শিক্ষা কার্যক্রমের স্মার্ট রূাপান্তরের লক্ষে গত মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হলো জাতীয় শিক্ষাক্রম পোর্টাল এবং বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ ও নৈপুণ্য মূল্যায়ন অ্যাপ-বিষয়ক অনলাইন প্রশিক্ষণের কার্যক্রম।
দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে এই কার্যক্রম দুটি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে অক্টোবরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে হাইব্রিড পদ্ধতিতে শুরু হবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সঞ্চালনা করেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাক্রমের রূপান্তর ঘটানো হয়েছে।
তারই অংশ হিসেবে যুগোপযোগী স্মার্ট প্ল্যাটফর্ম ও হাইব্রিড প্রশিক্ষণ প্রণয়ন করা হচ্ছে, যা স্মার্ট শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে হবে অত্যন্ত সহায়ক মাইলফলক।
এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠবেন বিশ্লেষণধর্মী, সংবেদনশীল, আত্মপ্রত্যয়ী ও স্মার্ট নাগরিক। মহিবুল হাসান বলেন, আমরা একটি হিসাবে দেখেছি, ৩০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একেবারে কোনো ধরনের তথ্য-প্রযুক্তি সরঞ্জাম নেই।
আমরা এর একটি তালিকা করেছি। আমরা ৩০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্মার্ট ক্লাস রুম করার জন্য অনুদান দিয়ে যাবো। প্রাথমিকভাবে আমরা পাঁচ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্ধারণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, টিচার্স গাইড যেগুলো আছে, সেগুলোর অডিয়ো ভিজ্যুয়াল থাকবে। কিছুটা চ্যালেঞ্জ আছে, সময়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
আশা করছি, আমরা খুব শিগগির অডিও ভিজুয়্যাল নমুনা প্রতিটা ক্লাসে দিতে পারবো। তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন।
বাবা-মায়েরাও উপকৃত হবেন। আমাদের শিক্ষকরা বেশি উপকৃত হবেন। আমাদের আশা, এ বছর শেষে প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম একটি করে ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে দিতে পারবো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের পুরস্কার দিতে শিগগিরই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সারা দেশের শিক্ষকরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে৷ প্রতিযোগিতাটি হবে- শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কত ভালো এবং সহজভাবে পাঠদান করতে পারেন তার ওপর। শিক্ষকরা পাঠদানের ভিডিও করে সেটি জমা দেবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু সমাধান দিয়ে দিলেই শিক্ষার্থীদের উত্তর দেওয়ার দক্ষতা আমরা মূল্যায়ন করতে পারবো না, বিষয়টি কিন্তু তা নয়।
সমাধান দিয়ে দেওয়ার মধ্যে মার্ক পেয়ে যাওয়ার কোনো বিষয় নেই। তবে যাতে করে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি, প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এই কাজগুলো না করে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিটিবির সদস্য প্রফেসর মোঃ মোখলেস উর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর এর অধ্যাপক ও এনসিটিবির জাতীয় শিক্ষাক্রম বিষয়ের প্রধান পরামর্শক ড. এম. তারিক আহসান বিষয়ভত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরিটাস ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
০ টি মন্তব্য