সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর সহধর্মিণী এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এঁর মমতাময়ী মাতা “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব”- এর ৯২তম জন্মবার্ষিকী গতকাল ৮ আগস্ট উদযাপিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের অধীনে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (iDEA) প্রকল্প কর্তৃক মহীয়সী ও অদম্য সাহসী নারী বঙ্গমাতা এঁর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন ও নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে আইডিয়া প্রকল্পের পক্ষ থেকে অনুদান প্রদান উপলক্ষে গতকাল রাজধানী আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার-এর বিসিসি অডিটরিয়ামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সকল আন্দোলন, সংগ্রামের নেপথ্যের প্রেরণাদায়ী এবং প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস মহীয়সী নারী ফজিলাতুন ন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর কর্মকাণ্ডকে পূর্ণতা দিয়েছেন বেগম মুজিব।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গমাতার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনা’ সাদামাটা জীবন যাপন করেন। `নারী উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ হওয়ার হার পুরুষদের চেয়ে কম’ মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মায়েরা-মেয়েরা মিতব্যায়ী-সাশ্রয়ী। আমি মনে করি এই উদ্যোক্তাদের দেয়া অনুদান বিফলে যাবে না।
অনুদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটাই শেষ নয়; প্রতিবছর ৮ আগস্ট ১০০০ বঙ্গমাতা অদম্য উদ্যোক্তাকে অনুদান দেয়া হবে। তিনি বলেন স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প পূরণে ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, কো-ওয়ার্কিং স্পেস ও সিড মানি দিয়ে সর্বাত্মক কাজ করবে আইসিটি বিভাগ।
অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তিনি বলেন যে, ২০২১-এ একটি বড় অর্জন হল আমরা সফলভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছি। এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াতে আমাদের কাছে কোন ধরণের বাধা বা বিপত্তির কারণ নেই। সবশেষে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রণজিৎ কুমার, অতিরিক্ত সচিব ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক, বিসিসি; শমী কায়সার, সভাপতি, ই-ক্যাব; নাসিমা আক্তার নিশা, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, উই। অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে ওয়েব সভাপতি রুপা আহমেদ এবং ইউএনডিপি এর আনন্দমেলার পরামর্শক সারাহ জিতা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোঃ আলতাফ হোসেন। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি নারীদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সামনে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে ২৫০ জন নারী উদ্যোক্তার প্রত্যেককে ৫০,০০০ টাকা করে এককালীন অনুদান প্রদান করা হয়। এই উদ্যোগটির সহযোগিতায় কাজ করে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), উইমেন এন্ড ই-কমার্স (উই), আনন্দমেলা এবং উইমেন অন্ট্রপ্রিনিউরস্ অব বাংলাদেশ (ওয়েব)। স্টার্টআপদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান (এসএমই), উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন, উৎসাহ প্রদান এবং তাদের ব্যবসায়কে ত্বরাণ্বিত করার নিমিত্ত অনুদান প্রদানের এই উদ্যোগ গ্রহণ করে আইডিয়া প্রকল্প।
এরই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্ম/অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রাপ্ত আবেদনসমূহ আইডিয়া প্রকল্প কর্তৃক গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে ২৫০ উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয়। ই-ক্যাব থেকে ২০, উই থেকে ১৮৮, আনন্দমেলা থেকে ৩১ এবং ওয়েব থেকে ১১ অর্থাৎ সর্বমোট ২৫০ জন নারী উদ্যোক্তাকে আইডিয়া প্রকল্প থেকে মোট ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। অনুদান প্রাপ্ত ২৫০ জন নারী উদ্যোক্তাদের অনেকেই এটুআই-এর একশপ প্ল্যাটফর্মের সাথেও সংযুক্ত আছেন। সবশেষে, প্রতিমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তাদের হাতে চেক তুলে দেন।
০ টি মন্তব্য