দীর্ঘদিন ধরেই মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
কিউরিওসিটি নামের রোভার যান পাঠিয়ে মঙ্গল গ্রহের নানা রহস্য জানার পাশাপাশি গ্রহটিতে মানুষের বেঁচে থাকার কৌশল আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
গবেষণার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারে মঙ্গল গ্রহের আদলে কৃত্রিম আবাসস্থলও তৈরি করেছেন তাঁরা।
মঙ্গল গ্রহের পরিবেশে এক বছর অবস্থান করে ৬ জুলাই চারজন অভিযাত্রী পৃথিবীর উন্মুক্ত পরিবেশে বের হয়েছেন। শুনিয়েছেন দীর্ঘদিন মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ থাকার অভিজ্ঞতা।
স্পেস এজেন্সির ক্রু হেলথ অ্যান্ড পারফরম্যান্স এক্সপ্লোরেশন অ্যানালগ প্রকল্পের আওতায় গত বছরের ২৫ জুন মঙ্গল গ্রহে যান কেলি হ্যাস্টন, আঙ্কা সেলারিউ, রস ব্রকওয়েল ও নাথান জোন্স নামের চার স্বেচ্ছাসেবী অভিযাত্রী।
মঙ্গলগ্রহের আবহে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টেড আবাসস্থলে অবস্থান করেন তাঁরা। এ সময় সিমুলেটেড স্পেসওয়াকের মাধ্যমে মঙ্গলের বুকে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তাঁরা।
নিজেদের আবাসস্থল রক্ষার পাশাপাশি গত এক বছরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশে শাকসবজিও চাষ করেছেন তাঁরা। মঙ্গল গ্রহের কৃত্রিম পরিবেশে এক বছর থাকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে মিশন কমান্ডার হ্যাস্টন বলেন, ‘হ্যালো! আপনাদের সবাইকে হ্যালো বলতে পারা আসলেই খুব চমৎকার।
আমাদের ৩৭৮ দিনের বন্দিত্ব দ্রুত কেটে গেছে। মঙ্গল গ্রহে পরিচালিত মিশনের অনুকরণে ১৫৭ বর্গমিটার জায়গায় থাকতে হয়েছে আমাদের। চাঁদের ওপারে মানুষকে নিয়ে যেতে এই মিশন বেশ গুরুত্বপূর্ণ।’
পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে বার্তা পাঠাতে ২২ মিনিটের মতো সময় লাগে, অভিযাত্রীরাও ২২ মিনিট দেরি করে যোগাযোগের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন।
ভাবুন তো, বন্ধুকে কল করার ২২ মিনিট পর উত্তর পাচ্ছেন। আরও দুটো এমন মিশন পরিকল্পনা আছে। অভিযাত্রীদের সিমুলেটেড স্পেসওয়াকের মাধ্যমে শারীরিক ও আচরণগত বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে নাসা।
জনসন স্পেস সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর স্টিভ কোরনার বলেন, ‘এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ জন্য ক্রুদের পুষ্টির বিষয়েও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। অনেক ধরনের পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকতে হয়েছে অভিযাত্রীদের।’
অভিযানের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ব্রকওয়েল বলেন, ‘উত্তেজনাপূর্ণ ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এক বছর বেঁচে থাকার এই অবিশ্বাস্য সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’
০ টি মন্তব্য