কতিপয় রাজনৈতাক দল ও প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসমূহ থেকে কোনোরুপ তথ্য পাওয়া যাবে না মর্মে বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে । জনসাধারণের মন থেকে এরূপ বানোয়াট ও বিভ্রান্তি দূর করার নিমিত্ত আইসিটি বিভাগ থেকে আজ প্রেস বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে সরকারের বক্তব্য নিম্নরুপ:
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (Critical Information Infrastructure) হচ্ছে সরকার কর্তৃক ঘোষিত এইরূপ কোনো বাহ্যিক বা ভার্চুয়াল তথ্য পরিকাঠামো, যাহা কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কোনো ইলেকট্রনিক তথ্য নিয়ন্ত্রণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চারণ বা সংরক্ষণ করে এবং যাহা ক্ষতিগ্রস্ত বা সংকটাপন্ন হলে
(অ) জননিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বা জনস্বাস্থ্য,
(আ) জাতীয় নিরাপত্তা বা রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা বা সার্বভৌমত্বের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ১৫ ধারার বিধান অনুসারে সরকার সরকারি গেজেটে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন দ্বারা উপরিউক্ত বিষয়াদি বিবেচনা করে ২৯টি প্রতিষ্ঠান কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসাবে ঘোষণা করেছে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড, সেতু বিভাগ, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জাতীয় ডেটা সেন্টার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বিটিআরসি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট।
তালিকায় আরও রয়েছে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিটিসিএল, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।
উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে সরকার ও জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ও আর্থিক তথ্যাবলী সংরক্ষিত থাকায় এদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো সমূহের আইটি অডিট সম্পন্ন, যথাযথ অবকাঠামো নির্মাণ, সঠিক মানসম্পন্ন নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ , যথাযথ স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যবহার, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন মানব সম্পদ নিয়োগ ইত্যাদি কার্যক্রমের দ্বারা পরিকাঠামোসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনসাধারণকে নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা সমূহ পৌঁছে দেওয়াই এই ঘোষণার প্রধান উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য পৃথিবীর অনেক দেশ যথা: ভারত, কোরিয়া, যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসমূহ চিহ্নিত আছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পুনরায় অত্যন্ত জোর দিয়ে জানাচ্ছে যে রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং উক্ত পরিকাঠামোসমূহের নিরাপত্তা সামান্যতম বিঘ্নিত হলে জনগণের বিপুল ক্ষতির কারণ হবে। এর সাথে জনগণের তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত অধিকার ব্যাঘাত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বা তথ্য প্রাপ্তির অধিকারের সাথে ইহা সাংঘর্ষিক নয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন মহলের এ বিষয়ে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হলো।
০ টি মন্তব্য