https://gocon.live/

গবেষণায় হুঁশিয়ারি

পরমাণু যুদ্ধের চেয়ে সাইবার হামলায় বেশি ক্ষতি করা সম্ভব

পরমাণু যুদ্ধের চেয়ে সাইবার হামলায় বেশি ক্ষতি করা সম্ভব পরমাণু যুদ্ধের চেয়ে সাইবার হামলায় বেশি ক্ষতি করা সম্ভব
 

গবেষণায় হুঁশিয়ারি


পরমাণু যুদ্ধের চেয়ে সাইবার হামলায় বেশি ক্ষতি করা সম্ভব 


সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আবারও সাইবার হামলার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। আধুনিক বিশ্বে সাইবার যুদ্ধের আশঙ্কা পরমাণু যুদ্ধের চেয়ে বেশি। আর এতে ক্ষয়ক্ষতি পরমাণু হামলার চেয়ে কম তো নয়ই, ক্ষেত্রবিশেষে তা আরও ব্যাপকও হতে পারে।


পরমাণু যুদ্ধ ঠেকানোর জন্য নানা রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে আধুনিক বিশ্বের। কিন্তু সাইবার যুদ্ধ যা কিছুটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পদ্ধতি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে এতদিন মনে করা হচ্ছিল, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। সাইবার যুদ্ধ রোখার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বহু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর তা খুব অল্প সময়ে দূর হবে, এমন আশাও দূর অস্তই।


সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এমনই জানিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাদের গবেষণাপত্রটি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে সম্প্রতি।


গবেষকেরা জানিয়েছেন, পদাতিক সেনা, ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র, বিমানবহর ও নৌবহর ব্যবহারের পাশাপাশি এখন শত্রু দেশের সাইবার স্পেসও যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু। সাইবার হামলা চালিয়ে হ্যাকারেরা শত্রু দেশের অর্থনীতি, সামরিক, সেবা ও সামাজিকসহ নানা খাতে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে।


ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পাশাপাশি রাশিয়া দেশটির ইন্টারনেটের ব্যবস্থাকে জ্যাম করে দেয়। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ইলন মাস্কের সাহায্য চায়। ইলন মাস্ক সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্পেস এক্স-এর স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট ব্যবস্থার সুযোগ করে দেন। তবে তিনি জানান, ওই ইন্টারনেট ব্যবস্থাও রুশ সেনারা প্রাথমিকভাবে জ্যাম করে দিতে সমর্থ হয়েছিল।


গবেষকেরা জানিয়েছেন, সামরিক অভিযানের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য থাকে শত্রু দেশে ঢুকে তার যাবতীয় বিদ্যুৎ সংযোগ ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়া। তার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় পরিকাঠামো ভেঙে দেওয়া।


এর প্রমাণ মিলেছে ইউক্রেন যুদ্ধে। রুশ সেনারা সে দেশে ঢুকে সরকারি কাজকর্ম, প্রতিরক্ষা ও ব্যাংকের কাজকর্ম ভেস্তে দেয়ার লক্ষ্যে সাইবার হামলা শুরু করে। আমেরিকাও অভিযোগ করেছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রুশ সাইবার যোদ্ধারা বিভিন্ন অস্ত্র কেনাবেচার কন্ট্রাক্টরদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে। তাদের লক্ষ্য শত্রুপক্ষের অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরির প্রযুক্তি-প্রকৌশলগুলোর খবর নিতে। এর আগে ২০১৫ সালে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর সামরিক হ্যাকারদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল।


অন্যতম গবেষক নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর সাইবার সিকিউরিটির প্রধান অধ্যাপক সঞ্জয় ঝা বলেছেন, ‘এই ডিজিটাল বিশ্বে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে, এমন কমপিউটার সার্ভারে হানা দিলে গোটা ব্যবস্থাকেই পঙ্গু করে দেওয়া যায়। তার ফলে কোনো দেশের অর্থনীতিকে প্রায় পঙ্গু করে দেওয়া যায় পুরোপুরি।’


গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, সাইবার নিরাপত্তার মূলত তিনটি বিষয় থাকে। গোপনীয়তা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সকলে যাতে সেই সুযোগ পায় তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। হ্যাকারেরা প্রথমেই টার্গেট করে যাতে সকলে সাইবার নিরাপত্তা রক্ষার সুযোগ না পায়। সাইবার হানাদারেরা এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একই সাথে কোনো কমপিউটার সার্ভারের ২০, ৫০, ১০০ বা ২০০টি কপি তৈরি করে ফেলতে পারে। তার ফলে মুহূর্তে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেওয়া যেতে পারে। লণ্ডভণ্ড করে দেওয়া সম্ভব কয়েকটি মুহূর্তে। হ্যাকারদের সব সময়েই লক্ষ্য থাকে, কত কম সময়ে এইভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কত বেশিসংখ্যক কমপিউটার সার্ভারের কপি করে নিয়ে তাদের মধ্যে ঢুকে পড়া যায়। শুধু যে কমপিউটারেরই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় হ্যাকারেরা তা-ই নয়; যারা সেই কমপিউটার ব্যবহার করে তাদের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে হ্যাকারেরা। ফিশিংয়ের মাধ্যমে কমপিউটার ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্যাদি জেনে নিয়েও তাদের ঝামেলায় ফেলতে পারে হ্যাকারেরা। বড় সমস্যা হলো, কমপিউটার  প্রোগ্রামের কোন ছিদ্রপথ ধরে হ্যাকারেরা ঢুকে পড়েছে সেটা খুব সহজে খুঁজে বের করা সম্ভব হয় না।


গবেষকদের বক্তব্য, এসব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করার চেষ্টা বহুদিন ধরেই চালিয়ে যাচ্ছেন কমপিউটার বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে চটজলদি এই সমস্যার সুরাহা হবে বলে মনে করছেন না সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।