আইসিটিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড
সংগঠন অ্যাসোসিওর নিয়মিত নিউজ লেটার অ্যাসোসিও কানেক্ট-এর পঞ্চম সংখ্যা সম্প্রতি প্রকাশিত হছে৷ এতে মূলত বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের আইসিটি খাতের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে৷ সে তথ্যসূত্রে তৈরি এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের আইসিটির একটা তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে৷ এ তুলনামূলক চিত্র থেকে আমাদের দেশের আইসিটি চিত্রের সম্যক উপলব্ধি সম্ভব হবে৷ পাশাপাশি থাইল্যান্ডের তথ্যপ্রযুক্তির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও একটি ধারণা মিলবে৷
বাংলাদেশের আইসিটি খাত
বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের যাত্রা আশির দশকের শুরুতে হলেও, বর্তমানের বেশিরভাগ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে অথবা ২০০০-এর দশকের শুরুতে৷ তাই অন্যান্য শিল্প খাতের বিচারে সফটওয়্যার শিল্পকে তরুণই বলা যায়৷
বাংলাদেশ সরকার আমদানি-রফতানি নীতিতে সফটওয়্যার শিল্পসহ সামগ্রিক আইসিটি খাতকে থ্রাস্ট সেক্টর তথা অগ্রাধিকারখাত হিসেবে ঘোষণা করেছে৷ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এ শিল্পখাত দেশের অর্থনীতিসহ সার্বিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে৷
সম্প্রতি বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে, বিশেষত আউটসোর্সিংয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে৷ তাছাড়া বিশ্বের ২০টি আউটসোর্সিং দেশের মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে উপযুক্ত বা সেরা বলে অভিহিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিয়েছে৷ সব মিলিয়ে আউটসোর্সিংয়ে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশ ফিলিপাইন, চীন, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ৷
সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের পরিষেবা সীমিত৷ তাই জাতীয় অর্থনীতিতেও এর আকার খুবই ছোট৷ ২০০৬ সালের হিসেবে জনসংখ্যা ১৪ কোটির বিপরীতে জিডিপি ছিল ৬ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার৷ তবে সম্প্রতি এর উন্নয়ন ঘটছে৷ গত পাঁচ বছরে এ খাতে ৪০ শতাংশের বেশি বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে৷ তা এসেছে মূলত রফতানি ও বড় বড় শিল্প কারখানায় অটোমেশনের মাধ্যমে এবং ক্রমেই তা বিস্তার লাভ করেছে৷ ইতোমধ্যেই বড় আকারে অটোমেশনের কাজ শুরু হয়েছে৷ এ কাজ হচ্ছে টেলিকম, ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, তৈরী পোশাক, বস্ত্র ও ওষুধ উত্পাদন প্রতিষ্ঠানসমূহে৷ বর্তমানে দেশের চারশ নিবন্ধিত সফটওয়্যার ও আইটিএস প্রতিষ্ঠান রছে৷ এসব প্রতিষ্ঠানে বারো হাজারের বেশি পেশাজীবী কাজ করছেন৷
আইটি মার্কেট ও টেলিকমসহ এখাতের আকার এখন ৩০ কোটি মার্কিন ডলার৷ এর মধ্যে সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের পরিমাণ ৩৯ শতাংশ৷ ডলার অঙ্কে ১১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার৷
সফটওয়্যার ও আইটিইএস রফতানি
চারশ সফটওয়্যার ও আইটিইএস প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হওে বর্তমানে পাঁচশয়ের কাছাকাছি প্রতিষ্ঠান এখানে পরিষেবা দিচ্ছে৷ এর মধ্যে একশয়ের বেশি প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে তাদের পণ্য রফতানি করছে এবং প্রতি বছরই তা বাড়ছে৷
এসব পণ্য সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় উত্তর আমেরিকায়৷ ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বিশেষত জাপানে শুরু হয়েছে রফতানি৷ গত দু-তিন বছরে উল্লিখিত ১০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমপক্ষে ৩০টি প্রতিষ্ঠান শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগে জয়েন্ট ভেঞ্চারে অফশোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টার তথা ওডিসি খুলেছে৷
আউটসোর্সিংয়ে লক্ষ্য
দেশের মানবসম্পদই হতে পারে এক্ষেত্রে মূল উত্স৷ প্রাকৃতিকভাবেই বাংলাদেশীরা অন্য দেশের তুলনায় মেধাবী ও পরিশ্রমী৷ দরকার ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়ানো৷ এজন্য প্রয়োজন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ৷ পরীক্ষিত যে, বাংলাদেশীরা বিশেষণ ও যুক্তি খণ্ডনেও সমধিক পটু৷ রয়েছে অধিকসংখ্যক তরুণ প্রজন্ম, যারা হতে পারে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত৷ কর্মশক্তি ও সম্ভাবনাময় জনবল৷ এসব মিলিয়ে উল্লিখিত বিষয়গুলোকে পরিকল্পনামাফিক সম্মিলন ঘটিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম৷
সফটওয়্যার রফতানি সাফল্যের কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে৷ গত পাঁচ বছরে বার্ষিক উন্নয়নের ৬১ শতাংশ সফটওয়্যার খাতের অর্জন৷ কিছু সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে আইএসও এবং সিএমএমআই অর্জন করেছে৷ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে বিশ্বের সমমানে পরিচিতি ঘটিয়েছে৷ ২০টি প্রতিষ্ঠান আইএসও সনদপ্রাপ্ত৷ ২০০৮-এ কমপক্ষে ৬টি প্রতিষ্ঠান সিএমএমআইলেভেলথ্রি অর্জন কর৷লো তাই বলা যায়, বিশ্বের সর্বোচ্চ ২০টি আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের কাতারে বাংলাদেশও৷
সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের জন্য জনবল
বাংলাদেশের ১৪ কোটি জনসংখ্যার বেশিরভাগই তরুণ৷ যাদের বয়স ১৬ থেকে ৩৫৷ এরা এখাতের সুদূরপ্রসারী উন্নয়নে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি৷ ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশীরা গাণিতিক তথা যৌক্তিক বুদ্ধিসম্পন্ন্৷ এক্ষেত্রে ভারতের সাথে বাংলাদেশের যথেষ্ট মিল রয়েছে৷
দেশের ১০০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ইনস্টিটিউট আইসিটি বিষয়ের ওপর ডক্টরেট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ও অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি দিচ্ছে৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ৭৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ৬০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে কোর্স করানো হচ্ছে৷ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি গ্র্যাজুয়েট আইটি ফিল্ডে যোগ দিচ্ছে৷ এর মধ্যে আড়াই হাজার প্রতিষ্ঠান প্রকৌশল বিষয় কমপিউটার বিজ্ঞান ও সফটওয়্যার নিয়ে পড়াশোনা করানো হয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অ্যাওয়ার্ড অর্জন করছে৷
উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ইনস্টিটিউট ছাড়াও প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে৷ এসব প্রতিষ্ঠান থেকেও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা নিয়ে সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতে জনবল আসছে৷ এছাড়া দক্ষতা অর্জনকারী জনবল গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডিটিপি, ওয়েব ডিজাইন, প্রকৌশলবিষয়ক অঙ্কন, ওয়েবসাইট পাবলিশিং ও নেটওয়ার্কিং মেইনটেনেন্সের কর্মী হিসেবে কাজ করছে৷
সরকারের নীতি ও সহযোগিতা
সরকার আইসিটির সামগ্রিক উন্নয়ন ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য নানা পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়ে আসছে৷ এ লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে৷ এসবের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিক সুযোগসুবিধা বাড়ানো এবং অবহেলিত ও পিছিয়েপড়া জনগণকে মূলস্রোতে এনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত মজবুত করা৷ আইসিটিভিত্তিক দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করছে সরকার৷ সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে ব্যাপকভাবে অটোমেশনের কাজ শুরু হয়েছে৷
সাইবার আইন ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আইন প্রণীত হয়েছে৷ আউটসোর্সিং ও এর সার্বিক দিকও আইনের আওতায় আনা হয়েছে৷ সরকারের নীতিনির্ধারণে সফটওয়্যার ক্ষেত্রে জোরালোভাবে অর্থ সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে ব্যাংক ও আ ির্থক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ রফতানি নীতিতে ৬টি পণ্যের একটি সফটওয়্যার বলে ঘোষিত হয়েছে৷ এ ব্যবসায়ে আয় ২০০৮-এর জুন পর্যন্ত করমুক্ত হয়েছে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রযুক্তি অবকাঠামোর ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে ওয়েব ও সফটওয়্যার উন্নয়নে বিনিয়োগ শুরু করেছে৷ আইসিটি খাতের সার্বিক উন্নয়ন বিবেচনায় হার্ডওয়্যার আমদানিকে করমুক্ত করা হয়েছে৷
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অত্যাধুনিক মডেল টাউন ঘোষণা করে হাইটেক পার্কের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এজন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের পাশে ২৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে৷ সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মহাখালীতে আইসিটি ভিলেজ হচ্ছে৷ এ ধরনের আরো আইসিটি ভিলেজের পরিকল্পনা রয়েছে৷ প্রস্তাবিত আইসিটি ভিলেজগুলোর মধ্যে একটি হবে খুলনায়৷
সর্বোপরি পাইলট প্রকল্প, গবেষণা, পরিকল্পনা, প্রযুক্তি, কৌশল, পরিষেবা ইত্যাদি নিয়ে আগামীতে উঁচু পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে৷
থাইল্যান্ডের আইসিটি মার্কেট
থাইল্যান্ড আইসিটিভিত্তিক পণ্য প্রস্তুতকারক অন্যতম একটি দেশ৷ সামগ্রিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এবছর দেশটির ব্যয় বাড়বে ৪৩৬ কোটি মার্কিন ডলার৷ তা গত বছরের চাইতে ৯.৩ শতাংশ বেশি৷ এর ফলে দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আইসিটি ব্যয় বাড়ানোর বাজারে পরিণত হবে এবং উঠে আসবে চতুর্থ স্থানে৷ অর্থাৎ ভারত, চীন ও ভিয়েতনামের পর এদের স্থান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এরা সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজার গড়বে টেলিকমে৷ এ খাতে খরচ বাড়বে বেশি অর্থাৎ ৭৭৬ কোটি মার্কিন ডলার৷ অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নে এই ব্যয় বাড়ানো শেষ পর্যন্ত গিয়ে পড়বে সাধারণ জনগণের ওপর৷ এজন্য দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়বে৷ তাই নতুন সরকার ২০০৮-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশটি ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করতে চায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ক্ষেত্রে৷
সার্বিক প্রভাব বাজারে
হার্ডওয়্যারে ব্যয় বেড়েছে ৭৩ শতাংশ, যা গত বছরের চাইতে ৮ শতাংশ বেশি৷ এর মধ্যে পারসোনাল কমপিউটারও রয়েছে৷ এখাতে ব্যয় অঙ্কের দিক থেকে গত বছর দেশটি ছিল নবম স্থানে৷ বর্তমানে এদিক থেকে প্রথম ভারত, তারপর চীন ও ভিয়েতনাম, চতুর্থ থাইল্যান্ড৷ গত বছর থাইল্যান্ড পিসি রফতানি করে ১৭ লাখ ইউনিট, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি৷ নোটবুক ৭ লাখ ৮৪ হাজার ইউনিট, আগের বছরের তুলনায় ৪৩.৪৭ শতাংশ বেশি৷ ডেস্কটপ ইউনিটে বিক্রি বাড়ে ৭ শতাংশ৷ ২০০৮-এর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পিসি বাজার সার্বিকভাবে বাড়বে ১২ শতাংশ বা ১৯ লাখ ইউনিট৷ নোটবুক বাড়বে ১৫ শতাংশ, অন্য হিসাবে ৯ লাখ ২ হাজার ইউনিট৷ ডেস্কটপ বিক্রি ৯ লাখ ৮০ হাজার ইউনিট, বাড়বে ১০ শতাংশ৷ এসব বাজার সম্প্রসারণের কারণ বিভিন্ন দেশের বাজারের চাহিদা, শিক্ষা ও সরকারি খাত৷ তাছাড়া নতুন সরকরের নীতি৷ অন্যদিকে বিক্রির পরিধির দিক থেকে গত বছরের চাইতে ৯৪ শতাংশ বেড়েছে৷ ২০০৬-এ ছিল ৭৯ শতাংশ৷ ডিভিডি-আরডবিউসহ অপটিক্যাল ড্রাইভের বাজার ২০০৬-এ ছিল ৬৪ শতাংশ এবং ২০০৭-এ ৯২ শতাংশ৷
সার্বিক প্রিন্টার ও মাল্টিফাংশনাল ডিভাইস ২০০৮-এ সম্ভাব্য বিক্রির পরিমাণ ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ ইউনিট৷ গত বছরের তুলনায় ৪.৭ শতাংশ বেশি৷ এর মধ্যে ইঙ্কজেট ছিল সবচেয়ে বেশি ৫ লাখ ৭০ হাজার ইউনিট, যা মোট প্রিন্টার মার্কেটের ৪৫.৮ শতাংশ৷ এ বছর ইঙ্কজেট মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টারের বাজার ইঙ্কজেট প্রিন্টারের বাজারকে ছাড়িয়ে যাবে৷
লেজারভিত্তিক মাল্টিফাংশনাল ডিভাইস মার্কেট ২০০৭-এ ছিল ৬৪ হাজার ৮৭৮ ইউনিট৷ ২০০৬-এর চাইতে ১৬ শতাংশ বেশি৷ এর মধ্যে লেজার কপিয়ারভিত্তিক মাল্টিফাংশনাল ডিভাইস বাজার সম্প্রসারিত হবে সবচেয়ে বেশি, ৪৯ শতাংশ৷ অন্যদিকে লেজার প্রিন্টারের মাল্টিফাংশনালভিত্তিক বাজার ৪০ শতাংশ, লেজার ফ্যাক্সভিত্তিক বাজার ১১ শতাংশ৷ লেজার প্রিন্টারভিত্তিক মাল্টিফাংশনাল ডিভাইসের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে৷ কারণ, প্রযুক্তিগত দিক এবং তুলনামূলক বিচারে সাশ্রয়ী মূল্য৷ সর্বোপরি আছে অনেক সুবিধা৷
মোবাইল ডিভাইস রফতানি হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ইউনিট, যা ২০০৬-এর চাইতে ১৩ শতাংশ বেশি৷ মোবাইল ফোন রফতানি সবচেয়ে বেশি৷ মোট টেলিকম বাজারের ৭৯.৩ শতাংশ৷ পিডিএ ফোন এবং পিডিএ ২০ শতাংশ৷ এ বছরও ১৬ শতাংশ বাড়তে পারে৷ এক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির সমন্বয় হলেও দাম সে তুলনায় কমবে৷ এ বছর তা আরো ১১ শতাংশ বাড়বে৷ সফটওয়্যার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ, উন্নততর সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার মূলক পদক্ষেপ নেয়ায় তা বাড়বে বলে ধরা হয়েছে৷ তবে সফটওয়্যার উত্পাদন খরচ ২৮ শতাংশ বাড়বে৷ ধরা হয়েছে ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ১৭ শতাংশ এবং মিডিয়া ও টেলিকম খাতে ১৩ শতাংশ বাড়বে৷ সফটওয়্যারের নানা দিক বিবেচনায় পার্টনারশিপ চুক্তিও তাই ক্রমেই বাড়ছে৷
পরিষেবা ক্ষেত্রে পণ্য পরিচিতি, নতুন পণ্য, সেবা/সমাধান, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তি এসব থাইল্যান্ডের উল্লেখযোগ্য খাত হিসেবে বিবেচ্য হচ্ছে৷ সেই সাথে যুক্ত হচ্ছে কাস্টমাইজভিত্তিক সার্ভিস৷ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ সেবা যোগানোর পাশাপাশি সরকারি সংস্থা থেকে সুবিধাও পাচ্ছে৷ যেমন সফটওয়্যার পার্ক৷ এবার পরিষেবা খাতের মোট খরচের ১৯ শতাংশ বাড়বে ২০০৭-এর তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি৷ থাইল্যান্ড সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন সার্ভিসের ৠাংকিংয়ে প্রথম স্থান অর্জনকারী৷
টুকরো খবর
এশিয়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বিশেষত সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনে এ বছর আইসিটি খাতে ১৩৪০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করবে৷
আইডিসি-এর মতে, ফিলিপাইন এ বছর আইসিটিতে পরিসর বাড়াবে৷ সরকারি প্রকল্প, ভোক্তা/গ্রাহকদের সুবিধাদি, ওয়্যারলেস ইত্যাদিতে অধিক নজর দেবে৷
এশিয়ায় পরিবেশবান্ধব আইসিটি পণ্য উত্পাদনে আশানুরূপ কাজ না হলেও সচেতনতা বেড়েছে৷ এ লক্ষ্যে পদক্ষেপ ধীরগতিতে চলছে৷ ভবিষ্যতে এজন্য আরো জোরালো ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি৷
০ টি মন্তব্য