https://powerinai.com/

প্রযুক্তি

আসছে যাত্রীবাহী ড্রোন

আসছে যাত্রীবাহী ড্রোন আসছে যাত্রীবাহী ড্রোন
 

আসছে যাত্রীবাহী ড্রোন


আমেরিকার বিখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারক ‘জেনারেল মোটর কোম্পানি’র (জিএম) কথা আমরা সবাই জানি। এটি তৈরি করে বিলাসবহুল মোটরগাড়ি। এর প্রধান বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা ও চীন। এর বাইরে বিশ্বের আরো ৩৪টি বাজারে ক্যাডিলাক (Cadillac) মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি সরবরাহ করা হয়। ক্যাডিলাক গাড়ি হচ্ছে আমেরিকার বিলাসবহুল গাড়িগুলোর মধ্যে সেরা ব্র্যান্ডেরগাড়ি। ২০১৯ সালে ক্যাডিলাক বিশ্ববাজারে বিক্রি করে ৩৯০৪৫৮টি গাড়ি। এই মডেলের গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে এটি একটি রেকর্ড। ‘ক্যাডিলাক মোটর কার ডিভিশন’ হচ্ছে জেনারেল মোটরস কোম্পানির একটি ডিভিশন।


জিএম গত ১২ জানুয়ারি প্রকাশ করেছে ক্যাডিলাক ব্র্যান্ডের একটি প্যাসেঞ্জার ড্রোনের ধারণা। এটি একটি ভার্টিক্যাল টেকঅফ ও ল্যান্ডিং ড্রোন। সোজা কথায় এটি একটি স্থান থেকে সোজা উপরের দিকে উঠতে পারবে এবং গন্তব্যে পৌঁছে উপর থেকে সোজা নিচে অবতরণ করতে পারবে। কেউ বলছেন, এ যেন উঁচু ভবনে ওঠার মই এসকেলেডারের মতো। তবে এটি উঁচু ভবনে ওঠার এসকেলেডার নয়, বরং এটি আকাশে ওঠার এসকেলেডার বা মই। আসলে এটি একটি একক যাত্রীবাহী ড্রোন। এই এয়ার ট্যাক্সি এর মালিককে সুযোগ করে দেবে আকাশে একাকী আনন্দ ভ্রমণের। এই প্যাসেঞ্জার ড্রোনটির নাম দেয়া হয়েছে বঠঞঙখ, কারণ এটি একটি ইলেকট্রিক কার, যার থাকবে ভার্টিক্যাল টেকঅফ ও ল্যান্ডিং (VTOL) সক্ষমতা। এক আসনবিশিষ্ট এই বঠঞঙখ যাত্রীবাহী ড্রোনযানটি জেনারেল মোটরসের তৈরি আরেকটি স্বয়ংক্রিয় মোটরগাড়ির পাশে রেখে প্রদর্শিত হয় ২০২১ সালের সিইএস ভার্চুয়াল টেক ট্রেড শো-তে। ‘ক্যাডিলাক হালো’-র পোর্টফোলিওর অংশ হিসেবে এর স্বয়ংক্রিয় উজ্জ্বল সিলভার ও কালো রঙের সেলফ-ড্রাইভিং শাটলযান ও যাত্রীবাহী ড্রোনটির ডিজাইন সিইএস ট্রেড শোতে প্রদর্শনের জন্য নিয়ে আসা হয়। এটি হচ্ছে এর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের এরিয়াল মোবিলিটির ক্ষেত্রে প্রথম আকস্মিক হানা। এ দুটো যানই এখনো নিছক একটি ধারণা মাত্র। এর অর্থ এগুলো এখনো বাস্তব পণ্য হয়ে ওঠেনি। তা সত্তে¡ও এটি আভাস দিচ্ছে এই কোম্পানি ডিজাইন ও প্রোডাক্ট ফ্রন্টে কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আর ইলেকট্রিক ও স্বয়ংক্রিয় গাড়ির ক্ষেত্রে জিএম প্রমাণ করতে পেরেছে কোম্পানিটি এসব প্রযুক্তিতে অধিকতর বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। ‘আমরা এমন একটি বিশ্বের জন্য তৈরি হচ্ছি, যেখানে ইলেকট্রিক ও অটোনোমাস গাড়ি প্রযুক্তির অগ্রগতি ব্যক্তিগত আকাশ ভ্রমণকে সম্ভব করে তুলছে’ এই ড্রোন প্রদর্শনের সময় জিএমের গেøাবাল ডিজাইন চিফ মাইকেল সিমকোয়ি এ কথা বলেন।


এই এক আসনবিশিষ্ট বঠঞঙখ ড্রোনযান তৈরির ধারণা মতে এর চারটি রোটর চলবে একটি ৯০-কিলোয়াট আওয়ার ইলেকট্রিক মোটরের শক্তিতে। এটি একজন যাত্রীকে তার বাড়ির ছাদ থেকে নিয়ে যেতে পারবে অন্য কোনো গন্তব্যে। এ ছাড়া এর থাকবে এয়ার-টুএয়ার এবং এয়ার-টু-গ্রাউন্ড যোগাযোগ গড়ে তোলার সক্ষমতা। এটি চড়ে আকাশ ভ্রমণের জন্য কাউকে বিমানবন্দরে যেতে হবে না। বাড়ির ছাদ থেকেই এটিতে চড়া ও অবতরণ করা যাবে। মাইকেল সিমকোয়ি বলেন : ‘এই কোম্পানি পরিকল্পনায় আরো কিছু ধারণা রয়েছে। এর মধ্যে আছে একটি দুই আসনের বিলাসবহুল যান। এটি তৈরি হবে তাদের জন্য, যারা বিশেষত সঙ্কুচিত বায়ুচাপ থেকে স্বাভাবিক বায়ুচাপে গিয়ে একটু স্বস্তিবোধ করতে চান। ভ্রমণকে আরো উপভোগ্য করে তোলার জন্য এতে থাকবে কোরিওগ্রাফ করা একটি মাল্টি-সেন্সরি অভিজ্ঞতার ব্যবস্থা।’ সিমকোয়ির ব্যাখ্যা মতে পুরো অভিজ্ঞতাটির লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বকে দেখানো অটোনমি ও ক্যাডিলাকের বিলাসবহুল গাড়ি তৈরির করার বিষয়টি নিকটভবিষ্যতের একটি ব্যাপার। অবশ্য এসব ধারণা ডিজাইন করা হয় এটুকু জানিয়ে দিতে, আগামী দিনের পরিবহনের বিষয়টিকে জিএম কতটুকু গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। জিএমের ধারণা এখন কেন্দ্রীভূত ইলেকট্রিফিকেশন, অটোমেটেড ভেহিকল টেকনোলজি ও কানেকটেড কার সার্ভিসের মধ্যে।


জেনারেল মোটরসের মতে আগামী দিনের পরিবহনযান সম্পর্কে একটি রূপকল্প তুলে ধরার লক্ষ্যে উল্লিখিত ‘ট্রেড শো’-তে  এই কোম্পানি প্রদর্শন করেছে বেশ কিছু বাস্তব ও কল্পিত গাড়ি। ভবিষ্যদ্বাণী ধারণা থেকে প্রদর্শন করা হয়েছে দুটি গাড়ির ধারণা, যা ব্যাখ্যা তুলে ধরবে এই কোম্পানির ‘হালো পোর্টফোলিও’। বঠঞঙখ হচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য ডিজাইন করা গাড়ি দুটির একটি। এর রয়েছে একটি ৯০ কিলোওয়াট ব্যাটারি। এটি এক ভবনের ছাদ থেকে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বা ৫৬ মাইল গতিবেগে আরেকটি ভবনের ছাদে গিয়ে পৌঁছুতে পারবে। জিএম কোম্পানির দ্বিতীয় ফিউচারিস্টিক ধারণার প্রদর্শিত গাড়িটি হচ্ছে ‘পারসোনাল অটোনোমাস ভেহিকল’, যাকে অভিহিত করা হচ্ছে একটি ‘সেলফ-ড্রাইভিং বক্স অন হুইলস’ নামে। জিএম কোম্পানি বলছে এই যানটি অনেকটা একটি মোবাইল লিভিং রুমের মতো। এর পরিবেশটা যেকোনো জনের ভালো লাগবে। এর পেছনের সিট আরামআয়েশে বসার উপযোগী হবে। এতে বসে আপনি আপনার পুরো শহর ঘুরে বেড়াতে পারবেন। জিএম কোম্পানি এই দুটি ফিউচারিস্টিক গাড়ির ধারণায় এগুলোর কারিগরি দিকটি বিস্তারিত প্রকাশ করা থেকে বিরত রয়েছে।


তবে ক্যাডিলাক তার অতি বাস্তব নতুন গাড়ি খুৎরয় ঝটঠ-এর বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। এটি যথাযথভাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে গত সামারে। এই গাড়িটির ইন-কার গ্রাফিকস ও সমৃদ্ধ রিয়েলিটি হেডসআপ ডিসপ্লের জন্য এখন এটিকে বলা হচ্ছে ‘আনরিয়েল ইঞ্জিন’। কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে, লিরিক গাড়িটিতে থাকবে প্রমিত ‘সুপার ক্রুজ ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স’। লিরিক গাড়ি হচ্ছে জিএমের প্রথম গাড়ি, যাতে ব্যবহার হয়েছে ‘আল্টিয়াম ব্যাটারি সিস্টেম’। এর ব্যাটারির সাইজ ৫০-২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত। এই ব্যাটারি জিএম কোম্পানির  তৈরি বিশ্বের প্রথম পুরোপুরি ইলেকট্রিক ট্রাক ‘হুমার ইভি’-তে এর ব্যবহার হবে। জিএম জানিয়েছে, এর ব্যাটারি তৈরিতে ৭০ শতাংশ কম কোবাল্ট ব্যবহার হবে। এর ফলে এসব ব্যাটারির দাম কমে যাবে, তবে সার্বিকভাবে পরিবেশের জন্য উপকারী হবে। লিরিকের থাকবে একটি ১০০ কিলোওয়াট ব্যাটারি, যা দিয়ে ট্রাকটি চলবে ৩০০ মাইল। সেই সাথে থাকবে এর বিশাল হাইপারস্ক্রিন ডিসপ্লে। জিএম যখন সিইএস ট্রেড শো-তে দুটি ফিউচারিস্টিক ভেহিকলের ধারণা তুলে ধরে তখন এর প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোও সেদিকে নজর দিতে শুরু করেছে। এফসিএ ঘোষণা দিয়েছে এটি আর্চারের সাথে মিলে ই-ভিটিওলের এয়ার ট্যাক্সি তৈরি করবে। হুন্দাই ও ‘অ্যাস্টন মার্টিন’-এর মতো গাড়ি উৎপাদক কোম্পানিগুলোও নামতে যাচ্ছে নতুন এই মোবিলিটি স্পেস দখলের প্রতিযোগিতায়। ইলেকট্রিক গাড়ি ও ট্রাকে ব্যবহারের ব্যাটারি, ইলেকট্রিক মোটর ও ক্লাউডভিত্তিক সেবার


দ্রুত উন্নতির ফলে ইলেকট্রিক পারসোনাল আকাশযান তৈরির এই হিড়িক শুরু হচ্ছে। মনে হচ্ছে এসব কোম্পানির ইলেকট্রিক পারসোনাল এয়ারক্র্যাফটের দিকে নজর দেয় আপাতদৃষ্টিতে যুক্তিগ্রাহ্য। 








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।