বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী আগামী দুই দশকের মধ্যে মানবজাতির ৪৭ ভাগ কাজ স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে হতে পারে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমনির্ভর এবং অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতা নির্ভর চাকরি বিলুপ্ত হলেও উচ্চ দক্ষতানির্ভর যে নতুন কর্মবাজার সৃষ্টি হবে সে বিষয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে তার জন্য প্রস্তুত করে তোলার এখনই সেরা সময়। দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুত করা সম্ভব হলে জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে অনেক বেশি উপযুক্ত।
চাকরি থেকে ব্যবসার ক্ষেত্র সব জায়গায় রোবোটিকসের মতো প্রযুক্তি জায়গা করে নিচ্ছে। তৈরি পোশাক শিল্পে এ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে দ্রুত গতিতে। তৈরি পোশাক শিল্প বৃহৎভাবে স্বয়ংক্রিয়করণের দিকে ধাবিত হলে এর ব্যাপক প্রভাব দেশের অর্থনীতি, উনয়ন, সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রেই দেখা যাবে। প্রথম সম্ভাব্য প্রভাব হলো চাকরি হারানো। তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের একটি বড় উৎস এবং অটোমেশনের দিকে এর স্থানান্তর হলে বর্তমান শিল্পে নিযুক্ত বিশালসংখ্যক শ্রমিকের উল্লেখযোগ্য চাকরি হারাতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় বলছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে চাকরি হারাবেন লাখ লাখ তৈরি পোশাক কর্মী। এটি দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি স্বতন্ত্র শ্রমিকদের জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। চাকরি হারানো কর্মীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এ কথা সত্য, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবটের ব্যবহারের দিকে পরিবর্তন তৈরি পোশাক খাতে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে; যার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। জ্ঞানভিত্তিক এ শিল্প বিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ মানবসম্পদই হবে বেশি মূল্যবান। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষ চাকরি হারালেও এর বিপরীতে সৃষ্টি হবে নতুন ধারার নানা কর্মক্ষেত্র। এক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বাংলাদেশের যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ভিত হচ্ছে ‘জ্ঞান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’-ভিত্তিক কম্পিউটিং প্রযুক্তি। রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডাটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তির প্রসার প্রতিনিয়ত চতুর্থ বিপ্লবকে নিয়ে যাচ্ছে অনন্য উচ্চতায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে কর্মবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে ক্রমে শিল্প-কারখানা হয়ে পড়ছে যন্ত্রনির্ভর। টেক জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাপলের হার্ডওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফক্সকন এরই মধ্যে হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করে তার পরিবর্তে রোবটকে বেছে নিয়েছে। বিগত বছরগুলোয় চীনের কারখানাগুলোয় রোবট ব্যবহারের হার বেড়েছে বহুগুণে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, রোবটের কারণে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত তৈরি পোশাক শিল্পের এসব আশঙ্কার ভেতরেই রয়েছে আগামী দিনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের বিশাল সম্ভাবনা। বর্তমানে তরুণের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আগামী ৩০ বছরজুড়ে তরুণ বা উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার এটাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। জ্ঞানভিত্তিক এ শিল্প বিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ মানবসম্পদই হবে বেশি মূল্যবান। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষ চাকরি হারালেও এর বিপরীতে সৃষ্টি হবে নতুন ধারার নানা কর্মক্ষেত্র। নতুন যুগের এসব চাকরির জন্য প্রয়োজন উঁচু স্তরের কারিগরি দক্ষতা। ডাটা সায়েন্টিস্ট, আইওটি এক্সপার্ট, রোবটিকস ইঞ্জিনিয়ারের মতো আগামী দিনের চাকরিগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী তরুণ জনগোষ্ঠী।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী, আগামী দুই দশকের মধ্যে মানবজাতির ৪৭ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমনির্ভর এবং অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতানির্ভর চাকরি বিলুপ্ত হলেও উচ্চদক্ষতানির্ভর যে নতুন কর্মবাজার সৃষ্টি হবে, সে বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত কেও তোলার এখনই সেরা সময়। দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুত করা সম্ভব হলে জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে বেশি উপযুক্ত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে আজকের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান শুধু মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক ও সার্বিক জীবনমানের উত্তরণ ঘটিয়েছে। জাপানের প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত নগণ্য এবং আবাদযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ মাত্র ১৫ শতাংশ। জাপান তার সব প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা অতিক্রম করেছে জনসংখ্যাকে সুদক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে। জাপানের এ উদাহরণ আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। সুবিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলে বাংলাদেশের পক্ষেও উন্নত অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হওয়া অসম্ভব নয়।
শিল্প-কারখানায় কী ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতা লাগবে, সে বিষয়ে শিক্ষাক্রমের তেমন সমন্বয় নেই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। প্রাথমিক পাঠ্যক্রম থেকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সারা দেশে সাশ্রয়ী মূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবস্থার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অফিসের ফাইল-নথিপত্র ডিজিটাল ডকুমেন্টে রূপান্তর করা হচ্ছে। আর নতুন ডকুমেন্টও ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি করে সংরক্ষণ ও বিতরণ করা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, তবে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি এখনো অনুপস্থিত। কেবল পরিকল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানবসম্পদকেও যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এ পরিবর্তনের জন্য। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আইওটি, ব্লকচেইন এসব প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। এসব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পণ্য সরবরাহ, চিকিৎসা, শিল্প-কারখানা, ব্যাংকিং, কৃষি, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করার পরিধি এখনো তাই ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত। সত্যিকার অর্থে যেহেতু তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সুফলই সবার কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়নি, চতুর্থ বিপ্লব মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটকু তা আরো গভীরভাবে ভাবতে হবে। ব্যাপক সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমে তা করা সম্ভব। উল্লেখ্য, শুধু দক্ষ জনগোষ্ঠী নেই বলে পোশাক শিল্পের প্রযুক্তিগত খাতে কমবেশি তিন লাখ বিদেশী নাগরিক কাজ করেন। অবাক হতে হয়, যখন দেখা যায় এক কোটির বেশি শ্রমিক বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে যে রেমিট্যান্স পাঠান, তার প্রায় সিংহ ভাগ চলে যায় তিন লাখ বিদেশীর হাতে। তাই শুধু শিক্ষিত নয়, দেশে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন তাদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। বিদেশে এক কোটি শ্রমিক আয় করেন ১৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ভারতের ১ কোটি ৩০ লাখ শ্রমিক আয় করেন ৬৮ বিলিয়ন ডলার। কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অদক্ষতাই তাদের আয়ের ক্ষেত্রে এ বিরাট ব্যবধানের কারণ। সংগত কারণেই উচিত কারিগরি দক্ষতার ওপর আরো জোর দেয়া।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনাটাও জরুরি। আগামী দিনের সৃজনশীল, সুচিন্তার অধিকারী, সমস্যা সমাধানে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উপায় হলো শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এ দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীর মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং কাজটি করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে। একই ধরনের পরিবর্তন হতে হবে উচ্চশিক্ষার স্তরে। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গ্র্যাজুয়েট তৈরির জন্য স্কিল বিষয়ে নিজেরা প্রশিক্ষিত হবেন। উচ্চশিক্ষার সর্বস্তরে শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংযোগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষানবিশি কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনের কার্যক্রম সম্পর্ক হাতে-কলমে শিখতে পারেন।
উচ্চশিক্ষা স্তরে গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং যারা বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা ও গবেষণায় নিয়োজিত, তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। এখন দেখা যায়, ভালো পদ-পদবি পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিই প্রধান মাপকাঠি হয়ে উঠেছে, ফলে গবেষণা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার চেয়ে শিক্ষকরা রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিতে বেশি আগ্রহী। ফলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য থেকে তারা বিচ্যুত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। গবেষণা ক্ষেত্রে বাজেট বাড়াতে হবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণায় অর্থায়নে এগিয়ে আসতে হবে। প্রচুর বাংলাদেশী গবেষক বিদেশে বেশ ভালো ভালো গবেষণায় নিয়োজিত। প্রয়োজনে তাদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ দেশে এসে কাজ করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়া একত্রে কোলাবরেশনের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।
এক্ষেত্রে আমাদের জন্য সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হতে পারে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে আজকের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে শুধু মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক এবং সার্বিক জীবনমানের উত্তরণ ঘটানো যায়। জাপানের প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত নগণ্য এবং আবাদযোগ্য কৃষি জমির পরিমাণ মাত্র ১৫%।
জাপান সব প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করেছে তার জনসংখ্যাকে সুদক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তর করার মাধ্যমে। জাপানের এই উদাহরণ আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। বাংলাদেশের সুবিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলে আমাদের পক্ষেও উন্নত অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হওয়া অসম্ভব নয়।
শিল্প-কারখানায় কী ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতা লাগবে সে বিষয়ে আমাদের শিক্ষাক্রমের তেমন সমন্বয় নেই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আইওটি, ব্লকচেইন এসব প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে। এসব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পণ্য সরবরাহ, চিকিৎসা, শিল্প-কারখানা, ব্যাংকিং, কৃষি, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করার পরিধি এখনও তাই ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত।
কর্মক্ষেত্রে আমাদের শ্রমিকদের অদক্ষতাই তাদের আয়ের ক্ষেত্রে এই বিরাট ব্যবধানের কারণ। সঙ্গত কারণেই আমাদের উচিত কারিগরি দক্ষতার ওপর আরও জোর দেয়া। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনাটাও একান্ত জরুরি। শিল্প প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়া একত্রে কোলাবারেশনের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।
আমাদের উচিত হবে সকল বিভাগ ও সেক্টর তাদের নিজস্ব কাজকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ভাবনাকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। অতঃপর সকল সেক্টরের কর্মপরিকল্পনাকে সুসমন্বিত করে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে সকলে মিলে কাজ করতে হবে।
আশার কথা, শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি হিসেবে তিনটি বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এগুলো হলো- অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী বাহিনী তৈরি করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ব্যাপকহারে সরকারী বেসরকারী যৌথ উদ্যোগ। তাই সবাই মিলে আমাদের এখন থেকেই একটি সুপরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব, গড়তে পারব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।
কেবল পরিকল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের মানবসম্পদকেও যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এ পরিবর্তনের জন্য। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আইওটি, ব্লকচেইন এসব প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখনো তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে। এসব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পণ্য সরবরাহ, চিকিৎসা, শিল্প-কারখানা, ব্যাংকিং, কৃষি, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করার পরিধি এখনো তাই ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত। সত্যিকার অর্থে যেহেতু তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সুফলই আমরা সবার কাছে পৌঁছতে পারিনি, চতুর্থ বিপ্লব মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি কতটকু তা আরো গভীরভাবে ভাবতে হবে। ব্যাপক সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমে তা করা সম্ভব।
শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন তাদেরকেও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। বিদেশে আমাদের এক কোটি ২০ লাখ ১৩ হাজার ৯১৫ জন শ্রমিক আয় করেন ১৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ভারতের ১ কোটি ৩০ লাখ শ্রমিক আয় করেন ৬৮ বিলিয়ন ডলার। কর্মক্ষেত্রে আমাদের শ্রমিকদের অদক্ষতাই তাদের আয়ের ক্ষেত্রে এ বিরাট ব্যবধানের কারণ। সংগত কারণেই আমাদের উচিত কারিগরি দক্ষতার ওপর আরো জোর দেয়া।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনাটাও একান্ত জরুরি। আগামী দিনের সৃজনশীল, সুচিন্তার অধিকারী, সমস্যা সমাধানে পটু জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উপায় হলো শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এ দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীর মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং কাজটি করতে হবে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।
আমাদের কারিগরি শিক্ষা ও বিশ্ব প্রস্তুতিতে দেখা যায়, জার্মানিতে ১৯৬৯ সালে, সিঙ্গাপুরে ১৯৬০ সালে ও বাংলাদেশে ১৯৬৭ সালে শুরু হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলি দ্রুত উন্নতি করলেও আমরা বিভিন্ন পরিসংখ্যানে কারিগরি শিক্ষার হার ও গুণগত মানের দিক দিয়ে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সূত্র অনুযায়ী আমাদেও দেশে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮ হাজার ৬৭৫ টি। বর্তমানে প্রায় ১২ লক্ষ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় পড়াশোনা করছে।
কারিগরি শিক্ষার হারে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। আমাদের মাত্র ১৪% শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে যেখানে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার হার জার্মানিতে ৭৩ শতাংশ, জাপান ৬৬ শতাংশ, সিঙ্গাপুর ৬৫ শতাংশ, অষ্টে্রলিয়া ৬০ শতাংশ, চীন ৫৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ৫০ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৪৬ শতাংশ। অবশ্য আমাদের বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যা ২০২০ সালে ২০% , ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৫০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষার হার ৫০% এ উন্নীত করার এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় জনগোষ্ঠীকে যেসব দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন, তার প্রায় পুরোটাই নির্ভর করবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। শিক্ষাক্রম হলো নিজস্ব আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক; একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক চাহিদার আলোকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এবং শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সুনির্দিষ্ট, সুপরিকল্পিত ও পূর্ণাঙ্গ একটি পথনির্দেশ। আগামী দিনের সৃজনশীল ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সমস্যা সমাধানে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার দিকনির্দেশনাও থাকে শিক্ষাক্রমে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী প্রত্যাশিত শিক্ষাক্রম কেমন হওয়া উচিত, তা অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে পাঠ্যবইকেন্দ্রিক শিক্ষাক্রম চিন্তা থেকে বের হয়ে কর্মনির্ভর ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মুখস্থ করার পরিবর্তে আত্মস্থ, বিশ্লেষণ ও সূত্রের প্রায়োগিক দিককে শিক্ষাক্রম প্রণয়নে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
গুরুত্ব দিতে হবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন ও মৌলিক অর্জনের ওপর। রিস্কিলিং, আপস্কিলিং ও ডিস্কিলিং পদ্ধতির বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। বিদ্যমান শিখন কার্যক্রমের সঙ্গে ডিজিটালনির্ভর অন্যান্য ব্যবস্থা, যেমন ই-লার্নিং ও অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। অর্থাৎ প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার উপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ জনশক্তি রফতানিতে এখনো যেমন অদক্ষ ক্যাটাগরিতে রয়েছে, তেমনি দেশে দক্ষ জনবলের অভাবে বিদেশ থেকে লোক আনতে হচ্ছে। এজন্য জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্টে্রলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কারিগরি শিক্ষার মডেল আমাদের অনুসরণ করতে হবে। জার্মানিতে কারিগরি শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশ। দেশে দক্ষতা বিষয়ক শিক্ষার হার অন্তত ৬০ শতাংশে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশের উন্নতির মূলে রয়েছে কারিগরি শিক্ষা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার স্কুলের পাঠ্যসূচিতে কোডিং শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় স্কুলে কম্পিউটার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামোয় বিনিয়োগ বেড়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গ্রামীণ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো আমাদের শিশু ও তরুণদের তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের উপযোগীই করতে পারেনি। শিক্ষার অংশগ্রহণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের হার বেড়েছে কিন্তু মানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ রকম একটি ভঙ্গুর সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে একচ্ছত্র প্রযুক্তিসংক্রান্ত বিনিয়োগ টেকসই হওয়া কঠিন। এতে সামাজিক অসমতা আরো বাড়বে। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য সব খাতে সর্বজনীন প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিনিয়োগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে আরো ধাবিত করছে। করোনাকালীন প্রযুক্তিগত সংস্কার অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে মালয়েশিয়া। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্রুত ও সময়োচিত পদক্ষেপ এবং নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বজনীন অবকাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল গভন্যর্ান্সের মাধ্যমে পুরোদমে সব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ে কর্মী ট্রেসিং অ্যাপ উন্নয়ন করেছে, যার মাধ্যমে শিক্ষক ও কর্মচারীরাই দৈনন্দিন কার্যক্রম তদারক করছেন। বাংলাদেশও মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষার মডেল অনুসরণ করতে পারে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি শত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। এ সময় দক্ষ নেতৃত্ব ও গুণগত শিক্ষার ওপর জোর দেয়া আবশ্যক। আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো জরুরি। শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে আমাদের। শিক্ষার বহুমাত্রিকতা আগামীর নেতৃত্ব গঠনে ভূমিকা রাখবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমাদের শিক্ষার্থীরা নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের গবেষণা, সরকার ও শিল্প খাতের মধ্যে সমন্বয় থাকাটা জরুরি।
গবেষণায় আরো অর্থ বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের তরুণদের চিন্তা করার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পড়াশোনায় বৈচিত্র্য বাড়ানো দরকার। আমাদের যেমন গণিত নিয়ে পড়তে হবে, তেমনি পড়তে হবে শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে। প্রোগ্রামিংসহ বিভিন্ন প্রাথমিক দক্ষতা সবার মধ্যে থাকা এখন ভীষণ জরুরি। কেবল পরিকল্পনা করলেই তো হবে না, অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের মানবসম্পদকেও যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এ পরিবর্তনের জন্য। তবে আশার কথা, ‘ন্যাশনাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স স্ট্র্যাটেজি’ করা হয়েছে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তথ্য প্রযুক্তিকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশে উদ্ভাবনী জ্ঞান, উচ্চদক্ষতা, গভীর চিন্তাভাবনা ও সমস্যা সমাধান করার মতো দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয়নি। তাই সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলোয় প্রতিবেশী ও অন্যান্য দেশ থেকে বাধ্য হয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষতাসম্পন্ন পরামর্শক নিয়োগ দিতে হচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এ খরচ বাবদ ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নতি ও সফলতা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে শিল্প ও সেবাচালিত অর্থনীতিতে পরিবর্তন হচ্ছে। অন্যদিকে সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে প্রযুক্তি খাতে।
ফলে শিল্প ও সেবার ধরনেও আসছে পরিবর্তন। তাই এ পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন এবং প্রবল প্রতিযোগিতামূলক বাজারের জন্য নিজেদের যদি তৈরি করা না যায়, তবে হাজার হাজার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো কাজে আসবে না। আর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা লাখ লাখ শিক্ষার্থী রাষ্টে্রর বোঝা হয়েই থাকবে।
তাই আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও হাইটেক পার্কসহ সবাইকে এক হয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয়টি মনেপ্রাণে অনুধাবনপূর্বক কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সরকারকে এ খাতে উন্নয়ন বাজেট বাড়াতে হবে। তা না হলে আমরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বো এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আমাদেরকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখে পড়তে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ফলে অর্থনৈতিক লেনদেনের সুবিধা সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিস্তৃৃতি লাভ করেছে। নারীরাও তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্ত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নারী উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। দেশে প্রায় ২৫-৩০ হাজার ফেসবুক পেজে কেনাকাটা চলছে। দক্ষভাবেই চলছে কাজগুলো। তবে দক্ষতা অর্জনে আরো বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে।
০ টি মন্তব্য