https://www.brandellaltd.com/

ইন্টারনেট

ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার

ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার
 

ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার


আউটসোর্সিং, ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন গেমিং, লাইভস্ট্রিমিংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারনেটের গতির প্রয়োজন বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের অনেকেই মোবাইলে বা কমপিউটারে বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। কিন্তু এসব ব্যবহারকারীর বেশিরভাগই হচ্ছেন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এছাড়া বর্তমানে ইন্টারনেটের খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কমেছে। ফলে মোবাইলের পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মূল হাতিয়ার হচ্ছে ইন্টারনেট। ঘরে বসে আউটসোর্সিং বা ইন্টারনেটে আয় করার সুবিধা পাওয়া যায় বিধায় ব্যবহারকারীরা বাসাবাড়িতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। ঘরে বসে টাকা আয় করার জন্য ছোট-বড় সব বয়সের মানুষ আউটসোর্সিংয়ের সাথে বর্তমানে জড়িত।


আমাদের দেশে ছোট-বড় প্রায় সব অফিস বা কোম্পানিতে একটি ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে তা অনেক কমপিউটারে শেয়ার করে ব্যবহার করা হয়। ফলে নেটওয়ার্কে থাকা প্রত্যেক ইউজার একটি ইন্টারনেটকে শেয়ার করার মাধ্যমে ব্যবহার করার সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু অনেক অফিসে ইন্টারনেট ব্যবহারের ভালো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। কেননা, নেটওয়ার্কে থাকা কিছু ব্যবহারকারী অফিস সময়ে মুভি, অডি/ভিডিও গান, গেম ডাউনলোড দিয়ে থাকেন। এতে অন্য ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের গতি অনেক কম পেয়ে থাকেন। আর তাই নেটওয়ার্ক এক্সপার্ট না থাকায় বিভিন্ন অফিসে এবিষয়গুলো সহজেই সমাধান করার ব্যাপারে চিন্তিত থাকতে দেখা যায়। নেটওয়ার্ক এক্সপার্ট না থাকলেও কিন্তু এসব সমস্যার সমাধান এখন অনেকটাই সহজলভ্য। ইচ্ছে করলে যেকেউ ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার দিয়ে ইন্টারনেটের গতি মনিটরিং ও ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল করতে পারেন। ইউজারভিত্তিক শেয়ার দিয়ে কাজ অনুযায়ী ব্যান্ডউইডথ সেট করে দিতে পারেন।


ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলারের সুবিধা : ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার ব্যবহার করে প্রতিটি কমপিউটারের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণ করে দেয়া সম্ভব। এতে ইচ্ছে করলে যেকেউ এরচেয়ে বেশি গতিতে ফাইল আপলোড বা ডাউনলোড করতে পারবেন না। ফলে নেটওয়ার্কের সব কমপিউটারের মধ্যে ইন্টারনেটের গতি সচল থাকার কারণে সবাই ইন্টারনেটের সুবিধা নিতে পারবেন।


ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলারের ধরন : বাজারে নানা ধরনের ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার রয়েছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার হচ্ছে মাইক্রোটিক ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো রাউটার বা ওয়্যারলেস রাউটার ব্যবহার করে এ সুবিধা নেয়া যায়। এ লেখায় কমদামি রাউটার দিয়ে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলারের সুবিধা নেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ ধরনের ওয়্যারলেস রাউটার হচ্ছে টিপি লিঙ্ক রাউটার। ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল করার জন্য টিপি লিঙ্কের মধে¨ 300Mbps Wireless N Routers, 150Mbps Wireless N Routers, 54Mbps Wireless G Routers বা এ ধরনের রাউটার ব্যবহার করতে পারেন (উপরে উল্লিখিত রাউটার ছাড়া অন্য রাউটারে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার রয়েছে কি না তা রাউটার কেনার আগে জেনে নিন)। এই রাউটারগুলো একটি ওয়্যান পোর্ট এবং এক বা একাধিক ল্যান পোর্ট থাকে। এছাড়া এই রাউটারটি ব্যবহার করে একই সাথে লোকাল কমপিউটারে ইন্টারনেট এবং ওয়্যারলেস ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। রাউটারে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে, তা ইউজার গাইড বা রাউটার বক্সের লেবেল থেকে জেনে নিতে পারবেন।


ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলার ব্যবহারের নিয়ম : উপরের টিপিলিঙ্কের যেকোনো একটি মডেলের রাউটার ব্যবহার করে কীভাবে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল করা যাবে, তা-ই এখানে আলোচনা করা হয়েছে। বাজারে এ ধরনের একটি রাউটার কমপক্ষে ১৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে। এ রাউটারটি থেকে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোলারের সুবিধা নেয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।


ধাপ-১ : আপনার কমপিউটারের আইপি অ্যাড্রেসটি পরিবর্তন করে ১৯২.১৬৮.০.২ এবং সাবনেট মাস্ক হিসেবে ২৫৫.২৫৫.২৫৫.০ সেট করে দিন (রাউটারের ইউজার গাইড থেকে জেনে নিতে পারবেন ডিফল্ট আইপি অ্যাড্রেসটি কোন রেঞ্জের)।


ধাপ-২ : রাউটারের সাথে থাকা ইউটিপি ক্যাবলের একটি প্রান্ত আপনার কমপিউটারের ল্যান কার্ডে যুক্ত করে অপর প্রান্ত রাউটারের ওয়্যান পোর্টে যুক্ত করুন।


ধাপ-৩ : আপনার কমপিউটারের ওয়েব ব্রাউজারটি চালুর পর ১৯২.১৬৮.০.১ টাইপ করে এন্টার চাপলে। এতে রাউটারে প্রবেশ করার লগইন পেজ আসবে। ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড হিসেবে অ্যাডমিন টাইপ করে এন্টার প্রেস করুন।


ধাপ-৪ : অ্যাডমিন প্যানেলের বাম পাশের মেনু থেকে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোরে ক্লিক করে কন্ট্রোল সেটিংসে ক্লিক করুন।


ধাপ-৫ : এবার ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল সেটিংস থেকে অ্যানাবলড ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল বক্সে টিক (চ) মার্ক দিয়ে সেটিংটি অ্যানাবল করুন। ইন্টারনেটের টাইপ সিলেক্ট করে দিন। এডিএসএল হলে ADSL বা অন্য কোনো লাইন হলে Others সিলেক্ট করে দিন। এবার Engress Bandwidth এবং Ingress Bandwidth সেট করে দিতে হবে। এখা‡b Engress Bandwidth হচ্ছে ওয়্যান পোর্টের আপলোড স্ট্রিম এবং Ingress Bandwidth হচ্ছে ওয়্যান পোর্টের ডাউনলোড স্ট্রিম। আপনার ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইডথ ও ব্যবহারকারী সংখ্যা বিবেচনা করে আপলোড ও ডাউনলোড গতি নির্ধারণ করে দিন। এবার সেভ বাটনে ক্লিক করুন।


ধাপ-৬ : এই ধাপে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল থেকে রুলস লিস্টে ক্লিক করুন। এখানে ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল করার রুলসে কিছু কনফিগারেশন সেট করে দিতে হবে। এখানে কোন আইপিগুলো কন্ট্রোল করা হবে, তা সিলেক্ট করে দিতে হবে। এক বা একাধিক হিসেবে আইপি রেঞ্জ ঠিক করে দিতে পারেন। ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ আপলোড/ ডাউনলোড গতি ঠিক করে দিতে হবে। ফলে উক্ত রেঞ্জের আইপিগুলো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকবে।


ধাপ-৭ : রুলস লিস্ট থেকে অফফ ঘব--তে ক্লিক করুন। এবার এখানে দেখুন IP Range, Port Range, Protocol, Engress Bandwidth, Ingress Bandwidth নামে কিছু অপশন রয়েছে, যা আপনাকে কনফিগার করে দিতে হবে। এ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।


এনাবল : সেটিংটি চালু করার জন্য প্রথমে টিক (চ) মার্ক দিয়ে অ্যানাবল করে নিতে হবে।


আইপি রেঞ্জ : এখানে এক বা একাধিক আইপি অ্যাড্রেস সেট করে দিতে পারেন। এখানে একটি আইপি অ্যাড্রেস হিসেবে সেট করে দিলে এই আইপির জন্য যে ব্যান্ডউইডথ বরাদ্দ থাকবে, তা ওই অ্যাড্রেসের ব্যান্ডউইডথ হিসেবে ব্যবহার হবে। যদি একাধিক আইপির রেঞ্জ হিসেবে এখানে সেট করা হয় এবং যে ব্যান্ডউইডথ এই রেঞ্জের জন্য সেট করা হবে, তা আইপি রেঞ্জে থাকা আইপিগুলোর মধ্যে শেয়ার হবে।


পোর্ট রেঞ্জ : টিসিপি প্রটোকল বা ইউডিপি প্রটোকলের পোর্ট এখানে সেট করতে হবে।


প্রটোকল : এখানে টিসিপি বা ইউডিপি বা দুটো প্রটোকলই ব্যবহার করতে পারেন।


এনগ্রেস ব্যান্ডউইডথ : এখানে ওয়্যান পোর্টের জন্য ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম আপলোড ব্যান্ডউইডথ স্পিড সেট করে দিতে হবে। ডিফল্ট হিসেবে এখানে জিরো সেট করা থাকবে।


ইনগ্রেস ব্যান্ডউইডথ : এখানে ওয়ান পোর্টের জন্য ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম ডাউনলোড ব্যান্ডউইডথ স্পিড সেট করে দিতে হবে। ডিফল্ট হিসেবে এখানে জিরো সেট করা থাকবে।


সেভ/ব্যাক : সেটিংসটি সেভ করার জন্য সেভ বাটন এবং আগের উইন্ডোতে ফিরে যেতে ব্যাক বাটনে ক্লিক করতে হবে।


উদাহরণ হিসেবে নিচের সেটিংটি সেট করে দিতে পারেন। ধরুন, ১৯২.১৬৮.০.১০ থেকে ১৯২.১৬৮.০.২০ আইপি অ্যাড্রেসের জন্য মিনিমাম আপলোড/ডাউনলোড গতি হিসেবে ২৫৬ কেবিপিএস এবং ম্যাক্সিমাম আপলোড/ ডাউনলোড গতি হিসেবে ৫১২ কেবিপিএস সেট করতে চাচ্ছেন। এর জন্য নিচের সেটিংটি সেট করুন।


এনাবল : OK

আইপি রেঞ্জ : ১৯২.১৬৮.০.১০-১৯২.১৬৮.০.২০

পোর্ট রেঞ্জ : এই অংশটি ব্লাক রাখুন

প্রটোকল : ALL

এনগ্রেস ব্যান্ডউইডথ : ২৫৬/৫১২

ইনগ্রেস ব্যান্ডউইডথ : ২৫৬/৫১২


এবার সেভ বাটনে ক্লিক করলে আপনার রাউটারটি রিস্টার্ট হবে। রিস্টার্ট হলেই কনফিগারেশনটি এনাবল হবে।


ধাপ-৮ : আপাতত কাজ শেষ। এবার এই রেঞ্জের আইপি অ্যাড্রেসগুলো আপনার নেটওয়ার্ক থেকে কমপিউটারগুলোতে সেট করে দিন। পরীক্ষামূলক যেকোনো একটি কমপিউটার থেকে ব্যবহার করে দেখুন সেট করা কনফিগারেশনটি কার্যকর হয়েছে কি না। অন্যথায় কনফিগারেশনটি ভালোভাবে চেক করে দেখুন।


অতিরিক্ত কিছু কনফিগারেশন : উপরের নিয়ম অনুসারে কনফিগারেশন সেট করে দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু আইপি অ্যাড্রেসের ব্যান্ডউইডথ কন্ট্রোল করতে পারবেন। তবে কেউ আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন করে নিলে কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাবে। এ ধরনের ব্যবহারকারীদেরকে কন্ট্রোল করতে হলে আপনাকে অতিরিক্ত কিছু কনফিগারেশন সেট করে দিতে হবে। এর মধ্যে আইপি ও ম্যাক অ্যাড্রেস বন্ডিং ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া অ্যাডভান্সড সিকিউরিটির মাধ্যমে আইসিএমপি, ইউডিপি, টিসিপি ফ্লাডিং বন্ধ করা, রাউটার কনফিগারেশনের জন্য নির্দিষ্ট ম্যাক সেট করে দেয়াসহ রাউটারের গুরুত্বপূর্ণ সেটিং কনফিগার করে নিতে হবে।








১ টি মন্তব্য

  • vumika

    vumika

    ২০২২-০৯-০১ ১২:৩৮:০৭

    good post



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।