প্রসারের ফলে আগামী ২ বছরের মধ্যে
পৃথিবী হবে ডাটা নির্ভর। প্রচলিত
মিডিয়ার জায়গা দখল করে নিবে ডিজিটাল মিডিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা ক্রমেই বাড়তে থাকবে। ডিজিটাল যুগে ডাটার চাহিদা মেটাতে ইকো সিস্টেম দাঁড় করাতে অপটিক্যাল ফাইভার নেটওয়ার্ক জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াসহ যে সব ক্ষেত্রে
সহায়তা দরকার সরকার
তাই করছে।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ টাউন হলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-(আইএসপিএবি)এর ময়মনসিংহ বিভাগীয় আহ্বায়ক কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী উচ্চগতি ইন্টারনেট সেবা প্রদানে আইএসপিএবি‘র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, সময়ের প্রয়োজনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের বিকল্প থাকবে না। দেশে গ্রাহকদের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। বিসিএস, বেসিস, আইএসপিএবি ও ই-কমার্সসহ তথ্যপ্রযুক্তিখাতের ট্রেডবডিসমূহের অন্যতম এই সংগঠক ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সংগঠন হিসেবে আইএসপিএবি’কে শক্তিশালী করতে শাখা কমিটি গঠনকে অত্যন্ত ভাল একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনাকালে মানুষের জীবনধারা সচল রাখতে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নিরলস প্রচেষ্টা সফল করতে আইএসপিএবি’র ভূমিকার প্রশংসা করেন। গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন যে কোন ব্যবসার জন্য অত্যাবশ্যক উল্লেখ করে কমপিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, গ্রাহক সন্তুষ্ট না হলে ব্যবসা চিরস্থায়ী হবে না এবং এক সময় ব্যবসা বিলীন হয়ে যাবে।
মোস্তাফা
জব্বার ইন্টারনেটকে মানুষের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে তুলনা করে বলেন, ইন্টারনেটকে সহজলভ্য করতে আমরা এক দেশ এক
রেট চালু করেছি। আমাদের এই উদ্যোগ বিশ্বে
একটি অনুকরণীয় উদ্যোগ হিসেবে এফোরএআই প্রশংসা করেছে। ইন্টারনেটের মূল্য সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম অনেক কম। ৬০ টাকায় এক
এমবিপিএস ব্যান্ডউদথ পাওয়া যায়। অথচ ২০০৬ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের
দাম ছিলো ৭৮হাজার টাকা, ২০০৮ সালে ২৭ হাজার টাকা
এবং বর্তমানে একদেশ
এক রেটের আওতায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইদথ
পাওয়া যায় মাত্র ৬০ টাকায়।
মন্ত্রী একই সাথে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কানেক্টিভিটির প্রসারের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন যে এখন মধুপরের পাহাড় বা হাওরে বসে ইন্টারনেটের সহায়তায় তরুণ তরুণীরা বিদেশে আউটসোর্সিং এর কাজ করতে পারে। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তিখাতে তার দীর্ঘ ৩৫ বছরের পথ চলায় বিসিসিএস ও বেসিস এর সভাপতি হিসেবে এখাতের অতীত বর্তমান চিত্রসহ নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠান সেবা দিতে পারে না, যারা জনগণের পাশে থাকে না তারা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারে না। তিনি ব্যবসার শৃঙ্খলার স্বার্থে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডির সদস্য হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ময়মনসিংহ বিভাগীয় নব-গঠিত আইএসপিএবি আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে
বিটিআরসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল নাসিম পারভেজ, আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক, সেক্রেটারি নাজমুল করিম ভূইয়া এবং আইএসপিএবি‘র ময়মনসিংহ বিভাগীয়
আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বক্তৃতা করেন।
এর আগে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি, ময়মনসিংহ শাখার একটি প্রতিনিধিদল মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।স্বাক্ষাতকালে তারা ময়মনসিংহে একটি কমপিউটার সিটি প্রতিষ্ঠাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন। ময়মনসিংহের আনন্দ মাল্টিমিডিয়ার প্ররিচালিকা শিখা হাসান ও শিক্ষিকারাও মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে করোনাকালে শিক্ষাখাতের বিপর্যয় সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করেন। মন্ত্রী ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের সেবা প্রতিষ্ঠান ডাক, বিটিসিএল ও টেলিটকের স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে সামগ্রিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন ও তাদের সেবার মান বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
০ টি মন্তব্য