https://powerinai.com/

মজার গনিত

সংখ্যা নিয়ে একটি চালাকি

সংখ্যা নিয়ে একটি চালাকি সংখ্যা নিয়ে একটি চালাকি
 

সংখ্যা নিয়ে একটি চালাকি


তিন অঙ্কের যেকোনো একটি সংখ্যা নিন। ধরা যাক, সংখাটি ৩৪৫। সংখ্যাটি পাশাপাশি দুইবার লিখুন। তাহলে আমরা পাব ছয় অঙ্কের একটি সংখ্যা। এ ক্ষেত্রে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ৩৪৫৩৪৫। এখন এই সংখ্যাটিকে প্রথমে ৭ দিয়ে ভাগ করুন। এরপর পাওয়া ভাগফলকে ১১ দিয়ে ভাগ করুন। এবারে পাওয়া ভাগফলকে ১৩ দিয়ে ভাগ করুন। দেখা যাবে সবশেষ ভাগফলটি আসলে শুরুতে আমাদের নেয়া সংখ্যাটি, অর্থাৎ ৩৪৫।


৩৪৫৩৪৫ ÷ ৭ = ৪৯৩৩৫

৪৯৩৩৫ ÷ ১১ = ৪৪৮৫

৪৪৮৫ ÷ ১৩ = ৩৪৫


এভাবে আমরা যেকোনো তিন অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে সংখ্যাটিকে পাশাপাশি দুইবার বসিয়ে একটি ছয় অঙ্কের সংখ্যা বানাতে পারি। এই ছয় অঙ্কের সংখ্যাটিকে প্রথমে ৭ দিয়ে, এরপর ১১ দিয়ে এবং সবশেষে ১৩ দিয়ে ভাগ দিয়ে যে ভাগফল পাব, তা আসলে হবে শুরুতে নেয়া তিন অঙ্কের সংখাটিই। আরেকটি উদাহরণ দিই। ধরি শুরুতে নেয়া তিন অঙ্কের সংখ্যাটি যদি হতো ৩২৪, তবে এ সংখ্যাটি পাশাপাশি দুইবার বসিয়ে আমরা পেতাম ছয় অঙ্কের সংখ্যা ৩২৪৩২৪। এবার এই সংখ্যাটিকে ধারাবাহিকভাবে প্রথমে ৭ দিয়ে, এরপর ১১ দিয়ে এবং সবশেষে ১৩ দিয়ে ভাগ করলে আমরা নিমণরূপ ভাগফল পাব :


৩২৪৩২৪ ÷ ৭ = ৪৬৩৩২

৪৬৩৩২ ÷ ১১ = ৪২১২

৪২১২ ÷ ১৩ = ৩২৪


এ ক্ষেত্রেও আমরা সবশেষ ভাগফলটি পেলাম শুরুতে নেয়া তিন অঙ্কের সংখ্যা ৩২৪। এমনটি আমরা ঘটতে দেখতে পাব যেকোনো তিন অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে খেলাটি শুরু করলে।


চালাকিটা কোথায়?


এমনটি হওয়ার পেছনে গণিতের একটি চালাকি আছে। চালাকিটা কোথায়, সেটাই এবার এখানে আমরা জানব। প্রথমেই আমরা সেই কাজটিতে ফিরে যাব, যা আমরা শুরুতে ৩৪৫ সংখ্যাটি নিয়ে করেছিলাম। শুরুতে আমরা ৩৪৫ সংখ্যাটিকে পাশাপাশি দুইবার বসিয়ে তৈরি করেছিলাম ছয় অঙ্কের সংখ্যা ৩৪৫৩৪৫। আসলে এর মাধ্যমে আমরা কী করেছিলাম, তা একটু ভেবে দেখা যাক। স্পষ্টতই ৩৪৫৩৪৫ = ৩৪৫,০০০ + ৩৪৫ = ৩৪৫ (১০০০ + ১) = ৩৪৫  ১০০১। এর অর্থ ৩৪৫৩৪৫ হচ্ছে ৩৪৫-এর ১০০১ গুণ। আর অর্থাৎ ৩৪৫৩৪৫ ÷ ১০০১ = ৩৪৫। আর ১০০১ = ৭  ১১  ১৩। তাই ছয় অঙ্কের সংখ্যাটিকে ধারাবাহিকভাবে ৭, ১১ এবং ১৩ দিয়ে ভাগ করলে আমরা পেয়ে যাই তিন অঙ্কের সংখ্যাটি। কারণ, কোনো সংখ্যাকে ১০০১ দিয়ে ভাগ করা আর ৭, ১১ ও ১৩ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে তিনবারে ভাগ করা সমান কথা।


এবার আমরা ভেবে দেখি দুই অঙ্কের সংখ্যার বেলায় ঘটনাটি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। ধরা যাক, শুরুতে নেয়া দুই অঙ্কের সংখ্যাটি ২৪। এটি পাশাপাশি দুইবার বসালে আমরা পাই চার অঙ্কের সংখ্যা ২৪২৪। আর ২৪২৪ = ২৪০০ + ২৪ = ২৪ (১০০ + ১) = ২৪  ১০১। এর অর্থ ২৪২৪ সংখ্যাটি ২৪-এর ১০১ গুণ। তাহলে ২৪২৪-কে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে আমরা পেয়ে যাব শুরুতে নেয়া দুই অঙ্কের মূল সংখ্যা ২৪। এভাবে যেকোনো দুই অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে সংখাটিকে পাশাপাশি দুইবার বসিয়ে পাওয়া সংখ্যা তৈরি করে সংখ্যাটিকে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে আমরা পেয়ে যাব শুরুতে নেয়া দুই অঙ্কের সংখ্যাটি। কিন্তু দুই অঙ্কের বেলায় খেলাটি তেমন মজা হবে না, যেমনটি মজা পাওয়া যাবে তিন অঙ্কের সংখ্যাটি নিয়ে খেলাটি শুরু করে।


চার অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে খেলাটি শুরু করলে কেমন হয়? ধরা যাক এ ক্ষেত্রে আমাদের শুরুর সংখ্যাটি ৩২৪৫। এটি পাশাপাশি দুইবার বসালে পাই আট অঙ্কের সংখ্যা ৩২৪৫৩২৪৫। আর ৩২৪৫৩২৪৫ = ৩২৪৫,০০০০ + ৩২৪৫ = ৩২৪৫ (১০০০০ + ১) = ৩২৪৫  ১০০০১। এর অর্থ কোনো চার অঙ্কের সংখ্যাকে পাশাপাশি লিখে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, তা শুরুর চার অঙ্কের সংখ্যার ১০০০১ গুণ। আর সুখের কথা ১০০০১ = ৭৩  ১৩৭। অতএব এ ক্ষেত্রে ম্যাজিক নাম্বার দুটি হচ্ছে ৭৩ ও ১৭৩। এ ক্ষেত্রে পাওয়া আট অঙ্কের সংখ্যাটিকে প্রথমে ৭৩ দিয়ে, এর পাওয়া ভাগফলকে ১৩৭ দিয়ে ভাগ করলে আমরা পেয়ে যাব শুরুতে নেয়া চার অঙ্কের মূল সংখ্যাটি।


আবার আমরা শুরুতে পাঁচ অঙ্কের একটি সংখ্যা নিয়ে সংখ্যাটিকে পাশাপাশি দুইবার বসিয়ে তৈরি করতে পারি দশ অঙ্কের একটি সংখ্যা। তখন একইভাবে আমরা সহজেই দেখাতে পারি দশ অঙ্কের নতুন সংখ্যাটি আসলে শুরুতে নেয়া পাঁচ অঙ্কের সংখ্যাটির ১০০০০১ গুণ। আর ১০০০০১ = ১১  ৯০৯১। তাহলে এ ক্ষেত্রে পাওয়া দশ অঙ্কের সংখ্যাটি ১০০০০১ দিয়ে ভাগ করলে আমরা পেয়ে যাব মূল পাঁচ অঙ্কের সংখ্যাটি। কিংবা তা না করে দশ অঙ্কের সংখ্যাটিকে প্রথমে ১১ দিয়ে এবং পাওয়া ভাগফলকে ৯০৯১ দিয়ে ভাগ করেও পেতে পারি শুরুতে নেয়া পাঁচ অঙ্কের মূল সংখ্যাটি।


এভাবে আমরা আরও বেশি অঙ্কের সংখ্যা নিয়েও এ ধরনের নাম্বার ট্রিকস বা সংখ্যার চালাকি বন্ধুদের সাথে খেলতে পারি। তবে মজা পেতে এই খেলাটি তিন অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে শুরু করাই উত্তম।


একটি প্রশ্ন ও এর সহজ উত্তর


ধরা যাক, আজ রোববার। প্রশ্ন করা হলো, আজ থেকে ১০০০-তম দিনটিতে সপ্তাহের কোন বারটি পাব? সহজে এর উত্তরটি পেতে আমাদের মনে রাখতে হবে ৭ দিনে এক সপ্তাহ। এই ৭ দিয়ে ১০০০-কে ভাগ করলে আমরা যে ভাগশেষ পাব, তার মধ্যেই রয়েছে প্রশ্নে চাওয়া বারের নামটি।


১০০০-কে ৭ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় ১৪২, আর ভাগশেষ থাকে ৬। এর অর্থ এই ১০০০ দিনের মধ্যে রয়েছে ১৪২টি পুরো সপ্তাহ থেকে আরও ৬ দিন বেশি, যেখানে আমাদের এ সপ্তাহটির শুরু রোববারে। আর আমাদের বাড়তি ছয়টি দিনের শুরু সোমবার থেকে। আর সোমবার থেকে শুরু করে ষষ্ঠ দিনটি হচ্ছে শনিবার। অতএব এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে ১০০০-তম দিনটি হবে শনিবার।


এখানে যদি প্রশ্ন করা হতো ১০০-তম দিনটি হবে কী বার? তবে ১০০-কে ৭ দিয়ে আমরা ভাগশেষ বের করতাম। আর ১০০-কে সাত দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় ১৪, আর ভাগশেষ হয় ২। অতএব সোমবার থেকে গণনা শুরু করে দ্বিতীয় বারটি পাই মঙ্গলবার। তখন এ ক্ষেত্রে উত্তর হতো ১০০-তম দিনটি মঙ্গলবার।


একই ধারণা থেকে আমরা ঘড়ির সময়ের হিসাবটাও সহজে বের করে নিতে পারি। ধরা যাক প্রশ্নটি এমন- এখন বাজে বিকেল ৫টা। এরপর শততম ঘণ্টাটিতে কয়টা বাজবে? এ ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখতে হবে ২৪ ঘণ্টায় এক দিন। এখন ১০০০-কে ২৪ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল পাই ৪১ এবং ভাগশেষ ১৬। এর অর্থ ১০০০ ঘণ্টায় পুরো ৪১ দিন এবং ১৬ ঘণ্টা। তাহলে আমাদেরকে চাওয়া সময়টা বের করতে বিকেল ৫টা থেকে আরও ১৬ ঘণ্টা সময় বেশি হবে। সে হিসেব মতে এই সময়টা হবে সকাল ৯টা।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।