২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার তথা স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট বাস্তবায়নেও বিটিআরসি অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কার্যালয়ে প্রথমবারের মত পরির্দশনকালে বিটিআরসি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার প্রতিমন্ত্রীকে কমিশনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতে শৃংখলা রক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা, রাজস্ব অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফিজিক্যাল সিকিউরিটি নিশ্চিতে অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয়ের ম্যাধমে কাজ করে যাচ্ছে বিটিআরসি।
ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে উল্লেখ করে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতকে নিরাপদ রাখতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৮ সালে টেলিফোনের মনোপলি ভেঙ্গে দেওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল ফোন সুলভে পৌঁছে গেছে আর মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টার কল্যাণে মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, সবার কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, ইলেকট্রনিক ডিভাইস উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হওয়া বিষয়গুলোতে বিটিআরসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিটিআরসি নতুন একটা উদাহরণ ও ইউনিক মডেল তৈরি করবে যা পুরো বিশ্বের নিকট অনুকরণীয় হবে।
যে কোনো পরিস্থিতিতে যাতে টেলিযোগাযোগ সেবা চলমান ও নিরাপদ থাকে তা বিটিআরসি নিশ্চিত করবে। সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, সরকার কর্তৃক গৃহীত নীতিমালা ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং বিটিআরসিকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
আগামীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ কাজ করবে বলেও তিনি জানান।টেলিযোগাযোগ সুবিধা প্রাপ্তিতে বিভাজন শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সমন্বয় জরুরি উল্লেখ করে সভায় অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর পলিসি অ্যাডভাইজর জনাব আনীর চৌধুরী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে লাস্ট মাইল এবং লাস্ট পার্সন কানেক্টিভিটি হবে মূল অবকাঠামো।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকাদরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে টেলিযোগাযোগ খাতের শৃংখলা সমুন্নত রাখা এবং সাধারণ জনগণকে সেবা প্রদানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান ও সাইবার নিরাপত্তায় কমিশনের কার্যক্রমসমূহ উপস্থাপনা করা হয়।
এছাড়া প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি বিটিআরসি কর্তৃক গৃহীত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে অবগত করেন তিনি। বিটিআরসি রেগুলেটর হিসেবে নয় ফেসিলিটেটর হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ করে সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বর্তমানে ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ফলশ্রুতিতে এখাতে বিনিয়োগ হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা, কর্মসংস্থান হয়েছে ৩০ হাজার মানুষের, বাৎসরিক মোবাইল উৎপাদন ক্যাপাসিটি তিন কোটির ওপরে। এ সময় তিনি বলেন, বিটিআরসি’র অনেক কার্যক্রম তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাই উক্ত বিভাগের সাথে কমিশনের কার্যক্রমের নিবিড় সর্ম্পক ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে মর্মে গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিটিআরসি’র ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌঃ মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌঃ শেখ রিয়াজ আহমেদ, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার ই কায়নাতসহ উক্ত বিভাগের উধ্বর্তন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
০ টি মন্তব্য