দেশের লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশনকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী করতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর যৌথ উদ্যোগে সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি) বাস্তবায়ন সম্পর্কিত এক কর্মশালা বেসিস সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর, কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, ই-ক্যাব, বিভিন্ন বেসরকারি লজিস্টিকস কোম্পানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করন।
কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, "লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সিএলটিপি এর মাধ্যমে আমরা লজিস্টিকস কার্যক্রমকে আরও সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ করে তুলতে পারবো, যা আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সহায়ক হবে।"
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেসিসের পরিচালক ও ই-কুরিয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) বিপ্লব ঘোষ রাহুল। এই সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি)-এর মূল লক্ষ্য হলো উদীয়মান পার্সেল ডেলিভারি খাত ও ই-কমার্স খাতের ডেলিভারির ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনয়ন এবং পেমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত এসক্রো (ESCROW) নীতিমালা বাস্তবায়ন।
পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণয়নকৃত জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রণয়নকৃত জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা ২০২৪-এ CLTP-এর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
উক্ত প্ল্যাটফর্ম এর সাথে সকল লজিস্টিকস কোম্পানি (কুরিয়ার সার্ভিস), ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, সকল পেমেন্ট গেটওয়ে (পিএসও, পিএসপি, ব্যাংক ইত্যাদি) এবং বিভিন্ন সরকারি আইন প্রয়োগকারী ও নীতি প্রণয়নকারী সংস্থাসমূহ CLTP সিস্টেমের সাথে API (Application Programming Interface)-এর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবে।
এসকল কানেক্টিভিটি সম্পন্ন হলে গ্রাহক পর্যায়ে পার্সেল প্রাপ্তি এবং এ সংক্রান্ত তথ্য প্রদান অধিকতর সহজ হবে, একই ভাবে নীতি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এ খাত সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবেন, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এই কর্মশালার মূল লক্ষ্য হলো দেশের লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশনকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী করা।
সকল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে গ্রাহকদের কাছে আরও সহজীকরণ করা এবং তাদের তথ্যগুলো একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেওয়া।
এই বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরেন এটুআই-এর গ্রামীণ ই-কমার্স ও হেড অব কমার্সিলাইজেশন রেজওয়ানুল হক জামি। উক্ত কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পরামর্শ প্রদান করেন। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলোঃ সিএলটিপি প্ল্যাটফর্ম থেকে এসএমএস- মাধ্যমে যেন গ্রাহকের কাছে নোটিফিকেশন পাঠানো হয়।
পাশাপাশি, নোটিফিকেশন পাওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময় পরে গ্রাহকদের স্ট্যাটাস পরিবর্তন হতে হবে। গ্রাহকরা যে টোকেন পাবেন সেটা যেন গ্রাহকের অর্ডারের তারিখ অনুসারে সংগৃহীত হয়।
যাতে গ্রাহকের একাধিক অর্ডার ট্র্যাকিং করতে সহজ হয়। এছাড়াও, ওটিপি-এর মাধ্যমে গ্রাহকের অর্ডারের তথ্য নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
সিএলটিপি প্লাটফর্মের সাথে কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (সিসিএমএস) সম্পৃক্ত থাকবে যেন গ্রাহকেরা তাদের অভিযোগ গুলো সহজে জানাতে পারে।
উল্লেখ্য, সিএলটিপি হল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অধিভুক্ত একটি অত্যাধুনিক প্ল্যাটফর্ম যা লজিস্টিকস কোম্পানিগুলোকে তাদের পণ্য পরিবহন কার্যক্রমকে আরও দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনা করতে সহায়তা করে।
বেসিসের এই কর্মশালার আয়োজনে সাপোর্ট প্রদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
০ টি মন্তব্য