https://gocon.live/

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে ডিজিটাল পেমেন্ট

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে ডিজিটাল পেমেন্ট

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে ডিজিটাল পেমেন্ট
 
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে ডিজিটাল পেমেন্ট রিয়েল টাইম লেনদেনে ভারত এখন বিশ্বসেরা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে উন্নয়নশীল দেশে অনেক দেশের লক্ষ্য নিজস্ব সুপারঅ্যাপ গড়ে তোলা সুপারঅ্যাপের জন্মস্থান চীন ভারতের ইউপিআই অনুসরণ করছে অনেক দেশ মোবাইল-মানি বিপ্লব ঘটেছে নাইজেরিয়ায় ফাস্ট-পেমেন্ট সিস্টেম পরিবর্তন আনছে উন্নয়নশীল দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো চায় ডিজিটাল আইডেন্টিটির মুদ্রা ডিজিটাল কারেন্সি চালুর ক্ষেত্রে চীন এগিয়ে বাহামা বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কারেন্সি sand dollar চালুর ইতিহাস সৃষ্টি করেছেসম্প্রতি আন্তর্জাতিক সাময়িকী ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) ‘গোয়িং ডিজিটাল : পেমেন্টস ইন দ্য পোস্ট-কোভিড ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে কোভিড-উত্তর সময়ে বিশ্বের ডিজিটাল লেনদেনের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।রেগুলেটরদের জন্য অনন্য সুযোগপ্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ এই মহামারী ডিজিটাল লেনদেনকে আরো ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে রেগুলেটরদের সামনে অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে। কোভিড-১৯ বিশ্বের প্রতিটি দেশকে বাধ্য করেছে ব্যবসায়-বাণিজ্যে সহযোগিতা করা ও প্রবৃদ্ধির মাত্রা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনে তাদের লেনদেন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে। ভারত এই পরিবর্তনে প্রধান উদাহরণটি সৃষ্টি করেছে। যদিও দেশটির  জনগোষ্ঠী প্রধানত বাস করে গ্রামাঞ্চলে এবং এরা নির্ভরশীল নগদ লেনদেনের ওপর। এরপরও এই মহামারী সময়ে পরিমাণ ও মূল্য এই উভয় বিবেচনায় দেশটিতে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে। এই লেনদেন বাড়ার পরিমাণ দেশটির নীতি-নির্ধারকদের প্রত্যাশার মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। রিয়েল টাইম লেনদেনে ভারত এখন বিশ্বসেরা। দেশটির নীতি-নির্ধারকেরা এক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেছেন।ভারতের ‘ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস’ (ইউপিআই) দেখিয়েছে, কী করে একটি কার্যকর নীতি-কাঠামো ও সহায়ক বিধান তথা রেগুলেশন দ্রæত লেনদেন ব্যবস্থাকে গ্রহণ করে নিতে পারে। প্রসঙ্গত, ইউপিআই হচ্ছে একটি তাৎক্ষণিক রিয়েল টাইম পেমেন্ট সিস্টেম, যা ভারতের আন্তঃব্যাংক লেনদেনের সুবিধার্থে দেশটি জাতীয় পেমেন্ট করপোরেশন চালু করেছে। ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষত কেন্দ্রীয় ব্যাংক উৎসাহিত করেছে মার্চেন্টদের জন্য কিউআর কোড এবং টুল গেটগুলোর জন্য ‘রেডিও-ফ্রিকুয়েন্স আইডেন্টিফিকেশন’ (আরএফআইডি) ট্যাগের মতো টুল ব্যবহারে। এর ফলে ভারতের সামনে রিয়েল টাইম পেমেন্টে উত্তরণের পথ খুলে যায়। ভারতীয় অর্থনীতিতে কম খরচের এই লেনদেনের ব্যাপকতার ফলে দেশটিকে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রিয়েল টাইম লেনদেনকারী দেশে পরিণত করে। একই ধরনের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে অন্যান্য দেশেও। ফিলিপাইনে সরকার একটি সার্বিক উদ্যোগ নিয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে একটি ‘ক্যাশ-ফ্রি সোসাইটি’ বিনির্মাণে। তা ছাড়া দেশটির লক্ষ্য ২০২৩ সালের মধ্যে এর লেনদেনকে ডিজিটাল করে তোলা। এর উপকার অপরিমেয়। সবিশেষ উল্লেখ্য, এর ফলে বৃহত্তর ‘অর্থায়ন অন্তর্ভুক্তি’ ঘটে।উন্নয়নশীল বিশ্বে কার্ড-পেমেন্ট জোরদারসবচেয়ে সুপরিচিত ও সবচেয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তনটা ঘটছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। এসব দেশে বিদ্যমান কার্ড-পেমেন্ট অবকাঠামো সম্প্রসারণ করা হয়েছে মোবাইল ফোন ও কন্টাক্টলেস কার্ডে। উদাহরণত, ব্যাপক ব্যবহৃত ব্যবস্থা অ্যাপল পে, গুগল পে ও স্যামসাং পে ব্যবহার মোবাইল অ্যাপে এমবেড করা উন্নীত প্রচলিত ব্র্যান্ডেড কার্ড ব্যবহার করছে ‘পয়েন্ট অব সেল’ (পিওএস) টার্মিনালগুলোতে হস্তান্তরের কাজে। এরা বিদ্যমান কাঠামো ব্যবহার করে প্রেরকের টাকা প্রাপকের কাছে পৌঁছে দিতে। কার্ড নেটওয়ার্ক ও ইস্যুয়ার অব্যাহতভাবে এ জন্য ফি নেয়। কন্টাক্টলেস পেমেন্ট এই মহামারীর আগের সময়ে ছিল শ্লথগতির। এ ক্ষেত্রে এখন গতি এসেছে। কারণ, এখন অনেকেই মনে করছেন টাকার নোট হস্তান্তরের সময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রæত বাড়তে পারে আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে। সেখানে স্মার্ট ওয়্যারেবলগুলোও হয়ে উঠতে পারে (যেমন : স্মার্ট ওয়াচ) লেনদেনের মাধ্যম। চিপ ও পিন-ভিত্তিক কার্ড, কন্টাক্টলেস কার্ড কমিয়ে আনে লেনদেনের সময়। সেই সাথে ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের দেয় সন্ধিহীনের সুযোগ। অ্যাপল পে ও স্যামসাং পে’র মতো মোবাইল অ্যাপগুলোর ব্যবহার বেড়ে চলা অব্যাহত থাকবে। এগুলো আরো নানা ধরনের ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে প্ল্যাটফরম ব্যবহারে গ্রাহকদের প্রণোদিত করবে। যেমন : পরিষেবার বিল, ব্যক্তিগত সঞ্চয়, ধারে ক্রয় ও অনলাইনে কেনাকাটায়। সুইডেনের ‘সুইশ’-এর মতো সার্ভিসের উদ্ভব ঘটবে  ইউরোপের দেশগুলোতে। সেখানে এরা রিয়েল টাইম লেনদেনের অবকাঠামোর ও অন্যান্য উদ্ভাবনার সুযোগ দেবে। এসব সুযোগÑ যেমন : কিউআর কোড এ অঞ্চলের রেগুলেটরেরা দিচ্ছে। চীনের সুপারঅ্যাপ মডেলের প্রাধান্যপ্রতিবেদনটি মতে বিকাশমান এশিয়ায় চীনের সুপারঅ্যাপ মডেলের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়েছে। একটি অধিকতর মৌলিক পদক্ষেপ চীনের পেমেন্ট সিস্টেমকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। ক্রমবর্ধমান হারে এটি একই কাজটি করছে এশিয়ার অন্যান্য অংশে। AliPayএবং WeChat-এর অ্যাপ ইউজারের মোবাইল ফোনের সাথে বিদ্যমান ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লিঙ্ক গড়ে তোলে। এগুলোর মুরব্বি প্রতিষ্ঠান ‘আলিবাবা’ ও ‘টেনসেন্ট’-এর ই-কমার্সে এর ব্যবহার ২০০০-এর দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। এটি প্রথমত ব্যবহার হতো অনলাইনে কেনাকাটা ও মেসেজিংয়ে। এরা এর সম্প্রসারণ ঘটায় একটি ‘সুপারঅ্যাপস’ অল-ইন-ওয়ান’ প্ল্যাটফরমে, যা সুযোগ করে দেয় রাইড-হেইলিং, ফুড ডেলিভারি, এন্টারটেইনমেন্ট সার্ভিসেস এবং ক্রেডিট ও ইন্স্যুরেন্সসহ একটি পুরোমাত্রার ফিন্যান্সিয়াল প্রোডাক্টের। সিঙ্গাপুরের Grab, ইন্দোনেশিয়ার Gojek, দক্ষিণ কোরিয়ার KakaoPay, ভারতের Flipkart এবং PayTM-এর লক্ষ্য নিজস্ব সুপারঅ্যাপ গড়ে তোলা। সুপারঅ্যাপের জন্মস্থান চীনে রেগুলেটরেরা এখন প্ল্যাটফরমগুলোর ওপর ইতিবাচক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, যেগুলো এর আগে ঢিলেঢালা রেগুলেটরির সুযোগ নিয়ে একটি একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করে আসছিল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড ই-কমার্সে। সরল-সাধারণ পেমেন্ট প্রোভাইডারদের বড় ধরনের ফিন্যান্সিয়াল প্রোডাক্টের ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ দেয়ার পর এমনকি এখন সুবিধা দেয়া হচ্ছে সুদি আমানতেরও। রেগুলেটরেরা এখন চায় ব্যাংকগুলোর ওপর আরোপিত একই ধরনের সুপারভিশনের আওতায় আসতে। সম্ভবত এর জন্য প্রয়োজন হবে মূলধন পর্যাপ্ততার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা। এর বিপরীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অভাব রয়েছে চীনের মতো কড়াকড়ি পদক্ষেপের। অন্তত এই সময়টায় এ অঞ্চলের সরকারগুলো সহায়তা নিচ্ছে দেশীয় সুপারঅ্যাপের। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশের রয়েছে বড় ধরনের অনানুষ্ঠানিক খাত। এর অর্থ হচ্ছে, জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ব্যাংক ব্যবস্থা ও অন্যান্য সঞ্চয়পণ্যে রয়েছে সীমিত প্রবেশ। বিকাশমান এশিয়ার সরকারগুলো সদয় ও অনুক‚ল প্রবণতা বজায় রাখবে সুপারঅ্যাপ রেগুলেটিংয়ের ব্যাপারে। লক্ষ্য থাকবে, এসব প্ল্যাটফরমকে অর্থায়নে অন্তর্ভুক্তি অর্জনে লক্ষ্য পূরণে সহায়তা দেয়ায়।আফ্রিকায় মোবাইল অপারেটরেরা পথ খুলছে সুপারঅ্যাপেরপ্রধানত স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে তৃতীয় একটি ভিন্ন ধরনের পথের উদ্ভব ঘটেছে, যেখানে  মোবাইল ফোন ব্যবহার হয়ে উঠেছে ব্যাপকভিত্তিক। কিন্তু এসব দেশে সামান্যসংখ্যক নাগরিকেরই রয়েছে আনুষ্ঠানিক ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টস। উদাহরণত, কেনিয়ার টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ‘সাফারিকম’ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘ভোডাফোন’  ২০০৭ সালে M-Pesa সৃষ্টি করে, যাতে দেশের ভেতরে থাকা বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইল ফোন ক্রেডিট ব্যবহার করে অর্থ পাঠানো যায়। এই ব্যবস্থার সাফল্যসূত্রে এর সম্প্রসারণ ঘটে নিয়মিত খুচরো লেনদেনে এবং এটি লিঙ্ক করা হয় ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। মোবাইল-মানি বিপ্লব ঘটেছে নাইজেরিয়ায়। এটি আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি ব্যাংকবহিভর্‚ত জনগোষ্ঠীর দেশ। তা সত্তে¡ও কেনিয়া থেকে ব্যতিক্রমী হয়ে নাইজেরিয়ার মোবাইল মানি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে ব্যাংক ও প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ, সে দেশে টেলিকম অপারেটরেরা সরাসরি আবেদন করতে পারে না মোবাইল-মানি লাইসেন্সের জন্য। একটা মধ্যবর্তী সময়ে মোবাইল-মানি অপারেটরেরা তাদের সুদি আমানত ও বীমার মতো মূল্য সংযোজিত ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বাড়িয়ে তুলবে। কারণ, আফ্রিকায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় মানুষ যোগ দিচ্ছে মধ্য-আয় ও উচ্চ-আয়ের শ্রেণিতে। এ অঞ্চলের বর্তমান মোবাইল-মানি প্লেয়ারেরা বিশ্বের বড় বড় পেমেন্ট-প্ল্যাটফরম ও প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানের প্রলুব্ধকর মূলধন ও অংশীদারিত্বের সুযোগ নিয়ে উঠে আসবে বড় ধরনের ফিনটেক প্লেয়ার হিসেবে। অপেক্ষাকৃত বড় বড় প্লেয়ারেরা তাদের মনোনিবেশ পরিবর্তন করে নজর দিবে প্ল্যাঠফরম-ধরনের কাঠামোতে, যোগ করবে নতুন নতুন ভার্টিকেল। তাদের ইউজারদের জন্য সৃষ্টি করবে নতুন পণ্য ও সেবা, যেমন : রাইড-হেইলিং, ফুড ডেলিভারি ও এন্টারটেইনমেন্ট সার্ভিস। অন্য কথায়, এদের বিকাশ ঘটবে অনেকটা এশিয়ার ধরনের সুপারঅ্যাপসে। মুখ্য ভ‚মিকা পালন করবে চীন, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পেমেন্ট হবে সুপারঅ্যাপ ভ্যালুর মুখ্য উপাদান।ফাস্ট-পেমেন্ট সিস্টেম ও উন্নয়নশীল দেশফাস্ট-পেমেন্ট সিস্টেম পরিবর্তন এনে দিচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। ফাস্ট-পেমেন্ট সিস্টেমে শীর্ষে থাকা দেশের সরকারগুলো অর্থায়ন অন্তর্ভুক্তি বাড়িয়েছে, কিন্তু কমিয়ে আনছে সাবসিডির লিকেজ। ভারতের ইউপিআইয়ের সাফল্য অনুসরণ করে বেশ কয়েকটি দেশ বর্তমানে তাৎক্ষণিক রিয়েল টাইম প্ল্যাটফরম তৈরির প্রক্রিয়ায় আছে। যেমন : ব্রাজিলে ২০২০ সালে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এর Pix নামের ফাস্ট-পেমেন্ট প্ল্যাটফরমের। অপরদিকে, ২০২১ সালের প্রথম দিকে সৌদি আরব উন্মোচন করেছে ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট প্ল্যাটফরম Sarie-র একটি নতুন সংস্করণ। এর মাধ্যমে মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানাসহ বিভিন্ন ধরনের আইডেন্টিফিকেশন ব্যবহার করে দ্রæত তহবিল স্থানান্তর করা যায়। এ ক্ষেত্রে মুখ্য দেশগুলো হচ্ছে উপসাহারীয় অঞ্চলের দেশগুলো। বর্তমান দশকের দ্বিতীয়ার্ধে ডিজিটাল পেমেন্টের অ্যাডাপশন বেশিরভাগ পরিপক্বতা অর্জন করবে। প্ল্যাটফরমগুলো বিকশিত হচ্ছে সঞ্চয় ঋণপণ্যের প্রধান প্রধান ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল হিসেবে।   নয়া ক্ষেত্র : কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রাডিজিটাল পেমেন্টের দ্রুত অ্যাডাপশন ত্বরান্বিত করে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ব্যাপারটিকেও। সরকারগুলো জোরালোভাবে চেষ্টা করছে অর্থ সরবরাহের ওপর কোনো না কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে। পাশাপাশি চেষ্টা করছে পেমেন্ট সিস্টেমের ডিজিটাইজেশনে সহায়তা করতে। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো চাইছে মুদ্রা তৈরি হোক ডিজিটাল আইডেন্টিটি নিয়ে। এর মাধ্যমে নিরাপদ হবে ডাটা সিকিউরিটি ও প্রাইভেসিÑ যার অভাব ক্রিপটোকারেন্সির প্রধান সমালোচনা। ভারতের ইউপিআই ফাস্ট-পেমেন্ট সিস্টেমে শীর্ষে অবস্থান করছে।ক্য্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ দেশ বাহামা এ বছরের শুরুতে বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কারেন্সি sand dollar চালু করে এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এই প্রকল্পটি যে শিরোনামে প্রাধান্য বিস্তার করছে তা হচ্ছে : China’s Digital Currency Electronic Payment (DCEP)। গত দু-বছর ধরে ডিসিইপি সম্পন্ন করেছে ৭ কোটি লেনদেন। এর মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। অধিকন্তু, বিশ্বব্যাপী ভিজিটরেরা তাত্তি¡কভাবে অলিম্পিক ২০২২-এ প্রথমবারের মতো সুযোগ পাবে ই-উয়ানের অভিজ্ঞতা লাভের। একটি ডিজিটাল মুদ্রা দূর করবে প্রতিযোগী ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফরমের প্রতিযোগিতার বাধা। এর ফলে ডিজিটাল লেনদেন অ্যাডাপশন আরো ত্বরান্বিত হবে। আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের সুবিধাও ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে ব্যাপকভাবে বাড়বে। দূর হবে বর্তমানের অনেক সেটেলমেন্ট মেকানিজম। এর অধিকতর ব্যবহারের মাধ্যমে বাঁচবে খরচ ও সময়। এ ধরনের প্রকল্পের বিরোধীদের দাবি : এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নজরদারি বাড়বে। বাধাগ্রস্ত হবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা। তা সত্তে¡ও বিশ্বের বেশিরভাগ সেন্ট্রাল ব্যাংক তাদের ডিজিটাল কারেন্সি চালুর কাজ এগিয়ে নেবে : অংশত ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য। এ কারণে ক্রিপ্টোকারেন্সির গুরুত্ব বাড়ছে। ডিজিটাল কারেন্সি চালুর প্রতিযোগিতায় চীন এগিয়ে রয়েছে।ট্র্যান্সফরম অর পেরিশ‘ট্র্যান্সফরম অর পেরিশ : বদলে যাও নয়তো ধ্বংস হও’Ñ এই ছিল ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ‘গোয়িং ডিজিটাল : পেমেন্টস ইন দ্য পোস্ট-কোভিড ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উপসংহারিক মন্তব্য। এর তাগিদটা সরল : বর্তমান বিশ্বে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন বা রূপান্তর চলছে, সেই রূপান্তরের সাথে তাল মিলিয়ে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে হবে। নইলে সামনে অপেক্ষা করছে অপূরণীয় ধ্বংসযজ্ঞ। এই পরিবর্তনে ঝুঁকি আছে সত্য, তবে এই পরিবর্তন যে উপকার বয়ে আনবে, তা এই ঝুঁকির মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। অতএব এই রূপান্তরে অংশ নেয়াই হবে যৌক্তিক পদক্ষেপ। এর বাইরে থাকাটাই বোকামি।তবে ডিজিটাল লেনদেনের এই বিকাশমান নানা উপায় নিয়ে অনেক প্রশ্নেরই এখনো সমাধান হয়নি। এসব প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে ডাটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, আর্থিক প্রতারণা, সাইবার নিরাপত্তা, রেগুলেটরদের ভ‚মিকা, প্রযুক্তি অগ্রগতি বিবেচনায় যাদের অনেকের অবস্থান পেছনের সারিতে। ভৌগোলিকভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন রেগুলেটরি স্ট্যান্ডার্ডের অভাব, যা জোরালোভাবে সৃষ্টি করে আঞ্চলিক মনোপলিÑ তাও একটি সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ। তাই রেগুলেটরদের কাজ করতে হবে প্রযুক্তিকে আদর্শ মানে পৌঁছানোর ব্যাপারে, যেমন কিউআর কোডের প্রমিতকরণে। সেই সাথে কাজ করতে হবে ভারতের ইউপিআই কিংবা ব্রাজিলের ‘প্যাগামেন্টো ইনস্ট্যান্টিও ব্রাসিলিরো’ (পিক্স)-এর মতো সার্বজনীনভাবে প্রবেশযোগ্য লেনদেন অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে। এগুলো সুযোগ করে দিবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণের। সুযোগ দিবে ডিজিটাল ইকোনমির প্রতি অতিরিক্ত উৎসাহ সৃষ্টির। তা সত্তে¡ও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে পেমেন্ট প্ল্যাটফরমগুলো মনিটর করার ব্যাপারে রেগুলেটরদের সক্ষমতা, যাতে বেড়ে না যায় কোনো কুঋণ বা অন্য কোনো সচ্ছলতার সমস্যা, যার উদ্ভব ঘটে ‘বাই নাউ পে লেইটার’ (বিএনপিএল) কোম্পানি বা বিকেন্দ্রায়িত ডিজিটাল মুদ্রার (যেমন : বিটকয়েন) স্পেকুলেটিভ টেডিং  থেকে। এরই মধ্যে প্রচলিত কোম্পানিগুলোর, যেমন : ব্রিকস অ্যান্ড মর্টার ব্যাংকস’ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তাদের পর্যাপ্ত নিজস্ব বিনিয়োগ থাকা সত্তে¡ও তাদের ডিজিটাল প্রতিপক্ষ ও পেমেন্ট প্ল্যাটফরম প্রোভাইডারের কাছ থেকে ঝুঁকি আসতে পারে। অনেকেই অক্ষম ছিল একটি উদ্ভাবন সংস্কৃতি সৃষ্টিতে, যা ডিজিটাল প্রতিযোগীদের জন্য একটি হলমার্ক তথা স্বতন্ত্রসূচক বৈশিষ্ট্য, যদিও কেউ কেউ তাদের ডিজিটাল বিজনেসকে বগলদাবা করে রেখেছে কিংবা ফিরে গেছে অ্যাকুইজেশনে (দখলে রাখার পদক্ষেপের দিকে) ক্রমবর্ধমান হারে ডিজিটালায়িত জগতে সংশ্লিষ্ট থাকার জন্য। তা সত্তে¡ও ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার উপকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে গেছে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির মাত্রাকে। বিভিন্ন দেশের সরকারের জন্য এই ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা একটা জায়গা করে দেয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়িয়ে তোলার জন্য এবং একটি দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যক্তির ক্ষেত্রে এর মাধ্যমে আর্থনীতিক কর্মকান্ডে আরো সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো উপকৃত হবে এর ফলে সৃষ্ট নতুন নতুন সুযোগ থেকেও।







০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।